জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা, মানুষ হারানো ভোটাধিকার ফিরে পাবে —এটিএম আজহারুল ইসলাম


২৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৫৫

রংপুর সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রংপুর-২ বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ নির্বাচনী আসনে মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী ঘটনা। এর মাধ্যমে দেশের মানুষ হারানো ভোটাধিকার ফিরে পাবে। তিনি গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের বেলতলি মেডিকেল মোড় এলাকায় পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। স্থানীয় ইউনিয়ন জামায়াত আয়োজিত পথসভায় সভাপতিত্ব করেন কুর্শা ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মোহাম্মদ মোহছেনুল হক প্রামাণিক।
এটিএম আজহারুল ইসলাম এর আগে একই দিন বিকেলে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর মাদরাসা মাঠে মোহসিনুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় ইউনিয়ন শাখা মহিলাদের পৃথক সমাবেশে বক্তব্য দেন। এসব সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর বদরগঞ্জ উপজেলা নায়েবে আমীর শাহ্ মুহাম্মদ রুস্তম আলী, তারাগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর এস এম আলমগীর হোসেন, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা ইয়াকুব আলী, ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাওলানা আল আমীন এসময় বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেশী ভারত পদ্মায় ফারাক্কা বাঁধ এবং তিস্তায় গজলডোবা বাঁধ দিয়ে আমাদের এ অঞ্চলকে পানিশূন্য মরু এলাকাায় পরিণত করেছে। তিনি বলেন, আগামীতে জনগণ যদি জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেয়, এবং আমি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবো। বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করবো। স্বাস্থ্যসেবা এবং এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদরাসার কল্যাণে কাজ করবো, ইনশাআল্লাহ। আমরা সততার সাথে সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর নির্দেশিত পথে জনগণের আমানত যথাযথভাবে সংরক্ষণ করবো।
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অনেক আলেম, যুবক, নারী শিশুকে নির্বিচারে হত্যা এবং গুম নির্যাতন করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দেশ আজ জুলুমমুক্ত হয়েছে। তিনি আগামী নির্বাচনে দেশ এবং সমাজে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠারে লক্ষ্যে ইসলামী শক্তির পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
এলাকাবাসীর উদ্দেশে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, অনেক দল দেখেছেন, এবার জামায়াতে ইসলামীকে দেখেন। আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে সরকারি বরাদ্দের আমানত জনগণের কল্যাণের কাজে ব্যবহার করবো, ইনশাআল্লাহ।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে স্থানীয় উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ওপর সীমাহীন জুলুম অত্যাচার এবং সম্পদ লুটপাট করেছে বলেই গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
তিনি বলেন, জামায়াত কোনো অন্যায় করেনি বলে দলের কোনো নেতা দেশ ছেড়ে পালায়নি। জামায়াত নেতৃবৃন্দ দেশের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে জীবনের ভয় উপেক্ষা করে দেশেই ছিল। দলের ১১ জন নেতাকে বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। আমাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় ১৪ বছর জেলে রেখেছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বেঁচে আছি। আপনাদের সামনে কথা বলছি।
দামোদরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান লাভলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বদরগঞ্জ উপজেলার শাখা জামায়াতের নায়েবে আমীর শাহ্ মোহাম্মদ রুস্তম আলী, উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা মোহাম্মদ মিনহাজুল ইসলামে, ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
এটিএম আজহার বলেন, আওয়ামী লীগের নতজানু সরকার কখনো তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি। ফলে তিস্তা ব্যারাজ পানিশূন্য হাহাকার হয়ে পড়েছে। তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ট্রানজিটের নামে নামমাত্র মূল্যে করিডোর দিয়ে দেশের র্স্বাথ এবং অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি করেছে। সীমান্তে বাংলাদেশিদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে বিএসএফ। এ ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে দেশের সকল সচেতন নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এজন্য সৎ মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী সারা দেশে এই সৎ মানুষদের মনোনয়ন দিয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জামায়াত এই সৎ মানুষদের নিয়ে শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়বে।