দেশে সন্তর্পণে কয়েকটি ডামি গণভোট সম্পন্ন
৪ জুন ২০২৫ ১১:৫৭
॥ মাহবুবুল হক ॥
মহান আল্লাহর ইচ্ছায় গত ৯ মাসে প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষভাবে দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে বেশ কয়েকটি ‘রেফারেন্ডাম’ বা গণভোট সম্পন্ন হয়েছে। যেমন- ছাত্রলীগকে ব্যান্ড করা, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংস্কার সম্পন্ন করা, ফ্যাসিবাদী বা স্বৈরাচারী সরকারের স্টেকহোল্ডারদের বিরুদ্ধে দ্রুততার সাথে বিচারের ব্যবস্থা করা, যত দ্রুত সম্ভব একটা মডেল নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং ফ্যাসিবাদী সরকারের রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। সরকার জনমতের মাধ্যমে বা জনআকাক্সক্ষার মাধ্যমে কৌশলে এসব গণভোট সম্পন্ন করেছে। খুব আইনকানুন মেনে এসব গণভোট সম্পন্ন করা হয়েছে, তা কিন্তু নয়। এসব জটিল বিষয়ে সরকার হ্যাঁ বা না ভোট গ্রহণ করেননি। এমনকি হ্যাঁ ভোটও গ্রহণ করেননি। প্রথম দিকে বিপ্লবোত্তর সরকার একান্তভাবে জনপ্রিয় ছিল বিপ্লবোত্তর বা অভ্যুত্থান পরবর্তী যে সরকার গঠিত হয় তারা যদি সংবিধান অস্বীকার করতো, দেশের প্রচলিত আইনকানুন, বিধিব্যবস্থা উপেক্ষা করতো, অর্থাৎ কনভেনশন বা পরম্পরা অস্বীকার করে বিপ্লবী সরকার গঠন করতো, তাহলেও সেই সরকারের ‘লেজিটিমেসি’ দুনিয়ার কেউ অস্বীকার করতে পারতো না। কারণ বিপ্লবটি সংঘটিত হয়েছিল কোনো রাজনৈতিক দলের পরিকল্পনাগত কোনো প্রয়াসের মাধ্যমে নয়, আইনকানুন, বিধিব্যবস্থা, ঐতিহ্য, কনভেনশন সবকিছুকে ধুলায় লুণ্ঠিত করে অন্যায়ভাবে তথাকথিত গণতান্ত্রিক একটি সরকার দেশের ও দশের মালিকানা দখল করে নিয়েছিল। দেশ ও দশের মালিক ছিল অর্থাৎ দেশের মালিকানা স্বত্ব ছিল দশের হাতে। যদিও সত্যিকার অর্থে দুনিয়ার সবকিছুর মালিক হলেন সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তায়ালা। তাঁর একনিষ্ঠ বান্দারাই হলেন মহান আল্লাহর একান্ত প্রতিনিধি। আল্লাহর একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দুনিয়ার যেকোনো সহায়-সম্পদের স্বত্বাধিকারী হলো মানুষ। সেই মানুষের মালিকানা গত ১৬ বছর যাবত যে সরকার সিন্দাবাদের ভূতের মতো জনগণের কাঁধে চেপে বসেছিল, সেই সরকার শুধু জনগণের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করেনি, ধীরে ধীরে কৌশলে জনগণের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়েছিল।
গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারী সরকার যত লুটপাট, দলীয়করণ ও ক্ষমতা হরণ করছিল, ততই রাজনৈতিক অন্য দলগুলো প্রতিবাদে ফেটে পড়ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে ক্ষোভ-উষ্মা উচ্চকিত হচ্ছিল। এ ক্ষোভ ও উষ্মা যতই বৃদ্ধি পাচ্ছিল, স্বৈরাচারী সরকার ততই ফ্যাসিবাদের অবয়ব ও রূপ ধারণ করছিল। সরকার হিটলার ও মুসোলিনি সরকারের মতো জনগণের ওপর জুলুম ও অত্যাচারের স্টিমরোলার ধীরে ধীরে আকাশচুম্বী করেছিল। একদিকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিদ্বেষ যেমন বাড়ছিল, তেমনি প্রতিবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের জুলুম, অত্যাচার, নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর কনভেনশন অনুযায়ী বা প্রচলিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী, যেসব মাধ্যমকে গ্রহণ করে প্রতিবাদ উচ্চকিত করছিল, দ্রুততার সাথে সেসব মাধ্যম নানা নিষ্ঠুরতার মধ্য দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছিল। মিথ্যা মামলা, প্রতিবাদী নেতৃবৃন্দের সহায়-সম্পত্তি লুটপাট বা দখল করা হচ্ছিল অথবা সুযোগ বুঝে ধ্বংস করা হচ্ছিল। শুধু শহর, নগর বা বন্দরের প্রতিবাদী নেতৃবৃন্দের ওপর সর্বনাশা জুলুম হচ্ছিল না, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিবাদী নেতৃবৃন্দের জীবনেও একই খড়গ নেমে এসেছিল। দ্রুততার সাথে স্বৈরাচারী সরকার কর্তৃক এমন অন্যায় বিধিব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল, যাকে ব্যাখ্যা করা যায়- ‘প্রতিবাদ করবি, তবে ধ্বংস হবি। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলবি, সেই সুযোগ আর এখানে দেয়া হবে না। আমরাই এদেশের মালিক, আমরা যা বলব, যা করব, নির্বিবাদে তা মেনে নিতে হবে। টুঁ-শব্দটি করা যাবে না।’ শুরু হলো অন্যায়ভাবে খুন করা, গুম করা, সরকারি নানা এজেন্সির মাধ্যমে আয়নাঘরে প্রতিবাদীদের ফেলে রাখা। যাদের খুন, গুম ও দেশ থেকে বিতাড়ন করা সম্ভব হয়নি তাদের বিনাবিচারে আটক করে রাখা। প্রতিবাদী নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীদের জেলখানায় ‘স্তূপ’ করা। সীমাহীন নির্যাতনের কারণে এবং প্রতিবাদীদের জীবন ও জগৎ দুঃসহ ও দুর্বহ করার কারণে রাজনৈতিক দলগুলো যখন শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে উঠল, তখন শিক্ষার্থীদের একাংশ অমিতবিক্রমে ন্যায্য আন্দোলন শুরু করে দিল। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনুধাবন করল, দেশ ও জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ ফ্যাসিবাদী সরকারের শুধু লেজুড়বৃত্তি করছে না, সরকারের পেটোয়া বাহিনী রূপ পরিগ্রহ করে অবারিতভাবে দেশকে নরকে পরিণত করে বসেছে। তখনই বা বলতে গেলে অবশেষে ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করার শপথ গ্রহণ করে বসলো।
জীবনবাজি রাখার বা জীবনকে বিপন্ন করে ফ্যাসিবাদের পতনের এক দফা দাবিতে ঝাঁপিয়ে পড়লো- এ কাহিনী এবং দেশবাসীর এ নবতর ত্যাগ ও তিতিক্ষা দেশকে ও দেবাসীকে সমুজ্জ্বল করে তুললো। এরই অনিবার্য ফলে শেষাবধি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে গেল। বিদ্রোহ ও বিপ্লবের এই যে ঐতিহাসিক পটভূমি বা প্রেক্ষপট এবং প্ল্যাটফর্ম যেন আমরা ভুলে না যাই। যেন আমরা বিস্মৃত না হই। সেই কারণে এসবের পুনরাবৃত্তি করা। পড়তে পড়তে অনেকেই হয়তো ভাববেন, এসব তো আমরা জানি। এর মধ্যে তো নতুন কথা নেই। সবই তো সমকালীন বিষয়। এ বিষয়গুলো নিয়ে হাজার হাজার ছড়া তৈরি হয়েছে, কাব্য বা কবিতা নির্মিত হয়েছে। হাজার হাজার পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। নাটক, সিনেমা ইত্যাদি নির্মাণ ও বিনির্মাণের প্রয়াস চলছে। স্মৃতিঘর, মিউজিয়াম ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে। তবে কেন এত চর্বিতচর্বণ।
বিপ্লব বা অভ্যুত্থানের পর আমরা সুতীক্ষèভাবে অনুধাবন করেছি, সমাজের একটি শ্রেণির মানুষ, একটি শ্রেণির রাজনীতিক দল যেন দারুণভাবে ডিমেনশিয়ায় ভুগছে। স্মৃতিবিভ্রম ঘটেছে। সত্যের অপলাপ করছে। জাতির একাংশ যেন অপস্মৃতির ঘাটে নোঙর করেছে। এ স্মৃতিভোলা মানুষগুলো ছাড়াও দেশ-বিদেশে হাজার হাজার এমন অমানুষ রয়েছে, যারা সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে ফ্যাসিবাদী দোসরদের মতো নানা কর্মকাণ্ডের জন্ম দিচ্ছে। নিকট প্রতিবেশী দেশগুলোয় এ উচ্চাভিলাষী পতিত মানুষগুলো স্বপ্নের গুদাম তৈরি করছে। তারা বলছে, আমরা যা চাক্ষুষ করলাম, তা দুঃস্বপ্ন, মায়া-মরীচিকা, জোনাকির আলো, পিপীলিকার পাখা গজে মরিবার তরে। কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই তারা বিশ্বময় ঢোল পিটিয়ে বলে বেড়াচ্ছে, এই তো অধ্যাপক ইউনূস ইতোমধ্যেই হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করেছেন। সরকারের উপদেষ্টারা একইভাবে তার অনুকরণ করছেন। বিপ্লবের নামে, অভ্যুত্থানের নামে দেশ ও জাতির যে ধ্বংস ডেকে আনা হলো, তা এখন শুধু সাধারণ মানুষ নয়, অভ্যুত্থানকারী ও বিপ্লবীদের মধ্যেও অনেকেই তা উপলব্ধি করতে পেরেছে। তারা নাকি হা-হুতাশ করছে, বিরাট একটা ভুল হয়ে গেল। তারা নাকি বিলাপ করছে, অন্যের পরামর্শে এত বড় ভুল করা আমাদের ঠিক হয়নি। তারা নাকি হৃদয়ঙ্গম করছে, ৯ মাসে এ সরকার কিছুই করতে পারেনি। পারবে কেমন করে- তারা তো বেনিয়া, তারা তো ইহুদি-নাসারার লোক, তারা তো প্রতিবেশীদের দালাল, তারা তো দেশটাকে জঙ্গি দেশ বানিয়ে ফেলেছে। সুতরাং এ মুহূর্তে যদি এ সরকার ও সরকারের অনুবর্তীদের ধ্বংস করা না হয়, তাহলে এ জাতি অতলে তলিয়ে যাবে। এদেশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
এসবই পতিত সরকার, প্রতিবেশী দেশসমূহ, সেক্যুলার বিশ্ব- এদেরই ষড়যন্ত্র। এর সাথে যুক্ত হয়েছে তথাকথিত বড় একটি রাজনৈতিক দল। যাদের ইতিহাসও সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া মলিনতায় ও অস্পষ্টতায় পরিপূর্ণ। একসময় যারা বলিষ্ঠ হয়েছে, পতিত সরকারের অল্টারনেটিভ শক্তি হিসেবে অর্থাৎ বিকল্প শক্তি হিসেবে। যারা পতিত সরকারকে ধ্বংসকারী সরকার হিসেবে গণ্য করেছিল, তারাই বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে তুলেছিল বা গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু এ রাজনৈতিক শক্তি প্রাবল্য আমরা চাক্ষুষ করতে পারিনি। তারা যে শক্তি সঞ্চয় করেছিল, তা বালির বাঁধের মতো বার বার ধূলিসাৎ হয়েছিল। তেমন কোনো সঠিক শক্তি তারা কখনো কোনোখানে প্রদর্শন করতে পারেনি। তাদের কোনো সাহস ছিল না। তারা সংসদে বিরোধীদল হিসেবে নিজেদের দলকে কখনো সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। সংসদে বার বার পরাজিত হওয়ার পর সংসদ থেকে তারা নিজেরাই নির্বাসিত হয়েছিল। হাটে, মাঠে, ঘাটে তারা পতিত সরকারকে প্রতিহত করার হুঙ্কার দিয়েছিল। কিন্তু পতিত সরকারের সম্মুখে কোথাও তারা একদণ্ডও দাঁড়াতে পারেনি। এরা দলকে লক্ষ্যহীন, উদ্দেশ্যহীন ও কর্মসূচিহীন একটা আড্ডাবাজ রাজনৈতিক দলে পরিণত করেছিল। সবসময় লক্ষ করা গেছে, ওপরে ওপরে তারা পতিত সরকারের প্রতিবাদী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে কার্যক্রম ছিল বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু অভ্যন্তরীণভাবে এ রাজনৈতিক গোষ্ঠীটি পতিত সরকারের মন্ত্রী, এমপিসহ সকল প্রধান স্টেকহোল্ডারদের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছে। বিয়ে-শাদীর সিলসিলা বজায় রেখেছে। সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ভাগাভাগি করে অবস্থান করেছে। অনেকে সেই সময়গুলোয় খোলাখুলিভাবে মন্তব্য করেছেন। তাদের মধ্যেও নাকি অলিখিত এমন কনশেনসাস ছিল, ‘তোরা যখন সংসদ, বিচারালয় এবং শিল্প কারখানার মালিক থাকবি, তখন তোরা আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করবি। আবার আমরা যখন ওসব জায়গায় থাকব, তখন আমরা তোমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করব। এদেশে আমরাই তো মাত্র দুটি দল, বাকিগুলো তো সব ভুয়া, এসব তো আমাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। আমাদের প্রয়োজনে আমরা সাইকেল পার্টি বানাবো, হোন্ডা পার্টি বানাবো, রিকশা পার্টি বানাবো, স্কুটার পার্টি বানাবো এবং বানাবো মটর পার্টি, ভ্যান পার্টি, ওয়াগন পার্টি, মাইক্রো পার্টি, বাস পার্টি, লঞ্চ পার্টি ইত্যাদি। বিদেশের উদাহরণ পেশ করে তারা অনেক সময় বলেছে, সব দেশেই তো রয়েছে মূলত বড় দুটি দল। অন্যরা রয়েছে সহায়ক দল হিসেবে। যেমন আমাদের এবং তোমাদের জোটবদ্ধ দল রয়েছে।
এ দলটি মূলত মাজার পার্টি। তারা কারণে-অকারণে নারী-পুরুষ ও ধর্ম-কর্ম নির্বিশেষে তাদের প্রতিষ্ঠাতার মাজারে গিয়ে ঠেলাঠেলি করে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদান করে এবং সর্বজনীনভাবে মোনাজাত করে। এটা তারা কেন করে, কী লক্ষ্যে এবং কী উদ্দেশে করে, বিষয়টি জাতির কাছে অস্পষ্ট। আমরা লক্ষ করেছি, এ দলটি মাসে যতবার প্রতিষ্ঠাতার মাজারে যায়, কনভেনশনাল মাজার পার্টিগুলো ততবার মাজারে যায় না। এটা কোন ধরনের আধুনিক সেক্যুলার দল সবই এখন পর্যন্ত প্রচ্ছন্ন। এমন একটি রাজনৈতিক দলকে প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল বা সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বলাটা সত্যের অপলাপ মাত্র। আমরা প্রসঙ্গ থেকে প্রসঙ্গান্তরে চলে গেছি।
আলোচনার শুরুটা হয়েছিল রেফারেন্ডাম বা ডামি রেফারেন্ডাম নিয়ে। প্রধান উপদেষ্টা জনমত না নিয়ে বা জনগণের পাল্স আন্তরিকভাবে অনুভব না করে কোনো কাজেই হাত দিচ্ছেন না। তার পাল্স অনুভব করার নানারকম মাধ্যম আছে। দেশে বসে দেশীয় নানা এজেন্সি ও তথ্যাভিজ্ঞ মহলের আলাপ-আলোচনা, পরামর্শ-উপদেশ সামনে রেখে তিনি এক ধরনের পরিসংখ্যান আয়ত্ত করে থাকেন। বিদেশি দূতাবাসগুলোর সহযোগিতা নিয়ে তার মতো তিনি সংগ্রহ ও আয়ত্ত করেন এবং মাঝে মাঝে বিদেশে ভ্রমণ করে দেশের গণমানুষের মনন, জনআকাক্সক্ষা তিনি সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেন। দুনিয়াব্যাপী তার সোর্সের কোনো অভাব নেই।
আমাদের মন্ত্রণালয়গুলো থেকে পরামর্শ বা উপদেশ গ্রহণের বাধ্যবাধকতাও তিনি অনুভব করেন না। জনগণের সঙ্গে তার একান্ত সংযোগ তাকে এমন একটি উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে গেছে, যে জায়গায় বসে তিনি সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারেন- এখন আমরা কোথায় আছি। এ পর্যন্ত দেখা যায়, তিনি দুটি বিষয়ে বড় ভুল করেছেন। তা হলো করিডোর সংক্রান্ত বিষয় ও নারী সংস্কার বিষয়। এনজিও নারীদের ওপর তার অতিরিক্ত বিশ্বাস ও আস্থা তাকে ভুল পথে নিয়ে গেছে। আর একটি ভুল পথে যেতে যেতে তিনি যাত্রাবিরতি করেছেন সেটার উপদেশক ও পরামর্শক ছিলেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। তিনি দেশপ্রেমিক হলেও আমাদের দেশের জনগণ তাকে চেনেন না বা জানেন না।
সর্বশেষ যে ডামি রেফারেন্ডাম করেছেন, তা হলো, তিনি বলেছেন, ‘আমি আর সরকারে থাকবো না।’ মুহূর্তেই দেখা গেল যারা নির্বাচনের জন্য অন্যায়ভাবে অবিরত চাপ সৃষ্টি করছিলেন, তারাসহ দেশের সকল মহল এক ধরনের ভোট দিয়ে বলে উঠল, ‘না, আপনাকে অবশ্যই সরকারে অবস্থান করতে হবে।’