ছড়া কবিতা
১ মে ২০২৫ ১৭:৫৭
নির্যাতিত গাজাবাসী
এম একরামুল হক ভূইয়া
কেন এত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের উল্লাস
মা ও শিশুদের কেন খ–বিখ- লাশ?
দৃষ্টিশক্তি সবের হয়েছে কি অজ্ঞ?
কুকুরের পাহারায় লাশ, একি নিঃসঙ্গ।
মুসলিম জাতির শরীরে নাই কি রক্ত?
এতকিছুর পরে কেন হয় না উত্তপ্ত,
হযরত বেলাল খাব্বাবের কথা মনে পড়ে না!
অপেক্ষা কর, নিশ্বাস গেলে পাবে আসল পাওনা।
আর কত নির্মমতা সহ্য করতে হবে গাজাবাসী
নিষ্ঠুর ইহুদি ভাবে তাদের নেই বন্ধু প্রবাসী,
লাখ লাখ বনিআদম আজ রক্তে সিক্ত
ইহুদিদের বোমারু বিমান করছে অতিরিক্ত।
বহু ভিনধর্মী গাজার সাথে করছে একাত্মতা
মুসলিম হয়েও জাতি হিসেবে কেন নীরবতা,
সুউচ্চ অট্টালিকা আর লাল পানি করছে ভারতা
নারী আর গাড়ি নিয়ে চলছে তাদের সফলতা।
গাজাবাসীকে দিচ্ছে বাধা হাইপারসনিক বোমারু বিমান
শহীদ হচ্ছে তবু ইজ্জত নিতে পারছে না বেঈমান,
চুক্তি নামে ইহুদি চক্র করছে অশান্তি গাজা বাসী
হার মানার জাতি নয় তারা আল্লাহয় বিশ্বাসী।
রক্তে আগুন লেগেছে এবার, রেখেছে জীবনবাজি
নিঃশেষ হবে তবুও ঠেকায় বিমান-প্রাণ নাশী,
বিনা অস্ত্রে বিজয় আসবে শুধু আল্লাহয় বিশ্বাসী
শহীদি চেতনায় দীপ্ত হবে নির্যাতিত গাজাবাসী।
পলাশ হয়ে ফুটি
আসাদ সরকার
চলো তবে ফাগুন হাওয়ায় পলাশ হয়ে ফুটি
কৃষ্ণচূড়ার ডালে যেমন শালিক বাঁধে জুটি।
ফুলে ফুলে প্রজাপতি যেমন করে ওড়ে
তোমায় আমি তেমন করে রাখবো হৃদয়জুড়ে।
ফাগুন এলে বন গহিনে ফুলে ফুলে সাজে
কোকিলেরই কুহু সুরটা কানে এসে বাজে।
হৃদয়জুড়ে প্রেমের জোয়ার সকাল বিকাল সাঁঝে,
তোমার ভালোবাসা পেতে আমার মনটা সাজে।
যুগল হংস সাঁতার কাটে যেমন করে পুকুরে
তুমি আমি সাঁতার কেটে প্রেম করবো দিনদুপুরে।
অন্তরে চোট লাগে আমার তোমার পায়ের নূপুরে,
ভালোবেসে যাবো ছুটে দু’জনে অচিনপুরে।
ফাগুন ঝরা বৃষ্টিতে আজ বাজে প্রেমের সুর,
অবহেলা করে কেন তুমি থাকো দূর।
চোখে চোখে আলোর জোয়ার স্বপ্ননদীর ঢেউ,
শিমুল পলাশ আলাপনে সঙ্গী নেই তো কেউ!
ঝড়
আসাদুজ্জামাস আসাদ
ঝড়ের গতি দারুণভাবে
মারে যখন হানা
এক হানাতে উল্টাপাল্টা
সব হয়ে যায় ফানা।
গাছের সারি বাসাবাড়ি
ভেঙে চুরে সারা
বুড়া-বুড়ি মানুষ কাঁদে
কাঁদে সারা পাড়া।
ঝড় যে আমার মহাশত্রু
দারুণ সর্বনাশা
উল্টাপাল্টা শিলাবৃষ্টি
হারাই মুখের ভাষা।
ঝড়ের চোটে ঝড়ের গতি
হঠাৎ যখন থামে
দারুণ স্বস্তি শব্দগতি
বুকের মাঝে নামে।
রোদের কিরণ
খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন
বিষ্টি নামে টিনের চালে
বিষ্টি নামে ছাদে
বিষ্টি নামে দিন-দুপুরে
রোজার ঈদের চাঁদে।
ঈদ-বিষ্টি মাখামাখি
মন বসেনা ঘরে
উঠোনজুড়ে কাদার পাটি
পিছল খেয়ে পড়ে।
ঈদ এসেছে বিষ্টি নিয়ে
মিষ্টি রোদও হাসে
ঈদ-বিষ্টি, রোদের কিরণ
গভীর ভালোবাসে।
শার্দূল শক্তি
আবুল খায়ের বুলবুল
সাহসের হাত যদি ওঠে সবগুলো
অন্যায় হয়ে যাবে দূর
দরকার হবে না আর ঝড়-তুফান
থাকবে না বেদনা বিধুর॥
নীতিহীন নীতিতে চলছে যারা
ধরো তার টুঁটি চেপে
ঐক্যের শক্তি শার্দূল হলে
পারবে না যেতে ক্ষেপে।
অত্যাচার আর অত্যাচারী যদি
বার বার খায় বাধা
ধূলিতে মিশে যাবে ঐ সব কিছু
দূর হয়ে যাবে সব কাঁদা।
হিংস্রোতা গলে যায়
সাহসের কাছে
মিথ্যের আগলে করলে আঘাত
সত্যেরা দাঁড়ায় পাশে।
আমাদের কথা কাজ হয় যদি
তাঁর কথা মতে
পৃথিবীর কেউ পারবে না দিতে বাধা
আমাদের পথে।
বেসাতির মসনদ দিতে গুঁড়িয়ে
বীরেরা যদি আসে
বিধূরিত হয়ে যাবে সব বাদ অপবাদ
সততার লোবান সুবাসে।
ওঠো জেগে সেই সুর শুনে
ঘুমিও না আর কেউ
বাতাসে বাতাসে যাক ছড়িয়ে
ভালোবাসার ঢেউ।
পল্লীগাঁয়ের সেই পাখিটি
ফরিদ আহমদ ফরাজী
(শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হুজুরের স্মরণে)
পিরোজপুরের সাঈখালীর কচানদীর পাড়ে
কোকিলকণ্ঠের সেই পাখিটি সবার হৃদয় কাড়ে।
ঐ আকাশের চন্দ্র সাক্ষী হৃদয়কাড়া বোল
জয় করিল বিশ্বটারে, ইউসুফ সাঈদীর কোল।
পল্লীগাঁয়ের সেই পাখিটি সারা জীবন ভর
কুরআন পাকের দাওয়াত দিছেন, নিয়ে খোদার ডর।
ফুলের কাছে গিয়ে দেখি সুবাস সারা বিশ্বে
মৌমাছিদের গুনগুনানো গান শোনানো দৃশ্যে।
পল্লীগাঁয়ের নয়নমণি কুরআনের পাখি
তাঁর বিয়োগের ব্যথা আমি কোন হৃদয়ে রাখি!!
আমার গাঁয়ের মহাবীরের, অগ্নিকণ্ঠ তাঁর
আমরণ সে হকের পথে ছিল চমৎকার।
আমার গাঁয়ের স্বনামধন্য, যেন ফোটা ফুল
কত আলেম-ওলামা দেখি, নেইকো তাঁহার তুল।
বাতিলাতঙ্ক সাঈদী সে যে, মাজলুম জননেতা
অন্যায় যেথা প্রতিবাদে তিনিই অগ্রে সেথা।
চলন বলন পরিপাটি খুবি সাদাসিধে
শহীদ হয়ে অমর আছেন সকল মুমিন হৃদে
তাঁহার স্বপ্ন ছিল দারুণ, অসাধারণ বেশ
কুরআন দিয়ে শাসন হবে সোনার বাংলাদেশ।
ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সুখে থাক
কাদিয়ানি কাফের বলে দিতেন জোরে হাঁক।
বাংলামায়ের একটি রতœ দ্বিতীয়টি কেউ নেই
তাঁর বিয়োগে কাতর আমি হারিয়ে ফেলি খেই।
ডাক
মোকলেচুর রহমান
ডাক এসেছে ডাক এসেছে ধরা ডাকের মেলা
সারা সময় ডাকছে দেখ চলছে ডাকের খেলা।
ব্যাঙে ডাকে ঘ্যাঙো স্বরে বর্ষা এলে বারে
দিনে ডাকে রাতে ডাকে, ডাকে খালের চরে।
মেঘ ডাকে ভাই গুড়ুম গুড়ুম বর্ষা টাপুর টুপুর
রৌদ্র ডাকে তাপদাহে সকাল কিংবা দুপুর।
শিয়াল ডাকে হুক্কা হুয়া বিড়াল ডাকে মিউ
গরু বাছুর হাম্বা ডাকে কুকুর ডাকে ঘেউ।
হাসে ডাকে প্যাঁক প্যাঁক ছাগল ডাকে ভ্যাঁ
দুধের শিশু ডাকে মায়ে দেখলে লাগে খ্যাঁ।
মোরগ ডাকে কুক্কুরু কু খাটাশ ডাকে মাপে
যাত্রী ডাকে কন্ডাক্টরে ডাকে যাত্রী চাপে।
ঝিঁঝি করে ঝিঁঝি পোকা ডাকে মালপোকা ডাকে সাথে
মিটি মিটি করে জোনাকি ডাকে ঝোপঝাড়ের ঐ বাঁকে।
নিশি ডাকে স্তব্ধতাই জোসনা চিত্রকলাই
কেকা স্বরে ময়ূর ডাকে মড় মড় নাগর দোলাই।
হাজার ডাকের কলকলানি দুনিয়া জোড়া সুর
মা ডাকে মোর খোকা বলে কতই না মধুর।
সাদাকালো ভাবনা
সারমিন চৌধুরী
জীবনের খাতা কত সহজেই
নৈমিত্তিক কত আঁকিবুঁকিতে ভরে যায়,
দিনের চঞ্চলতার সমাপ্তিতে গোধূলির আবির
ছড়িয়ে দিয়ে যায় কিছু প্রশান্তি নির্মল হৃদয়ে!
পৃষ্ঠা ফুরিয়ে যায় অলিখিত থাকে কতকিছুই
অব্যক্ত কথারা নক্ষত্রের ন্যায় জ্বলে ওঠে;
নিস্তব্ধ চারপাশটাকে যেন ভুতুড়ে লাগে
সখের কামিনী গাছে অদৃশ্য কীসের ছায়া?
সাদাকালো ভাবনার আদলে ভীতির সঞ্চার
কিছু লেখা আর কভুও হয়ে ওঠেনি পাতাতে,
এমন দিনে ছেড়ে গিয়েছিলে তুমি হাত;
সেটা লেখা আছে শুধু হৃদয়ের খাতাতে
বুকের ক্ষত হয়তো শুকিয়ে কাঠ হয়েছে,
কিন্তু দাগগুলো আজও রয়ে গেছে স্পষ্ট।
ধূমকেতু
মো. হায়দার আলি শান্ত
যুগে যুগে কবি নজরুল
মহা বিল্পব মহা বিদ্রোহ
জনসমুদ্রে মহাপ্লাবন
সুরে প্রকম্পিত স্বর সমুদ্র
অভয় মন্ত্র সুর বাণী
রক্তে তোলে অগ্নি ফুলকি
বঞ্চিত মানব হৃদয়ে উদ্বেলিত
সাম্য বাণী ভাঙার গানে দুলকি
চিরন্তন সংগীত সুর¯্রষ্টা
মহাবিদ্রোহী কবি নজরুল
কারার ঐ লৌহ কপাট গানে
রণাঙ্গনে লড়াই হয়েছে তুমুল
বন্দী থেকে মুক্তির ভূবনে
মহাকালের ধূমকেতু নজরুল।
দুটি বৈশাখী ছড়া
কাজী আবুল কাশেম রতন
১. বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ঝড়ো মাসে
আম-কাঁঠালে ভরা।
হাট-বাজারে ফল-ফলাদি
কিনতে হয় না চড়া।
ইস্টিকুটুম বন্ধু সুজন
সবার ঘরে ঘরে।
সবাই মিলে পুল কমনে
খায় আনন্দ করে।
২. আয় ছেলেরা-আয় মেয়েরা
মেলা দেখতে যাই।
বউবাজারে মেলা হচ্ছে,
আর ভাবনা নাই,
চুড়ি, ফিতা, আলতা নেবো
কিনবো লাল শাড়ি,
নাগর দোলায় চড়বো সবাই
ফিরবো শেষে বাড়ি।
দিন এসেছে
মুহাম্মদ খোরশেদ আলী ম-ল
দিন এসেছে সৎ সাহসীর
সত্য কথা বলার,
দিন এসেছে দীন বেদীনের
ফারাক চিনে চলার।
দিন এসেছে আসল-নকল
বন্ধু চেনার দীন,
দিন এসেছে চিনে নিতে
কে দীনদার আর কে বেদীন।
দিন এসেছে বেদীনদের
প্রতিহত করার,
দিন এসেছে দীনের পথে
শহীদ হয়ে মরার।
দিন এসেছে মিলিয়ে নিতে
জীবনের সব যোগ,
দিন এসেছে সারিয়ে নিতে
সকল মহারোগ।
দিন এসেছে দীনদারদের
ঘুরে দাঁড়াবার,
ঘরে ঘরে প্রতিবাদের
দুর্গ গড়ে তোলার।
আমার দেশের মাটি
মো. শরীফউদ্দীন নিকুল
মাতৃভূমিতে জন্ম নিয়েÑ
বেশ তো আছি সুখে
তাই তো মায়ের ভালোবাসা
লালন করি বুকে।
ফসল ভরা স্বপ্নে ঘেরা
আমার ছোট্ট গাঁয়
যেথায় আমি মাটি মাতার
মধুর ছোঁয়া পাই।
এই আমার সোনার দেশ
সবার চেয়েও খাঁটি
আসল সোনার এই ঘাঁটি
আমার দেশের মাটি।
ফজর নামাজ
মুহাম্মদ আলম জাহাঙ্গীর
ফজর ওয়াক্তে আযান দিলে
মুয়াজ্জিন মধুর সুরে,
অজু করে মসজিদে যাই
ঘুম রেখে সুদূরে।
মসজিদ গিয়ে সবার আগে
সুন্নত নামাজ পড়ি,
ফরজ নামাজ পড়ি সবাই
তাকবীর উলা ধরি।
দুই রাকাত দুই রাকাত করে
সুন্নত ফরজ পড়ে,
মসজিদ হতে যাই বেরিয়ে
জমিন মাঝে ছড়ে।
ফজর নামাজ হলো ধরায়
আদম নবীর স্মৃতি,
ফজর নামাজ পড়বে যেজন
পাবে আদম প্রীতি॥
এডিস মশা
মাহমুদা সিদ্দিকা
প্রতিদিনই শুনছি কেবল
ডেঙ্গুজ্বরের কথা
এডিস মশা কামড় দিয়ে
দিচ্ছে ভীষণ ব্যথা।
বর্ষাকালে এডিস মশা
ইচ্ছেমতো ঘুরে
কারো আবার তার কামড়ে
জীবনটা যায় পুড়ে।
এমন মশা নিধন করা
খুব প্রয়োজন আজ
তা না হলে দু’দিন পরে
মশা করবে রাজ।
জমা যত পানি আছে
দিতে হবে ফেলে
মশা বলে থাকবো কোথায়
বাড়ি ভেঙে গেলে?
আবার বানাবো বাঁশের কেল্লা
খুরশীদ আলম বাবু
আবার বানাবো বাঁশের কেল্লাÑ
বীর তিতুমীর দেবে মুক্তির ডাক
হাজার জনতা শুনেছে এবার শেষ হায়দারী হাঁকÑ
বদর যোদ্ধা দাঁড়িয়েছে আজ
ভাঙবেই তারা শোষণের তাজ
জেগেছে যখন শোষিত সমাজ
শোষক বনেছে বিশ^ বেহায়া চতুর কুহকী কাক
তুমি কেন ঘরেÑ এসো চরাচরে ভাঙতেই হবে শোষকের মধুচাক।
যদিও আঁধার কালো-
পথে শত বাধাÑ পিঞ্জরখোলা পাখিদের
মতো আলো-
তোমার হৃদয়ে জাগালো যে ঝড়
মুক্তির রোশনাই।
ভয় কি বন্ধু পেয়েছি ভরসা
জনতা তোমার ঠাঁই।
বাঁশের কেল্লা ধ্বংস হলেও ভাঙেনি তোমার মন,
আজও তোমাকে শোষিত জনতা
করছে অন্বেষণ।
ওরে আয় ধেয়ে আয়
মুক্তির দরিয়ায়
পথে পথে আজ ফুটে আছে নষ্ট মোহময়
তাজা ফুল
থাকিস না বসে- ওরে ধেয়ে আয়-
উত্তাল হলো মুক্তির নদীর কূল।
রাখ তোর অভিমান
হতাশ হোসনে প্রাণ
আবার শুনেছি দূর দিগন্তে সেই বেলালী আজান।
আমার স্বদেশÑ আমাদের সুখ চুরমার
করে নমরূদ-সাদ্দাদ
তোমার চেতনা বাতাসের মতো গভীর অগাধ।
আমরা জেনেছি বন্দি স্বদেশে তুমিই
ভরসা ঈমানের শেষ বীর
নদী ও মাঠের ফুল ও ফসলে
আবার বানাবো বাঁশের কেল্লা জাগো মজলুম
বন্দি মহলে
ডাক দেবে তিতুমীর
জিহাদের মাঠে জনতার শত জোয়ার
যদিও শোষক রয়েছে তোমাকে ঘিরে
পথের কিনারে অনাহারি মন জেগেছে
যখন বেদনার শেষ তীরে,
সামনে তোমার দাঁড়িয়ে রয়েছে
মজনু শাহের তাজা ঘোড় সওয়ার
মানব মুক্তি ঈমানের তলোয়ার।
হে ঈমানী বীরÑ ভয় নেই আর
আমরা উড়াবো বিজয় নিশান
পোড়া কেল্লায় ফিরে।
ভেদাভেদ আর নয়
আমিনুল ইসলাম কাইয়ুম
বেশ কিছু স্লোগান,
শুনছোÑ দিয়ে কান,
কাইয়ুম কবিÑ কয়॥
মহান মে দিবস,
পেতে হলেইÑ যশ,
‘ভেদাভেদÑ আর নয়॥’
কুরআন-এর বাণী,
নবী ওতো জানি,
শ্রমিকদের দেও মূল্য॥
তারাও মানুষ,
হয়েÑ ওতো বেহুঁশ,
ভেব নাÑ পরমাণু তুল্য॥
শুকিয়ে যাবার আগে ঘাম,
দিয়ে দাও শ্রমিকের দাম,
বলেন মোদের নবী॥
উঁচু-নিচু ভেদাভেদ,
ভোলোÑ হৃদয়ের খেদ,
কয়-কাইয়ুম কবি॥
পড়
শাহ্ জালাল ইয়ামিন
মনের মতো পড়বো মোরা শিখবো হরেক জ্ঞান,
কিছু লোকের মুখের বুলি, ভালো না ওর জেহান।
এহেন লোকের এমন কথা মেনে নেওয়া যায়?
না দিয়ে প্রেরণা, নেয় মূর্খতার দায়!
কুরআন পড় হাদিস পড়, আরও পড় জ্ঞান-বিজ্ঞানের বই,
এমন করে পড়বে তুমি, যেন মুখে ফুটে ভিন্নি ধানের খই।
পড়ার টেবিল আপন কর, অধ্যয়ন কর সদা,
পড়ালেখার ক্ষেত্রে তোমার কীসের এতো বাধা।
ইবনে সিনার জীবনী দেখো, দেখবে জ্ঞান সাধনা কত,
সারাটি জীবন জ্ঞান-বিজ্ঞানে ছিলেন তিনি রত।
মোরা বিদ্যা শেখার ক্ষেত্রে যেন ‘আবদ্ধ কূপের ব্যাঙ’
হায়! আজ অধুনা বিশ্বায়নে নেই কোন র্যাংক।
‘ইক্বরা’ দিয়ে কুরআন যখন হলো করা শুরু,
পড়ার ক্ষেত্রে তুমি আজ কেন এত সরু?
জিব্বা চলে এলোমেলো কাজের বেলায় ফাঁকা,
কোন কাজে হয় না কাজি আকামে পাকা।
পড়ালেখা ত্যাগ করে আসার আলো বাসা বাঁধে,
তুমি মূর্খতা নিয়ে চল কোন স্বাদে?
ধরণী এখন হাতের মুঠে এ কথা বল সদা,
জানিয়াও কেন জীবনীতে কৃতিত্বে বদা।
এ যুগেতে ইংরেজ জাতির পড়ালেখার ধুম,
ভিন দেশেতে নিজ প্রতাপে চাষ করেছে ঝুম।
মুসলিম যখন একে-একে জয় করেছে দেশ
তখন সংগ্রাম-সাধনা আর বিদ্যায় ছিল বেশ।
জ্ঞান-বিজ্ঞানে যখন তারা চলে গেল বেঁকে,
ভিন্ন শক্তি বসুন্ধরার প্রতাপ নিল এঁকে।
তাইমিয়ার বিদ্যা চর্চায় বিপ্লবের ডাক,
তা দেখে বিরোধীদের নাচানাচির হাঁক।
কত যে বছর ছিল সে কারাগারে রত,
সেখানেতে বসে-বসে বই লেখেছে শত।
নজরুলের কলম-তির ইংরেজদের গায়,
অগ্নিঝরা লেখা দেখে, দিল গ্রেফতারে রায়।
খালদুনের কলম দ্বারা পা-ুলিপির পাহাড়,
জীবনে লিখে গেল শত ইতিহাসের বাহার।
শেখ সা’দী জানার জন্য গেল কত দেশে,
ত্রিশ বছর কেটে ছিল মুসাফিরের বেশে।
এক সময়ে মুসলিমরা লিখে গেল কত যে বই,
আজ খাটের তোশক উঁচু করে ঘুমের ঘরে রই।
জগৎসেরা বাংলা ভাষা
ফরিদ আহমদ ফরাজী
জগৎজুড়ে হাজার ভাষা দেখি
সব ভাষাতে মনজুড়ে না সেকি!
কারণ আমার মায়ের ভাষায় মধু
বোটেল গর্ড নয়, আমরা বলি কদু।
জগৎসেরা বাংলা ভাষা তাই
এ ভাষাতে হাসি কাঁদি গাই
বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষার নাম
রক্ত দিয়ে দিলেন ভাষার দাম।
সোনার গাঁয় সবুজ সোনা ফলে
সে সবুজে সফিক ভাইয়ে বলে
ভিন ভাষাতে নেইকো সার্থকতা
মায়ের ভাষায় বলতে হবে কথা।
বাংলা ভাষায় যেমন মজা পাই
অন্য ভাষায় তেমন মজা নাই
এমন মধুর ভাষার রাখতে মান
সালাম, রফিক, বরকত দিল জান।
দুষ্টু ইঁদুর
আব্দুস সাত্তার সুমন
দুষ্টু ইঁদুর দুষ্টু ইঁদুর
চঞ্চলতা ভারি,
ক্ষুদ্র তাহার জীবনগতি
গর্তে বসতবাড়ি।
তীক্ষè বাহার দাঁতের মাড়ি
কেটে কুচি কুচি,
যেটা পাবে সেটা খাবে
বড্ড তাদের রুচি।
বীর সেনানির মতো করে
ধ্বংস করে সাভার,
ওদের জ্বালায় লুকিয়ে রাখি
আছে যত খাবার।
ক্ষেত-খামারে চাকরি করে
দুষ্টু ইঁদুর সচল,
বাড়িঘরের দোকানপাটে
বিড়াল ছাড়া অচল।