ভারতে মুসলিম নির্যাতন চরমে
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১০
কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই প্রতিবেশী দেশ ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। মুসলিম ধর্মে মুখে দাড়ি রাখা সুন্নত আমল অথচ এই ধর্মীয় অনুশীলনের কারণে প্রকাশ্যে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ভারতীয় মুসলিমরা। গরুর গোশত খাওয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য বৈধ, কিন্তু সেখানে গরুর গোশত খাওয়া ও বহন করার কারণেও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বহুবার। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হিন্দু জাতীয়তাবাদী স্লোগান হিসেবে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানটি ব্যবহার শুরু করে। ‘জয় শ্রীরাম’ ‘ভগবান রামের বিজয়’। হিন্দুরা বা বিজেপি সদস্যরা এ স্লোগান দিতেই পারেন, কিন্তু ভারতীয় মুসলিমদের এ স্লোগান দিতে বাধ্য করতে কেন নির্যাতন করতে হবে? ভারতে মুসলিমদের এমন স্লোগান দিতে বাধ্য করতে নির্যাতন করার অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। দেশটিতে হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে কাপড় দিয়ে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় উপাসনালয় মসজিদ ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কতটা সাম্প্রদায়িক ব্যাধি, তা যে কেউ সহজেই আন্দাজ করতে পারবেন। দেশটিতে বসবাসকারী মুসলিম নাগরিকদের ওপর উগ্রহিন্দুদের অব্যাহত এমন নির্মমতার পরও রাষ্ট্রটি যেন অন্ধ ও বধির হয়ে আছে। সেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না ভারত সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের রিলিজিয়াস ফ্রিডম কমিটি ভারতকে জাতিগত নিপীড়ন বন্ধে সতর্ক করলেও মোদি সরকার এতে কর্ণপাত করেনি। তবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার বিবৃতি দিয়ে প্রতিকার চেয়েছে। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোও এ নিয়ে সোচ্চার রয়েছে।
মুসলিমকে তুলে নিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে করা হয় নির্যাতন : ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক মুসলিম বৃদ্ধকে নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। এমনকি তার দাড়িও কেটে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রাজ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন জানিয়েছে, গাজিয়াবাদের লোনি এলাকার মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরছিলেন আবদুস সামাদ। এ সময় কয়েকজন যুবক তাকে অটো থেকে তুলে নিয়ে যায়। নির্জন এলাকায় নিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে অভিযুক্ত যুবকরা। জয় শ্রীরাম বলতেও বাধ্য করা হয়। তাতে রাজি না হওয়ায় আবদুস সামাদকে রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। সামাদ জানিয়েছেন, লাল টি-শার্ট পরা এক যুবক তার গলায় ছুরি রেখে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করে। তিনি রাজি না হলে তার দাড়ি কেটে নেওয়া হয়।
হোলি উৎসব করতে ঢেকে দেওয়া হয় ৬০ মসজিদ : সম্প্রতি দেশটিতে হোলি উৎসব নিয়ে ভারতের উত্তরপ্রদেশের সাম্ভলে জোরপূর্বক ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় ঐহিত্যবাহী ৬০টির বেশি মসজিদ। কট্টর হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার শুধু এটুকুতেই ক্ষান্ত হয়নি। গ্রেফতার করেছে হাজারের বেশি মুসলিম ভারতীয়কে। বিভিন্ন রাজ্যে মসজিদে যাওয়ার পথে কিংবা রং মাখতে না চাওয়ায় কয়েকজনকে পিটিয়ে ও শ^াসরোধ করে হত্যা করেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। দেশটির মহারাষ্ট্রের নাগপুর শহরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল নাগপুরের মহাল এলাকায় একটি বিক্ষোভ জমায়েত করে। সেই বিক্ষোভে আওরঙ্গজেবের একটি ছবি এবং ঘাসেভরা সবুজ কাপড়ে আবৃত একটি প্রতীকী সমাধি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৭ মার্চ হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া দেশটিতে মুসলিম স্থাপত্য, বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার খবর প্রায়ই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়।
লাউড স্পিকারে আজান দেওয়ায় ইমামের বিরুদ্ধে মামলা : সম্প্রতি লাউড স্পিকারে আজান দেওয়ায় ইমামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হোলির জন্য মুসলিমদের নামাজ আদায় না করতে দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে। আল-জাজিরা, টিআরটি ও ডয়চে ভেলেসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা দেখছি, ভারতের একটি মসজিদের সামনে হঠাৎ করেই কট্টর হিন্দুত্ববাদী একটি দল নামাজ পড়ে বের হওয়া মুসল্লিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তাদের মারধর করে আর উচ্চৈঃস্বরে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে থাকে, তাদের হাতে ছিল মদের বোতল। এছাড়া রাস্তা-ঘাটে মুসলিমদের পথ আটকে হোলির রং মাখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গেলে পিটিয়ে জখম করা হচ্ছে। নামাজরত মুসল্লিদের ওপর শারীরিক আক্রমণ করা হচ্ছে। বিদ্যালয় ও যানবাহন থেকে নিয়ে বাড়িঘরেও নারী ও শিশুরাও নিরাপদে নেই। তাদের ওপরও হামলা হচ্ছে।
হুমকিতে পড়তে পারে বৃহত্তর ভারতের অস্তিত্ব
ভারতে মুসলিম নিপীড়নের বিষয়টি প্রায়ই আলোচিত হয়ে আসছে। এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় ইস্যু নয়, বরং আর্থিক, সামাজিক; এমনকি সরকারি সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রেও মুসলমানদের বঞ্চিত করার অভিযোগ পুরনো। সম্প্রতি এক মসজিদ থেকে মুসল্লিদের বের হওয়া অবস্থায় পুলিশ কর্তৃক বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়েছে। কোথাও আবার মসজিদের সামনে উচ্চৈঃস্বরে গান বাজিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র উঁচিয়ে মহড়া দিচ্ছে উগ্রপন্থীরা। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে; বিশেষত আসাম, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খ-সহ অন্য অনেক অঞ্চলে আরএসএস (রাশনাল সোসাইটি অফ হিন্দু) ও বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি) একক হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুসলিম নির্যাতন চালাচ্ছে। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, শুধু মুসলিমদের ওপরই নয়, অন্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ওপরও হামলা হচ্ছে। তাদের মতে, এর পেছনে মূল কারণ হলো ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রচেষ্টা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি মুসলিম নির্যাতন বন্ধ না করা হয়, তবে বৃহত্তর ভারতের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। ভূরাজনীতি বিশ্লেষক ও গবেষক এম জাকির হোসেন খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ভারতের ৩০ কোটি মুসলমান কিংবা সংখ্যালঘু অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী, যেমন খ্রিস্টান সম্প্রদায় বা বৌদ্ধদের যদি রুট আউট করে একক হিন্দু রাষ্ট্র গঠন করতে চান, বা তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানাতে চান, তা কখনোই সম্ভব হবে না। এটি শুধুমাত্র ভারতের ভৌগোলিক অস্তিত্বকে হুমকির সম্মুখীন করবে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় বৃহত্তর সংঘাত তৈরি করবে।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, মুসলিম নিপীড়ন বন্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জনমত গঠনের পাশাপাশি ওআইসি এবং জাতিসংঘের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতে মুসলমান নিধনের ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি
বিজেপি সরকার ভারতে বসবাসকারী ২০ কোটির অধিক মুসলমানকে সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ভারত সরকারের মুসলমান নিধনের ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরানোর দাবিকে কেন্দ্র করে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার ঘটনায় নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ভারতের মুঘল সম্রাটগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন আওরঙ্গজেব। তার কবর সরানোর দাবিকে কেন্দ্র করে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পরার কারণে সেখানে কারফিউ জারির মতো ঘটনা অত্যন্ত অন্যায়, অমানবিক ও দুঃখজনক। বিজেপির মদদপুষ্ট বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলসহ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলোর উসকানির কারণেই ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বার বার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে। এজন্য বিজেপি সরকারই দায়ী। বিজেপি সরকারের এ ধরনের সাম্প্রদায়িক তৎপরতা জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত মানবাধিকার ও ধর্মীয় অধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। ভারতে মুসলিম নিধন বন্ধ করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি জাতিসংঘ এবং ওআইসিসহ সকল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও শান্তিকামী বিশ^বাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
ভারতে সংখ্যালঘুদের কোনো নিরাপত্তা নেই
ভারতে মুসলিম খ্রিস্টান এবং নি¤œবর্ণের দলিত হিন্দু শিখসহ সংখ্যালঘুদের কোনো নিরাপত্তা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানাইÑ ভারতের যে রাজ্যগুলোয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে তার তদন্ত করুক।’ সম্প্রীতি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অসংখ্য নির্মমতার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সেসব নিয়ে দেশটির কোনো সংকোচ বা অনুশোচনা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের মাষ্টারপ্ল্যানের পরিস্থিতিতে তারা অযাচিত উদ্বেগ-উগ্রতা প্রকাশ করছে, যা সীমা অতিক্রম করেছে। ভারতের ভূমিকা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। তাদের নিজেদের দেশে মুসলিম খ্রিস্টান নি¤œবর্নের দলিত হিন্দু শিখসহ সংখ্যালঘুদের কোনো নিরাপত্তা নেই। তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অস্থির।’
সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের দাবি এনসিপি ও খেলাফতের
গত ২০ এপ্রিল রোববার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও খেলাফত মজলিস যৌথভাবে একটি বিবৃতিতে দেয়। ওই বিবৃতিতে অনেকগুলো যৌথ দাবির মধ্যে ভারতীয় মুসলমানদের সম্পদ লুট ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের জন্য ভারতের মুসলিম ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল বাতিলের দাবি করেন। একইসঙ্গে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ করার দাবি জানায়। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, ‘ভারতে বিজেপির নেতৃত্বে মুসলমানদের ওপর একের পর এক নিপীড়ন চলছে। হিটলারের কায়দায় সেখানে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ওয়াক্ফ আইন সংশোধন করে মসজিদ, মাদরাসা ও কবরস্থানের মতো পবিত্র সম্পদ হরণ করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে চরম দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে। আমাদের দায়িত্ব ভারতের নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো। এটি আমাদের ঈমানী, নৈতিক ও জাতীয় দায়িত্ব।’
বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ
গাজায় বর্বরোচিত গণহত্যা, ভারতে ওয়াক্ফ বিল পাস ও মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। গত ১৮ এপ্রিল জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ প্রতিবাদ জানায় সংগঠনটি। এ সময় বক্তারা বলেন, গুজরাটের কসাই মোদি একের পর এক মুসলিমদের অধিকার খর্ব করছে। তারা মুসলমানদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিছে। তাদের জন্মস্থান থেকে উচ্ছেদ করছে। সর্বশেষ ওয়াক্ফ বিল পাস করে ভারতে মুসলমানদের অধিকার খর্ব করছে। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে সমগ্র ভারতে মুসলিমরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাদের হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এসব নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাই। এক হিন্দুত্ববাদী সরকার আমাদের ১৬ বছর নিষ্পেষিত করছে। এর পরিণতি ভারতকে ভোগ করতে হবে।
উগ্রবাদীদের লালন করে জ্ঞান দেয় অসাম্প্রদায়িকতার
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী বলেছেন, ভারত নিজেই তাদের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারে না। তারা মুসলমানদের রক্ত দিয়ে হোলি উৎসব করে। এমনকি তারা হোলি করতে গিয়ে মসজিদকে পর্দা দিয়ে ঢেকে দেয়। রং মাখানোয় বাধা দেওয়ায় মুসলমানদের ওপর হামলা করে। তারা উগ্রবাদীদের লালন করে অথচ আমাদেরকে অসাম্প্রদায়িক হবার জ্ঞান দেয়। হাদী বলেন, ভারত যদি তাদের মাইনরিটির নিরাপত্তা দিতে না পারে, কুকিচিন নারীদের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে তাদের দেশের ম্যাপ যে আজীবন এমন থাকবে, সেটা বলা যায় না। ভারত যদি মাইনরিটির নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে তাদের প্রতিবেশীরাই ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের শিকড় উপড়ে ফেলবে। ভারতে সংখ্যালঘুদের যেমন জীবন চলছে, পৃথিবীর আর কোথাও সংখ্যালঘুরা এমন মানবেতর জীবন কাটায় না। আমরা ভারতে মুসলিম, বুদ্ধ, খ্রিস্টান, হরিজন দলিতদের নিরাপত্তা কামনা করছি। তিনি বলেন, ভারত মুসলমানদের স্থাপনা উচ্ছেদ করার পাশাপাশি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মিয়ানমারের সীমানা পরিবর্তন করে রাম রাজ্য কায়েম করতে চায়। ভারতে খ্রিস্টানদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হয়, কিন্তু ভারত বলে চট্টগ্রামে নাকি হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করা হয়। পত্রিকার সূত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে ২০১৫-১৮ সাল পর্যন্ত শুধু গরু খাওয়ার অপরাধে ৪৪ মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে। মুসলিমদের তো শুকর হারাম তবুও মানুষ শুকর চাষ করে থাকে। কিন্তু সেখানে তো কাউকে হামলা করা হয়নি।
ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলায় ইউএসসিআইআরএফের উদ্বেগ
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সংস্থা কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ) ২০২৫ সালে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে, তাতে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানরা দিন দিন অমানবিক আচরণের শিকার হচ্ছে বলে উল্লেখ করে এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুপ্তহত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। মার্কিন ফেডারেল সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৪ সালে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ও বৈষম্য বেড়েই চলেছে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত বছরের নির্বাচনী প্রচারণায় ‘মুসলিমসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে ও ভুল তথ্য ছড়িয়েছে।’ গত বছর এপ্রিলে মুসলমানদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে উল্লেখ করে মোদি বলেছিলেন, তারা ‘বেশি বেশি সন্তান’ নেয়। এর সঙ্গে কংগ্রেসসহ বিরোধীদের ভোটের স্বার্থ রয়েছে বলে মোদির অভিযোগ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে মার্কিন সংস্থাটির প্রতিবেদনে। তবে নয়াদিল্লি এসব প্রতিবেদনকে ‘গভীরভাবে পক্ষপাতদুষ্ট’ বলেছে। ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা মোদি বরাবরই ধর্মীয় বৈষম্য ও নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এসব অভিযোগের বিপরীতে মোদির ভাষ্য, তার সরকারের বিদ্যুতায়ন ও ভর্তুকি থেকে সংখ্যালঘুরা ব্যাপকভাবে উপকৃত। ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের জন্য ভারতকে ‘কান্ট্রি অব পার্টিকুলার কনসার্ন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি নিখিল যাদব ও র-এর বিরুদ্ধে ‘সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের’ সুপারিশ করেছে ইউএসসিআইআরএফ। মানবাধিকারকর্মীরা বরাবরই ভারতীয় সংখ্যালঘুদের দুর্দশার কথা তুলে ধরছেন। ভারতে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের ছড়াছড়ি, জাতিসংঘের দৃষ্টিতে চরম বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইন, ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতা ক্ষুণœকারী আইন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ও মুসলমানদের মালিকানাধীন স্থাপনা ভেঙে ফেলার কথা তুলে ধরেছেন তারা। ইউএসসিআইআরএফ উভয়দলীয় সরকারি সংস্থা। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং করণীয় সুপারিশ করে।
মুসলিমদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান ঢাকার
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়ানোর ভারতের চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সরকার। প্রতিবেশী দেশটিকে সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করার আহ্বানও জানিয়েছে ঢাকা। গত ১৭ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অন্তর্বর্তী সরকারের এ অবস্থান তুলে ধরেন। প্রেস সচিব বলেন, মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো চেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার মুসলিমদের ওপর হামলা এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তাহানির ঘটনার নিন্দা জানায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহে মুসলিম-অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং হুগলি জেলায় এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৬ এপ্রিল কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জেম-বুদ্ধিজীবীদের সভায় এ সহিংসতার জন্য বাংলাদেশকে দোষারোপ করেন। তার দাবি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠক করে চক্রান্ত করে সেখানে অশান্তি লাগিয়েছেন। শফিকুল আলম বলেন, আমরা ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
ঢাকার অবস্থানের কড়া সমালোচনা ভারতের
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের আহ্বানের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দিল্লি। তারা বলছে, ‘অযৌক্তিক’ ও ‘গোপন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মন্তব্য না করে বাংলাদেশের বরং নিজেদের সংখ্যালঘুদের রক্ষায় আরও মনোযোগ দেয়া উচিত। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ওই আহ্বান জানানো হয় বলে ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শুক্রবার এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাদের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি পোস্ট করা হয়। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের বরাত দিয়ে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে করা মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করছে ভারত। “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের সমান্তরাল একটা রূপ দেয়ার প্রচ্ছন্ন ও গোপন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চেষ্টা এটি’, বলেন তিনি। বাংলাদেশে এ ধরনের অপরাধের (সংখ্যালঘু নির্যাতন) জন্য দায়ীরা ‘মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে’ বলেও উল্লেখ করেন মি. জয়সওয়াল। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘অযৌক্তিক মন্তব্য এবং ভালো সাজার চেষ্টা না করে, বাংলাদেশ তার নিজ সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার দিকে মনোনিবেশ করলে বরং আরও ভালো করবে।’
মুসলিম নির্যাতনে ১৫১ আলেমের উদ্বেগ
ভারতে উগ্র হিন্দুদের দ্বারা মুসলমানদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের বিশিষ্ট আলেমরা। অবিলম্বে মুসলিম নির্যাতন বন্ধ ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ১৫১ জন আলেম। গত ১৬ এপ্রিল গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে ন্যক্কারজনক এসব হামলা ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং নির্যাতিত মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিদাতারা হলেনÑ আল্লামা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, প্রফেসর ড. এবিএম হিজবুল্লাহ, মুফতি মুহা. কাজী ইব্রাহীম, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরি, ড. খলীলুর রহমান আল মাদানী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সরকারকে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান ইসলামী আন্দোলনের
ভারতে ওয়াক্ফ বিলের ‘বিতর্কিত সংশোধন’ বাতিল ও সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশ সরকারকে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গত ১৩ এপ্রিল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটি এ আহ্বান জানায়। বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, আধুনিক ভারত রাষ্ট্র গঠন হওয়া এমনকি ভারতে হিন্দুত্ববাদের বিকাশের আগেই ওয়াক্ফর প্রচলন ছিল। ভারতসহ এ অঞ্চলের শিক্ষা ও নাগরিক সমাজ গড়ে উঠেছে ওয়াক্ফ সম্পত্তি ব্যবহার করে। সভ্যতা বিকাশের সেই ঐতিহাসিক পদ্ধতিকে বিজেপি সরকার অন্যায্য ও সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার বশীভূত হয়ে বিকৃত করে ভারতজুড়ে মুসলিম নিধনের নতুন উপলক্ষ তৈরি করেছে। বিৃবতিতে তিনি সরকারকে বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে ভারতকে কঠোর বার্তা দিন। নিরীহ মানুষকে রক্ষায় প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোয় ভারতে মুসলিম নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তার প্রতিকারে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান করুন।’
ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জাকিয়া সোমান বলছেন, দমন-পীড়নের মুখে থাকা একটি জাতিগোষ্ঠীর কাছে সব সময়ে নেতৃত্বের দাবি তোলা অন্যায্যও বটে; কিন্তু পবিত্র কুরআনের বাণী মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তাদেরই সাহায্য করেন, যারা নিজেরা নিজেদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। ভারতীয় সংবিধান এখনো আমাদের আশার জায়গা, যেখানে একতা ও উন্নতির সুযোগ রয়েছে। আমাদের দরকার এমন একটি বৃহত্তর গণআন্দোলন, যেখানে ধর্মের বিভাজন পেরিয়ে সবাই মিলে ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়বে। যেমনটা আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় দেখেছি। সিএএ-এনআরসি, লাভ জিহাদ আইন, আর এখন এ নতুন ওয়াক্ফ আইন সবই দেখিয়ে দিচ্ছে যে, এখন সময় হয়েছে মুসলমানদের মধ্যে এক শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক চেতনার নেতৃত্ব গড়ে তোলার। নেতৃত্ব হোক মুসলিম, হোক বা অমুসলিম যারা আমাদের সংবিধান, সাম্য আর সহাবস্থানের পক্ষে কথা বলবেন, তাঁরাই হোক আমাদের ভরসা।
প্রসঙ্গত, চরম সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে চিহ্নিত ভারত। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সময় মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি হোলি উৎসব নিয়ে দেশটিতে বেশ কয়েকজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার অনেক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মুসলিম ব্যক্তির দাড়ি টেনে ধরে নির্যাতন করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এমন ন্যক্কারজন ঘটনা দেশটিতে অহরহ ঘটছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত সরকারের মদদে দেশটিতে মুসলিমবিদ্বেষ ও ঠুনকো অজুহাতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালায় উগ্রবাদীরা। কিন্তু দেশটির প্রশাসন এসব বিষয়ে আইন প্রয়োগে কোনো আগ্রহ দেখায় না।