নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি
উৎপাদন ও সরবরাহে কমতি নেই, তবে দাম ঠিকই বাড়তি
স্টাফ রিপোর্টার : উৎপাদন ও সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকার পরও যখন বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ে, তখন স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়, সমস্যা কোথায়? কারা পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ে। ক্রেতাদের কথা ভাবনায়ও নিতে চায় না এসব অসাধু ব্যবসায়ী। তারা চান জিম্মি করে পয়সা আদায় করতে আর অসহায় ক্রেতা বাধ্য হয়েই বেশি মূল্যে পণ্য কিনছেন। বাজার মিনিটরিংয়ের কথা থাকলেও তা ক্রেতাদের চোখে পড়ে না। অনেক সময় কাগজে-কলমে মনিটরিং দেখানো হলেও বাজারে এ ইতিবাচক কোনো প্রভাব নেই। ফলে ভোক্তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।
পুরো রোজায় বাজারে মাছ-গোশত-সবজিসহ প্রতিটি পণ্যেই রয়েছে বাড়তি দাম। এর সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে বাড়তি উত্তাপ। ক্রেতাদের অভিযোগ, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বেশিরভাগ মানুষই শুক্রবার বাজার করে। আর এ চাহিদাকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।
বর্তমানে রাজধানীর বাজারগুলোয় শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা। টমেটো কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা অন্যান্য দিনে ৩০ টাকাতেই পাওয়া যায়। ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, যা কয়েকদিন আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। বাজারে প্রতিপিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য আলু বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, তুলনামূলক সবচেয়ে কমদামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে ৪০। এছাড়া বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শালগম ৪০, লাউ ৫০-৮০ টাকা প্রতি পিস, শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। কয়েকদিন আগেও আলু বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়, সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্য হচ্ছে ২৮ টাকা। কিন্তু নির্ধারিত দামের চাইতে বেশি বিক্রি হলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন।
বাজারে মাছের দামেও উত্তাপ দেখা গেছে। বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। বড় সাইজের আইড় মাছ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি, মলা মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিতল মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা।
এছাড়া তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙাশ কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চাষের কই কেজি ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, শোল ছোট সাইজের কেজি ৫০০ টাকা, আর মাঝারি সাইজের ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সরপুঁটি মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় চলছে গরুর গোশত বয়কটের হিড়িক। মূলত বাজারে গরুর অতিরিক্ত দামের কারণে অনেকে এটিকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে দাম কমবে বলে ধারণা তাদের। বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপে এ বয়কটের স্ট্যাটাস দিচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু দু-একটি স্থান ছাড়া রাজধানীর প্রায় সব এলাকায়ই গরুর গোশতের মূল্য ৭৫০ টাকা। পবিত্র রমযানের উপাদেয় খাদ্য হালিম চালু থাকায় গরুর গোশতের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা। এদিকে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও গত দুই সপ্তাহ থেকে বেড়ে যাওয়া চালের দাম এখনো কমেনি। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, কেজিপ্রতি চালের দাম গত এক সপ্তাহে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। বাজারে মোটা চালের কেজি গত এক সপ্তাহে দুই টাকা বেড়ে ৫২ টাকা হয়েছে। আর সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিতে তিন টাকা। তবে বাজারে খবর নিয়ে এ ধরনের চালের দাম আরও বেশিতে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, আগে যে মোটা চালের (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) কেজি ৫০-৫১ টাকা ছিল তা এখন ৫২-৫৩ টাকা। মাঝারি মানের চালের (পাইজাম ও বিআর-২৮) কেজি ৫৫-৫৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৭-৬০ টাকা। আর মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চালের কেজিপ্রতি দাম ৬২-৭৮ টাকা থেকে বেড়ে ৬৪-৮০ টাকা হয়েছে।
এ পাতার অন্যান্য খবর
- থমকে দাঁড়িয়েছে অর্থনীতি
- সকল বাধা উপেক্ষা করে সত্যের পথে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে
- মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সিংহভাগ তামাকসেবী
- ক্যাম্পাসগুলোয় ভিন্নমতাবলম্বী সংগঠনকে কাজ করতে দিচ্ছে না
- ধনী ও দরিদ্রের ঈদে ব্যবধান ঘুচবে কীভাবে
- আমরা জামায়াত-অজামায়াত বুঝি না, প্রার্থী প্রার্থীই : ইসি রাশেদা
- ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা
- রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে হামলা লুট অঙ্গুলি কুকি-চিনের দিকে
- সাপ্তাহিক সোনার বাংলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা