সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ
২৯ মে ২০২৫ ১০:২৯
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় পতাকা উত্তোলনের অধিকার পেল ফিলিস্তিন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে প্রথমবার নিজেদের পতাকা তোলার অধিকার পেলেন ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা। প্রতীকী একটি ভোটে জয়লাভের পর তারা এ অধিকার পায়। গত ২৬ মে সোমবারের এ ঘটনা ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার জেনিভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ষিক সম্মেলনে সংস্থাটির সদর দপ্তরে ফিলিস্তিনির পতাকা উত্তোলন করতে দেওয়া হবে কি-না, সে বিষয়ে প্রতীকী এক ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চীন, পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্র প্রস্তাবটি উত্থাপন করলে ৯৫টি দেশ তাতে সমর্থন দেয়। অন্যদিকে ইসরাইল, হাঙ্গেরি, চেক রিপাবলিক এবং জার্মানি প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। বাকি ২৭টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এমন একটি সময় এ ঘটনা ঘটলো, যার কিছুদিন আগে ফিলিস্তিনিকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ফ্রান্স। বিবিসি।
যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন প্রস্তাবে ‘রাজি’ হামাস
গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। হামাস এতে সম্মতি জানিয়েছে। গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গত ২৬ মে সোমবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। এতে ইসরাইলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পথ তৈরি হতে পারে। এ নতুন প্রস্তাবটি হামাস পেয়েছে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে। এতে ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি ইসরাইলের হাতে থাকা বহু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিষয়ও রয়েছে। সূত্র জানায়, ‘প্রস্তাবে হামাস দুই ধাপে ইসরাইলের ১০ জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর বিনিময়ে গাজা উপত্যকা থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার ও ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্ত রাখা হয়েছে।’ এছাড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরাইল বহু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে কয়েকশ জন দীর্ঘমেয়াদি সাজা ভোগ করছেন। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। চলতি বছরের ১৮ মার্চ হামাসের সঙ্গে জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যত বাতিল করে নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল। এর দুই দিন পর হামাস ও তার মিত্র সংগঠনগুলো রকেট হামলার মাধ্যমে জবাব দেয়।
হামাস বলেছে, যদি ইসরাইল গাজা থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যায়, তাহলে তারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলের বিভিন্ন জনপদ থেকে অপহৃত বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে প্রস্তুত। তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইল কেবল অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে। হামাস সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমানা হামলায় ইসরাইলের হিসাব অনুযায়ী এক হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। ইসরাইল এরপর গাজায় স্থল ও আকাশপথে সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রায় ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং উপত্যকাটি ব্যাপক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, সেখানে চরম অপুষ্টির লক্ষণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়া ও চীন সম্পর্ক জোরদারে সম্মত
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে গত ২৫ মে রোববার ইন্দোনেশিয়া সফরের সময় চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং জাকার্তার সাথে বেইজিংয়ের সম্পর্ক পুনর্ব্যক্ত করেছেন। চীন ও ইন্দোনেশিয়া পরস্পরের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মিত্র। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা কোম্পানিগুলো ইন্দোনেশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনে, বিশেষ করে নিকেল খাতে মূলধন বিনিয়োগ করছে। তবে দক্ষিণ চীন সাগর ও এর আশপাশের অঞ্চলগুলোর কৌশলগত পানিপথে দুই দেশের বিতর্কিত দাবি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাদের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলেছে। গত ২৫ মে রোববার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সাথে এক বৈঠককালে লি বলেন, বেইজিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশটির সাথে সহযোগিতা আরো এগিয়ে নিতে আগ্রহী। তিনি আরো বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সাথে কাজ করতে, দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে এবং সংহতি ও সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক চীন। প্রাবোও চীনের সাথে ইন্দোনেশিয়ার ‘ঘনিষ্ঠ ও ভালো’ বন্ধুত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল তৈরি করতে প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়া সবার জন্য একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ অঞ্চল তৈরি করতে চীনের সাথে সহযোগিতা জোরদার করতে প্রস্তুত। বাসস।
ঐতিহাসিক পানি সংকটে ইরাক
ইরাকে পানির মজুদ ৮০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা। চলতি বছরের খরার মতো শুষ্ক বর্ষা মৌসুম এবং ফোরাত ও দজলা নদীতে পানির প্রবাহ কমে যাওয়াই এর প্রধান কারণ। ৪ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার এ দেশ জলবায়ু পরিবর্তন, খরা, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাত হ্রাসের কারণে এক ভয়াবহ পরিবেশগত সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইরাকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিবেশী ইরান ও তুরস্কে নির্মিত বাঁধগুলোর কারণে ঐতিহাসিক ফোরাত ও দজলা নদীর পানিপ্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। হাজার বছর ধরে এ নদীদ্বয় ইরাকের কৃষিকে সেচ সুবিধা দিয়ে এসেছে। ইরাকের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালেদ শামাল বলেন, ‘গ্রীষ্মের মৌসুম শুরু হওয়ার সময় আমাদের পানি মজুদের পরিমাণ অন্তত ১৮ বিলিয়ন কিউবিক মিটার হওয়া প্রয়োজন, কিন্তু বর্তমানে আমাদের কাছে রয়েছে মাত্র ১০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার।’ তিনি আরো বলেন, ‘গত বছর আমাদের কৌশলগত মজুদ এর দ্বিগুণ ছিল। এ বছর পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। গত ৮০ বছরে আমরা কখনো এত কম পানি মজুদ দেখিনি।’ এর মূল কারণ হিসেবে তিনি নদীগুলোর পানিপ্রবাহ কমে যাওয়াকে দায়ী করেন। শামালের মতে, এ বছর শীত মৌসুমে বৃষ্টিপাত খুবই কম হয়েছে এবং পাহাড়ি অঞ্চলে বরফ গলনের পরও পানির স্তর আশানুরূপ বাড়েনি।
জাতিসংঘ ইরাককে জলবায়ু পরিবর্তনের কিছু প্রভাবের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচ দেশের একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পানি সংকটের কারণে বহু কৃষক তাদের জমি অনাবাদি রাখতে বাধ্য হয়েছেন। সরকার কর্তৃক খরিফ মৌসুমে পানির সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে কৃষিকাজে ব্যাপক কাটছাঁট করা হয়েছে। ইরাকের কৃষি পরিকল্পনা বরাবরই পানির প্রাপ্যতার ওপর নির্ভরশীল। এ বছর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ডুনাম (৩ লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর) সবুজ এলাকা ও উৎপাদনশীল কৃষিভূমি সংরক্ষণে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান শামাল। গত বছর কৃষকদের ২৫ লাখ ডুনাম জমিতে ভুট্টা, ধান ও ফলের বাগান চাষের অনুমতি দেয়া হয়েছিল বলে পানি মন্ত্রণালয়ের তথ্যে উল্লেখ করা হয়। ফোরাত ও দজলা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে ইরাক ও তুরস্কের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপড়েন রয়েছে। তুরস্ক বহুবার বাগদাদকে পানি ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে। ২০২৪ সালে ইরাক ও তুরস্ক ১০ বছর মেয়াদি একটি ‘ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি’ স্বাক্ষর করে, যার মূল লক্ষ্য ছিল পানি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নের জন্য যৌথ বিনিয়োগ। বাসস।
চীনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে অস্ত্র সহায়তার অভিযোগ ইউক্রেনের
টানা তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। দীর্ঘ এ সময়ে রুশ আগ্রাসন ও ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় হয়েছে হাজারও মানুষের প্রাণহানি। এ যুদ্ধের এক চরম পর্বে দাঁড়িয়ে ইউক্রেন এবার সরাসরি অভিযোগ করল রাশিয়ার অস্ত্রশিল্পে সহায়তা করছে চীন। যদিও বেইজিং সবসময় দাবি করে আসছে, তারা এ যুদ্ধের ব্যাপারে নিরপেক্ষ অবস্থানে আছে। ২০২৫ সালের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বলছে, চীন রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে নানা প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ করছে। গতক সোমবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানায়, ইউক্রেনের বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ওলেহ ইভাশচেঙ্কো এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। এ সাক্ষাৎকারটি ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইউক্রইনফর্ম-এ প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে নিশ্চিত প্রমাণ রয়েছে যে, চীন রাশিয়ার অন্তত ২০টি সামরিক কারখানায় যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল এবং বিশেষ উপকরণ সরবরাহ করছে।”
এ অভিযোগের পেছনে রয়েছে ইউক্রেনের দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহ। কিয়েভ বলছে, চীনের এ সহায়তা রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া নতুন করে অস্ত্র উৎপাদন করে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের গোয়েন্দা প্রধান ইভাশচেঙ্কো বলেন, চীন রাশিয়াকে “যন্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, বিশেষ রাসায়নিক উপাদান, বারুদ এবং সামরিক উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ” দিচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচটি চীন-রাশিয়া যৌথ প্রকল্প ছিল যেখানে এভিয়েশন খাতে যন্ত্রাংশ ও কারিগরি তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে।
এসব প্রকল্পে ড্রোন ও যুদ্ধবিমানের অংশ তৈরি ও সরবরাহ করা হয়েছে বলে দাবি কিয়েভের। এছাড়া, ছয়বার বিশেষ রাসায়নিক পদার্থের বড় চালান চীন থেকে রাশিয়ায় গেছে বলে জানানো হয়, যদিও এর বিস্তারিত প্রকাশ করেননি তিনি। তবে ইভাশচেঙ্কোর মতে, এ উপাদানগুলো বিস্ফোরক বা যুদ্ধোপযোগী সরঞ্জামে ব্যবহৃত হতে পারে।
আরও বিস্ময়কর হলো, ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, রাশিয়ার ব্যবহৃত ড্রোনে পাওয়া যাওয়া ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের প্রায় ৮০ শতাংশই চীনা উৎপাদনের। আল-জাজিরা।
মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে মালয়েশিয়ার আহ্বান
পাঁচ দফা শান্তি পরিকল্পনার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে মিয়ানমারে ভূমিকম্প-পরবর্তী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে মালয়েশিয়া। গত ২৫ মে রোববার কুয়ালালামপুরে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহামাদ হাসান এ আহ্বান জানান। মার্চের শেষের দিকে এক বিশাল ভূমিকম্পে প্রায় ৩,৮০০ জন নিহত এবং কয়েক হাজার গৃহহীন হওয়ার পর বহুমুখী গৃহযুদ্ধে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা প্রাথমিকভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। মোহামাদ হাসান বলেন, মিয়ানমারের সব পক্ষকে আমরা যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানাই। সেই সঙ্গে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ এবং প্রভাবিত অঞ্চল ছাড়িয়ে এর পরিসর বাড়ানোর প্রস্তাব করছি, যাতে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব হয় এবং পুনর্গঠনের কঠিন পথে কিছুটা অগ্রগতি সম্ভব হয়। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এরপর আসিয়ান একটি পাঁচ-দফা শান্তিচুক্তি করলেও জান্তা সরকার তা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর জেরে জান্তা নেতাদের আসিয়ানের বার্ষিক বৈঠক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আসিয়ানের ঘূর্ণায়মান সভাপতির দায়িত্বে থাকা মালয়েশিয়া বলেছে, সহিংসতার লাগাম টেনে ধীরে ধীরে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। তবে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করা কঠিন হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মোহামাদ হাসান। তার ভাষায়, দুই পক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট রয়েছে।
চলতি বছরের মার্চে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মানুষ নিহত হওয়ার পর দেশটির সামরিক সরকার সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। যদিও সেই সময় থেকেও সেনাবাহিনীর বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ব্যাংককে মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানান। পরে আনোয়ার বলেন, আসিয়ান গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আমরা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিতে ঐকমত্য গড়ে তুলতে চাই। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্যমতে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও সামরিক সরকার তাদের প্রাণঘাতী বিমান অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি স্কুলে বিমান হামলায় ২০ শিশুসহ ২২ জন নিহত হয়। সিএনএ।
পুতিন ‘একেবারে পাগল হয়ে গেছেন’: ট্রাম্প
সম্প্রতি ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মস্কোর বিমান ও ড্রোন হামলার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে বলেছেন, ‘পুতিন একেবারে পাগল হয়ে গেছেন।’ একইসঙ্গে তিনি রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ হামলার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতাকে দায়ী করেছেন এবং মস্কোর ওপর আরও কঠোর চাপের আহ্বান জানিয়েছেন।
গত রোববার (২৫ মে) রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর ৩৬৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যাতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয় এবং আরও অনেকে আহত হন। এটি ২০২২ সালের পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরুর পর এক রাতে সবচেয়ে বড় আক্রমণ। সোমবার ভোরেও ইউক্রেনজুড়ে নতুন করে সাইরেন বাজে, খারকিভে ড্রোন হামলায় এক শিশুসহ অন্তত তিনজন আহত হন। নিউ জার্সিতে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি পুতিনকে বহু বছর ধরে চিনি, সবসময় ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখন সে শহরে রকেট পাঠিয়ে মানুষ মারছেÑ আমি এটা পছন্দ করি না।’ এরপর নিজের সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ আরও কড়া ভাষায় ট্রাম্প লেখেন, ‘পুতিন একেবারে পাগল হয়ে গেছে।’ তিনি দাবি করেন, পুতিন কেবল ইউক্রেনের একটি অংশ নয়, পুরো দেশটাই দখল করতে চান, যা শেষমেশ রাশিয়ার পতনের কারণ হতে পারে। এপি।
কিমের হুঁশিয়ারি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে উত্তর কোরিয়া বলেছে, আমেরিকা যদি নিজের ভূখণ্ডে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে তাদের অবশ্যই অন্যান্য দেশকে সামরিক হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে। উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান দেশটির কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ-তে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, মার্কিন মূল ভূখণ্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে কিনা, তা অন্যান্য দেশের জন্য আমেরিকা হুমকি সৃষ্টি করছে কিনা, তার ওপর নির্ভর করছে। তিনি সামরিক হুমকি এবং আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টা পরিত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার (অস্ত্র ও সামরিক) হুমকির কথা বলে বেড়াচ্ছে আমেরিকা, কিন্তু তারাই বৃহত্তর পরিসরে এ ধরনের অস্ত্র ক্রমেই বাড়াচ্ছে। রয়টার্স।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা মাল্টার
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত দক্ষিণ ইউরোপের দ্বীপ দেশ মাল্টা। গাজায় চলমান ভয়াবহ মানবিক সংকট এবং শিশু হত্যার পটভূমিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী রবার্ট অ্যাবেলা ঘোষণা দিয়েছেন, মাল্টা আগামী মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। এ ঘোষণাটি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন গোটা বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনের স্বাধিকার এবং মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিকভাবে চাপ বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যাবেলা গত রোববার (২৫ মে) এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে এ গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি জানান, মাল্টা সরকার আগামী ২০ জুন একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পর ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি কার্যকর করবে। কেন এ পদক্ষেপ? অ্যাবেলার ভাষায়, “গাজায় প্রতিদিন যেভাবে শিশু ও সাধারণ মানুষ নিহত হচ্ছে, তাতে আমরা চোখ বন্ধ রাখতে পারি না।” তিনি বলেন, মাল্টার নৈতিক দায়িত্ব হলো এ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো। তাঁর মতে, গাজার জনগণের প্রতি সহানুভূতি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি।
এ ঘোষণার পেছনে ব্যক্তিগত আবেগও কাজ করেছে বলে জানান অ্যাবেলা। তিনি বলেন, “আমি গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছি ডা. আলা আল-নাজ্জারের পরিবারকে ঘিরে ঘটে যাওয়া সেই হৃদয়বিদারক ঘটনায়।” দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরাইলি হামলায় ওই শিশু চিকিৎসকের ৯ সন্তানই নিহত হয়েছেন। তাঁর স্বামী গুরুতর আহত এবং একমাত্র জীবিত সন্তান এখন চরম মানসিক ও শারীরিক ধাক্কার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মাল্টা সরকার জানিয়েছে, ডা. আলা ও তাঁর পরিবারকে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত তারা। এ উদার ঘোষণার মাধ্যমে মাল্টা কেবল রাজনৈতিক অবস্থানই জানায়নি, বরং মানবিক মূল্যবোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে। আনাদলু এজেন্সি।
আলিগড়ে চার মুসলিমকে পিটিয়ে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল হিন্দুত্ববাদীরা
উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে গত ২৪ মে শনিবার হরদুয়াগঞ্জ এলাকায় একটি কনটেইনারে গোশত পরিবহনকারী চার মুসলিমকে থামিয়ে নির্মমভাবে লাঞ্ছিত করে হিন্দুত্ববাদীরা। পুলিশ কর্মীদের উপস্থিতিতে তাদের গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় বর্বর হিন্দুত্ববাদীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা জনতার সহিংসতার ভিডিওতে দেখা গেছে, ৪ মুসলিম যুবককে আংশিকভাবে বিবস্ত্র করে নির্মমভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে। হরদুয়াগঞ্জ থানায় দায়ের করা এফআইআর অনুসারে, অভিযোগকারী রশিদ খানের ছেলে সেলিম খান, তার ভাগ্নে আকিল ইব্রাহিমের সাথে আত্রৌলি থেকে আলিগড় মান্ডি কারখানায় যাচ্ছিলেন। এসময় তাদের গাড়ি থামানো হয়। পানেথি রোড থেকে সাধু আশ্রম রোডের দিকে যাওয়ার পথে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এ ঘটনা ঘটে। এফআইআরে রামকুমার আর্য এবং অর্জুন ওরফে ভোলুসহ তেরো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরো ২০-২৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ব্যক্তিরা হরদুয়াগঞ্জ এবং আলিগড়সহ এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
অভিযোগ, ওই দলটি গাড়িটি ঘিরে ফেলে এবং তাদের যেতে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। সেলিম খান এবং আকিল ইব্রাহিম গাড়ি থেকে নেমে এ দাবিতে আপত্তি জানালে রামকুমার আর্য এবং লাভকুশ অন্যদের তাদের ওপর হামলা করার নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীদের লোহার রড, লাঠি এবং ডান্ডি দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। হামলার সময়, অভিযুক্তরা তাদের পকেট তল্লাশি করে মোবাইল ফোন এবং টাকা চুরি করে। আক্রমণে আকিল ইব্রাহিম আহত হন। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আহতদের চিকিৎসার জন্য রিপোর্ট করতে দেরি হয়েছে। বজরং দলের স্থানীয় নেতারা দাবি করেছেন, এটি একই গাড়ি যা গ্রামবাসীরা আগে একই রকম ‘অবৈধ গোশত’সহ আটক করেছিল। তবে পুলিশ স্পষ্ট করে জানিয়েছে, এগুলো মহিষের গোশত। পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) অমৃত জৈন বলেছেন, একটি পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। জৈন এক্স-এ পোস্ট করা একটি ভিডিওতে বলেছেন, ‘গোশত জব্দ করা হয়েছে এবং পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করা হয়েছে’। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন যে, গরু জবাইয়ের কাগজপত্রসহ পরিবহনকারীর সব কাগজপত্র ঠিক ছিল। মাকতুব মিডিয়া।
এবার হজের খুতবা দেবেন ড. সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ
চলতি হজ মৌসুমে (১৪৪৬ হিজরী) আরাফা দিবসে হজের খুতবা প্রদান করবেন সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেম ও বিচারবিদ শায়খ ড. সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ। তাকে এ দায়িত্বে মনোনয়ন দিয়েছেন দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ। সৌদি গেজেট এ তথ্য জানিয়েছে। ৯ জিলহজ আরাফার দিন মসজিদে নামিরাহ থেকে প্রদত্ত খুতবা হজের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ অংশ। বিদায় হজে রাসূলুল্লাহ (সা.) এখানেই ঐতিহাসিক খুতবা প্রদান করেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর আরাফা দিবসে এখান থেকে দেওয়া খুতবায় হাজীদের জন্য আধ্যাত্মিক নির্দেশনা ও মানবিক বার্তা তুলে ধরা হয়। এ বছর সৌদি আরবের উম্মুল কুরা হিজরী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৫ জুন বৃহস্পতিবার ১৪৪৬ হিজরীর ৯ জিলহজ নির্ধারিত হয়েছে। এ দিনেই আরাফার ময়দানে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
সৌদি সরকারের উদ্যোগে হজের খুতবা বিশ্বের প্রায় ২০টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। যার মধ্যে বাংলা ভাষাও থাকবে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে হজের তাৎপর্য পৌঁছে দিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শায়খ সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ ১৯৫০ সালে সৌদি আরবের কাসিম প্রদেশের বুরাইদাহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি উম্মু আলকুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামী ফিকহ ও তার মূলনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মসজিদুল হারামে ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি তিনি সৌদি আরবের শূরা কাউন্সিলের স্পিকার, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক ফিকহ একাডেমির সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ইসলামী জ্ঞান, হিকমাহ ও বিচারিক নেতৃত্বে তার অবদান মুসলিম বিশ্বে গভীরভাবে প্রশংসিত। তার বক্তৃতা, বিশ্লেষণ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি তাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একজন শ্রদ্ধেয় আলেম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সৌদি গেজেট।
তুরস্ক-সিরিয়া সম্পর্ক জোরদারের ইঙ্গিত এরদোগানের
সিরিয়ার ওপর থেকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ইস্তাম্বুলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা সাক্ষাৎ করেছেন। গত ২৪ মে শনিবার দেশটির বৃহত্তম শহর ডলমাবাহচে প্রাসাদে এক আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা এবং বৈঠকে যোগদানের পর তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দুই নেতার করমর্দনের ছবি তোলা হয়েছে। এক্স-এর বিবৃতি অনুসারে এরদোগানের কার্যালয় জানিয়েছে যে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আল-শারাকে বলেছেন তার দেশ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে স্বাগত জানায়। তিনি আরো বলেছেন যে, “সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্ব এবং আগ্রাসন অগ্রহণযোগ্য” এবং তুর্কি প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে এর বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলার, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ইব্রাহিম কালিন এবং তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের সচিব হালুক গর্গুন সংবাদমাধ্যমের কাছে গোপনে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করার ক্ষেত্রে তুরস্কের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নেতাকে ফেব্রুয়ারির শুরুতে রাজধানী আঙ্কারায় স্বাগত জানান এরদোগান।
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে দেখা করার জন্য রিয়াদ সফরের পর এটি ছিল তার দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সফর। উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীরতর করার এবং সিরিয়ার পুনর্গঠনের বিষয়ে আলোচনা করছে কারণ আঞ্চলিক মিত্ররা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সিরিয়ার ওপর আরোপিত ধ্বংসাত্মক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে রাজি করাতে সহায়তা করেছে। এ মাসের শুরুতে ট্রাম্পের আঞ্চলিক সফরের সময় ঘোষিত অভিযানের অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন শুক্রবার প্রথম নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই পদক্ষেপ অনুসরণ করেছে, বছরের পর বছর ধরে গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ার পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে।
নতুন সিরিয়ার সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়েছে, গত ২৪ মে শনিবার তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ পদক্ষেপকে ‘দেশের মানবিক ও অর্থনৈতিক সংগ্রাম কমাতে সঠিক দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। সিরিয়ায় ট্রাম্পের বিশেষ দূত, তুরস্কে নিযুক্ত বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রদূত, থমাস ব্যারাক, বলেছেন যে, তিনি শনিবার ইস্তাম্বুলে আল-শারার সাথে দেখা করেছেন এবং বিদেশি যোদ্ধা এবং ইসরাইলের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে এখন পর্যন্ত নেতার “অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ” নেওয়ার প্রশংসা করেছেন। সিরিয়ার ওপর প্রথম মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ১৯৭৯ সালে, যখন বাশার আল-আসাদের বাবা হাফেজ ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালে আল-আসাদ সরকার বিক্ষোভকারীদের ওপর মারাত্মক দমন-পীড়ন শুরু করার পর তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়, যার ফলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, ফলে লাখ লাখ মানুষ নিহত হয় এবং লাখ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়। আল-জাজিরা।
দেশীয়ভাবে তৈরি উন্নত বিমান পরিবহন রাডার উন্মোচন ইরানের
দেশীয়ভাবে তৈরি একটি উন্নত বিমান পরিবহন রাডার উন্মোচন করেছে ইরান। দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল খাতকে টার্গেট করে বিদেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপের মধ্যে উন্নতমানের রাডারটি উন্মোচন করা হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান গত ২৪ মে শনিবার একটি ভিডিও লিঙ্ক ব্যবহার করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে আবাদান বিমানবন্দরে এমএসএসআর-মোড এস রাডার সিস্টেমটি স্থাপনের নির্দেশ দেন। ইরানের পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উন্নত রাডার সিস্টেমটি এ অঞ্চলে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করবে। ইরান বিমানবন্দর এবং বিমান নেভিগেশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী (সিইও) মোহাম্মদ আমিরানি বলেছেন, মনোপালস সেকেন্ডারি নজরদারি রাডার সিস্টেমটি পুরোপুরি ডিজাইন এবং নির্মাণ করেছে দেশীয় কোম্পানিগুলো। খবর প্রেস টিভির। তিনি আরও জানান, মধ্য ইরানে অবস্থিত ইসফাহান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এ প্রকল্পে অবদান রেখেছেন। সিস্টেমটি ৪৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম। মেহর নিউজ।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান