বান্দরবান সংবাদদাতা : বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটপাটের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই জেলার থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ এপ্রিল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন। তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, পৌঁছে বিস্তারিত জানাতে পারব। স্থানীয়রা জানান, বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে থানচি বাজার ঘিরে ফেলে ডাকাতরা। তারা ব্যাংক ও এর আশপাশের এলাকায় অস্ত্রের মুখে সবার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর তারা ব্যাংক দুটির ভেতরে ঢুকে পড়ে। ব্যাংকের ভেতরে টাকা তুলতে যাওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, ডাকাতরা পাঁচ মিনিটের মতো ব্যাংকের ভেতরে ছিল। এ সময়ের মধ্যে তারা গুলি চালিয়ে ভীতি সৃষ্টি করে সব টাকা লুট করে নিয়ে চলে যায়। তারা জানান, ভেতরে ঢুকেই ডাকাতরা নিরাপত্তারক্ষীর অস্ত্র কেড়ে নেয় এবং গ্রাহক, কাউন্টার ও ভল্ট থেকে সব টাকা বস্তায় করে নিয়ে বের হয়ে যায়।
এর আগে গত ২ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বান্দরবানের রুমায় নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সোনালী ব্যাংকে একটি নাটকীয় হামলা চালিয়ে নগদ টাকা ও ১৪টি অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটে। সোনালী ব্যাংক বান্দরবান অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, সোনালী ব্যাংক রুমা শাখায় ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। রুমা শাখায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা থাকার কথা। সেগুলো ভল্ট ভেঙে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার পর এ অঞ্চলের ব্যাংকের সব শাখায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে কেএনএফের ৭০ থেকে ৮০ সশস্ত্র সদস্য রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকা ঘেরাও করে। তারা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে পাহারারত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং মারধর করতে থাকে। ব্যাংকে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
রুমার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিদারুল আলম বলেন, কেএনএফের সদস্যরা সোনালী ব্যাংক রুমা শাখা লুটপাট করেছে। ব্যাংকের পাহারারত পুলিশ-আনসার সদস্যদের চারটি হাতিয়ার লুট করে নিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, কেএনএফ সন্ত্রাসীরা মসজিদে মুসল্লিদেরও মারধর করে তাদের মুঠোফোনও নিয়ে গেছে। ব্যাংক ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে কিনা, নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার পর উপজেলা পরিষদ এলাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, কেএনএফের সদস্যরা ৮টি চাইনিজ রাইফেল, দুটি এসএমজি, ৪টি শর্টগান ও ৪১৫টি গুলি লুট করে নিয়ে গেছে। তাদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্য ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের এক কর্মচারী আহত হয়েছেন।
রুমা উপজেলা পরিষদ উপজেলা শহর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে বেথেলপাড়ার কাছাকাছি। বেথেলপাড়ায় গত ৫ মার্চ কেএনএফের সঙ্গে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে কেএনএফ আর সন্ত্রাসী তৎপরতা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ওই বৈঠকের পরও রুমা উপজেলা সদর সংলগ্ন বম জনগোষ্ঠীর বেথেলপাড়া, মুনলাইপাড়া, এডেনপাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ায় কেএনএফের সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছিল। বান্দরবানে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে তৎপরতা শুরু করে।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- থমকে দাঁড়িয়েছে অর্থনীতি
- সকল বাধা উপেক্ষা করে সত্যের পথে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে
- মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সিংহভাগ তামাকসেবী
- উৎপাদন ও সরবরাহে কমতি নেই, তবে দাম ঠিকই বাড়তি
- ক্যাম্পাসগুলোয় ভিন্নমতাবলম্বী সংগঠনকে কাজ করতে দিচ্ছে না
- ধনী ও দরিদ্রের ঈদে ব্যবধান ঘুচবে কীভাবে
- আমরা জামায়াত-অজামায়াত বুঝি না, প্রার্থী প্রার্থীই : ইসি রাশেদা
- ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা
- সাপ্তাহিক সোনার বাংলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা