বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, লাভবান আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা
ট্যানারি ব্যবস্থাপনা পরিবেশগত ত্রুটিমুক্ত করতে পারছে না সরকার
॥ সৈয়দ খালিদ হোসেন ॥
বাজারের প্রতিটি পণ্যের মূল্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেলেও চামড়ার দাম ক্রমাগত কমছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে চামড়াকে কেন্দ্র করে ব্যবসা কিংবা শিল্প গড়ে তোলার পেছনে ছুরিকঘাত করার জন্য একটি সংঘবদ্ধ শক্তি কাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষীয় কোনো সাড়া-শব্দও নেই। নেই কোনো কঠোর পদক্ষেপ।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সম্পূর্ণ উল্টোপথে হাঁটছে চামড়ার দাম। দিন যত যাচ্ছে, দেশের সব পণ্যের মূল্য বাড়ছে, কিন্তু কমছে শুধু চামড়ার দাম। গত প্রায় এক যুগ ধরেই দেশের বাজারে চামড়ার মূল্য কমছে। অথচ এ এক যুগে কোনো কোনো পণ্যের মূল্য ১০ থেকে ২০ গুণও বেড়েছে। অদ্ভূত ব্যাপার হচ্ছে, চামড়ার দাম কমলেও চামড়া দিয়ে তৈরি ব্যবহার্য সব পণ্যের মূল্যও কয়েকগুণ বেড়েছে। যদি এপেক্স ব্র্যান্ডের এক জোড়া জুতার (সু) দামের সঙ্গে মিলিয়ে দেখি, তাহলে এক ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠবে। এক যুগ আগে যে মানের এক জোড়া জুতার মূল্য এক হাজার টাকা ছিল, সেই একই মানের এক জোড়া জুতার মূল্য এখন চারগুণ। অর্থাৎ জুতার মূল্য বাড়ছে, তাছাড়া চামড়ার তৈরি ব্যাগ ও মানিব্যাগের মূল্য বাড়ছে, কিন্তু কমছে শুধু চামড়ার দাম। ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে- কেন চামড়ার দামে ধস নেমেছে। এ ধসের নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০১৩ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে চামড়ার মূল্য কমছে। বাজারে এতটাই ধস নেমেছে, মানুষ ক্ষোভের অংশ হিসেবে বিক্রি না করে চামড়া রাস্তায় ফেলে দিয়েছে, আবার কেউ কেই দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে মাটিতে পুঁতে রেখেছে। আমরা জানি, বছরজুড়ে দেশে যত পশু জবাই হয়, তার সমপরিমাণ পশু কুরবানি করা হয় পবিত্র ঈদুল আজহায়। আর এ ঈদুল আজহার সময়ই মূল্যে ধস নামে। বাজার বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা চামড়ার এ অব্যাহত দরপতন সম্পর্কে নানা কারণ বলছেন। তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা মনে করছেন, খুবই দূর থেকে পরিকল্পনা করে পরিকল্পিতভাবে চামড়ার বাজারে এ ধস নামানো হয়েছে।
এক বিশ্লেষকের ভাষ্য হচ্ছে, চামড়া রফতানির ক্ষেত্রে বায়ারদের সন্তোষজনক পরিবেশ দিতে ব্যর্থতার কারণে ইউরোপীয় অঞ্চলের ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ফলে উচ্চমূল্যের ক্রেতার সংকট তৈরি হয়েছে। তবে এটাই মূল কারণ নয়, ইউরোপীয় অঞ্চল না কিনলে অন্যরা কিনবে, বিকল্প বাজার তৈরি হবে, কিন্তু তাতে এত ধস নামার কথা নয়। এ বিশ্লেষক মনে করেন, এর পেছনে একটি ধর্মীয় কারণও থাকতে পারে। আর তা হচ্ছে, প্রতি বছর কুরবানির সময় দেশের যেসব পশু কুরবানি করা হয়, সেসব পশুর চামড়ার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চলে যায় এতিমখানা বা লিল্লাহ বোডিং (যেখানে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ফ্রিতে খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা হয়) রয়েছে এমন মাদরাসায়। ওইসব প্রতিষ্ঠান এসব চামড়া বিক্রি করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কাজে ব্যয় করেন। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান চামড়া বিক্রির টাকা নিয়ে পুরো বছর প্রতিষ্ঠান চালাতে পারত। প্রতিষ্ঠানগুলো ভালোভাবে চলুক যারা এমনটি চাচ্ছেন না, তাদেরও কারসাজি রয়েছে এ মূল্য কমার ক্ষেত্রে। অবশ্য দরপতনের পর এখন আর সেই অবস্থা নেই। অনেক মাদরাসাই এখন আর চামড়া কালেকশনের পেছনে সময় দেয় না।
কুরবানি পশুর চামড়া জবেহ করার চার ঘণ্টার মধ্যে বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ চার ঘণ্টা পর চামড়া নষ্ট হতে শুরু করে। তাই বিক্রিতারা কাঁচা চামড়া এ সময়ের মধ্যে বিক্রি করতে বাধ্য হন। এছাড়া লবণ দিয়ে রাখলে পরে বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু বিক্রির সময় কম, সেহেতু একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র দাম কমিয়ে নামমাত্র মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করেন কুরবানিদাতাদের। ফলে একসঙ্গে বাজারে বিপুল পরিমাণ চামড়ার সরবরাহ হয়। কুরবানিদাতা এবং মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের পক্ষে এ বিপুল পরিমাণ কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ করা সম্ভব নয় বলে চামড়ার বড় ব্যবসায়ী, আড়তদার এবং ট্যানারি মালিকরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে চামড়ার দাম কমিয়ে রাখছেন। তাছাড়া চামড়া বিক্রির টাকা দরিদ্রদের দান করে দেওয়া হয় বলে এর দাম নিয়ে অনেকেরই মাথাব্যথা থাকে না। কাঁচা চামড়ার কম মূল্যের পেছনে আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট ছাড়া আরও যে সমস্যা দায়ী, তা হলো চামড়াশিল্পের পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স (বিধিবদ্ধ নিয়ম পদ্ধতি) সমস্যা।
বাংলাদেশের চামড়ার গুণগতমান ভালো। এখানে শ্রম তুলনামূলক সস্তা। ফলে কোনো ধরনের কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি ছাড়াই চামড়াশিল্পের বিকাশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু সরকারের অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও অদূরদর্শিতা এবং চামড়াশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের পরিবেশকে গুরুত্ব না দিয়ে স্বল্প মেয়াদে অতি মুনাফার প্রবণতার কারণে এ শিল্পের বিকাশ থেমে আছে। স্বাধীনতার এত বছর পরও দেশের চামড়াশিল্প পরিবেশদূষণমুক্ত হতে না পারার কারণে ইউরোপের লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ পাচ্ছে না। এ কারণে প্রক্রিয়াজাত চামড়া ইউরোপের বদলে চীনের বাজারে কম দামে রপ্তানি করতে হচ্ছে। চামড়াশিল্পে দূষণের এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাজারীবাগে থাকাকালে ট্যানারিগুলো প্রতিদিন প্রায় ২১ হাজার ৬০০ ঘনমিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন না করেই সরাসরি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলত। বুড়িগঙ্গা নদীর দূষণ কমাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) নেতৃত্বে সাভারের হেমায়েতপুরে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় চামড়া শিল্পনগরী, যার মধ্যে ৫২১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার বা সিইটিপি নির্মাণে।
২০১৭ সালে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে সরিয়ে নেওয়া হলেও চামড়াশিল্প দূষণমুক্ত হয়নি। কারণ বিপুল অর্থ ব্যয় করে ২ বছরের বদলে ৯ বছর সময় নিয়ে নির্মিত সাভার চামড়া (ট্যানারি) শিল্পনগরীতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) বা সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট চামড়াশিল্পের সব ধরনের বর্জ্য পূর্ণমাত্রায় পরিশোধনে সক্ষম নয়, যা সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিসিকের চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার নিদর্শন। কুরবানির মৌসুমে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদিত হলেও সিইটিপির পরিশোধন সক্ষমতা দিনে ২৫ হাজার ঘনমিটার। আবার এ ২৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্যও ঠিকমতো পরিশোধন করা হয় না। সিইটিপিতে লবণ পরিশোধনের ব্যবস্থা নেই। ক্রোমিয়াম (বিষাক্ত) বর্জ্যরে পরিমাণ ৫ হাজার ঘনমিটার হলেও ক্রোমিয়াম রিকভারি ইউনিটের সক্ষমতা দিনে মাত্র ১ হাজার ৫০ ঘনমিটার। অন্যদিকে ট্যানারি মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ক্রোমিয়ামযুক্ত বর্জ্য আলাদাভাবে না দিয়ে সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে ছেড়ে দেন। ঘাটতি রয়েছে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিসিক পুকুর খনন করেছে, যা পরিবেশসম্মত নয়। ফলস্বরূপ চামড়াশিল্পের কারণে এখন বুড়িগঙ্গার বদলে সাভারের ধলেশ্বরী নদী দূষিত হচ্ছে এবং চামড়াশিল্প পরিবেশবান্ধব সার্টিফিকেট পাচ্ছে না। তবে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সার্টিফিকেট না পাওয়ার ক্ষেত্রে সিইটিপি বা বিসিকের সক্ষমতার সমস্যা ছাড়াও ট্যানারি মালিকদেরও দায় রয়েছে। এলডব্লিউজি কর্তৃক চামড়াশিল্পের পরিবেশগত মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ১৭টি বিষয়ে ১৭১০ নম্বর রয়েছে, যার মধ্যে ৩০০ নম্বর কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত। বাকি ১৪১০ নম্বর রয়েছে জ্বালানি খরচ, পানির ব্যবহার, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা, চামড়ার উৎস শনাক্তকরণ, দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার মান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় যেগুলোর মানদণ্ড রক্ষা করা ট্যানারি মালিকদের দায়িত্ব। এসব দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ ট্যানারি মালিক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর। অর্থাৎ মুখে ডিজিটাল বা স্মার্ট বাংলাদেশ বললেও বাস্তবতা হচ্ছে পরিবেশগত ত্রুটির কারণে ধস নেমেছে চামড়াশিল্পে, আমরা বঞ্চিত হচ্ছি রপ্তানি আয় থেকে।
২০১৪ সালে চামড়া ব্যবসায়ীদের তিন সংগঠন চামড়ার দর ২০১৩ সালের তুলনায় কিছুটা কম প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৭০ থেকে ৭৫ টাকা নির্ধারণ করলেও বাস্তবে আরও বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল। সেবার পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তায় লবণবিহীন প্রতি বর্গফুট চামড়াই বিক্রি হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এরপর থেকে চামড়ার দর শুধু কমেছেই। চামড়ার দর কমতে কমতে ২০১৯ সালে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, অনেকে চামড়া ফেলে দিয়েছিলেন বা মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলেন। এরপরের বছরগুলোয় চামড়া ফেলে দেওয়ার ঘটনা না ঘটলেও এক দশক আগের তুলনায় অনেক কম দরেই বিক্রি হয়েছে। এর ফলে দরিদ্র প্রান্তিক মানুষ ধারাবাহিকভাবে বঞ্চিত হলেও লাভবান হয়েছেন আড়তদার, ব্যবসায়ী আর ট্যানারি মালিকরা।
ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ বলেন, ২০১৬ সালের পর থেকে বাংলাদেশ থেকে চামড়া রপ্তানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ার কারণে দেশীয় ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়ার চাহিদা কমে গেছে। তার মতে, ২০১৬ সালের পূর্বে যেসব বায়ার ছিল যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বায়ার বা ফার-ইস্টের সাউথ কোরিয়া, জাপানÑ যারা কমপ্লায়ান্ট বায়ার তারা এদেশ থেকে কেনা বন্ধ করে দিল। এখন আমাদের নন-কমপ্লায়ান্ট বায়ারদের কাছে অর্ধেকেরও কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। আমি যদি দাম না পাই, তাহলে কাঁচা চামড়া আমি কীভাবে দাম দিয়ে কিনব? তার মতে, এ অবস্থার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় চামড়ার বাজারে। কমেছে দাম। বর্তমানে বাংলাদেশের চামড়া রপ্তানির একটা বড় বাজার চীন। তবে চীন বেশ কম দামে এদেশ থেকে চামড়া কিনছে। একই রকমের মত দিয়েছেন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতানও। তিনিও বলেছেন, রপ্তানি কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে।
পরিবেশ ও উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক লেখক কল্লোল মোস্তফা চামড়ার ক্ষেত্রে দেশে এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, উপযুক্ত মূল্য না পেয়ে যখন দেশে কোনো কোনো সময় চামড়া ফেলে দেওয়া বা পুঁতে ফেলার ঘটনা ঘটছে, আবার কোনো কোনো দেশীয় চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি বিদেশ থেকে লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সার্টিফায়েড চামড়া আমদানি করছে। এভাবে দীর্ঘ মেয়াদে দেশীয় চামড়াশিল্পের যে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে, দরিদ্র মানুষকে চামড়ার দামে ঠকিয়ে তা পোষানো যাবে না। সরকার এবং চামড়াশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা যতদিন না তা উপলব্ধি করছেন, ততদিন চামড়াশিল্পের এ সমস্যার কোনো টেকসই সমাধান হবে না। সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞরা বলছেন, পরিকল্পিতভাবে চামড়া শিল্প ধ্বংসের নেপথ্যের খলনায়কদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। তা না হলে এ শিল্পকে বাঁচানো যাবে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দরিদ্র সাধারণ মানুষ, আর সরকার বঞ্চিত হবে রপ্তানি আয় থেকে।
এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে কুরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। এ বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুটে দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫ টাকা, আর ঢাকার বাইরে সর্বোচ্চ সাত টাকা। এ বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। ঢাকায় প্রতি পিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে ১ হাজার ২০০ টাকা। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। গত বছর এ দাম ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। এ বছর লবণযুক্ত প্রতি পিস গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম হবে ১ হাজার টাকা। গত ৩ জুন সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে গরুর চামড়ার দাম ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সভা শেষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর উপস্থিতিতে তিনি এ ঘোষণা দেন। মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সারা দেশে খাসির চামড়ার প্রতি বর্গফুটের দাম হবে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এছাড়া বকরির চামড়ার দাম হবে প্রতি বর্গফুটে ১৮ থেকে ২০ টাকা। গত বছর খাসির চামড়ার দাম ছিল বর্গফুটে ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর বকরির ১২ থেকে ১৪ টাকা। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব বলেন, এ বছর ১ কোটি ২৯ লাখ পশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। গত বছর ১ কোটি ১ লাখ পশু কুরবানি হয়েছে। দেশের বাজার ও আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা করে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- অস্থিরতা বাড়ছে
- আন্দোলনে যাচ্ছে বিরোধীদল
- বিনামূল্যে সরকারি বাড়ি গৃহহীনদের আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
- জনগণের প্রতি এ সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই
- কোন অদৃশ্য সুতা আওয়ামী লীগের টিকে থাকার শক্তি
- এ সরকার দেশের সবকিছু ধ্বংস করে ফেলেছে : মির্জা ফখরুল
- হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু ১৪ জুন ,আরাফাত দিবস ১৫ জুন আগামী ১৭ জুন বাংলাদেশে পবিত্র ঈদ উল আজহা