জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে ঐকমত্য
৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:৩২
॥ হারুন ইবনে শাহাদাত ॥
দেশ ও জাতির কথা না ভেবে ব্যক্তিগত স্বার্থ ও ক্ষমতার কথা ভাবলে রাজনীতির উদ্দেশ্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হবেই। একটি মহৎ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক দল মাফিয়াদের দখলে চলে যাবেই- রাষ্ট্রচিন্তকদের এ গবেষণার বাস্তবায়ন ঘটেছে গত বছরের ৫ আগস্ট। এ সত্য প্রত্যক্ষ করার পরই জুলাই সনদ, সংবিধান পরিবর্তন এবং দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। কমিশনের কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে। জাতি প্রত্যাশার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ এবং দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাতাদের দল থেকে তাড়িয়ে মাফিয়াদের দখলে না গেলে হয়তো দুবার স্বাধীনতা লাভের পর তৃতীয় স্বাধীনতার জন্য ৫ আগস্ট বা ৩৬ জুলাই বিপ্লবের প্রয়োজন হতো না। অর্ধশতাব্দী পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনেরও দরকার হতো না। প্রাকৃতিক সম্পদ আর বিপুল জনশক্তির এদেশ থাকতো সমৃদ্ধির সুউচ্চ শিখরে। ঐকমত্য কমিশনের আপডেট আলোচনার আগে একটু নজর দেয়া দরকার আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনৈতিক দলের কাতার থেকে ছিটকে পড়লো, সেদিকে। প্রতিষ্ঠাকালীন দলটির নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক।
প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাকালে ‘মূল দাবি’ নামে ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রথম সম্মেলনে একটি ম্যানিফেস্টো (ঘোষণাপত্র) উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি ও প্রতিষ্ঠাতা অন্য নেতারা অখণ্ড পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ ও পাকিস্তান)-এর মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য যে কল্যাণরাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নে শরিক হয়েছিলেন অন্য নেতারাও। তাঁদের সেই স্বপ্নের রাষ্ট্রের যে বৈশিষ্ট্য দলটির প্রথম ম্যানিফেস্টোতে উল্লেখ করা হয়েছিল, তা হলো- ১. পাকিস্তান খেলাফত অথবা ইউনিয়ন অব পাকিস্তান রিপাবলিক ব্রিটিশ কমনওয়েলথের বাইরে একটি সার্বভৌম ইসলামী রাষ্ট্র হইবে। ২. পাকিস্তানের ইউনিটগুলোকে আত্মনিয়ন্ত্রণের পূর্ণ অধিকার দিতে হইবে। ৩. রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব আল্লাহর প্রতিভূ হিসেবে জনগণের ওপর ন্যস্ত থাকিবে। ৪. গঠনতন্ত্র হইবে নীতিতে ইসলামী গণতান্ত্রিক ও আকারে রিপাবলিকান। (সূত্র: স্বাধিকার আন্দোলন ও শামসুল হক পৃষ্ঠা-৫৮, লেখক: মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর)। পরের ইতিহাস সবার জানা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক দুজনই দলটিতে টিকতে পারেননি। কারণ মাফিয়া চক্রের হাতে নেতৃত্ব চলে যায়। তারা হিটলারের কায়দায় রাজনীতিতে সন্ত্রাসবাদের আমদানি করে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের চরিত্র হারায়। ফ্যাসিবাদকে দর্শন হিসেবে নিয়ে গণতন্ত্র ও পরমতসহিষ্ণুতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যেকোনো মূল্যে ক্ষমতা দখল ও চিরস্থায়ী মিশনে নামে। জনগণকে প্রজা এবং নিজেরা মালিক রাজা সেজে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছিলো। এভাবে আর কোনো রাজনৈতিক দল যেন ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে, সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ঐকমত্য কমিশন।
ঐকমত্য কমিশনের সূচনা পর্ব
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে কমিশন গঠনের পর কাজ শুরু করেছে সরকার। কথা ছিলো ৬ মাসের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবেন। রিপোর্টের পর সংস্কারের আলোকে জুলাই ঘোষণা ও সনদ উপস্থাপন করা হবে। সেই আলোকে সংস্কারের পর জাতীয় নির্বাচনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সমাপ্ত করে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। কিন্তু বছর শেষ হতে চলছে তারপরও ঐকমত্য হয়নি। এ প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে, তারপর দিন আবার বসার কথা আছে। তবে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলের নেতারা বাস্তবায়ন পদ্ধতি ছাড়া অন্যসব বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বর্তমান পর্যায় ও সহ-সভাপতির বক্তব্য
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলেও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে একাধিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রস্তাব দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত ৫ অক্টোবর রোববার কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, মূলত সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর মতপার্থক্য কতটা কমেছে। খুব শিগগির জাতীয় ঐকমত্য কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে জুলাই সনদের বিষয়বস্তু এবং এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাবসহ এ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের অবস্থান সম্পর্কে সভাকে অবহিত করা হয়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি কমিশনের সদস্যদের ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানান। কমিশনের কাজের চূড়ান্ত অগ্রগতি সম্পর্কে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁকে জানানোর নির্দেশনা দেন তিনি। কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্য কমিশন সব রাজনৈতিক দল থেকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা পেয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যমগুলো ঐকমত্য কমিশনকে অকল্পনীয় সমর্থন দিয়েছে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ছয়টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমরা বলেছিলাম, এই ছয়টি প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে যদি এটাকে এক জায়গায় আনা যায়। উপস্থিত ৩০টি রাজনৈতিক দল যদি একটি প্রস্তাব দেয়, তাহলে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সানন্দে সেই প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারব। আমরা বলব, সেই একটি প্রস্তাব আছে, এটা বাস্তবায়নের পথ; এভাবে আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) বিবেচনা করতে পারেন।’ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বরের আলোচনায় যেসব বিষয় উঠে এসেছিল, সেগুলো বিশেষজ্ঞদের জানিয়েছেন বলে জানান ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি। তিনি বলেন, তারই ভিত্তিতে তাঁরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের আগের অবস্থানকে ব্যাখ্যাও করেছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে একমত হওয়ার জায়গা তৈরি হলে এটা বাস্তবায়ন করা সহজতর হবে। দ্রুততার সঙ্গে করা সম্ভব হবে।’ ১৫ অক্টোবরের আগে এ প্রক্রিয়া শেষ করার ওপর জোর দেন আলী রীয়াজ। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক ব্যস্ততা আছে। নির্বাচনী প্রস্তুতি আছে। আপনারা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন, সেগুলো যেন বাধা-বিঘ্ন না হয়, সেটা আমরা করতে চাই। তাছাড়া মেয়াদের দিক থেকে ১৫ অক্টোবরই মেয়াদ শেষ হবে। তারও আগে আমরা এটা শেষ করতে চাই।’
গণভোট করার বিষয়ে ঐকমত্য, তবে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সম্মতি নিতে গণভোট করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তবে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি জুলাই জাতীয় সনদ। এর খসড়া চূড়ান্ত হলেও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। এ কারণে আটকে আছে জুলাই সনদ। গণভোট কখন কীভাবে হবে, তা নিয়ে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত আছে।
গত রোববারের আলোচনায় বিএনপি বলেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট হতে পারে। গণভোটে এটি পাস হলে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য থাকবে। তবে যারা জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হবে, তারা তাদের নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমত অনুসারে সনদ বাস্তবায়ন করবে। গণভোটের জন্য সংবিধান আদেশ জারি বা সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার প্রয়োজন হবে না। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ও তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলই একমত হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী বলেছে, যেহেতু সব বিষয়ে সবাই একমত হতে পারছেন না, তাই গণভোট হতে পারে। তবে তারা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। কোনো কোনো দলের ভিন্নমত ‘বাইন্ডিং’ (মানার বাধ্যবাধকতা) নয় বলে মনে করে দলটি।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বলেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে পারে। তবে তার আগে অবশ্যই জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে একটি সংবিধান আদেশ জারি করতে হবে।
কমিশনের বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের বক্তব্য
রোববার ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যদি জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট করা হয়, তাহলে সংবিধান আদেশ বা সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ জনগণ হচ্ছে সুপ্রিম।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যাতে ম্যান্ডেটের অভাব না হয়, জনগণ এটা সমর্থন করে কি না, সে অনুমতির জন্য গণভোট হবে। জাতীয় নির্বাচনের দিন আলাদা একটা ব্যালটে জনগণের মত নেওয়া যায়। তাতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক হবে এবং সার্বভৌম ক্ষমতার একটা রায় সেখানে প্রতিফলিত হবে। তখন বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে আর কেউ সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হলে আরেকটি সুবিধা হবে, জাতীয় নির্বাচনের মতো আরেকটি বিশাল নির্বাচন করতে হবে না।
গণভোটের প্রশ্ন কী হবে, সে প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জনগণ ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলবে। তিনি আশা করেন, জনগণ ‘হ্যাঁ’ বলবে।
আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, যেহেতু সবাই সব বিষয়ে একমত হতে পারছেন না, তাই এগুলো গণভোটে দেওয়া যায়। জনগণ যে রায় দেবে, সেটা তাঁরা মানবেন। তিনি বলেন, সংবিধান আদেশের মাধ্যমে গণভোট করা হলে সেটা শক্তিশালী হবে। গণভোটের প্রক্রিয়া নিয়ে আরও আলোচনা হতে পারে।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, গণভোটের বিষয়ে এক ধরনের ঐকমত্য হয়েছে। এটা করা গেলে ভালো। আরপিও সংশোধন নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদের প্রস্তাবের সঙ্গে তিনি একমত। জামায়াত নেতা আযাদ বলেন, সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সনদের ভেতরই থাকবে। জুলাই সনদ জনগণ অনুমোদন করে কি না, এটা নিয়ে হবে গণভোট। এটা হলে জুলাই সনদের শক্তিশালী আইনি ভিত্তি হবে। আগে গণভোট হয়ে যাক।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘জনগণ গণভোটে অভ্যস্ত না। আমরা মনে করি, এটা জাতীয় নির্বাচনকে কোনো ধরনের সমস্যা করা ছাড়াই নভেম্বর অথবা ডিসেম্বরে করতে পারে। তফসিলের আগেও করতে পারে। গণভোট হয়ে গেলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে কোনো ধরনের বাধা নাই। জনগণকে একটা জটিল অবস্থায় ফেলে না দিয়ে, মহাপরীক্ষায় না ফেলে সহজভাবে এগোলে আমরাও বাঁচি, জাতিও বাঁচে।’
আলোচনায় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, গণভোটের আগে অবশ্যই জুলাই সনদকে একটি লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের (এলএফও) মধ্যে আনতে হবে। সুনির্দিষ্ট করা লাগবে কত দিনের মধ্যে কী হবে। আগামী নির্বাচন অন্যান্য জাতীয় নির্বাচনের মতো হবে না। এটা হবে আলাদা। তাদের মৌলিক কাজ হবে মৌলিক পরিবর্তন আনা। প্রথমে সংবিধান আদেশ বা এলএফও- যে নামেই হোক ঘোষণা দিতে হবে। সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিরা দ্বৈত ভূমিকা পালন করবেন। সংবিধান সংস্কার তাঁদের এখতিয়ার থাকবে।
গত রোববারের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি আইনজীবী শিশির মনির বলেন, সোজাসাপ্টা পথ হলো জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা। সেখানে ভিন্নমতের বিষয়টি আসতে পারে। ভিন্নমত ‘বাইন্ডিং’ (মানার বাধ্যবাধকতা) নয়। যেহেতু দেশের মালিক জনগণ, তাই গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিলে তা কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। কিন্তু ঝিকঝাক পথে হাঁটলে পরে সমস্যা হবে।
শিশির মনির তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে চারজন বিচাপতির সিদ্ধান্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল। তিনজন পক্ষে ছিলেন। তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদনের জন্য গণভোট হতে পারে।
ঐকমত্য একাধিক প্রস্তাব
সকালে আলোচনার শুরুতে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে একাধিক পদ্ধতি সুপারিশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।