ঈমান ও তাকওয়ার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান
৮ মে ২০২৫ ১৩:৩৬
স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমাদের সামনে উদাহরণ হলো রাসূল (সা.)-এর জীবন ও কর্ম। আমাদের আল্লাহর হুকুম ও রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহকে সর্বদা অনুসরণ করতে হবে। আমাদের সবসময়ই আল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা করতে হবে এবং ঈমান ও তাকওয়ার সাথে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে দায়িত্ব পালন করতে হবে। গত ৪ মে রোববার বিকেলে মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দুদিনব্যাপী জেলা ও মহানগরী আমীর সম্মেলনে প্রদত্ত সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে তিনি আরও বলেন, শত অন্যায়, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যেও আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথে টিকে আছি আল্লাহর রহমতের কারণে। আমরা অধৈর্য হইনি, মিথ্যা মামলা সত্ত্বেও কখনো কোনো অন্যায়ের কাছে কখনো মাথানত করিনি। আমরা সংগঠনের নিকট থেকে ইসলামের যে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পেয়েছি, তা আপাতত অত্যন্ত কঠিন মনে হলেও দায়িত্ব সঠিকভাবে বণ্টন এবং পালন করলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের সব কঠিন কাজকেও সহজ করে দেবেন, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দীনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আমাদের দায়িত্ব হলো ভবিষ্যতে যারা ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন, তাদেরকে আমাদের চাইতেও বেশি দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা। আমীরে জামায়াত আরও বলেন, চট্টগ্রামের দারুল মাআরিফ আল-ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম আল্লামা সুলতান যওক নদভীর ইন্তেকালে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। দোয়া করি মহান আল্লাহ তার কবরকে জান্নাতের নূর দিয়ে আলোকিত করুন।
ডা. শফিকুর রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেন আর তার জন্য জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা প্রদান প্রার্থনা করেন।
তিনি আরও বলেন, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলার প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার এ. আর. ইউসুফের সহকারী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেছিলেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে পরিচালনা করেন। তিনি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চাপের মুখেও অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দুদিনব্যাপী জেলা ও মহানগরী আমীর সম্মেলন গত ৩ মে উদ্বোধন করেন ডা. শফিকুর রহমান। সম্মেলন পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মো. শাহজাহান, এড. মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়েরসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী ও কর্মপরিষদ সদস্য, জেলা ও মহানগরী আমীরবৃন্দ।
আমীরে জামায়াত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ২০১১ সালের এপ্রিল মাসের পর দীর্ঘ ১৪ বছরে এ ধরনের প্রোগ্রাম করার সুযোগ পাইনি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের আবার এ সুযোগ করে দিয়েছেন। এজন্য মহান মনিবের দরবারে লাখো শুকরিয়া আদায় করি, আলহামদুলিল্লাহ। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং তাদের সঙ্গীরা বাংলাদেশকে শাসন এবং শোষণ করেছেন। পুরো সময়জুড়ে তারা এ দেশের বিরোধীদল, মত এবং বিশেষভাবে ইসলামপন্থী জনগণের ওপর বিভিন্ন পর্যায় তাণ্ডব চালিয়েছে। কমপক্ষে তিনটি গণহত্যা সংঘটিত করেছে। প্রথম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে তৎকালীন বিডিআর হেডকোয়ার্টার পিলখানায়। যেখানে আমরা হারিয়েছি ৫৭ জন চৌকস দেশপ্রেমিক প্রতিশ্রুতিশীল সামরিক অফিসারসহ আরো অনেককে। এরপর গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে। হেফাজতের আহ্বানে যে সমাবেশ হয়েছিলো। সেই সমাবেশে রাতের বেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে গোটা রাজধানী অন্ধকারে রেখে নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আর তৃতীয় গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে গত বছরের জুলাই মাসের মধ্য দিনগুলো থেকে আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত। ফ্যাসিবাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকর্মী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং আলেম-ওলামা।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে গত বছরের আগস্ট মাসের ৫ তারিখ ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। আপনারা সাক্ষী প্রথম তিন দিন কার্যত কেনো সরকার ছিলো না। এরকম পরিবর্তন যেসব দেশে সংঘটিত হয়েছে, সেখানে ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা পারিপার্শ্বিক এ ঘটনাবলি থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং খুবই অনুভব করছিলাম জাতিকে শান্তি-শৃঙ্খলা ও ধৈর্য ধরার আহ্বান করা প্রয়োজন। আমরা ৫ আগস্ট রাতেই সে কাজটা করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, এ পরিবর্তনের পর আমাদের প্রথম কাজ ছিলো শহীদ পরিবারের কাছে যাওয়া এবং দাঁড়ানো। দল হিসেবে নিশ্চয়ই আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও মানবিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করেছি শহীদ পরিবারের কাছে যাওয়ার। তাদের সান্ত্বনা দেয়ার এবং সংগঠন হিসেবে যতটুকু সম্ভব সেই সাপোর্টটুকু তাদের আমরা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের সাপোর্টও তারা অনুগ্রহ করে গ্রহণ করেছে। এরপর আমাদের অগ্রাধিকার ছিলো যারা আহত এবং পঙ্গু হয়েছেন, তাদের দিকে নজর দেয়া।
তিনি আরও বলেন, দেশে যদি অস্থিরতা বিরাজ করে, যদি দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে, তাহলে আমরা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এজন্য এখানে নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলের দায় রয়েছে। তবে পরিবর্তনকামী একটি গঠনমূলক দল হিসেবে জামায়াতের দায় অনেক বেশি। এজন্য আমরা সবসময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, খুন, লুণ্ঠন ও অপহরণ করেছেন, জনগণের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছেন তাদের আমরা ন্যায্য বিচার দাবি করি। তারা যেন কোনোভাবেই কোনো ফাঁকফোকরে পার পেতে না পারে। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ দাবি আমরা করে আসছি এবং এ দাবি আমরা করতেই থাকবো। এ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের দাবি থাকবে।
ডা. শফিক বলেন, আমরা এরপরে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছিলাম এ সরকার গঠিত হয়েছে জনআকাক্সক্ষার ভিত্তিতে। তাদের ন্যায়সঙ্গত কাজে সহযোগিতা করা। তাদের জনস্বার্থবিরোধী কোনো কাজ আমাদের সামনে ধরা পড়লে আমরা সহযোগিতা করবো না, আমরা পরামর্শ দেবো, প্রতিবাদ করবো এবং ক্ষেত্র বিশেষে আবার প্রতিরোধ করবো।
তিনি আরো বলেন, অবশ্যই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে হবে। সুষ্ঠু এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে কতিপয় সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। এ বিষয় আমরা আমাদের সুপারিশমালা সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর কাছে পেশ করেছি। আমরা সকল দলের প্রতি আহ্বান জানাবো রাজনীতি নিজের জন্য নয়, রাজনীতি দেশ এবং জনগণের জন্য। আমরা যত বেশি সহযোগিতা করবো, তত বেশি জাতি উপকৃত হবে। ততটাই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু এবং সুন্দর হবে। ইতোমধ্যে আমরা বলেছি যে, অবশ্যই যারা অপরাধী তাদের বিচারটা দৃশ্যমান হোক জাতি এটা দেখতে চায়। এ স্বল্পসময়ে সব বিচার করা সম্ভব নয়Ñ এটা আমরাও বুঝি। কিছু বিচার তো করতেই হবে। যাতে জাতির মনে আস্থা তৈরি হয়। যারা প্রধান অপরাধী, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান বিচার জাতির সামনে অবশ্যই উপস্থাপন করতে হবে। আমরা সরকারের একটা দুর্বলতা লক্ষ করি, বিচারের ক্ষেত্রে আমরা আরো গতি চাই। সরকার বেশি তৎপর হয়ে এ কাজটা করবে, এটা আমরা দেখতে চাই। যদি এদের বিচার হয়, তাহলে আগামী নির্বাচনেও কালো টাকা এবং পেশিশক্তির প্রভাব খাটাতে পারবে না। আর এরকমের দুঃসাহস হয়তো কেউ দেখাবে না। কিন্তু বিচার যদি না হয় এর আশঙ্কা তো থেকেই যাবে। আমরা এ নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য এবং জনমতের শতভাগ প্রতিফলন ঘটানোর জন্য আমাদের দেশের পার্লামেন্টকে কোয়ালিটিসম্পন্ন পার্লামেন্ট দেখতে চাই। এজন্য নির্বাচনকে পেশিশক্তি এবং কালো টাকার প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থায় নির্বাচন হতে হবে। বিশ্বের ৬২টি দেশ এটা অনুসরণ করছে। বেশিরভাগ দেশ হচ্ছে উন্নত দেশ বলে যারা পরিচিত তারা সুফল পেয়েছে। এটা যারা একবার শুরু করেছে, তারা আর বাদ দেয়নি। আমরা ট্রেডিশনাল নির্বাচন পদ্ধতি দেখেছি। তার ভেতরে সংসদের মধ্যে আইন প্রণেতা হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিরা লেখা দেখে যারা পড়তে পারেন না, তারাও সংসদ সদস্য হয়েছে। তারা কি আইন রচনা করে বাংলাদেশের মানুষকে দেবেন? তারা কোন আইনটা সংস্কার সাধন করার মতো যোগ্যতা রাখেন? এজন্য আমরা বলেছি যে, আনুপাতিক হারে সেখানে যাবে। যে যত পার্সেন্ট ভোট পাবে, সে তত আসন পাবে। এতে করে কোন দলকে ছোট এবং বড় বলার কারো সুযোগ হবে না। দল ছোট হোক বড় হোক দল দলই এবং কোনো দল কারো দয়ার পাত্র হবে না। তার নিজের দল নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, অতিসম্প্রতি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিটি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর সুপারিশমালা পেশ করেছে। আমরা বিস্মিত, আমাদের বিদ্যমান কালচার তমদ্দুন এর সম্পূর্ণ বিপক্ষে। তারা কিছু সুপারিশমালায় এনেছেন এগুলো বিবেচনা করার প্রশ্নই আসে না। শুধু তাই নয়, তাদের কিছু কিছু সুপারিশ আল্লাহর বিধানের বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে পেশ করা হয়েছে। তাদের এ সুপারিশ গ্রহণ করলে কুরআন পরিবর্তন হয়ে যাবে। অথচ আল্লাহ তায়ালা কুরআন নাজিল করে বলেছেন, কুরআন নাজিল করেছি আমি, রক্ষাও করবো আমি। এখানে একটা হরফ, নুকতাও কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না।
আমীরে জামায়াত বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী ২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার কথা বলেছেন। ফেব্রুয়ারির শেষে এবং মার্চের তিন ভাগের দুই ভাগ সময়জুড়ে রোজা থাকবে, তার পরেই ঈদ। এ সময় কোনো নির্বাচনের সময় না। দুটি সময় আমরা নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত মনে করি। একটি হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাস রোজা শুরুর আগে। আরেকটা হচ্ছে যদি কোনো কারণে এ সময়ের ভেতরে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে, তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত নয়।
আমীরে জামায়াত আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর শহীদের রক্ত ও পঙ্গু ভাই-বোনদের প্রতি সকলের সম্মান দেখানো উচিত ছিল। কিন্তু কোনো কোনো দল সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে, তাদের নিজেদের সহকর্মীদের সামাল দিতে। এজন্য যেখানেই যাই এখন শুনতে হয় রেট আগের চেয়ে বেশি। কেন রেট আগের চেয়ে বেশি হবে? রেটই তো থাকবে না। সর্বত্রই কথা শুনতে হচ্ছে, কেন এমনটি শোনা যায়! চিহ্নিত অপরাধীদের ধরে পুলিশ থানায় নেয়ার আগেই তদবির থানায় চলে আসে। এ ধারা বন্ধ করতে হবে। স্বয়ং জামায়াতে ইসলামীর লোকেরাও যদি এটা করে মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে ঘৃণা করবে। এ কাজ যারাই করবে তাদের মানুষ ঘৃণা করবে।
তিনি ফিলিস্তিন সম্পর্কে বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি গাজায় বছরের পর বছর জুলুম করা হচ্ছে। আমরা চাই এটার অবসান হোক। পার্শ্ববর্তী দেশসহ যেখানে ছুতানাতায়; বিশেষ করে ধর্মীয় আবেগকে উসকে দিয়ে জুলুম করা হয়। এটা বন্ধ করা হোক।
ডা. শফিক দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, আমরা একটা মজলুম দল। যুগে যুগে আমাদের ওপর বিভিন্ন পক্ষ জুলুম করেছে। আমরা কোনো প্রতিশোধ নিতে চাই না। তবে আমরা যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, নিহত হয়েছি, আহত হয়েছি, গুমের শিকার হয়েছি অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, সেই জায়গাগুলোয় অবশ্যই আমরা আইনের মাধ্যমে প্রতিকার চাওয়ার অধিকার রাখি এবং আমরা চাইব।
তিনি আরও বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরসহ স্বাধীনতার পর থেকে যারা দেশের সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করেছেন, এদের সকলের অপকর্মের শ্বেতপত্র জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এগুলোর সাথে রাজনীতির কালো হাত ছিল, নাহলে এত বড় অপরাধ তারা করতে পারতো না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, বাংলাদেশ থেকে গত সাড়ে ১৫ বছরে ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আমরা চাই পাচারকৃত সকল টাকা ফিরিয়ে এনে রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা দেয়া হোক এবং জনকল্যাণে সেটা ব্যয় হবে।
আমীরে জামায়াত বলেন, সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, আপনারা এ জাতির সন্তান, এই জাতির বিবেক, আয়না। আপনাদের দর্পণে সেই চিত্রগুলো তুলে ধরুন এবং আপনারাও এ কাজে সহযোগিতা করুন। তাহলে দেশ আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। আপনারা দায়িত্বশীল আচরণ করে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে আসবেন সেই প্রত্যাশা আমরা রাখতে চাই।
আমরা মহান রবের দরবারে দোয়া করি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুরআনভিত্তিক যে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র করতে চায়, আল্লাহ যেন সেই কল্যাণরাষ্ট্র গড়ার পথে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জাতি গঠনের যাত্রাপথে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার তাওফিক দান করুন।