বেড়েছে মাছ ও সবজির দাম
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:১৯
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘদিন কম মূল্যে সবজি পাওয়া গেলেও গত কয়েকদিন ধরে প্রায় সব ধরনের সবজির মূল্য কিছুটা বেড়েছে। গরু ও ছাগলের গোশতের দাম স্থিতিশীল থাকলেও মাছের দাম বেড়েই চলেছে। বিক্রেতাদের ভাষ্য, চাহিদা থাকলেও সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় বেশিরভাগ মাছের দাম বেড়ে গেছে। এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। তবে এখনো স্বস্তি রয়েছে অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি আলু, সব ধরনের মুরগি ও ডিমের দামে। দাম কমার পর ডিমের মূল্য কয়েক মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। ঈদের পর সব ধরনের মুরগির দাম কমেছে। মৌসুম শেষ হওয়ার পরও কারওয়ান বাজার এবং যাত্রাবাড়ী আড়ত থেকে যারা খুচরা আলু কিনেন তারা এক পাল্লা (৫ কেজি) কিনতে পারছেন মাত্র ১০০ টাকায়।
সবজির দাম বেড়েছে
তিন মাসের বেশি সময় ধরে সবজির দাম ছিল খুবই কম। যাত্রাবাড়ী সবজির পাইকারি বাজারে খুচরা এক কেজি করলা বিক্রি হতো মানভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা, এখন ওই একই বাজারের একই পরিমাণের করলা ক্রয় করতে দাম দিতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মহল্লার বাজারগুলোয় দাম আরও বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ, আবার কিছু কিছু কেবল উঠতে শুরু করেছে, যে কারণে দাম কিছুটা বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, পটোল ৮০ টাকা, করলা কেজি ৮০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুরলতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে ও শিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা কেজি ৬০ এবং সজিনা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দাম কমছে না
অনেক দিন ধরেই রাজধানীর মাছের বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতারা অতিষ্ঠ। পাবদা, চিংড়ি, টেংরা, মলা, রুইসহ বেশিরভাগ মাছের দামই বেড়েছে। বাজারে নদীর দেশি চিংড়ি বর্তমানে প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা। চাষের চিংড়িও বেড়ে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা হয়েছে। টেংরা মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, যেখানে আগের দাম ছিল ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা। শুধু চিংড়ি কিংবা টেংরা নয়, দেশি শিং ও শোল মাছের দামেও লেগেছে আগুন। শিং ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, শোল ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনকি পুঁটি মাছও বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বড় আকৃতির রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, আর মাঝারি সাইজের রুই ও কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার মতো সাধারণ চাষের মাছও বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
মুরগির দামে স্বস্তি
রাজধানীর কাঁচাবাজারে কিছু পণ্যের দাম বাড়লেও মুরগি ও ডিমের দামে স্বস্তি রয়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি দুইশ টাকার নিচে নেমে এসেছে, তেমনি ডিমের দামেও বিরাজ করছে স্থিরতা। বাজারের খবর নিয়ে জানা গেছে, সব ধরনের মুরগির গোশতের দাম তুলনামূলক কমেছে। এদিকে মুরগির দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আসায় স্বস্তির দেখা মিলেছে। বিশেষ করে মাছ কিনতে এসে অনেকেই এখন মুরগি কিনে ফিরছেন। ভোক্তারা আশা করছেন, বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং নজরদারি থাকলে এ স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিক্রেতাদের দেওয়া তথ্যমতে, বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। ঈদের আগে এ মুরগির দাম ছিল ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত। সোনালি মুরগির কেজি এখন ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৩৫০ টাকা। বাজারে এখন গরুর গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা। যদিও ঈদের আগে এ দাম ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত ছিল। খাসির গোশতের দাম এখনো ১১০০ টাকা কেজির নিচে নামেনি। বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। সুপারশপগুলোয় ডিমের মূল্য আরও কম।