প্রতিবন্ধী পথ শিল্পী রাজীব সুযোগ পেলে বড় ধরনের কণ্ঠ শিল্পী হতে পারে

প্রতিবন্ধী পথ শিল্পী রাজীব সুযোগ পেলে বড় ধরনের কণ্ঠ শিল্পী হতে পারে

মো. সালাউদ্দিন, ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : অত্যন্ত সুরেলা কণ্ঠস্বর তার। সুর তাল আর একক বাদ্য যন্ত্র ‘কলস’ বাজিয়ে সংগীতের ঝংকার তুলে হাজারো দর্শক শ্রোতার মন মাতিয়ে তোলে রাজিব। এ পথ শিল্পীর বাড়ি রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার গায়েনপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আবু বকর।

জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ এ অন্ধ যুবক।

জন্মের পর থেকে হারায় তার অমূল্য সম্পদ ২টি চোখ। ফলে কৈশর হতেই অভাবের তাড়নায় তাকে নামতে হয় জীবনযুদ্ধে, জীবিকার সন্ধানে। প্রথমে শুরু করে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাস/ মিনি বাসগুলীতে ভিক্ষাবৃত্তি। এ জন্য স্থানীয় বাস মাস্টারকে দিতে হতো প্রতিদিন ২০ টাকা হারে বখরা। অত্যন্ত স্বাধীন ও সচেতন প্রতিবন্ধি রাজীব এ অন্যায় অত্যাচার মেনে নিতে পারেননি। তাই এ পেশা ছেড়ে প্রতিবেশী এক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে ধরেন গান গাওয়া। এর পর থেকে গত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন কোর্ট কাছারী, হাট বাজার, গ্রাম গঞ্জে এ ভাবে গান গেয়ে চলছে তার জীবন।

গত ২১ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জ কোর্ট চত্বরে উৎসুক মানুষের ভিড়ে, অত্যন্ত সুরেলা কন্ঠে গান শুনে এ প্রতিবেদকও কৌতূহলে আর চারজন দর্শকের মত তার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। সত্যই তার সুরেলা কণ্ঠ। গান পরিবেশন আর এ্যালুমিনিয়ামের কলস বাজানোর অদ্ভূত কৌশল, হাতের তালু দিয়ে বিচিত্র শব্দ ও মুখের সাহায্যে যন্ত্র সংগীতের সুরসৃষ্টি করা গানগুলো মানুষকে সত্যি বিমোহিত করে তুলেছিল।

কথা প্রসংগে রাজীব জানায়, তার জীবনে একমাত্র সংগী ও সম্বল এ এ্যালুমিনিয়ামের কলসটি। সংসার জীবনে তারা দু’

প্রতিবন্ধী পথ শিল্পী রাজীব সুযোগ পেলে বড় ধরনের কণ্ঠ শিল্পী হতে পারে

মো. সালাউদ্দিন, ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : অত্যন্ত সুরেলা কণ্ঠস্বর তার। সুর তাল আর একক বাদ্য যন্ত্র ‘কলস’ বাজিয়ে সংগীতের ঝংকার তুলে হাজারো দর্শক শ্রোতার মন মাতিয়ে তোলে রাজিব। এ পথ শিল্পীর বাড়ি রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার গায়েনপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আবু বকর।

জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ এ অন্ধ যুবক।

জন্মের পর থেকে হারায় তার অমূল্য সম্পদ ২টি চোখ। ফলে কৈশর হতেই অভাবের তাড়নায় তাকে নামতে হয় জীবনযুদ্ধে, জীবিকার সন্ধানে। প্রথমে শুরু করে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাস/ মিনি বাসগুলীতে ভিক্ষাবৃত্তি। এ জন্য স্থানীয় বাস মাস্টারকে দিতে হতো প্রতিদিন ২০ টাকা হারে বখরা। অত্যন্ত স্বাধীন ও সচেতন প্রতিবন্ধি রাজীব এ অন্যায় অত্যাচার মেনে নিতে পারেননি। তাই এ পেশা ছেড়ে প্রতিবেশী এক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে ধরেন গান গাওয়া। এর পর থেকে গত ১০ বছর ধরে বিভিন্ন কোর্ট কাছারী, হাট বাজার, গ্রাম গঞ্জে এ ভাবে গান গেয়ে চলছে তার জীবন।

গত ২১ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জ কোর্ট চত্বরে উৎসুক মানুষের ভিড়ে, অত্যন্ত সুরেলা কন্ঠে গান শুনে এ প্রতিবেদকও কৌতূহলে আর চারজন দর্শকের মত তার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। সত্যই তার সুরেলা কণ্ঠ। গান পরিবেশন আর এ্যালুমিনিয়ামের কলস বাজানোর অদ্ভূত কৌশল, হাতের তালু দিয়ে বিচিত্র শব্দ ও মুখের সাহায্যে যন্ত্র সংগীতের সুরসৃষ্টি করা গানগুলো মানুষকে সত্যি বিমোহিত করে তুলেছিল।

কথা প্রসংগে রাজীব জানায়, তার জীবনে একমাত্র সংগী ও সম্বল এ এ্যালুমিনিয়ামের কলসটি। সংসার জীবনে তারা দু’ভাই দু’বোন। বড় ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করে এবং ভিন্ন অন্নে খায়। বড় বোনের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে। একমাত্র ছোট বোন রুমানা লেখাপড়া করে। তার পড়ালেখার খরচ তাকেই বহন করতে হয়। বাবা মা বৃদ্ধ, তাই খেটে খেতে পারে না। ৪ সদস্যের পরিবার তাই তার ওপর নির্ভরশীল। গান গেয়ে পয়সা উপার্জন ছাড়া আর কোন পথ নেই তার বলে রাজীব জানান।

কোর্ট চত্বরে সমেবেত দর্শক শ্রোতাদের মধ্যে অনেকে বললেন, সুযোগ আর যথাযথ প্রশিক্ষণ পেলে প্রতিবন্ধী এ তরুণ পথশিল্পী জীবনে একজন প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পী হতে পারেন। কিন্তু শক্ত কঠিন এ দুনিয়ায় কোন দিন রাজীব পাবে কি সে সুযোগ?

ভাই দু’বোন। বড় ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করে এবং ভিন্ন অন্নে খায়। বড় বোনের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে। একমাত্র ছোট বোন রুমানা লেখাপড়া করে। তার পড়ালেখার খরচ তাকেই বহন করতে হয়। বাবা মা বৃদ্ধ, তাই খেটে খেতে পারে না। ৪ সদস্যের পরিবার তাই তার ওপর নির্ভরশীল। গান গেয়ে পয়সা উপার্জন ছাড়া আর কোন পথ নেই তার বলে রাজীব জানান।

কোর্ট চত্বরে সমেবেত দর্শক শ্রোতাদের মধ্যে অনেকে বললেন, সুযোগ আর যথাযথ প্রশিক্ষণ পেলে প্রতিবন্ধী এ তরুণ পথশিল্পী জীবনে একজন প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পী হতে পারেন। কিন্তু শক্ত কঠিন এ দুনিয়ায় কোন দিন রাজীব পাবে কি সে সুযোগ?