রহমানের বান্দার পরিচয় : ধারাবাহিক

ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের অধিকার ও নিরাপত্তা


১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৮

॥ ড. মুহাম্মদ খলিলুর রহমান মাদানী ॥
(২)
৩. দেওয়ানি আইন অধিকার: দেওয়ানি আইনেও মুসলমান ও অমুসলমান সমান। ‘তাদের সম্পত্তি আমাদের সম্পত্তির মতো’ আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর এই উক্তির তাৎপর্য এই যে, মুসলমানের সম্পত্তি যেভাবে হেফাজত করা হয়, অমুসলিমের সম্পত্তির হেফাজতও তদ্রƒপ সাম্যের অনিবার্য দাবি অনুসারে দেওয়ানি আইনের আলোকে মুসলমানদের ওপর যেসব দায় দায়িত্ব অর্পিত হয় অমুসলিমের ওপরও তাই অর্পিত হবে।
ব্যবসার যেসব পন্থা আমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তা তাদের জন্যও নিষিদ্ধ। তবে অমুসলিমরা শুধুমাত্র শূকরের বেচাকেনা, খাওয়া এবং মদ বানানো, পান ও বেচাকেনা করতে পারবে। [আল-মাসবূত, ১৩শ খণ্ড, পৃ. ৩৭-৩৮]।
কোনো মুসলমান কোনো অমুসলিমের মদ বা শূকরের ক্ষতি সাধন করলে তার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে। দুররে মুখতারে আছে ‘মুসলমান যদি মদ ও শূকরের ক্ষতি করে তবে তার মূল্য দিতে বাধ্য থাকবে।’ [৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৭৩]।
৪. সম্মানের হেফাজত অধিকার: কোনো মুসলমানকে জিহ্বা বা হাত-পা দিয়ে কষ্ট দেয়া, গালি দেয়া, মারপিট করা বা গীবত করা যেমন অবৈধ, তেমনি এসব কাজ অমুসলিমের বেলায়ও অবৈধ। দুররুল মুখতারে আছে, ‘তাকে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব এবং তার গীবত করা মুসলমানের গীবত করার মতোই হারাম।’ [৩য় খণ্ড, পৃঃ. ২৭৩-২৭৪]।
৫. অমুসলিমদের চিরস্থায়ী নিরাপত্তা অধিকার: ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়। তাদের জীবন, সম্পত্তি এবং সম্মান সুরক্ষিত। অমুসলিমদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চুক্তি মুসলমানদের জন্য চিরস্থায়ীভাবে বাধ্যতামূলক অর্থাৎ এ চুক্তি করার পর তারা তা ভাঙতে পারে না। অপরদিকে অমুসলিমদের এখতিয়ার আছে যে, তারা যতদিন খুশি তা বহাল রাখতে পারে এবং যখন ইচ্ছা ভেঙে দিতে পারে ‘বাদায়ে’ নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে ‘অমুসলিমদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি দানের চুক্তি আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। মুসলমানরা কোনো অবস্থাতেই তা ভাঙতে পারে না। পক্ষান্তরে অমুসলিমদের পক্ষে তা বাধ্যতামূলক নয়। অর্থাৎ তারা যদি আমাদের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে চায় তবে তা করতে পারে।’ [দুররুল মুখতার, ৭ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১২]।
অমুসলিম নাগরিক যত বড় অপরাধই করুক, তাদের রাষ্ট্রীয় রক্ষাকবচ সম্বলিত নাগরিকত্ব বাতিল হয় না। এমনকি জিজিয়া বন্ধ করে দিলে, কোনো মুসলমানকে হত্যা করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে বেয়াদবি করলে অথবা কোনো মুসলিম নারীকে ধর্ষণ করলেও তার নিরাপত্তার গ্যারান্টিযুক্ত নাগরিকত্ব বাতিল হয় না। এসব কাজের জন্য তাকে অপরাধী হিসেবে শাস্তি দেয়া হবে। কিন্তু বিদ্রোহী আখ্যায়িত করে নাগরিকত্বহীন করা হবে না। এক যদি সে মুসলমানদের দেশ ছেড়ে গিয়ে শত্রুদের সাথে মিলিত হয়। দুই যদি সে ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে খোলাখুলি বিদ্রোহে লিপ্ত হয়ে অরাজকতার সৃষ্টি করে [বাদায়ে, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১১৩; ফাতহুল কাদীর, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩৮১-৩৮২]।
৬. পারিবারিক বিষয়াদি অধিকার: অমুসলিমদের পারিবারিক কর্মকাণ্ড তাদের নিজস্ব পারিবারিক আইন [চবৎংড়হধষ খধ]ি অনুসারে স্থির করা হবে। এক্ষেত্রে তাদের ওপর ইসলামী আইন কার্যকর হবে না। আমাদের ঘরোয়া জীবনে যেসব জিনিস অবৈধ, তা যদি তাদের ধর্মীয় ও জাতীয় আইনে বৈধ হয়, তাহলে ইসলামী আদালত তাদের আইন অনুসারেই ফয়সালা করবে। উদাহরণস্বরূপ সাক্ষী ছাড়া বিয়ে, মোহর ছাড়া বিয়ে, ইদ্দ্তের মধ্যে পুনরায় বিয়ে অথবা ইসলামে যাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ তাদের সাথে বিয়ে যদি তাদের আইনে বৈধ থেকে থাকে, তাহলে তাদের জন্য এসব কাজ বৈধ বলে মেনে নেয়া হবে। খোলাফায়ে রাশেদীন এবং তাদের পরবর্তী সকল যুগে ইসলামী সরকারগুলো এ নীতিই অনুসরণ করেছে। হযরত ওমর ইবনে আবদুল আযীয এ ব্যাপারে হাসান বস্রীর কাছে নিম্নরূপ প্রশ্ন করেছিলেন, ‘খোলাফায়ে রাশেদীন অমুসলিম নাগরিকদের নিষিদ্ধ মেয়েদের সাথে বিয়ে, মদ ও শূকরের ব্যাপারে স্বাধীন ছেড়ে দিলেন কীভাবে?’ জবাবে হযরত হাসান লিখেছেন, ‘তারা জিজিয়া দিতে তো এজন্যই সম্মত হয়েছে যে, তাদেরকে তাদের আকিদা-বিশ্বাস অনুসারে জীবনযাপন করার স্বাধীনতা দিতে হবে। আপনার কর্তব্য পূর্ববর্তীদের পদ্ধতি অনুসরণ করা, নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করা নয়।’ তবে কোনো ক্ষেত্রে যদি বিবদমান উভয় পক্ষ স্বয়ং ইসলামী আদালতে আবেদন জানায় যে, ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক তাদের বিবাদের ফয়সালা করা হোক, তবে আদালত তাদের ওপর শরিয়তের বিধান কার্যকর করবে। তাছাড়া পারিবারিক আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো বিবাদের যদি একপক্ষ মুসলমান হয়, তবে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক ফায়সালা হবে। উদাহরণস্বরূপ একজন খ্রিস্টান মহিলা কোনো মুসলমানের স্ত্রী ছিলো এবং তার স্বামী মারা গেল। এমতাবস্থায় এ মহিলাকে শরীয়ত মোতাবেক স্বামীর মৃত্যুজনিত ইদ্দত পুরোপুরি পালন করতে হবে। ইদ্দতের ভেতরে সে বিয়ে করলে সে বিয়ে বাতিল হবে। [আল-মাবসূত, ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮-৪১]।
৭. ধর্মীয় অনুষ্ঠান অধিকার: ইসলামে মুক্তভাবে ধর্ম পালনের অধিকারকে সমর্থন করে। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে বলা হয়েছে যে, ‘ধর্মে কোনো জোরজবরদস্তি নেই।’ (বাকারা : ২৫৬)। অমুসলিমদের ধর্মীয় ও জাতীয় অনুষ্ঠানাদি প্রকাশ্যভাবে ঢাকঢোল পিটিয়ে উদযাপন করা সম্পর্কে ইসলামের বিধান এই যে, অমুসলিমরা তাদের নিজস্ব জনপদে এটা অবাধে করতে পারবে। তবে নির্ভেজাল ইসলামী জনপদপলোয় ইসলামী রাষ্ট্রের সরকার ইচ্ছা করলে তাদেরকে এ ব্যাপারে অবাধ স্বাধীনতাও দিতে পারবে, আবার কোনো ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করতে চাইলে তাও করতে পারবে। [নির্ভেজাল ইসলামী জনপদ শরিয়তের পরিভাষায় ‘আমসারুল মুসলিমীন’ (বিধিবদ্ধ ইসলামী জনপদ) আখ্যায়িত অঞ্চলকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ যেসব অঞ্চলের ভূসম্পত্তি মুসলমানদের মালিকানাভুক্ত এবং যেসব অঞ্চলকে মুসলমানরা ইসলামী অনুষ্ঠানাদি ও উদযাপনের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। বাদায়ে গ্রন্থে বলা হয়েছে “যেসব জনপদ বিধিবদ্ধ ইসলামী জনপদ নয়, সেখানে অমুসলিমদের মদ ও শূকর বিক্রি, ক্রুশ বহন করা ও শঙ্খ ধ্বনি বাজানোতে বাধা দেয়া হবে না। চাই সেখানে মুসলিম অধিবাসীদের সংখ্যা যতোই বেশি হোক না কেন। তবে বিধিবদ্ধ ইসলামী অঞ্চলে এসব কাজ পছন্দনীয় নয়। অর্থাৎ যেসব জনপদকে জুমা, ঈদ ও ফৌজদারি দণ্ডবিধি প্রচলনের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। তবে যেসব পাপ কাজকে তারাও নিষিদ্ধ মনে করে, যেমন ব্যভিচার ও অন্যান্য অশ্লীল কাজ, যা তাদের ধর্মেও নিষিদ্ধ সেসব কাজ প্রকাশ্যে করতে তাদের সর্বাবস্থায় বাধা দেয়া হবে। চাই সেটা মুসলমানদের জনপদে হোক কিংবা তাদের জনপদে হোক।” [বাদায়ে, ৭ম খণ্ড, পৃ. ১১৩]। কিন্তু বিধিবদ্ধ ইসলামী জনপদগুলোয় তাদেরকে শুধুমাত্র ক্রুশ ও প্রতিমাবাহী শোভাযাত্রা বের করতে এবং প্রকাশ্যে ঢাকঢোল বাজাতে বাজাতে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে প্রাচীন উপাসনালয়গুলোর অভ্যন্তরে তারা সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারবে। ইসলামী রাষ্ট্রের সরকার তাতে হস্তক্ষেপ করবে না। [শহুর সিয়রিল কবীর, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৫১]।
৮. উপসনালয় সংক্রান্ত অধিকার : নির্ভেজাল মুসলিম জনপদগুলোয় অমুসলিমদের যেসব প্রাচীন উপাসনালয় থাকবে, তাতে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। উপাসনালয় যদি ভেঙে যায়, তবে একই জায়গায় পুনর্নির্মাণের অধিকারও তাদের আছে। [বাদায়ে, ৭ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১৪; শরহু সিয়রিল কবীর, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৫১]। অমুসলিমদের নতুন উপাসনালয় নির্মাণের অবাধ অনুমতি রয়েছে। অনুরূপভাবে যেসব এলাকা এখন আর বিধিবদ্ধ ইসলামী জনপদ নেই, সরকার যেখানে জুমুয়া, ঈদ ও ফৌজদারি দণ্ডবিধির প্রচলন বন্ধ করে দিয়েছে, সেখানেও অমুসলিমদের নতুন উপাসনালয় নির্মাণ নিজস্ব ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের অধিকার রয়েছে। [বাদায়ে, ৭ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১৪; শরহু সিয়রিল কবীর, ৩য় খণ্ড, পৃ. ২৫৭]।
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফতোয়া নিম্নরূপ, “যেসব জনপদকে মুসলমানরা বাসযোগ্য বানিয়েছে, সেখানে অমুসলিমদের নতুন মন্দির, গির্জা ও উপাসনালয় বানানো, বাদ্য বাজানো এবং প্রকাশ্যে শূকরের গোশত ও মদ বিক্রি করার অধিকার নেই। আর অনারবদের হাতে আবাদকৃত, পরে মুসলমানদের হাতে বিজিত এবং মুসলমানদের বশ্যতা স্বীকারকারী জনপদে অমুসলিমদের অধিকার তাদের সাথে সম্পাদিত চুক্তির শর্তানুসারে চিহ্নিত হবে। মুসলমানরা তা মেনে চলতে বাধ্য থাকবে।
১০. বাণিজ্য কর অধিকার: মুসলিম ব্যবসায়ীদের মতো অমুসলিম ব্যবসায়ীদেরও বাণিজ্য পণ্যের ওপর কর আরোপ করা হবে যদি তাদের মূলধন ২০০ দিরহাম পর্যন্ত পৌঁছে অথবা তারা ২০ মিসকাল স্বর্ণের মালিক হয়ে যায়। [কিতাবুল খারাজ, পৃ. ৭০। তবে আজও কর আরোপের জন্য অবিকল এ পরিমাণ নিসাব নির্ধারণ করা জরুরি নয়। এটা সেই সময়কার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত হয়েছিল।] এ কথা সত্য যে, ফিকাহ শাস্ত্রকারকগণ অমুসলিম ব্যবসায়ীদের ওপর বাণিজ্যের শতকরা ৫ ভাগ এবং মুসলিম ব্যবসায়ীদের ওপর আড়াই ভাগ আরোপ করেছিলেন। তবে এ কাজটা কুরআন বা হাদীসের কোনো সুস্পষ্ট বাণীর আলোকে করা হয়নি। এটা তাদের ইজতিহাদ বা গবেষণালব্ধ সিদ্ধান্ত ছিলো। এটা সমকালীন পরিস্থিতির চাহিদা অনুসারে করা হয়েছিল। সে সময় মুসলমানগণের অধিকাংশই দেশ রক্ষার কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং সব ব্যবসায় বাণিজ্য অমুসলিমদের হাতে চলে গিয়েছিল। এজন্য মুসলিম ব্যবসায়ীদের উৎসাহ বৃদ্ধি এবং তাদের ব্যবসায়ের সংরক্ষণের জন্য তাদের ওপর কর কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
১১. সামরিক চাকরি থেকে অব্যাহিত: অমুসলিমগণ সামরিক দায়িত্বমুক্ত। শত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করা এককভাবে শুধু মুসলমানদের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। কারণ একটা আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্রের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেবল তারাই উপযুক্ত বিবেচিত হতে পারে, যারা ঐ আদর্শকে সঠিক বলে মানে। তাছাড়া লড়াইয়ে নিজেদের আদর্শ ও মূলনীতি মেনে চলাও তাদের পক্ষেই সম্ভব। অন্যেরা দেশ রক্ষার জন্য লড়াই করলে ভাড়াটে সৈন্যের মতো লড়বে এবং ইসলামের নির্ধারিত নৈতিক সীমা রক্ষা করে চলতে পারবে না। এজন্য ইসলাম অমুসলিমদের সামরিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে এবং কেবলমাত্র দেশ রক্ষার কাজের ব্যয় নির্বাহে নিজেদের অংশ প্রদানকে তাদের কর্তব্য বলে চিহ্নিত করেছে। এটাই শুধু যে আনুগত্যের প্রতীক তা নয়, বরং সামরিক কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি লাভ ও দেশ রক্ষার বিনিময়ও বটে। এজন্য জিজিয়া শুধুমাত্র যুদ্ধ করতে সক্ষম পুরুষদের ওপরই আরোপ করা হয়। আর কখনো যদি মসলমানরা অমুসলিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অক্ষম হয়, তাহলে জিজিয়ার টাকা ফেরত দেয়া হয়। [এ বিষয়ে বিস্তারিত অধ্যয়নের জন্য দেখুন আল-মাবসূত, ১০খণ্ড, পৃ. ৭৮-৭৯: হিদায়া, কিতাবুল সিয়ার: ফাতহুল কাদীর, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ৩২৭-৩২৭ এবং ৩৬৯-৩৭০।] কোনো বহিশত্রুর আক্রমণের সময় দেশের অমুসলিম নাগরিকরা যদি দেশ রক্ষার কাজে অংশগ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করে, তবে আমরা তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে পারি। তবে সেক্ষেত্রে তাদের জিজিয়া রহিত করতে হবে। উল্লেখ যে, জিজিয়ার নাম শুনতেই অমুসলিমদের মনে যে আতঙ্ক জন্মে সেটা শুধু মাত্র ইসলামের শত্রুদের দীর্ঘকাল ব্যাপী অপপ্রচারের ফল। অন্যথায় এ আতঙ্কের কোনো ভিত্তি নেই। জিজিয়া মূলত ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমরা যে নিরাপদ ও সুরক্ষিত জীবনযাপনের সুযোগ পায় তারই বিনিময়। শুধুমাত্র সক্ষম ও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের কাছ থেকে এটা নেয়া হয়। এটাকে যদি ইসলাম গ্রহণ না করার জরিমানা বলা হয়, তাহলে জাকাতকে কি বলা হবে? জাকাত তো শুধু প্রত্যেক সক্ষম পুরুষই নয়, বরং সক্ষম নারীর কাছ থেকেও আদায় করা হয়। ওটা কি তাহলে ইসলাম গ্রহণের জরিমানা? ইয়ামুকের যুদ্ধে যখন রোমকরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিশাল সমাবেশ ঘটালো এবং মুসলমানরা সিরিয়ার সকল বিজিত এলাকা পরিত্যাগ করে একটি কেন্দ্রে নিজেদের শক্তি কেন্দ্রীভূত করতে বাধ্য হলো, তখন হযরত আবু উবাইদা নিজের অধীনস্থ সেনাপতিদের নির্দেশ দিলেন, তোমরা যেসব জিজিয়া ও খাজনা অমুসলিমদের কাছ থেকে আদায় করেছিলে, তা তাদের ফিরিয়ে দাও এবং বলো যে, ‘এখন আমরা তোমাদের রক্ষা করতে অক্ষম, তাই যে অর্থ তোমাদের রক্ষা করার বিনিময়ে আদায় করেছিলাম তা ফেরত দিচ্ছি।’ [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ১১১]।
এই নির্দেশ মোতাবেক সকল সেনাপতি আদায় করা অর্থ ফেরত দিলেন। এ সময় অমুসলিম নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া বর্ণনা করে ঐতিহাসিক বালাযুরী লিখেছেন, মুসলমান সেনাপতিগণ যখন সিরিয়ার হিমস নগরীতে জিজিয়ার অর্থ ফেরত দেন, তখন সেখানকার অধিকাসীবৃন্দ সমস্বরে বলে ওঠে, ‘ইতোপূর্বে যে জুলুম-অত্যাচারে আমরা নিষ্পেষিত হচ্ছিলাম, তার তুলনায় তোমাদের শাসন ও ন্যায়বিচারকে আমরা বেশি পছন্দ করি। এখন আমরা যুদ্ধ করে পরাজিত হওয়া ছাড়া কোনো মতেই হিরাক্লিয়াসের কর্মচারীদের আমাদের শহরে ঢুকতে দেব না।’ [ফুতহুল বুলদান, পৃষ্ঠা ১৩৭]।
১২. সহনশীলতা ও সহাবস্থান: আধুনিক সমাজে বিভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের মানুষের বসবাস। কুরআনের নির্দেশনা অনুসারে, সহনশীলতা ও সদয় আচরণ সমাজে শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক। আলোচনার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছানোর আহ্বান করা হয়েছে। আধুনিক সমাজে বিভিন্ন মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে, যুক্তি ও প্রমাণের ভিত্তিতে আলোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। সূরা আল-নাহল : ১২৫।
১৩. মানবিক মূল্যবোধ: সদয় আচরণ এবং মানবিক সম্পর্কের গুরুত্ব সমাজে বিশ্বাস ও সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তোলে। এটি সামাজিক সম্প্রীতি এবং সহযোগিতা বাড়ায়।
১৪. বৈচিত্র্যের মর্যাদা: বিভিন্ন জাতি ও গোত্রের মধ্যে পারস্পরিক পরিচিতি ও সম্মান প্রতিষ্ঠা করা। আধুনিক সমাজে বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করে তা সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে সহায়ক।
১৫. সমাজে সহাবস্থান ও মানবিক সম্পর্কের নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি: অমুসলিমদের প্রতি সদয় আচরণ সমাজে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরি করে, যেখানে সবাই নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারে।
‘তুমি তোমার প্রভুর পথে প্রজ্ঞার সাথে এবং সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে ডাকো এবং তাদের সাথে সবচেয়ে উত্তমভাবে আলোচনা কর।’ সূরা আল-নাহল : ১২৫। ‘যারা একে অপরকে সত্য ও ধৈর্য সহকারে উৎসাহিত করে।’ (এটি সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে সদয় আচরণের গুরুত্ব নির্দেশ করে।) সূরা আল-আসর : ৩।
১৬. অমুসলিমদের প্রতি সদয় আচরণের গুরুত্ব : অমুসলিমদের প্রতি সদয় আচরণের সম্পর্কিত কুরআনের কিছু উল্লেখযোগ্য আয়াত, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে সেই সব লোকদের সাথে সদয় আচরণ করতে নিষেধ করেনি, যারা তোমাদের সাথে ধর্মের ব্যাপারে যুদ্ধ করে না এবং তোমাদের দেশ থেকে তোমাদের বের করে দেয় না।’ সূরা আল-মুমতাহিনা : ৮।
‘তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদের পূজা করে, তাদের সম্পর্কে সৎ কথা বল এবং তাদের সাথে সদয় আচরণ কর।’ সূরা আল-আনকাবুত : ৪৬।
‘হে মানবজাতি, নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ এবং এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার।’ সূরা আল-হুজুরাত : ১৩।
উল্লেখিত আয়াতগুলো অমুসলিমদের প্রতি সদয় আচরণের নির্দেশ দেয় এবং তাদের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের গুরুত্বকে তুলে ধরে।
১৭. ইসলামে অমুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য কিছু বিশেষ প্রস্তাব রয়েছে। উল্লেখযোগ্য হলো-
ক. জিজিয়া ও কর আদায়ে সুবিধা দান: এটি একটি বিশেষ কর, যা ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম নাগরিকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। এই করের বদলে অমুসলিমরা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সেবা পায় এবং তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকে। জিজিয়া ও কর আদায়ে অমুসলিম নাগরিকদের ওপর কঠোরতা প্রয়োগ করা নিষিদ্ধ। তাদের সাথে নম্র ও কোমল ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। তারা বহন করতে পারে না এমন বোঝা তাদের ওপর চাপাতে নিষেধ করা হয়েছে। হযরত ওমরের নির্দেশ ছিলো, ‘যে পরিমাণ সম্পদ রাষ্ট্রকে প্রদান করে তাদের সামর্থ্যরে বাইরে তা দিতে তাদেরকে বাধ্য করা চলবে না।’ [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৮, ৮২]। জিজিয়ার বদলায় তাদের ধন সম্পদ নিলামে চড়ানো যাবে না। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তার জনৈক কর্মচারীকে নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন যে, ‘কর খাজনা বাবদে তাদের গরু, গাধা, কাপড়চোপড় বিক্রি করো না।’ [ফাতহুল বায়ান, ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৯৩]।
অপর এক ঘটনায় হযরত আলী রা. স্বীয় কর্মচারীকে পাঠানোর সময় বলে দেন, “তাদের শীত গ্রীষ্মের কাপড়, খাবারের উপকরণ ও কৃষি কাজের পশু খাজনা আদায়ের জন্য বিক্রি করবে না, প্রহার করবে না, দাঁড়িয়ে রেখে শাস্তি দেবে না এবং খাজনার বদলায় কোনো জিনিস নিলামে চড়াবে না। কেননা আমরা তাদের শাসক হয়েছি বলে নরম ব্যবহারের মাধ্যমে আদায় করাই আমাদের কাজ। তুমি আমার আদেশ অমান্য করলে আল্লাহ্ আমার পরিবর্তে তোমাকে পাকড়াও করবেন। আর আমি যদি জানতে পারি যে, তুমি আমার আদেশের বিপরীত কাজ করেছো, তাহলে আমি তোমাকে পদচ্যুত করবো। [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৯]। জিজিয়া আদায়ে যে কোনো ধরনের কঠোরতা প্রয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু গভর্নর হযরত আবু উবায়দাকে যে ফরমান পাঠিয়েছিলেন তাতে অন্যান্য নির্দেশের পাশাপাশি এ নির্দেশও ছিল ‘মুসলমানদের অমুসলিমদের ওপর জুলুম করা, কষ্ট দেয়া এবং অন্যায়ভাবে তাদের সম্পত্তি ভোগদখল করা থেকে বিরত রাখো।’ [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৮২]। (চলবে)
সিরিয়া সফরকালে হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দেখলেন, সরকারি কর্মচারীরা জিজিয়া আদায় করার জন্য অমুসলিম নাগরিকদের শাস্তি দিচ্ছে। তিনি তাদের বললেন, ‘ওদের কষ্ট দিও না। তোমরা যদি ওদের কষ্ট দাও তবে আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তোমাদের শাস্তি দিবেন।’ [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৭১]।
হিশাম ইবনে হাকাম দেখলেন, জনৈক সরকারি কর্মচারী জিজিয়া আদায় করার জন্য জনৈক কিবতীকে রোদে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। তিনি তাকে তিরস্কার করলেন এবং বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যারা দুনিয়ায় মানুষকে শাস্তি দেবে, আল্লাহ্ তাদেরকে শাস্তি দেবেন।’ [আবু দাউদ]।
মুসলিম ফিকহ শাস্ত্রকারগণ জিজিয়া দেয়া অস্বীকারকারীদের বড়জোর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়ার অনুমতি দিয়েছে। ইমাম আবু ইউসুফ বলেন, ‘তবে তাদের সাথে সদয় আচরণ করা হবে এবং প্রাপ্য জিজিয়া না দেয়া পর্যন্ত আটক করে রাখা হবে।’ [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৭০]। যেসব অমুসলিম নাগরিক দারিদ্র্যের শিকার ও পরমুখাপেক্ষী হয়ে যায়, তাদের জিজিয়া তো মাফ করা হবেই, উপরন্তু ইসলামী কোষাগার থেকে তাদের জন্য নিয়মিত সাহায্যও বরাদ্দ করা হবে। হযরত খালিদ হীরাবাসীদের যে লিখিত নিরাপত্তা সনদ দিয়েছিলেন, তাতে একথাও লেখা ছিলো “আমি হীরাবাসী অমুসলিমদের জন্য এ অধিকারও সংরক্ষণ করলাম যে, তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বার্ধক্যের দরুন কর্মক্ষমতা হারিয়ে বসেছে, যার ওপর কোনো দুর্যোগ নেমে এসেছে অথবা যে পূর্বে ধনী ছিল, পরে দরিদ্র হয়ে গেছে, ফলে তার স্বধর্মের লোকেরাই তাকে দান-দক্ষিণা দিতে শুরু করেছে, তার জিজিয়া মাফ করে দেয়া হবে এবং তাকে ও তার পরিবার পরিজন ও সন্তানদের বায়তুলমাল থেকে ভরণপোষণ করা হবে।” [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৮৫]। একবার ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জনৈক বৃদ্ধ লোককে ভিক্ষা করতে দেখে তার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বললো, “কী আর করবো বাপু, জিজিয়া দেয়ার জন্য ভিক্ষে করছি।” এ কথা শুনে তিনি তৎক্ষণাৎ তার জিজিয়া মাফ ও ভরণপোষণের মাসিক বৃত্তি নির্ধারণ করে দিলেন। তিনি কোষাগারের কর্মকর্তাকে লিখলেন, ‘আল্লাহর কসম! এটা কখনো ইনসাফ নয় যে, আমরা যৌবনে তার দ্বারা উপকৃত হবো, আর বার্ধক্যে তাকে অপমান করবো।’ [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৭২; ফাতহুল কাদীর, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৭৩]। দামেস্ক সফরের সময়ও হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অক্ষম অমুসলিম নাগরিকদের জন্য বৃত্তি নির্ধারণ করার আদেশ জারি করেছিলেন। [বালাযুরী, ফুতহুল বুলদান, পৃষ্ঠা ১২৯]। কোনো মুসলিম নাগরিক মারা গেলে তার কাছে প্রাপ্য বকেয়া জিজিয়া তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে থেকে আদায় করা হবে না এবং তার উত্তরাধিকারীদের ওপরও এর দায়ভার চাপানো হবে না। ইমাম আবু ইউসুফ বলেন, ‘কোনো অমুসলিম নাগরিক তার কাছে প্রাপ্য জিজিয়া পুরো অথবা আংশিক দেয়ার আগেই মারা গেলে তা তার উত্তরাধিকারীদের কাছ থেকে বা তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে আদায় করা হবে না।’ [কিতাবুল খারাজ, পৃষ্ঠা ৭০; আল-মাসবূত, ১০ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮১]।
তিরমিযী, মুসলিম ও বুখারির হাদিস: যেখানে উল্লেখ আছে যে, নবী মুহাম্মদ (সা.) অমুসলিমদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বাধা দেননি এবং তাদের প্রতি সদয় আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ফিকহ (ওংষধসরপ ঔঁৎরংঢ়ৎঁফবহপব): বিভিন্ন ইসলামী আইনবিদদের মধ্যে অমুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিভিন্ন মতামত রয়েছে, যা তাদের ধর্ম পালনের অধিকারকে সমর্থন করে।
খ. অর্থনৈতিক অধিকার : অমুসলিমদের ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার রয়েছে। তাদের সম্পত্তি এবং ব্যবসা সুরক্ষিত। এই অধিকারগুলো একটি ইসলামী সমাজে শান্তি এবং সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক। তবে বিভিন্ন দেশের বাস্তবতা এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এ অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন ভিন্ন হতে পারে।
১৮. প্রাণের নিরাপত্তা: অমুসলিম নাগরিকদের রক্তের মূল্য মুসলমানদের রক্তের সমান। কোনো মুসলমান যদি অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করে, তাহলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে, ঠিক যেমন মুসলমানকে হত্যা করলে হয়। রাসূল সা.-এর আমলে অমুসলিম হত্যার জন্য মুসলমানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
১৯. দেওয়ানি আইন : দেওয়ানি আইনের ক্ষেত্রে মুসলমান ও অমুসলিমের অধিকার সমান। আলী রা.-এর মতে, অমুসলিমের সম্পত্তি মুসলমানের সম্পত্তির মতোই হেফাজত করা হবে।
২০. সম্মানের হেফাজত : অমুসলিমদের সম্মান রক্ষা করা মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক। কোনো মুসলমান যদি অমুসলিমকে গালি দেয় বা কষ্ট দেয়, তাহলে সেটি অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য।
২১. নিরাপত্তার গ্যারান্টি : অমুসলিম নাগরিকদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক। তাদের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
সমাপনী কথা : সংক্ষিপ্তভাবে মুসলিম রাষ্ট্রে অমুসলিমদের মৌলিক অধিকারসমূহ উল্লেখিত হলো। মূলত আলোচ্য অধিকারগুলো ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের জন্য একটি সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করে, যেখানে তারা তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবন পরিচালনা করতে পারে।