মার্চ ফর গাজা

স্বাধীন ফিলিস্তিনের আকাক্সক্ষার প্রতিচ্ছবি


১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৫৮

গত ১২ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশে বর্বরোচিত গণহত্যা বন্ধের দাবি জানালেন লাখো মানুষ

সোনার বাংলা রিপোর্ট : যুদ্ধবিরতি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সব বিধি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান ও স্থলপথে নির্মম ও নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে সন্ত্রাসী ইসরাইল। টানা এ বর্বরতায় সেখানে বসবাসরত মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদ বিপন্ন। নারী-শিশুসহ ইতোমধ্যে ৫১ হাজারেরও বেশি মুসলিমকে হত্যা করেছে ইসরাইল। নিরস্ত্র গাজাবাসীর ওপর হামলা বন্ধ ও মুক্ত ফিলিস্তিনের দাবিতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে জমায়েতের আয়োজন করে ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। গত ১২ এপ্রিল শনিবার ওই জমায়েত জনসমুদ্রে রূপ নেয়। ঢাকা পরিণত হয় প্রতিবাদ ও মিছিলের নগরীতে। ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত এ অংশগ্রহণে ঢাকা হয়ে ওঠে একখণ্ড ফিলিস্তিন। দেশি গণমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোয় গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয় সেই কর্মসূচির খবর। ঢাকায় নিয়োজিত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আয়োজকরা বলেছেন, গাজার পক্ষে এটি বিশ্বের বৃহত্তম জমায়েত। সমাবেশে বাংলাদেশের সব দল, মত, চিন্তা ও দর্শনের মানুষ মজলুম ফিলিস্তিনের পাশে আছে ও সহাবস্থান করছে বলে ঘোষণা দেন। সেদিন লাখো কণ্ঠে আওয়াজ উঠেছিল ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ (মুক্ত কর ফিলিস্তিন)। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর আয়োজনে ওইদিন বিকাল ৩টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় আসেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সকালেই রাজধানী ঢাকা রূপ নেয় মিছিলের নগরীতে। মিছিলে অংশ নেয়া অধিকাংশের হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা ও বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। দুপুর হওয়ার আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল নামে। লোকারণ্য হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকাগুলোও। মাঠের আশপাশে জায়গা না পেয়ে প্রতিবাদী মানুষ অবস্থান নেন রমনা পার্কেও।
ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা ও সার্বভৌমত্বের দাবিতে শনিবারের ওই কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিল্পী-সাহিত্যিক, কবি ও সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বরা অংশ নেন। রাজধানী ঢাকা রূপ নেয় লিফিস্তিনের প্রতিচ্ছবিতে। দলমত-নির্বিশেষে সবাই এককাতারে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে ও ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন।
শনিবার দুপুরের দিকে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট মোড়, আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড, বুয়েট এলাকা, চানখারপুল, গুলিস্তান, বায়তুল মোকারমের চারপাশ, জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, ফকিরাপুল, নয়াপল্টন এলাকা, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, ফার্মগেট, কাওরান বাজার মোড়, বাংলামোটর, সায়েন্সল্যাব, কাঁটাবন মোড় এলাকা প্রতিবাদী মানুষে কানায় কানায় ভরে গেছে। এসব এলাকায় সন্ধ্যা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
গত ১২ এপ্রিল শনিবার বিকাল ৩টার পর পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। তেলাওয়াত করেন ইসলামিক স্কলার আহমদ বিন ইউসুফ। এরপর প্যালেস্টাইন ও গাজা নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল মালেক, তিনি গণজমায়েতের সভাপতিত্ব করেন। জনগণকে স্লোগানে উৎসাহ ও বক্তব্য দেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ ও ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী। সঙ্গে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ অনেকে। বিকালে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি।
গত ১২ এপ্রিল শনিবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় ৪টার দিকে। মোনাজাত করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। ফিলিস্তিনের পক্ষে কয়েক লাখ লোক এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর ফয়জুল করীম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর প্রমুখ।
মার্চ ফর গাজার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আমার দেশ সম্পাদক
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি থেকে ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে জায়নবাদী ইসরাইলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করা; গণহত্যা বন্ধে কার্যকর সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত ১২ এপ্রিল আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ থেকে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। এটি পাঠ করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরাক্রমশীল, যিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেন, যিনি মজলুমের পাশে থাকেন এবং জালিমের পরিণতি নির্ধারণ করেন। আজ আমরা বাংলাদেশের জনতা, যারা জুলুমের ইতিহাস জানি, প্রতিবাদের চেতনা ধারণ করি। আজকে আমরা সমবেত হয়েছি মৃত্যু ভয়হীন ফিলিস্তিনের গাজার জনগণের পাশে দাঁড়াতে। আজকের এ সমাবেশ কেবল প্রতিবাদ নয়, এটি ইতিহাসে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ঐক্যবদ্ধ শপথ। এই পদযাত্রা ও গণজমায়েত থেকে আজ আমরা চারটি স্তরে আমাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করছি।
আমাদের প্রথম দাবিগুলো জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, যেহেতু জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সব জাতির অধিকার রক্ষার, দখলদারিত্ব ও গণহত্যা রোধের সংকল্প প্রকাশ করে; আমরা দেখেছি, গাজায় প্রতিদিন যে রক্তপাত, যে ধ্বংস চলছে, তা কোনো একক সরকারের ব্যর্থতা নয়। বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক ব্যর্থতার ফল; এই ব্যর্থতা শুধু নীরবতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, পশ্চিমা শক্তিবলয়ের অনেক রাষ্ট্র সরাসরি দখলদার ইসরাইলকে অস্ত্র, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে এ গণহত্যাকে দীর্ঘস্থায়ী করেছে। এই বিশ্বব্যবস্থা দখলদার ইসরাইলকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে বরং রক্ষা করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে; সেহেতু আমরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
এক. জায়নবাদী ইসরাইলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে। দুই. যুদ্ধবিরতি নয়, গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিন. ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে। চার. পূর্ব জেরুসালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। পাঁচ. ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে; কারণ এ মুহূর্তে বিশ্বব্যবস্থা যে ন্যায়ের মুখোশ পরে আছে, গাজার ধ্বংসস্তূপে সেই মুখোশ খসে পড়েছে।
মুসলিম উম্মাহর প্রতি দাবি
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের দ্বিতীয় দাবিগুলো মুসলিম উম্মাহর নেতাদের প্রতি। যেহেতু আমরা বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিন কেবল একটি ভূখণ্ড নয়, এটি মুসলিম উম্মাহর আত্মপরিচয়ের অংশ এবং গাজা এখন কেবল একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর নয়, এটি আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতার বেদনাদায়ক প্রতিচ্ছবি; উম্মাহর প্রতিটি সদস্য, প্রতিটি রাষ্ট্র এবং প্রতিটি নেতৃত্বের ওপর অর্পিত সেই আমানত, যা আল্লাহ প্রদত্ত ভ্রাতৃত্ব ও দায়িত্বের সূত্রে আবদ্ধ এবং ইসরাইল একটি অবৈধ, দখলদার, গণহত্যাকারী রাষ্ট্র যা মুসলিমদের প্রথম কিবলা ও একটি পুরো জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে এবং ভারতের হিন্দুত্ববাদ আজ এই অঞ্চলে জায়নবাদী প্রকল্পের প্রতিনিধিতে পরিণত হয়েছে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত দমন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতে সম্প্রতি ওয়াকফ সম্পত্তি আইনে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক অধিকার হরণ করা হয়েছে, যা উম্মাহর জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা। সেহেতু আমরা মুসলিম বিশ্বের সরকার ও ওআইসির মতো মুসলিম উম্মাহর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলোর কাছে দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাই।
এক. ইসরাইলের সঙ্গে অর্থনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক সব সম্পর্ক অবিলম্বে ছিন্ন করতে হবে। দুই. জায়নবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। তিন. গাজার মজলুম জনগণের পাশে চিকিৎসা, খাদ্য, আবাসন ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়াতে হবে। চার. আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরাইলকে একঘরে করতে সক্রিয় কূটনৈতিক অভিযান শুরু করতে হবে। পাঁচ. জায়নবাদের দোসর ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসনের অধীনে মুসলিমদের অধিকার হরণ; বিশেষ করে ওয়াক্ফ আইনে হস্তক্ষেপের মতো রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ওআইসি ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দৃঢ় প্রতিবাদ ও কার্যকর কূটনৈতিক অবস্থান নিতে হবে। ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, গাজার রক্ত প্রবাহে আমরা লজ্জিত হওয়ার আগেই, গাজার পাশে দাঁড়ানোই উম্মাহর জন্য সম্মানের একমাত্র পথ এবং যে নেতৃত্ব আজ নীরব, কাল ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হবে তারা।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের তৃতীয় দাবিগুলো বাংলাদেশের সরকারের প্রতি। যেহেতু বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, যার স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তিতেই নিহিত রয়েছে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের চেতনা। আমরা বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিনের প্রশ্নে বাংলাদেশ কেবল মানবতার নয়, ঈমানের পক্ষেও এক ঐতিহাসিক অবস্থানে আছে এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সরকারের দায়িত্ব, জনগণের ঈমানী ও নৈতিক আকাক্সক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা রাখা। বাংলাদেশের জনগণ গাজার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে, তাই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নীরবতা এ জনআকাক্সক্ষার প্রতি অবজ্ঞার শামিল; সেহেতু আমরা বাংলাদেশের সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাই।
এক. বাংলাদেশি পাসপোর্টে এক্সসেপ্ট শর্ত পুনর্বহাল করতে হবে এবং ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়ার অবস্থান আরও সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে। দুই. সরকারের ইসরাইলি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যত চুক্তি হয়েছে, তা বাতিল করতে হবে। তিন. রাষ্ট্রীয়ভাবে গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। চার. সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং আমদানিনীতিতে জায়নবাদী কোম্পানির পণ্য বর্জনের নির্দেশনা দিতে হবে। পাঁচ. জায়নবাদের দোসর ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের অধীনে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানাতে হবে, যেহেতু হিন্দুত্ববাদ আজ শুধু একটি স্থানীয় মতবাদ নয়, বরং আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট ব্লকের অন্যতম দোসর। ছয়. পাঠ্যবই ও শিক্ষানীতিতে আল-আকসা, ফিলিস্তিন এবং মুসলিমদের সংগ্রামী ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ মুসলিম প্রজন্ম নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয় নিয়ে গড়ে ওঠে। কারণ রাষ্ট্র কেবল সীমানা নয়, রাষ্ট্র এক আমানত। আর এ আমানত রক্ষা করতে না পারলে ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করবে না।
মুসলিম হিসেবে নিজেদের অঙ্গীকারনামা
ঘোষণাপত্রের শেষে মুসলমান হিসেবে নিজেদের অঙ্গীকারনামা তুলে ধরা হয়। বলা হয়, যেহেতু আমরা বিশ্বাস করি, আল-কুদস কেবল একটি শহর নয়, এটি ঈমানের অংশ এবং আমরা জানি, বায়তুল মাকদিসের মুক্তি অন্য কারো হাতে নয় আমাদেরই কোনো প্রজন্মের হাতে তা লেখা হবে এবং আমরা বুঝি, জায়নবাদের প্রতিষ্ঠা মূলত আমাদের নিজেদের আত্মবিস্মৃতির ফল এবং আজ যদি আমরা প্রস্তুত না হই, তাহলে আল্লাহ না করুন, কাল আমাদের সন্তানরা হয়তো এমন এক বাংলাদেশ পাবে, যেখানে হিন্দুত্ববাদ ও জায়নবাদ একত্রে নতুন গাজা তৈরি করবে এবং গাজা আমাদের জন্য এক আয়না- যেখানে আমরা দেখতে পাই, কীভাবে বিশ্বাসী হওয়া মানে কেবল বেঁচে থাকা নয়, সংগ্রামে দৃঢ় থাকা। সেহেতু আমরা এ মাটির মানুষ, এই মুসলিম ভূখণ্ডের নাগরিক, এই কওমের সন্তান এবং সর্বোপরি মুসলিম উম্মাহর সদস্য হিসেবে এ অঙ্গীকার করছি।
এক. আমরা সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বয়কট করব প্রত্যেক সেই পণ্য, কোম্পানি ও শক্তিকে যারা ইসরাইলের দখলদারিত্বকে টিকিয়ে রাখে। দুই. আমরা আমাদের সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করব যারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সব প্রতীক ও নিদর্শনকে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার করবে, ইনশাআল্লাহ। তিন. আমরা আমাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলব, যারা নিজেদের আদর্শ ও ভূখণ্ড রক্ষায় জান ও মালের সর্বোচ্চ ত্যাগে প্রস্তুত থাকবে। চার. আমরা বিভাজিত হবো না, কারণ আমরা জানি, বিভক্ত জনগণকে দখল করতে দেরি হয় না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব, যাতে এ বাংলাদেশ কখনো কোনো হিন্দুত্ববাদী প্রকল্পের পরবর্তী গাজায় পরিণত না হয়। আমরা শুরু করব নিজেদের ঘর থেকে ভাষা, ইতিহাস, শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, সমাজ-সবখানে এ অঙ্গীকারের ছাপ রেখে।
আমরা মনে রাখব, গাজার শহীদরা কেবল আমাদের দোয়া চান না, তারা আমাদের প্রস্তুতি চান। শান্তি বর্ষিত হোক গাজার অধিবাসীদের ওপর, তাদের ওপর, যারা নজিরবিহীন সবর করেছেন, যারা অবিচল ঈমানের প্রমাণ দিয়েছেন। যারা ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও প্রতিরোধের আগুন জ্বেলেছেন বিশ্বের নীরবতা ও উদাসীনতার যন্ত্রণা হাসিমুখে বুকের মাঝে ধারণ করেছেন। শান্তি বর্ষিত হোক তাদের ওপর, যারা নাম রেখে গেছেন ইজ্জতের খতিয়ানে। শান্তি বর্ষিত হোক হিন্দ রজব, রীম এবং ফাদি আবু সালেহসহ সব শহীদের ওপর, যাদের রক্ত দ্বারা গাজার পবিত্রভূমি আরও পবিত্র হয়েছে, যাদের চোখে ছিল প্রতিরোধের অগ্নিশিখা। শান্তি বর্ষিত হোক বায়তুল মাকদিসের গর্বিত অধিবাসীদের ওপর, যাদের হৃদয়ে এখনো ধ্বনিত হয় ‘আল-কুদস লানা’, আল কুদস আমাদের!
গাজার জনগণকে অভিনন্দন
গাজার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে ঘোষণাপত্রে বলা হয়, আপনারা ঈমান, সবর আর কুরবানির মহাকাব্য রচনা করেছেন। দুনিয়াকে দেখিয়েছেন ঈমান আর তাওয়াক্কুলের শক্তি। আমরা বাংলাদেশের মানুষ-শাহ জালাল আর শরীয়তুল্লাহর ভূমি থেকে দাঁড়িয়ে, আপনাদের সালাম জানাই, আপনাদের শহীদদের প্রতি ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানাই, আর আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় এ দোয়া, হে আল্লাহ! গাজার এ সাহসী জনপদকে তুমি সেই পাথর বানিয়ে দাও, যার ওপর গিয়ে ভেঙে পড়বে জায়নিস্টদের সব ষড়যন্ত্র।
বাংলাদেশের সব চিন্তা ও দর্শনের মানুষ ফিলিস্তিনিদের পাশে আছেন
বাংলাদেশের সব দল-মত চিন্তা-দর্শনের মানুষ ফিলিস্তিনিদের পাশে আছে বলে মন্তব্য করেছেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইসলামিক আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ। গত ১২ এপ্রিল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এককাতারে দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা, মতগত পার্থক্য, ভিন্নতা থাকতে পারে; কিন্তু মজলুম ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, ভূমির অধিকারের দাবিতে আমরা প্রত্যেকটা বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’
বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিন ও আল আকসার পক্ষে
শনিবার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে মাইকে উঠে জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন ড. মাওলানা আজহারী। তিনি স্লোগান তোলেন- ‘আমার ভাই শহীদ কেন? জাতিসংঘ জবাব চাই।’ তার এ স্লোগানে মুহূর্তেই মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আরও স্লোগান তোলেন- ‘ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন-জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘আল কুদুস-জিন্দাবাদ’। আজহারী বলেন, ‘এ গণসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের একজনের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন।’ তিনি আরও বলেন, ‘মার্চ করতে গিয়ে লাথি-গুঁতা সব খেয়েছি, তারপরও আজ বুঝেছি বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিন ও আল আকসার পক্ষে।’ এর আগে সকালে নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে আজহারী লেখেন, ‘আজকের মার্চ ফর গাজা নিছক কোনো পদযাত্রা নয়। এটি আমাদের এ অঞ্চলের মুসলিমদের ঐক্যের এক নতুন সেতুবন্ধন রচনা করবে, ইনশাআল্লাহ।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘মজলুম গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানাতে এ মুহূর্তে আছি মার্চ ফর গাজার পথে। মানবতার এ মিছিলে আপনিও আসুন প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে।’ ‘মার্চ ফর গাজা’ গণসমাবেশে অংশ নিয়ে ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, জনতার এ মহাসমুদ্র ফিলিস্তিন ও আল আকসার প্রতি আমাদের ভালোবাসার প্রকাশ। ভৌগোলিকভাবে আমরা তাদের থেকে দূরে থাকলেও আজকের এ বিপুল উপস্থিতি প্রমাণ করে আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে বাস করে একটি করে ফিলিস্তিন।
ঢাকা ছিল মিছিলের নগরী
গত ১২ এপ্রিল সকালে সোহরাওয়াদী উদ্যানের আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উদ্যানের রমনা কালিমন্দির গেট, টিএসসি সংলগ্ন গেট, রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট, ভিআইপি গেট দিয়ে কিছুক্ষণ পরপরই মিছিলসহ সমাবেশস্থলে আসছেন অংশগ্রহণকারীরা। এ সময় ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’, ‘গাজা রক্তে রঞ্জিত, বিশ্ব কেন নীরব’, ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’ স্লোগান দিতে থাকেন কর্মসূচিতে আসা লোকজন। কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল, আলেম-ওলামা সমাজসহ সব অঙ্গনের মানুষ সংহতি জানিয়েছেন। ফলে সকাল থেকে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে লোকারণ্য হয়ে ওঠে উদ্যান। বেলা ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, মৎস্যভবন, হাইকোর্টের সামনের এলাকা, ঢাবির কার্জন হল, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এলাকা, শাহবাগ, কাঁটাবন, বাংলামোটর লোকে লোকরণ্য হতে দেখা যায়। এসব এলাকাগুলো দিয়ে কোনো যান চলাচল করতে দেখা যায়নি। বন্ধ ছিল রিকশাও।
ঢাকার মোড়ে মোড়ে ছিল বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক
গত ১২ এপ্রিল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পানির ট্যাংক দেখা গেছে। মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে অংশ নেয়া লোকজনদের পানি খাওয়ানো হয়। বিভিন্ন ট্রাফিক পয়েন্টগুলোয় কোনো পুলিশ দেখা যায়নি। তবে লোকে লোকারণ্য হওয়ায় ট্রাফিক ব্যবস্থা অকেজো হয়ে যায় বলে জানায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। দুপুরের দিকে উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকা পূর্ণ হয়ে গেলে মূল মঞ্চ থেকে মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ভরে গেছে, আপনারা যে যেখানে আছেন, সেখানে বসে পড়ুন।’ এরপর থেকে মিছিল উদ্যানের দিকে আসা বন্ধ হয়।
ঢাকা রূপ নেয় এক টুকরো ফিলিস্তিনে!
গত ১২ এপ্রিল ঢাকা যেন হয়ে ওঠে ফিলিস্তিনের প্রতিচ্ছবি। রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে, গলা ফাটিয়ে শত শত মানুষ স্লোগান দেন ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’। চারপাশে শোভা পায় লাল-সবুজ আর সাদা-কালো রঙের পতাকা। গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা আর বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে রাজধানী। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং আশপাশের এলাকাগুলো পরিণত হয় জনসমুদ্রে। একটাই দাবি- গণহত্যা বন্ধ কর, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন কর। ‘মার্চ ফর গাজা’ গণজমায়েত কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল মানুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। শাহবাগ ও আশপাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসে মানুষ। মিছিলগুলো কোনোটি শাহবাগ দিয়ে, দোয়েল চত্বর দিয়ে, নীলক্ষেতের দিক থেকে উদ্যানে মিলিত হতে দেখা যায়। বেশিরভাগ মানুষের হাতে দেশের ও ফিলিস্তিনের পতাকা দেখা যায়।
কৃতজ্ঞতা জানালেন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ফিলিস্তিনের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ ওয়াই রামাদান বলেছেন, ‘ঢাকার ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘এই সমাবেশ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রতিধ্বনিত হবে।’ গত ১২ এপ্রিল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বিবৃতিতে বলেন, ‘ঢাকা তার অতুলনীয় আন্তরিকতা দিয়ে বিশ্বকে অবাক করে চলেছে। ১২ এপ্রিল বিশ্ব যা প্রত্যক্ষ করেছে, তা ইতিহাসের পাতায় ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন ও সংহতির অন্যতম সেরা ঘোষণা হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে, যা সীমান্ত এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রতিধ্বনিত হবে।’
বিশ্ব গণমাধ্যমে ‘মার্চ ফর গাজা’
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির খবর দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে।
ঢাকার এই ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি নিয়ে দেশের গণমাধ্যমের পাশাপাশি প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট ও আরব নিউজের মতো বেশ কিছু বিদেশি সংবাদমাধ্যমও সংবাদ প্রকাশ করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানীতে লাখো মানুষ ইসরাইলবিরোধী সমাবেশে অংশ নিয়েছে এবং গাজায় ইসরাইলি সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছে। কানাডার সিটিভি নিউজেও একই কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের ফিলিস্তিনপন্থি সমাবেশের খবর প্রকাশ হয়েছে টাইমস অব ইসরাইলেও।