পার্বতীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান

৩৩ বছরেও ভবন পায়নি সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়


২৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৪৮

মুহাম্মদ তাজকীর হোসাইন, পার্বতীপুর : শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, সেই মেরুদণ্ড বুনিয়াদি স্থানটিই এখন থুবড়ে পড়ছে। এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের খয়েরপুকুর হাটসংলগ্ন সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়টি অবস্থিত। বর্তমান স্কুলটির ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৮০৪। বিগত বছরের বার্ষিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৮। আর পাসের হার ৮৭ শতাংশ। শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা ২৩। ১৯৯২ সালে প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চলে গড়ে ওঠা বিদ্যালয়টি ১ একর ৫৫ শতক জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। প্রধান শিক্ষক জানান, পার্বতীপুর উপজেলার অন্তর্গত অত্র বিদ্যালয়টি ১৯৯২ সালে স্থাপিত হয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষক ও দক্ষ কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠালগ্নে নিম্ন মাধ্যমিক চালু করা হলেও ১৯৯৪ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে অনুমোদিত হয়। তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্নে নিজস্ব ব্যয়ে নির্মিত বিদ্যালয়ের কক্ষগুলো প্রায় পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টি নিভৃত পল্লীতে অবস্থিত। এরপর ২০২২ সালের ২ আগস্ট নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য একটি ডিও লেটার নামকাওয়াস্তে দেন তৎকালীন এমপি প্রয়াত মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।
তিনি তার ডিও লেটারে উল্লেখ করেন, পার্বতীপুর উপজেলার ‘সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়টি’ ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী এবং দক্ষ ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক পরিচালিত। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮০৪ এবং পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক। এমপিওভূক্ত বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের তুলনায় শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা কম থাকায় পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। সে কারণে একটি নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা প্রধান প্রকৌশলী শিক্ষা ভবন ১ নম্বর আব্দুল গনি রোড ঢাকা-১০০০ কে জানান।
স্কুলের এ জরাজীর্ণ দুরবস্থায় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ তুলে বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল যুগে ভাঙাচুরা শ্রেণি কক্ষে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। আমরা এমন পরিবেশ চাই না। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে বিনীত আবেদন, তিনি যেন আমাদের স্কুলের বিল্ডিং দ্রুত তৈরি করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।’ ওই বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক বলেন, খুব কষ্ট করে আমাদের ছেলে মেয়েরা প্রতিকূল অবস্থায় স্কুলটিতে লেখাপড়া করছে। সরকারের উচিত লেখাপড়ার মান উন্নয়নে বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণ করে দেয়া।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল কবির আক্ষেপ করে বলেন, ৩৩ বছরেও বিল্ডিং হলো না। এর বড় কারণ আমরা বিএনপি করি তাই বিদ্যালয়টির বিল্ডিং করেনি বিগত আওয়ামীলীগ সরকার। ওই ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত চেয়ারম্যান মো. মোজাহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, আমার জানা মতে ঐ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ভাঙা শ্রেণি কক্ষে পড়াশোনা করছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ কেউ আমার কাছে আসেনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার যেকোনো সহযোগিতা চাইলে আমি সবধরণের সহযোগিতা করব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মেরাজুল ইসলাম বলেন, স্কুলের বিল্ডিংয়ের বিষয়টির সম্পর্কে আমার তেমন কিছু জানা নেই। কারণ আমার এখানে আসা বেশি দিন হয়নি। তবে বিল্ডিংয়ের সিরিয়ালে সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম আছে কিনা সেটা আমি দেখবো।