ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ ও ইসলামী শিক্ষা আবশ্যিক করতে হবে : ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ


৩০ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:২৪

প্রাইমারি স্কুলে গানের শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ। গত ২৫ অক্টেবর শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এ দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। সেমিনারের প্রতিপাদ্য ছিলো ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ, উচ্চমাধ্যমিক স্তরের সকল শাখায় ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং শিক্ষায় বিদ্যমান বৈষম্যের অবসানে করণীয়’।
সংগঠনের সভাপতি ড. মাওলানা একেএম মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবু হানিফ খানের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর অডিও বক্তব্য শোনানো হয়।
১৩ দফা দাবির মধ্যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ, উচ্চ মাধ্যমিকের সকল শাখায় ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা ছাড়াও রয়েছে ১ হাজার ৮৯টি তালিকাভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাকে অবিলম্বে এমপিওভুক্ত করা ও পর্যায়ক্রমে মঞ্জুরিপ্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাকে এমপিওভুক্ত করা, ফাযিল অনার্স ও মাস্টার্স স্তরের জন্য শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিওভুক্ত করা, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি চাকরিজীবীদের সমপরিমাণ ভাতা প্রদান, তিনটি সরকারি আলিয়া মাদরাসার উন্নয়ন, উচ্চশিক্ষায় সকল প্রোগ্রামে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, মাদরাসায় এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের ইনক্রিমেন্ট প্রদান, প্রতি উপজেলায় ও জেলায় মাদরাসা শিক্ষা অফিসার নিয়োগ, কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয় অনার্স কোর্স খোলার দাবি।
সেমিনারে আলোচনা করেন মাদরাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ প্রফেসর মাওলানা মুহাম্মদ ওবাইদুল হক, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমির ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আ ন ম মাসউদ হোসাইন আল-কাদেরী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ধর্মতত্ব অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রুহুল আমিন, চট্টগ্রাম বিশ্বাবদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. শহিদুল হক, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, অধ্যক্ষ এস এম আব্দুল হামিদ, অধ্যক্ষ মাওলানা মজির উদ্দিন, মাওলানা আ ন ম মাহবুবুর রহমান, মুফতি মাওলানা উসমান গনি সালেহী, মাওলানা মোহাম্মদ নুরুল্লাহ, মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, নূর মোহাম্মদ, কবি আবু জাফর সালেহী, মাওলানা শরীফ মো. আবু হানিফ, আ জ ম সাখাওয়াত হোসেন, ড. মুহাম্মদ লোকমান হাকীম, নাগরিক মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক আহসান উল্লাহ শামীম। উপস্থিত ছিলেন ড. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী দলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হুমায়ুুন কবির, ইসলামী বুদ্ধিজীবী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাদী জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাজিমুল হক প্রমুখ। সেমিনারে দোয়াগীর ছিলেন দুধমুখা দরবার শরীফের পীর শায়েখ মাওলানা লোকমান হোসাইন। দাবিনামা পেশ করেন মাওলানা মুহাম্মদ আখতার ফারুক, নিবন্ধ পাঠ করেন সাংগঠনিক সচিব মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া।
ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের সভাপতি এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিভাগে ইসলামী শিক্ষা নেই। মানবিক বিভাগে ১৭ বিষয়ের মধ্যে ঐচ্ছিকভাবে একটি হলো ইসলাম শিক্ষা। অন্য ১৬টির যেকোনো একটি গ্রহণ করলে ইসলাম শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজন নেই। তাহলে লাখ লাখ মুসলমানের সস্তানেরা ইসলাম শিক্ষা কোথায় পাবে?’
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ আবু হানিফ খান বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক না থাকায় অনভিজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে ধর্ম বিষয় পড়ানোর ফলে ভুল ও ধর্মবিদ্বেষ ছড়ানোর মতো পাঠদান করার প্রমাণ রয়েছে। ইসলামের সঠিক শিক্ষা আদর্শ দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি করে। অপরদিকে ইসলামের ভুল বার্তা ও শিক্ষার ফলে উগ্রবাদ সৃষ্টি হতে পারে। তাই ইসলামের নির্ভুল শিক্ষা দিতে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে’। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।