সিলেটের ৬ সংসদীয় আসনের নির্বাচনী হালচাল ভালো ফল পাওয়ার প্রত্যাশা জামায়াতের
৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৩১
আবদুল বাছেত মিলন, সিলেট : কোটি প্রবাসীর জন্মভূমি এবং রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার সিলেট আধ্যাতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সৌন্দর্যের লীলাভূমি এবং দ্বিতীয় লন্ডন হিসেবে খ্যাত সিলেট। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সরগরম হয়ে উঠেছে সিলেট। ব্রিটিশ আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে সিলেটবাসী ও প্রবাসীদের রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা। রাজনৈতিক সচেতন এ ভূমি থেকে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেক বিশিষ্টজন। সেদিক থেকে রাজনীতির উর্বর ভূমি সিলেট।
সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে সিলেট জেলায় রয়েছে ৬টি আসন। এরমধ্যে সিলেট-১ (সিটি করপোরেশন-সিলেট সদর) আসনটি মর্যাদাপূর্ণ স্পেশাল আসন হিসেবে বিবেচিত। শাহজালালের পুণ্যভূমির এ আসনে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন। জাতীয় নির্বাচনে সিলেট থেকে প্রচারণা শুরু করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতারা।
আগামী ২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন দলের প্রধান রাজনৈতিক দল জামায়াত ও বিএনপিসহ বিভিন্ন ইসলামিক ও নতুন দলগুলোর মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ-প্রচার প্রচারণা শুরু হয়েছে।
প্রতিটি আসনে দেশের এবং প্রবাসের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। তারা বিভিন্নভাবে নিজ নিজ দলীয় মনোনয়ন আদায়ে বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা এবং যোগাযোগ চালাচ্ছেন। বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সংখ্যাই বেশি। তবে জামায়াতে ইসলামী আসনভিত্তিক একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ইসলামী সংগঠনগুলো তাদের মাঠ এখনো সেভাবে গোছাতে পারেনি। মূলত মাঠে এখন জামায়াত ও বিএনপির প্রার্থীরাই রয়েছেন।
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পরপরই বিএনপির মনোনয়ন পেতে আগ্রহীরা তৎপরতা শুরু করেন। লন্ডন-ঢাকায় যোগাযোগ রাখছেন এবং স্থানীয় পর্যায়ে শুভেচ্ছা বিনিময় ও নিজ সমর্থকদের মধ্যে আলোচনা করে প্রার্থিতা পেতে কেন্দ্রীয় বোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণেরও চেষ্টায় রয়েছেন।
সিলেট-১ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন কাকতালীয়ভাবে সেই দলেই দলীয় সরকার গঠন করে। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগ থেকে একটিমাত্র (সিলেট-১) আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হন মরহুম খন্দকার আব্দুল মালিক। সেবার বিএনপি সরকার গঠন করে। এরপর ধারাবাহিকভাবে এ মিথ সত্যি হয়ে আসছে। ১৯৯৬ সালে মরহুম হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী সিলেট-১ থেকে নির্বাচিত হলে প্রথমবারের মতো একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরে। আবার ২০০১ সালে এম সাইফুর রহমান বিজয়ী হলে বিএনপি আবারও সরকার গঠন করে।
আগামী নির্বাচনে সিলেট জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের ৫ জন উপদেষ্টা এবং তারেক রহমানের দুই উপদেষ্টাসহ দলীয় ২৯ প্রার্থী নির্বাচনের প্রত্যাশা নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন। যদিও এখন পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে কারো নাম ঘোষণা করা হয়নি। আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী মাঠে নেই। আমি-ডামি নির্বাচনে বিজয়ী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন গণঅভ্যুত্থানের পর আত্মাগোপনে থেকে সুযোগ মতো দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে বিএনপির চেয়ারপারসনের দুই উপদেষ্টা সরাসরি লড়াইয়ে নেমেছেন। ওদের একজন খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। যিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। অপর প্রার্থী সিলেট সিটি করপোরেশনের দুবারের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। যিনি সম্প্রতি লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের সাক্ষাতের পর সিলেট-১ আসনে নির্বাচনের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
এছাড়া জিয়া পরিবারের; বিশেষ করে সিলেটের কৃতিসন্তান বেগম খালেদা জিয়ার পূত্রবধু ড. জুবাইদা রহমানকে প্রার্থী করার জন্য একটি মহল চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। প্রার্থিতার আহ্বান জানিয়ে মিছিল ও পোস্টারিং করা হলেও জুবাইদা রহমান সাড়া দেননি। ১৭ বছর পর শ্বাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেশে ফিরে ঢাকায় অবস্থান করেই তিনি লন্ডনে ফিরে গেছেন। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির। গড়ে প্রতি আসনে ৫ জন করে প্রার্থী রয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামী আসনভিত্তিক একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তারা নিজ নিজ এলাকায় সক্রিয়ভাবে তৎপর রয়েছেন। সিলেট-১ আসনে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে তিনি নিয়মিত গণসংযোগ চালাচ্ছেন। এসব গণসংযোগ কর্মসূচিতে স্থানীয় ব্যবসায়ী, তরুণ, যুবক, প্রবীণ ভোটারসহ নানা শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। মাওলানা হাবিবুর রহমান ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং স্থানীয় জনসাধারণের কাছে দোয়া ও সমর্থন প্রার্থনা করেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের প্রতীক, ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হবে।’
রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৮২ সালে জামায়াতে যোগ দেন। এরপর উপজেলা ও মহানগর পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণবিরোধী আন্দোলনহ সবকটিতেই নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে দীর্ঘদিন তিনি সরকারের নজরবন্দী অবস্থায় ছিলেন। এ সময়ে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, বাসাবাড়ি ও অফিসে নানামুখী পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয়েছে তাকে। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং তার প্রতিষ্ঠান ইবনে সিনা হাসপাতাল সিলেট লিমিটেডে আহত ছাত্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
বর্তমানে সিলেট-১ নির্বাচনী এলাকায় জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি নগরীতে বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগেও অংশ নিচ্ছেন। মাওলানা হাবিবুর রহমানের পূর্বে সিলেট-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত ছিল দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এবং ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের।
এর আগে মাওলানা হাবিবুর রহমান ২০০৮ সালের নির্বাচনে সিলেট-৬ আসন (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) থেকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন।
এনসিপির একাধিক সূত্র জানায়, আসনভিত্তিক কোনো প্রার্থীর ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিলেট-১ আসনে এনসিপির কোনো প্রার্থী নেই। তবে নিজ নিজ এলাকায় কয়েকজন গণসংযোগ করছেন।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং প্রবাসী বিএনপি নেতারা। প্রবাসী মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন- যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার এম এ সালাম, তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা লন্ডন প্রবাসী হুমায়ুন কবির, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মরহুম হারিছ চৌধুরীর কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী, যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হেমলেটের সাবেক কাউন্সিলর অহিদ আহমদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (শাকসু) সাবেক জিএস মো. নুরুজ্জামান জামান, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী হেলাল উদ্দিন আহমদ ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে যুক্তরাজ্যে কাউন্সিলার পপি খান।
৫ আগস্টের পর থেকে প্রবাসী নেতারা ছুটে আসছেন দেশে এবং নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণায় সময় দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তারা নানামুখী কর্মকৌশল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে নিজ নিজ সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে পরিচিতি সভা বিভিন্ন সামাজিক ও দলীয় কর্মসূচিতে যোগদান, গণসংযোগ, ইফতার মাহফিল ও সভা সমাবেশের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থিতার জানান দিচ্ছেন।
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর)
সিলেটের অন্যতম আলোচিত আসন সিলেট-২ (ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথ)। এ আসনের সাবেক এমপি ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আলোচিত নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী। তিনি শুধু নির্বাচনী এলাকায় নয়, গোটা সিলেটে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে ভারতের টিপাইমুখ বাঁধ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে দেশবাসীর দৃষ্টি কাড়েন তিনি।
ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার সহধর্মিণী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার তাহসিনা রুশদীর লুনাকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। পরবর্তীতে বিএনপি এ আসন জোটের প্রার্থী হিসেবে গণফোরামকে ছেড়ে দেয় এবং বিএনপির সমর্থনে গণফোরামের মোকাব্বির হোসেন খান নির্বাচিত হন।
প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা দীর্ঘদিন ধরে একক নেতৃত্ব ধরে রেখেছেন। তবে সম্প্রতি তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও লন্ডন প্রবাসী হুমায়ুন কবিরের নামও আলোচনায় এসেছে। তিনি নির্বাচনী এলাকায় যাতায়াত বাড়িয়েছেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। তাকে লুনার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই ধরা হচ্ছে। তবে মাঠপর্যায়ে লুনাই সাংগঠনিক কার্যক্রমে বেশি সক্রিয়।
বিগত নির্বাচনে বিজয়ী মোকাব্বির হোসেন এবং ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী উভয়েই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। নির্বাচনী এলাকায় তাদের নিয়ে কোনো আলোচনা নেই।
সিলেট-২ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী হিসেবে আছেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুল হান্নান। তিনি সিলেট বিভাগ বাস্তবায়ন আন্দোলনসহ বৃহত্তর সিলেটের শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি এ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
শিক্ষা ও সমাজসেবায়ও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরসহ সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় এক ডজনেরও বেশি শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তার অবদান রয়েছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর থেকে তিনি সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করা ও ভোটার-কর্মী টানার লক্ষ্যে নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
অন্যদিকে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ মুনতাসির আলীও মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি দলীয় অথবা জোটের প্রার্থী হওয়ার আশায় এলাকায় গণসংযোগ, মতবিনিময়, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান, এমনকি ঈদ উৎসবেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন।
বর্তমানে সিলেট-২ আসনে অন্য কোনো দলের প্রার্থীর তৎপরতা মাঠপর্যায়ে লক্ষ করা যাচ্ছে না। তবে নির্বাচন ঘনিয়ে এলে প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ)
সিলেট সদর আসনের পাশেই সুরমা-কুশিয়ারা নদীবেষ্টিত সিলেট-৩ আসনটি সবসময় আলোচনায় থাকে। এবারও এ আসনে বিএনপির ভিআইপি প্রার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। পাশাপাশি জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (যুব বিভাগ) সিলেট জেলার সভাপতি ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ। তিনি নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। নারী-পুরুষ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দোয়া ও সমর্থন কামনা করছেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচারণা জোরদার করেছেন। দিন দিন তার জনসমর্থন বাড়ছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকাও দীর্ঘ। তাদের মধ্যে রয়েছেন- আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য। এম এ মালেক, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম এ সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা। ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম হক আদনান, সিলেট মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিএনপির প্রবীণ নেতা মরহুম এম এ হকের পুত্র। আবদুল আহাদ খান জামাল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক। এর মধ্যে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীকে অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন জনবান্ধব নেতা, ফ্যাসিবাদের কঠিন সময়ে জেলার হাল ধরে রেখেছেন। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ১২ মার্চ পর্যন্ত তিনি সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বও পালন করেছেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে তিনি সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের রাজনৈতিক সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সিলেট জেলা খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দিলোয়ার হোসেন। নতুন দল এনসিপি এখনো দলীয়ভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত না নিলেও, যুক্তরাজ্য প্রবাসী দলের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ সিলেট-৩ আসনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ আসনে বিএনপির সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী ডামি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ডামি নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়া হাবিবুর রহমান হাবিব ৫ আগস্টের পর থেকে দেশ ছেড়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। ফলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাঠে তেমন কোনো কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। সব মিলিয়ে সিলেট-৩ আসনে বিএনপির একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় তাদের ভেতরেই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জামায়াত ও খেলাফত মজলিসও এখানে সক্রিয় থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা চতুর্মুখী হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর)
সিলেটের উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ ও পর্যটনখ্যাত কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর নিয়ে গঠিত সিলেট-৪ আসন (সংসদীয় আসন নং ২৩২)। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাফলং, আলোচিত পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর, রাতাগুল, বিছনাকান্দি, উৎমা ছড়া, পান্থুমাইসহ অসংখ্য পাথর কোয়ারি ও পর্যটন স্পট এ আসনের অন্তর্ভুক্ত। এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ অন্তত ৫ জন এবং জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ জয়নাল আবেদীন ইতোমধ্যে সক্রিয় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় তিনি ব্যাপক ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, এবার তার বিজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য দলগুলোর প্রার্থীরা এখনো তেমন কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি।
সম্ভাবনাময় এ আসনটিতে প্রার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত ১৫ বছর ধরে বৈধ-অবৈধ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে জয়ী হয়েছে। তবে এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী এমরান আহমদ বর্তমানে হত্যা ও টাকা পাচারসহ একাধিক মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ও তার ঘনিষ্ঠ মহল এ আসনের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাট করেছেন।
আসন্ন নির্বাচনে এ আসনটিকে ঘিরে বিএনপির একাধিক প্রার্থীর দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে তারা সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মনোনয়নের জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, তরুণ রাজনীতিবিদ ও সাবেক ছাত্রনেতা মিফতাহ্ সিদ্দিকী। তিনি এম সাইফুর রহমান কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এবং দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত। আন্দোলনের সময়ে দায়িত্বশীল ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়েছেন। কিছুদিন তিনি মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন। সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা বদরুজ্জামান সেলিম। তিনি দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে নির্বাচনকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও গোয়াইনঘাটের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী। সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী হেলাল উদ্দিন আহমদ। সাবেক ছাত্রদল নেতা, সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও এডিশনাল পিপি এডভোকেট আল আসলাম মুমিন। তারা সকলে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে জামায়াত-বিএনপির বাইরে এখনো তেমন তৎপরতা নেই। তবে নতুন দল এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা ফয়ছল আহমেদ রুবেল ব্যক্তিগতভাবে এ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট)
সিলেট-৫ আসন জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট নিয়ে গঠিত। এ আসন দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী দলগুলোর শক্তিশালী ঘাটিরূপে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন ইসলামী দল যেমন জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এবং আনজুমানে আল ইসলাম সক্রিয়। তবে জামায়াতে ইসলামী সর্বদা শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। রাজনৈতিক ইতিহাসে সিলেট-৫ আসনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।
সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন খান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় তিনি ও জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনগুলো ত্রাণ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ডা. শফিকুর রহমান ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করেছেন। হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসেন খান ত্রাণ বিতরণ, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও অন্যান্য সহায়তা পৌঁছে দিয়ে জনগণের পাশে ছিলেন এবং সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
ভারতের সীমান্তসংলগ্ন এ আসনে বিএনপি দলীয় কোনো প্রার্থী ১৯৯১ সালের পর থেকে জোট ও সমঝোতার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাননি। ১৯৯১ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব মরহুম হারিছ চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তবে পরাজিত হন। এরপর থেকে জোটের প্রার্থীদেরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এবার বিএনপি প্রার্থীরা এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে একজোট হয়েছেন। জামায়াতের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী একবার সিলেট-৫ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৮ সালে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ (চাকসু মামুন)। তিনি ছাত্রজীবন থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে যুক্ত এবং কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির দীর্ঘদিনের সভাপতি। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু। কানাইঘাট উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরী। সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও মহানগর বিএনপি সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী, যিনি ফ্যাসিবাদী আমলে আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন এবং কারাভোগসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অন্যান্য আগ্রহী প্রার্থী হলেনÑ যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. নূরুজ্জামান জামান। মরহুম হারিছ চৌধুরীর কন্যা, যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী। জামায়াত-বিএনপির বাইরে অন্য কোনো দলের তৎপরতা মাঠে এখনো লক্ষ করা যায়নি।
সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ)
সিলেট-৬ আসন বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ নিয়ে গঠিত। সংসদীয় আসন নম্বর-২৩৪। এ আসন প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকায় পরিণত হওয়ায় এবার বিএনপির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী ভিআইপি প্রার্থী লড়াইয়ে রয়েছেন। দেশি ও প্রবাসী বিএনপির ৯ জন নেতা-নেত্রী দলীয় মনোনয়নের জন্য লবিং শুরু করেছেন। তারা মাঠে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাক্সক্ষী ও স্থানীয় জনতার সঙ্গে বৈঠক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকেই শিল্পপতি, বিত্তশালী ও লন্ডন-আমেরিকা প্রবাসী। জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। গ্রীন সিগনাল পাওয়ার পর তিনি সিলেটে নির্বাচনী এলাকায় রমজান থেকে ইফতার মাহফিল, গণসংযোগ, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক, রাস্তা ও শিক্ষার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজনসহ এলাকার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় কাটাচ্ছেন নিজ এলাকায়। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে নির্বাচনী এলাকায় তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবন্দ্বীদের মাঝে সম্প্রতি হুইল চেয়ার বিতরণ করেও বেশ আলোচিত হয়েছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন আন্দোলনে ঢাকায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছেন।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত ফয়সল আহমদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মো. এনামুল হক চৌধুরী আল-মাদানী, সিলেট জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, যুক্তরাজ্য প্রবাসী অহিদ আহমদ (সাবেক কাউন্সিলর, টাওয়ার হেমলেট), সিলেট জেলা বিএনপির সহ-শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ, জাসাসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে, কাউন্সিলার পপি খান, সাবেক এমপি ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেছু মিয়ার মেয়ে ব্যবসায়ী সামিরা হোসেন রয়েছেন।
কাউন্সিলার পপি খান ও ব্যবসায়ী সামিরা হোসেন সম্প্রতি নিজ এলাকায় এসে তাদের অনুসারী, শুভাকাক্সক্ষী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন এবং প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়েছেন। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মো. এনামুল হক চৌধুরীর ব্যাপক নির্বাচনী প্রচারণা ভোটারদের মধ্যে ইতোমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপির পাশাপাশি অন্যান্য প্রার্থীরাও দলীয় মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তবে এনসিপি ও ধর্মীয় দলগুলো এখনো মাঠে তৎপরতা দেখাননি।