সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ
২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:০৮
যুদ্ধবিরতির পর গাজায় বেরিয়ে আসছে লাশের সারি
হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার গাজাবাসী তাদের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। এলাকায় ফেরার পরেই চলছে উদ্ধার অভিযান। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে বেরিয়ে আসছে লাশের সারি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। গত সোমবার (২০ জানুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ জন নিহত হয়েছেন এবং আরো ৬২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৪৭ হাজার ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ১ লাখ ১১ হাজার ৯১ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, নিহত ও আহতের সংখ্যা আরো বেশি। এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকা পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। আল-জাজিরা।
গাজার পুনর্গঠনে সব করবে তুরস্ক : এরদোগান
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, গাজাকে নিজ পায়ে দাঁড় করাতে সব করবে তুরস্ক। গত ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার তুর্কি সংবাদসংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এরদোগান বলেন, এ চুক্তি ফিলিস্তিনি ভাই-বোন এবং পুরো অঞ্চলের জন্য স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথ উন্মুক্ত করবে। ছয় সপ্তাহের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় ইসরাইল ও হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এ চুক্তির ফলে গাজায় লড়াই বন্ধ হবে, ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক ত্রাণ সহায়তা বাড়বে এবং বন্দীরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। হামাস নেতা খলিল আল হাইয়া বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণের ‘প্রতিরোধের’ ফসল এ চুক্তি। আনাদলু।
ইমরান খানের সাজা ‘ন্যায়বিচারকে হত্যা’ করার সামিল : পিটিআই
পাকিস্তানের বিরোধীদল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে ১৯ কোটি পাউন্ডের আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার রায়ের নিন্দা জানিয়েছে, এটিকে ‘ন্যায়বিচারের হত্যা’ বলে অভিহিত করেছে এবং উচ্চতর বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার সাথে সম্পর্কিত একটি জবাবদিহি আদালত ইমরান খানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়ার একদিন পর পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক শেখ ওয়াক্কাস আকরাম এ মন্তব্য করেন। এদিকে আজ টিভি পিটিআই সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত ১৮ জানুয়ারি শনিবার গভীর রাতে দলটি একটি জরুরি কোর কমিটির সভা ডেকেছে। বৈঠকে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার ওপর আলোকপাত করা হয় এবং ভবিষ্যতের আইনি ও রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এক বিবৃতিতে আকরাম ঘোষণা করেছেন যে, রায়কে চ্যালেঞ্জ করার জন্য কয়েক দিনের মধ্যে উচ্চতর বিচার বিভাগে আপিল দায়ের করা হবে। ডন।
ভারতের মাদরাসাগুলোয় রামায়ণ পড়ানোর সিদ্ধান্ত
কট্টর হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের সিদ্ধান্তে ভারতের মাদাসাগুলোয় গীতা, বেদ বা রামায়ণের মতো হিন্দু ধর্মগ্রন্থ পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ডের আওতাধীন মাদরাসাগুলোয় আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে তাদের পাঠ্যক্রমে সংস্কৃতের সাথে রামায়ণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা মার্চ বা এপ্রিলে শুরু হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ফিটনেস এবং শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মীদের শারীরিক শিক্ষা প্রশিক্ষক হিসেবেও নিয়োগ করা হবে। বিজেপি সরকারের দাবি, এ উদ্যোগের লক্ষ্য ‘শিক্ষার আধুনিকীকরণ, বিস্তৃত শিক্ষার সুযোগ প্রদান এবং জাতীয়তাবাদের অনুভূতি জাগানো’।
ওয়াকফ বোর্ড বছরের শেষ নাগাদ আট থেকে দশটি মাদরাসা তথাকথিত আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা করছে। যার অংশ হিসেবে বড় বড় মাদারাসার সঙ্গে একীভূত করার নামে ছোট ছোট মাদরাসাগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। ‘এর মাধ্যমে মাদরাসা পরিচালনা করা সহজ হবে এবং আয় বৃদ্ধির জন্য আমাদের খালি সম্পত্তি ব্যবহার করার সুযোগ দেবে,’ রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারপারসন শাদাব শামস বলেন।
নতুন পাঠ্যক্রমটি প্রাথমিকভাবে দেরাদুন, হরিদ্বার, নৈনিতাল এবং উধম সিং নগর জেলার চারটি মাদরাসায় বাস্তবায়িত হবে, শিক্ষক নিয়োগের পরে ওয়াকফ বোর্ডের আওতাধীন বাকি ১১৩টি মাদরাসায় এটি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে ৪১৯টি নিবন্ধিত মাদরাসা রয়েছে, যার মধ্যে ১১৭টি ওয়াকফ বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়। টিওআই।
আমাদের সংগ্রাম একনায়কতন্ত্র উৎখাত করা : কেএনডিএফ
মিয়ানমারের বিদ্রোহী কারেন্নি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ) চেয়ারম্যান খুন বেদু বলেছেন, আমাদের মূল সংগ্রাম হলো একনায়কতন্ত্র উৎখাত করা। সবাই বিশ্বাস করে, একসময় জান্তার পতন হবে। তবে আমি জানি না, ভবিষ্যতে পুরো দেশের চিত্র কেমন হবে। সম্প্রতি মিয়ানমারের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য ইরাবতীর সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের সম্ভাব্য পরিস্থিতি, ভবিষ্যৎ এবং নির্বাচনের সম্ভাবনা সম্পর্কে কথা বলেন তিনি। কারেন্নি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ) কারেন্নি রাজ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট, যা ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর শাসনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর প্রতিরোধ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গঠিত হয়েছিল। মিয়ানমারের জান্তা ডিসেম্বর থেকে সম্ভাব্য সাধারণ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য শাসনবিরোধী সংগঠনগুলোকে শান্তি আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছে। অন্যদিকে বিপ্লবী দলগুলো ২০২৫ সালের মধ্যে সামরিক সাফল্য অর্জনের আশা করছে। এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে কথা বলেন খুন বেদু। ২০২৫ সালে আপনি কি ধরনের পরিবর্তন আশা করছেন? সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে এবং বিপ্লবী গোষ্ঠীগুলোর সাথে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। তবে এর মাধ্যমে জেনারেলরা ক্ষমতা বজায় রাখতে চান এবং কেন্দ্রীভূত কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান। এটা আমরাসহ মিয়ানমারের জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য। ২০২৫ সালে জনসমর্থনের মাধ্যমে একটি শক্ত রাজনৈতিক ভিত্তি স্থাপিত হওয়ার সাথে সাথে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকবে। কোনো ধরনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিতে পারে? এ মুর্হূতে পুরো দেশের কথা বলা কঠিন। আমাদের মূল সংগ্রাম হলো একনায়কতন্ত্র উৎখাত করা। সবাই বিশ্বাস করে যে, একসময় এর পতন হবে। তবে আমি জানি না ভবিষ্যতে পুরো দেশের চিত্র কেমন হবে। কিন্তু কারেন্নি রাজ্যে আমি সকলের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। আমরা আমাদের দিক এবং আমাদের জনগণ যে ব্যবস্থা চায়, তা গণতান্ত্রিকভাবে সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে এবং ক্ষমতার তিনটি শাখা (নির্বাহী, আইনসভা ও বিচার বিভাগ) পৃথক করার মাধ্যমে এবং প্রত্যেকের চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাধীনভাবে কথা বলার নিশ্চিত করার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে পারি। আমরা একটি রাজনৈতিক মঞ্চ গঠন করতে চাই যা সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়াই জনগণ স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারবে। শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন সত্ত্বেও আমরা (কারেন্নি রাজ্যে) এ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং জনগণকে সুরক্ষা দেয়ার মাধ্যমে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এভাবেই আমরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি। আমি দেশের অন্য অঞ্চলগুলোকেও একই কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। ইরাবতী।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান