সংবাদ শিরোনামঃ

আগাম নির্বাচন দিতে চায় সরকার ** খালেদা জিয়ার সাথে জামায়াত নেতাদের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় ** সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী’র মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল ** আওয়ামী সরকারের অধীনে নির্বাচন বেগম জিয়ার প্রত্যাখ্যান ** দেশের স্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার থাকতে হবে : শিবির সভাপতি ** বাড়ছে কোটিপতি বাড়ছে বৈষম্য ** সকল ক্ষেত্রে একটি বন্ধ্যাত্ব পরিস্থিতি বিরাজ করছে ** নৈতিক অবক্ষয় প্রধান কারণ ** শুরুর কথা শুনুন ** ফাঁসির মঞ্চে মর্দে মুমিন যুগে যুগে ** ফেলানী হত্যার বিচার না মেগাসিরিয়াল! ** ধেয়ে আসছে বন্যা॥ পানিবন্দী লাখ লাখ মানুষ ** সরকারি গাছ কেটে কর্মকর্তার শখের ফুল বাগান **

ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ শ্রাবণ ১৪২২, ১৪ শাওয়াল ১৪৩৬, ৩১ জুলাই ২০১৫

‘ছাত্রলীগের নতুন নেতা নির্বাচন’

৫ জানুয়ারির আরেক মডেল

নিয়ন্ত্রিত ভোটের মাধ্যমে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে। এ নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তফসিল ঘোষণা, মনোনয়নপত্র দাখিল, প্রার্থিতা বাছাই, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটগ্রহণসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। মূলত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড যা চেয়েছে, তার বাইরে কিছু হয়নি। এর মাধ্যমে ছাত্র সমাজের সঙ্গে বিশেষ করে ছাত্রলীগের সাধারণ নেতাকর্মীর সঙ্গে প্রতারণা ও তাদের ধোঁকা দেয়া হয়েছে। এ নির্বাচন ৫ জানুয়ারির জাতীয় আর ঢাকার মেয়র নির্বাচনেরই আরেকটি মডেল। জনগণের ভোটাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে দেশকে সার্বিকভাবে মতাসীনরা কোথায় ফেলে রেখেছে, ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের এ ঘটনা তারই প্রতিফলন। তবে লোক দেখানো হলেও একটি উš§à§à¦•à§à¦¤ নির্বাচনের মাধ্যমে এভাবে নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ ইতিবাচক। এভাবে এক সময় ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনে পূর্ণ গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হবে।

ছাত্রলীগের নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে এ সংগঠনের সাবেক কয়েকজন নেতা ও অন্য ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন শীর্ষ নেতার প্রতিক্রিয়ায় এমন মতামত উঠে এসেছে। তারা আরও বলেছেন, যে প্রক্রিয়ায় ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতা নির্বাচিত হয়ে আসুক, ছাত্র রাজনীতির অতীত ঐতিহ্য সমুন্নত আর ক্যাম্পাসে সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় তারা ভূমিকা রাখবেন- এমনটা প্রত্যাশাও করছি।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমি ২৫ বছর আগে ছাত্রলীগ করেছি। ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের এ ঘটনা ইতিবাচক। গত কয়েকটা সম্মেলন ও নেতা নির্বাচন এভাবে হয়ে আসছে। নেতৃত্ব নির্বাচনের এ ধরনের কোনো প্রক্রিয়া আর কোনো ছাত্র সংগঠনে হয় না। এটা স্বাগত জানানোর মতো ঘটনা। এ প্রক্রিয়াকে সবার স্বাগত জানানো উচিত। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিতি-সচেতন তরুণরা ভোট দিয়ে এ নেতা নির্বাচন করেছে। সারা দিনব্যাপী ভোট হয়েছে। সবার সামনে কাউন্সিলররা ভোট দিয়েছেন। সুতরাং তারা কারও কোনো ইচ্ছা বাস্তবায়ন করেছেন বলে আমার মনে হয় না। আমি এমন অভিযোগ বিশ্বাস করি না। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গঠনতান্ত্রিকভাবে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সুখে-দুঃখে তার কাছে যায়। তিনিও তাদের খোঁজখবর নেন। আমাদের রাজনীতিও শেখ হাসিনাকে ঘিরে। তার বাইরে আর কারও অস্তিত্ব আছে বলে আমি দেখি না। সুতরাং ছাত্রলীগের এ নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আমি স্বাগত জানাই।

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বিএনপির সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভোটের মাধ্যমে যে কোনো ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচন হওয়ার ঘটনা ইতিবাচক। এটা গণতন্ত্র চর্চার নমুনা। এমন প্রক্রিয়া স্বাগত জানানোর মতো। ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের েেত্র সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদারের সিন্ডিকেটভুক্ত করার যে অভিযোগ উঠেছে, তা আমি বিশ্বাস করি না। কেননা, একজন মাত্র মানুষের পে এমন কাজ করা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা যদি এ নেতৃত্ব না চাইতেন তাহলে তার পে এমন কাজ করা সম্ভব হতো না। শীর্ষ নেতৃত্ব যা চেয়েছে, তা ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে লিয়াকত শিকদারের মাধ্যমে হয়তো বাস্তবায়িত হয়েছে। ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম বা বাহাদুর বেপারীসহ অন্যরা হয়তো ছাত্রলীগ নিয়ে ততটা খোঁজখবর রাখেন না। লিয়াকত শিকদার যেটা করেন। কিন্তু হাইকমান্ড না চাইলে একা লিয়াকতের পে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। তাই এ েেত্র আমি তাকে দোষ দিতে চাচ্ছি না। তবে এটা ঠিক, এ নির্বাচনের মাধ্যমে যেটা প্রকাশিত হয়েছে তাতে সীমিত গণতন্ত্র আর একপেশে ভোটাভুটি আমরা দেখেছি। তবে এ েেত্র ইতিবাচক দিক হলো, যে করেই হোক নিরঙ্কুশ ভোট পাওয়ায় সংগঠনে দুই নেতার নিয়ন্ত্রণও নিরঙ্কুশ হয়ে গেল। এতে করে তাদের সংগঠন পরিচালনা সহজ হবে। নিরঙ্কুশ ভোট তারা জনপ্রিয়তার কারণে পেল কিনা, সেটা এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই এখানে বিবেচ্য। আর এ কারণে নতুন নেতৃত্ব আগামীতে যাতে ছাত্র রাজনীতির জন্য ইতিবাচক কিছু করতে পারে, সে প্রত্যাশা করছি তাদের কাছে। বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচন আর ক্যাম্পাসে সহাবস্থান এবং বিশেষ করে ছাত্রদল সভাপতিকে গ্রেফতারের পর পুলিশ যে কলঙ্কজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তার প্রতিবাদ যেন তারা করে। কেননা, ছাত্রনেতা হিসেবে এ কলঙ্কতিলক থেকে তারাও মুক্ত হবে না। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, আমরা ৩ দিন আগে থেকেই জেনেছি কে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন। যদি প্রকৃত ভোটে আর কাউন্সিলরদের পছন্দে নেতৃত্ব নির্বাচন হয়েই থাকে, তাহলে ভোটের ফল প্রকাশের আগে এটা কী করে সম্ভব? আমরা জেনেছি, আওয়ামী লীগ থেকে ৩ দিন আগে যাদের নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, তাদেরই ভোট দেয়ার জন্য নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে। সুতরাং এ প্রক্রিয়ায় যে কাউন্সিল হয়েছে তা লোক দেখানো, ধোঁকাবাজির ও প্রতারণামূলক। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে দেশবাসীর অভিনন্দন পেত। আমরাও স্বাগত জানাতাম। বরং এ ধরনের কাউন্সিলে নেতা নির্বাচন মূলত ছাত্র সমাজের সঙ্গে মশকরা করা হয়েছে। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজকে প্রকারান্তরে ধোঁকা দেয়া হয়েছে। এ নির্বাচনটা তাদের ৫ জানুয়ারির প্রহসনের আর ঢাকার মেয়র নির্বাচনেরই আরেকটি মডেল। সার্বিকভাবে দেশকে মতাসীনরা যে অবস্থায় ফেলে রেখেছে, ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনেও তারা সেটাই অনুসরণ করে ছাত্র সমাজের সঙ্গে প্রতারণামূলক কাণ্ড ঘটাল। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী এ মুহূর্তে কারাগারে আছেন। অর্ধশতাধিক নেতাকে খুন করা হয়েছে। ২০ জনের অধিক গুম। আমরা যেখানে একটি মানববন্ধন করতে পারি না, সেখানে দীর্ঘ প্রস্তুতির একটি সম্মেলন করার সুযোগ কোথায়? আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের নেতাদের বয়স বেশি, কিন্তু কেউই অছাত্র নয়। আর নিয়মিত ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেয়ার নামে তারা সংগঠনটিকে হায়েনার সংগঠনে পরিণত করেছে। কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই অন্যদের ওপর। যে কারণে মায়ের গর্ভের শিশু যেমন তাদের কাছে নিরাপদ নয়, তেমনি সামান্য একটি সিগারেট বাকি না দেয়ায় দোকানিদেরও খুন হতে হয়। এমন সংগঠন আমরা চাই না।

ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি হাসান তারেক বলেন, ক্যাম্পাসে বা দেশের ভেতরে যে সীমিত গণতন্ত্র বিরাজমান আছে, কোথাও গণতন্ত্রের বালাই নেই- সেখানে মতাসীন ছাত্র সংগঠনের কাউন্সিলে এর বেশি কিছু আর কী আশা করা যেতে পারে। তবে যে করেই হোক, একটি নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্বে আসাটা আমরা স্বাগত জানাই। যদিও নির্বাচন নিয়ে যাই ঘটুক তা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারি না। তবে একটি সংগঠনের গঠনতন্ত্রে যা আছে, সে অনুযায়ী নেতা নির্বাচন হওয়ার বিষয়টিই প্রত্যাশিত। তিনি বলেন, তারপরও ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বের কাছে আমরা আশা করব, তারা প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস উপহার দেয়ার েেত্র সহায়কের ভূমিকা রাখবে।

ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সৈকত মল্লিক বলেন, ছাত্রলীগের কাউন্সিল ও নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়া কাছ থেকে দেখার সুযোগ আমাদের হয়নি। তবে গণমাধ্যম থেকে যতটুকু জেনেছি, ভোটের আয়োজন ছিল। এতে স্বচ্ছতা থাকলে তা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য ছিল। তিনি বলেন, বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন আর মেয়র নির্বাচনের প্রতিফলন এক কথায় সামগ্রিকভাবে সারাদেশে গণতন্ত্রের যে ভঙ্গুর দশা তারই হয় তো একটা প্রতিফলন এ কাউন্সিলে দেখা গেছে। এর মধ্যে অস্বচ্ছতা ছিল। এক ধরনের অগণতান্ত্রিক প্রভাবও ছিল। তারপরও আমরা প্রত্যাশা করব, নয়া নেতৃত্ব সংগঠনের পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতি সঠিক ও গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবেন। নতুন নেতৃত্বের সঠিক গণতান্ত্রিক চর্চাই আগামীতে অগণতান্ত্রিক চর্চার অবসান ঘটাবে। তারা ছাত্রলীগের মতো পুরনো সংগঠনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবেন। (সূত্র : যুগান্তর, ২৮ জুলাই ২০১৫)

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।