জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে সত্য উন্মোচিত
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪১
আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় এটি দুর্নীতিবাজ, দাঙ্গাবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের সংগঠিত শক্তি, তা আবারও প্রমাণ হলো। এবার কোনো দেশি গবেষণা পর্যবেক্ষণে নয়, জাতিসংঘের অনুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনে বিষয়টি বিশ্ববাসীর সামনে সুস্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।
১. আমরা জানি, আওয়ামী লীগ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পেলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে। ২. মিছিল-মিটিংয়ের সুযোগ পেলে দাবি আদায়ের নামে হামলা, ভাঙচুর, হত্যা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ৩. নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পেলে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতা দখল করে। ৪. ক্ষমতায় যাওয়ার পর ঘুষ, দুর্নীতি, গুম, ভিন্নমত দমন, অর্থ পাচার এবং ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে রাষ্ট্রব্যবস্থা ধ্বংস করে। উল্লেখিত কথার প্রমাণ আমরা এবং এদেশের জনগণ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে নিয়ে ১৯৭৫ পর্যন্ত এবং ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বার বার পেয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আওয়ামী মিথ্যাচারের জাল ছিন্ন করে আসল চেহারা বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচন করতে বার বার ব্যর্থ হয়েছে এদেশের মানুষ। তারা বিশ্ববাসীকে বোঝাতে পারেনি যে, আওয়ামী লীগ মূলত জার্মানির নাৎসি পার্টি এবং মুসোলিনির ফ্যাসিস্ট দলের মতোই বাংলাদেশের একটি সংগঠিত দুর্বৃত্তচক্র। রাজনৈতিক দলের ব্যানারে তারা দুর্র্বৃত্তপনা করে সুযোগ পেলে সরকার গঠনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানা থেকে দেশটাকেই ডাকাতি করে নিয়ে নেয়। তারপর জনগণের সম্পদ লুটে নিতে তাদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালায়। এবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, ‘হাসিনা-কামাল যেভাবে জুলাই গণহত্যার কমান্ডে ছিলেন’।
ফ্যাসিস্ট-দুর্বৃত্ত ছাড়া কোনো দেশের সরকারপ্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার ওয়াদা করে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর জনগণের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিতে পারেন না। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সরকার জনগণের আন্দোলনে দাবি মেনে নিয়ে অবাধ, স্বচ্ছ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করে। অথচ আওয়ামী লীগ কী করল তা গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে। জাতিসংঘের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার চিত্র আরো সুস্পষ্টরূপে তুলে ধরা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার সত্যতা উদ্ঘাটিত হওয়ায় হাইকমিশনকে আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘মজলুমের পক্ষে নয়, বরং মজলুম বিষয়ে জাতিসংঘের এ রিপোর্ট গণহত্যার দলিল হয়ে থাকবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সকল গণহত্যাকারী এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণ মনে করে, গণহত্যার অপরাধে অপরাধী হিসেবে আওয়ামী লীগের এদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। এ জনআকাক্সক্ষা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির বিষয়টিও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিবেচনায় নেয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’
আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়Ñ এটা যেহেতু আর প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না, তাই আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে ফ্যাসিবাদী দুর্বৃত্তদের কঠোরভাবে দমন করবে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের ব্যবস্থা করবে।