আলোর পথে


৪ জুন ২০২৫ ১২:৩০

॥ শাহানারা স্বপ্না ॥
হাঁড়িকুড়ি-ই, হাঁড়িকুড়ি ই- ই- ই-!-!
লম্বা টানের সুরটা কেঁপে কেঁপে অনেক দূর পর্যন্ত আছড়ে পড়ে। বাতাসের বুকচিরে সাঁই সাঁই করে ছোটা বল্লমের মতো সে ডাক গ্রাম-জনপদের নিরালা ভূমির বুকে এসে বিদ্ধ হয়। উম্মুখ হয়ে ওঠে গাঁও-গেরামের লোকজন।
জোরে জোরে ডাক ছেড়ে বলতে বলতে চৌধুরী বাড়ির বড় উঠোনে এসে থামল সুরটা।
অমনি এঘর ওঘর থেকে বাড়ির বৌ-ঝি, বাচ্চারা দৌড়ে আসে।
কালো কুচকুচে মস্ত বাঁশের ঝুড়ির ভেতর লাল টুকটুকে মাটির হাঁড়ি-পাতিল ঝকমক করছে। কারো চোখে আগ্রহ, কারো চোখে কৌতূহল।
মুড়ি ভাজার বড় পাতিল, পানির কালো কলসী, বাসন, ছোট পাতিল, ধুচুনি, সরা, ঢাকনা সবই যার যার বায়নামতো জিনিস নিয়ে এসেছে হাম্মার মা।
-‘ঐ যে আজদাহাটা আসছে’! উঠোনের দিকে তাকিয়ে বলেন বাড়ির ছোট বৌ। মুখে প্রশ্রয়ের মুচকি হাসি।
-‘আইজকা বড় মিন্নত অইছে, শরীর ভাইঙ্গা পড়তাছে গো ছোট বউমা’!
বলতে বলতে মাথার ওপর থেকে মাটির হাঁড়িকুড়ির ঝাঁকাটা নামাতে গিয়ে একটু হেলে পড়ে। তাড়াতাড়ি ছোট-বউ হাত বাড়িয়ে ধরেন। অনেক ওজন। হাঁড়িভরা বোঝাটা নামিয়েই ছোট-বউ তিরস্কারের সুরে বলেন,
-‘ছেলেকে নিয়ে আসিস্নি কেন?
-‘গেন্ডাটা যে আইবারই চায় না গো!’ ছোট-বউ মুখ ঝামটা দিয়ে ওঠেন-
-‘তা আসবে কেন? কাজ তো ভালো লাগবে না। এখন থেকে কাজ না শিখলে ও কি তোর দরদ বুঝবে? হাম্মার মা’র বুকচিরে ওঠে দীর্ঘশ্বাস।
-‘ঠিকই বলছেন গো মা’। কিন্তু মনে মনে জানে, বাপ মরা অতটুকু ছেলেকে কাজে দিতে তারই মন সরে না। ছেলের এখনো খেলে বেড়ানোর ঝোঁক। যাক না আরো কিছুদিন!
ভারী বোঝাটা মাথায় করে গ্রামের পথে পথে ঘুরে বেড়ায় হাম্মার মা। ছোট-বউ ওর প্রতি একটা মায়া অনুভব করেন। মায়া না করুণা অতকিছু বোঝে না হাম্মারমা। যাই হোক দুঃখীনীর জন্যে তাই অনেক। সওদা নিয়ে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত শরীর জুড়োবার একটু অবকাশ জোটে এখানেই। কপালে থাকলে খাওয়াও জোটে। অনেক সময় বাড়িতে রেখে আসা ছেলেটার জন্যও এটা-সেটা বেঁধে দেয় ছোট বউ। তার শাশুড়িরও ছিল দয়ার শরীর। তিনি ছিলেন মস্ত একটা বটগাছের মতো। কত লোকের যে উপকার করতেন। সবার মুখে মুখে তার নাম ফিরত। তার মতোই হয়েছে এ বউটিও। দশ বারো বছর আগে হাম্মার বাপ হঠাৎ পেটের ব্যথা উঠে মারা গেলে অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিল। হাম্মার চাচি কৈতরীর মা বলল-
-‘বড় বাড়ির বড়মা’র কাছে চল। শুনছি তার কাছে কেউ গেলে খালি হাতে ফেরায় না’।
সেই প্রথম এ বাড়িতে পা রাখে হাম্মার মা। কৈতরীর মা’ই তার হয়ে তার সর্বনাশের কথা বড়মাকে বলেছিলো। তাদের দুজনের কেউই আজ আর দুনিয়াতে নাই। কিন্তু আজও তাদের কথা মনে হলে বুকটা মুচড়ে ওঠে।
বড়মা তার হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলেছিলেন-
-‘নে ধর, কিছু তো করে খাওয়া লাগবে। কুমোর বাড়ি তো কাছেই। দিনু কুমোরের কাজ ভালো। আমি বলে রাখবোখন। ওখান থেকে কিছু হাড়িকুড়ি নিয়ে আয়। গাঁয়ের সবাই কিনে নেবে’।
সেই থেকে শুরু। তার বদৌলতে আজও দুটো পেটের ভাত জোটাতে পারছে সে।
দিনের পর দিন একটানা ফেরি করে বেড়ায়। রোদে বৃষ্টিতে হাম্মার মায়ের গৃহিণী-শরীরে কালো কয়লার রঙ ধরেছে। শ্রমে, তাপে বেঁকে-চুরে গেছে হাড়-মজ্জা। ড্যাঙা শরীর আরও লম্বা দেখায়। সেজন্য ছোট বৌ ওকে ডাকেন ‘আজদাহা’। কালো মুখে পান খাওয়া লাল টুকটুকে ঠোঁট যেন টিকের মুখের আগুন। তারই ফাঁকে ঝলসানো সাদা ঝকঝকে দাঁত, সেটাই আগে চোখে পড়ে। দিনকে দিন বোঝা বইতে গিয়ে আস্তে আস্তে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে।
বোশেখ মাসের শেষ। নতুন আমন ধান ওঠার মৌসুম। এ অঞ্চলে ঝিঙ্গাশাইল, রাজাশাইল, কটকতারা জাতের আমন ধান খুব ভালো হয়। চারদিকে পাকা ধানের মিষ্টি সোঁদা-গন্ধ। আম কাঁঠালের মৌ মৌ সুগন্ধে ভরপুর। এ সময়েই হাম্মার মা তার পশরার ভারা নিয়ে আসে। ধানের মৌসুমে জিনিসের বিনিময়ে ধান পাওয়া যায়।
তখনকার দিনের মানুষের তৈজস ছিল মাটি, পিতল আর কাঁসার। নিত্যকার ব্যবহারের জন্য লালচে মাটির হাঁড়িকুড়িই বেশি প্রিয়। এ বাড়িতে হাম্মার মা’র মাটির জিনিসের কদর অনেক বেশি। যেমন সুন্দর রঙ তেমন টেকসই।
উত্তরের কুমোরবাড়িতে এজন্য তাকে ধরণা দিয়ে পড়ে থাকতে হয়। তাদের সম্বৎসরের বায়না বাঁধা থাকেই। তার ছুটকা বায়নার জিনিস তৈরির সময় কই তাদের। বড়মা বলে দিয়েছেন বলেই দিনু কুমোর না করতে পারে না। কুমোর বাড়িতে তার অবারিত দ্বার। দরকার মতো যখন-তখন আসতে পারে, অনেক সময় বাকিও রাখতে পারে। বাড়ি বাড়ি হাঁড়িকুড়ি দিয়ে আবার টাকা আদায়ের জন্যও যাওয়া লাগে। বেশিরভাগ সময় জিনিস বাকি পড়ে যায়, তবে তাকে কেউ ঠকায় না।
খুব ভোরে উঠে রান্নার কাজ সেরে নেয় হাম্মার মা। ছেলের সারা দিনের ভাত একবারেই করে রাখে। নিজেও চাট্রি খেয়ে পথে নামে। বয়স হয়েছে এখন আর দাপিয়ে হাঁটতে পারে না। বুকে হাঁফ ধরে যায়। গাঁয়ের পথে যেতে যেতে যে বাড়ি সামনে পড়ে, ভেতরে ঢুকে পড়ে। খনিক ঝিরিয়ে নেয়। কেউ কিছু কিনুক না কিনুক, এক গ্লাস পানি, কি একটু বাতাসা দিতে কসুর করে না। এ তল্লাটে বিধবা হাম্মার মা সবার কাছেই পরিচিত।
ক’দিন ধরে হাম্মার মা ঘরেই পড়ে আছে বিছানায়। জ্বরের ঘোরে মাথা তোলাই দায়। শুকনো শরীর আরও শুকিয়ে আমসি। ঘরের সবকিছু বাড়ন্ত- কিছুই নেই। অতি কষ্টে সে উঠে বসে। কাছের তেলি বাড়িতে কিছু পাওনা আছে। পায়ে হেঁটে যেতে পারলেই হয়। টলতে টলতে সেদিকে যায় সে।
ছেলে হাম্মা এখন আর ছোটটি নেই। বারো-তেরো বছরের লায়েক হয়ে উঠেছে। কিন্তু এমন আলসে, কুটোটিও নাড়তে চায় না। সারা দিন মাঠে পড়ে হা-ডু-ডু নয়তো ডাংগুলি খেলে সময় পার করে। কাজের কথা কানের কাছেও নেয় না। কেউ বাদাইম্যা বলে ডাকলেও গ্রাহ্য নেই হাম্মার। কোনো কিছুর দিকেই খেয়াল নেই। ঘরে খাওয়া ছাড়া আর কোনো বাঁধন নেই।
দু’দিন ধরে পেটে খাবার নেই। হাম্মা অতিষ্ঠ, আর কত ভুখাপেটে থাকা যায়?
দুপুরের প্রহর শেষ না হতেই ঘরে ফেরে হাম্মা। আগুন জ্বলছে মাথায়। দিগি¦দিক দিশাহীন। দাওয়ায় মাকে দেখে হুংকার ছাড়ে হাম্মা-
-‘শিগগির ভাত দেও, প্যাডে কিন্তু ম্যালা খিদা পাইছে’!
-‘ডাঙ্গর পোলা, আর কত বইয়া খাইবি’! কথাটা শোনা মাত্র রাগে অগ্নিশর্মা হাম্মা এক ছুটে দৌড় দিল। বাঁশের মোটা কঞ্চি হাতে নিয়ে হাঁড়িকুড়ি ভাঙতে ভাঙতে চিৎকার করতে লাগল-
-‘ভাত দিবা কিনা তাই কও’? হাম্মার মা পাগলের মতো কপাল ছাপড়াতে ছাপড়াতে দুই হাতে সব বাঁচানোর চেষ্টা করতে লাগল-
-‘হা হা-হা রে! সব গেল গেল! আর একপা এগুবি তো খুন হয়্যা যাবি ক’লাম’! আইজ তোর একদিন কি আমার একদিন! জ্বরের চোটে গতরের ব্যাতায় দুইদিন ধইরা উইট্যা বসতে পারি না। তুই কি মানুষ? মা’র খবর ত রাখছ্ না আবার কছ্ ভাত দেও! ভাত তোর জন্যে কইত্থোন পামু’?
হাঁকডাক শুনে পাশের ঘর থেকে হাম্মার চাচা-চাচি বেরিয়ে আসে। হাম্মার কপাল পোড়া! চাচা যে আজ বাড়িতে কে জানতো? তিনি অনেক দূরে থকেন। মাসে মাসে একবার বাড়ি আসতে পারেন। নিজের স্বল্প আয়ে কোনো রকমে চলার চেষ্টা করেন, কোনো ধানাই পানাইতে নাই। চাচা তেড়ে আসেন হাম্মার দিকে—
-‘ওই বেদ্দব! খোদার খাসী? মা’র কাছে চাস ক্যান? তোর হাত পা নাই? কাজ করতে পারছ না? গাধা কোনহানকার!
হাম্মা ভয় পায়। দৌড় দেয় মাঠের দিকে।
নামাজ শেষে মসজিদে তালা লাগিয়ে ফিরছিলেন ছোট হুজুর। ইমাম সাহেবকে বড় হুজুর আর এলাকার ছোটবড় সবাই তাকে ছোট হুজুর বলেই চেনে। মাঠের পাশে মসজিদের উল্টোদিকে তাঁর থাকার ঘর। দুপুরের খাবার খেতে সেদিকে যাওয়ার পথে হন্তদন্ত হয়ে হাম্মার ছুটে আসা চোখে পড়লো। এতিম ছেলেটা বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়। একটু ভাবান্তর হলো তার মনে। আল্লাহর মজবুক বান্দার খোঁজখবর করা তো তার নিজেরও কর্তব্য। চোখের সামনে দেখেও চোখ বুঁজে রাখলে আল্লাহ তো নারাজ হবেন। কাল কিয়ামতে কি জবাব দেবেন? তিনি হাত ইশারায় হাম্মাকে থামতে বলেন। কাছে ডাকেন-
-কি রে? কই যাস?’
-‘কোতাও না!
-‘খাবার খাইছস?
হাম্মা চুপ করে থকে। মা’র ওপর চোটপাট করলেও সবার কাছে সে ভালো ছেলে হিসেবেই পরিচিত। ছোট হুজুর ওর হাত ধরেন-
-‘চল! আইজ আমার এখানেই খাইবি।’
হাম্মা হাত ঝাড়ি দিয়ে পালাবার কথা ভাবে। পরক্ষণেই খাবারের লোভে চুপ মেরে যায়। ছোট ঘরটার পেছনে মাটির চুলা বসানো বারান্দার মতো একটুখানি জায়গা। পরিপাটি গুছানো। এরপরেই কাছারীর বিরাট পুকুর। পেছনের খিড়কি খুলে পুকুরে ধোয়া-পাকলার কাজ করা যায়। হুজুরের সাথে সাথে হাম্মাও চুলায় আগুন জ¦ালে, খাবার গরম করায় সাহায্য করে। এটুকু কাজ করতে তার ভালোই লাগে। ছোট হুজুর মনে মনে ভাবেন, একটা বছর পর বাড়িতে থাকা নিজের ছেলেটাকে নিয়ে আসতে হবে এখানে। কিন্তু কার সাথে মিশবে, ছোট মানুষ কার সাথে খেলাধুলা করবে, এতদিন খুব চিন্তা ছিল। আজ মনে হলো হাম্মাকে তৈরি করে নিলে কেমন হয়? ওরে যদি শিখিয়ে পড়িয়ে নেয়া যায়, তাহলে তো এর চাইতে ভালো সঙ্গী আর কোথায় পাওয়া যাবে! খেতে খেতে বসে হুজুর তাকে বোঝান, সে এখন বড় হয়েছে। এখন তার নামাজ-কালামটা শেখা দরকার। কাজে সাহায্য করতে হবে মা’কে। মার তো বয়স হয়েছে। মা যাতে আর বাইরে না যেতে হয় হাম্মা ছাড়া কে তা ভাববে? তিনি গুনগুন করে একের পর এক নানা কথা বলতে থাকেন। ওর পাতে গোটা একটা ডিম তুলে দেন। হাম্মার দু’চোখ ভিজে ওঠে। এমন আদর তো কেউ তারে কখনো করে নাই! হুজুরের দরদি কথায় হাম্মার মনে বিরাট আলোড়ন তোলে। মনটা ভিজে মাটির মতো নরম হয়। মায়ের কষ্ট যেন সে আজই কেবল বুঝতে পারলো।
অপরাধী মন নিয়ে বাড়িতে যায়। কাঁথার ভেতর কুণ্ডলী পাকিয়ে একদলা কাপড়ের মতো পড়ে আছে মা। নির্জীব মায়ের দিকে তাকিয়ে হাম্মার কষ্ট আরো বাড়ে। সকালের ঘটনার জন্য আফসোস হয়। দুর্বল মা’র কম্পিত হাত ধরে বলে—
-‘মা, এহন থাইকা কাজে আমারে নিবা। অহন তো আমি বড় অইছি, আমিই কাজ কর‌্যাম’!
ছেলের মুখে এমন কথা শুনে মায়ের মনে স্নেহের বান ডাকে। আহা! এ্যাদ্দিনে সুমতি অইলো পোলাডার মনে? চোখের কোলে মেঘের বাষ্প। কখন উষ্ণ ধারায় নেমে আসে হাম্মার মা টের পায় না। হাম্মা মার কাছে বসে, পানি এগিয়ে দেয়। চাচার ঘর থেকে এটা-সেটা এনে দেয়। ঘরের বাইরে গেলে ছোট হুজুর ডেকে তাকে ছিপারা পড়ার কথা বলেন। মা’কে সেকথা বলতেই খুশির জোয়ারে মা আটখানা।
হাম্মার খবরদারিতে কয়েকদিনের মধ্যেই মা সুস্থ হয়ে ওঠেন।
পরদিন ভোরের সোনালি রোদ মেঘে ঘুম ভাঙে হাম্মার। মা’র কাছে শুনেছে আজ লালমতির বাড়িতে যাওয়ার বায়না আছে। যাবার জন্য সেও তৈরি হয়ে নেয়। হাম্মার মা’র মনে খুশি আর ধরে না। সবাইকে ডেকে ডেকে দেখাতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে বড়-বাড়িতে যাওয়ার জন্য হাম্মার মা অধীর হয়ে ওঠে। হাম্মা মা’র সাথে ঘুরে ঘুরে সবক’টা বাড়ি চিনে নেয়। কুমোরের সাথে পরিচিত হয়। কুমোর দাদা খুশিমনে তাকে আশীর্বাদ করে।
বছরখানেকের মধ্যেই হাম্মা কেনা-বেচাটা বেশ রপ্ত করে ফেলে। ছোট হুজুর কিছুতেই তার পড়ায় ছাড় দেন না। অক্ষর চেনার চেয়ে মুখে মুখে সে অনেক বেশি কিছু শিখেছে। আগের সেই চোয়াড়ে ভাব এখন আর হাম্মার মধ্যে নেই। সে অনেক শান্ত হয়ে এসেছে, আল্লাহকে ভয় করতে শিখেছে। হুজুরের কাছ থেকে শুনে শুনে আল্লাহ পছন্দ করেন না এমন কোনো কাজ সে আর করতে চায় না। হাম্মার এ পরিবর্তনে সবাই খুব খুশি। বিশেষ করে বড়-বাড়ির ছোট বউ বেজায় আনন্দিত। হাম্মার মা’কে আর ঘরের বাইরে বের না হওয়ার তাগিদ দেন। হাম্মার জন্য একসেট কাপড় কিনে ওর হাতে দিয়ে দোয়া করেন।
হাম্মা এখন বোঝা মাথায় মাটির জিনিস একাই ফেরি করতে পারে। বুঝে নিতে পারে দেনা-পাওনা। কিন্তু মা তার সাথে এখনো যেতে চায়, যেয়ে বসে থাকে। হাম্মার কাজ-কারবার দেখে দু’চোখ ভরে। হাম্মাকে তার স্বপ্নের রাজপুত্রের মতো মনে হয়, অন্ধকার থেকে যে তার হাত ধরে আলোর পথে নিয়ে চলেছে।