গজবে বিধ্বস্ত আওয়ামী লীগ গুজবের ভোঁতা অস্ত্রে শান দিচ্ছে

হারুন ইবনে শাহাদাত
৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:০০

গুজবে সয়লাব অনলাইন-অফলাইন

॥ হারুন ইবনে শাহাদাত ॥
গজবে বিধ্বস্ত আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের পুরনো ভোঁতা অস্ত্র গুজবে শান দিয়ে ফিরে এসে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার দুঃস্বপ্ন দেখছে। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ ও ভারত এ ভোঁতা অস্ত্র ব্যবহার করছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যাচার থেকে নিয়ে সম্প্রতি প্রচারিত প্রতিটি গুজবই সবার জানা। তাই লেখার পরিধি বাড়াতে তা তুলে ধরা সংগত নয়। তবে সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি রাতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের পতন গুজব ছড়িয়ে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসী খুনিদের মাঠে নামানোর অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। দেশের কয়েকটি জেলায় সন্ত্রাসীরা রাতের আঁধারে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী এবং গণভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া সাধারণ ছাত্র-জনতার বাড়িঘরে হামলা করেছে। পরে জনতার প্রতিরোধে পালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজনকে আটক করে জনতা পুলিশে দিয়েছে।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেন, তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের এ যুগে অপপ্রচার, অপতথ্য ও গুজব খুব সহজেই ছড়ানো যায়, কিন্তু সত্যের পক্ষের মিডিয়াকর্মীরা সতর্ক ও দক্ষ হলে মুখোশ উন্মোচনও হয় দ্রুত। তাই হিটলারের তথ্যমন্ত্রী ড. পল জোসেফ গোয়েবলস ও মুসোলিনির পত্রিকা ‘অ্যাভান্তি’ যত সহজে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ পেয়েছিলো এ যুগে তা সম্ভব নয়। পতিত ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার হাসিনার সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের ‘গুজব ও ভুয়া খবর’ মিশন সরকারি ব্যবস্থাপনায় হওয়ার পরও বুমেরাং হওয়ায় প্রমাণ হয়েছে, শেষ পর্যন্ত সত্যই বিজয়ী হয়।
তারপরও হাল না ছেড়ে ঝড়ে পড়া ডুবন্ত নৌকার গতি ফেরাতে আওয়ামী লীগ আবার শেষ চেষ্টা করছে। আরাফাতের মিশন ও তার ব্যর্থতা তুলে ধরার আগে একটু উল্লেখ করা দরকার। তাদের এ শেষ চেষ্টা করার কারণ আরাফাতের ‘গুজব ও ভুয়া খবর’ মিশন ব্যর্থ হলেও ইতোপূর্বে তারা অনেক ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে, তাই আশা ছাড়ছে না। তাদের সফলতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ দেশপ্রেমিকদের বিভক্ত করে আধিপত্যবাদী প্রতিবেশী একটি দেশের পক্ষে জনমত গঠন, জনগণের যুদ্ধজয় ছিনতাই করে নিজেদের বলে প্রচার ও চেতনার ব্যবসা, লাখ মিলিয়ন বিতর্ক, কসাই কাদের মোল্লা ও দেলু রাজাকারের বদলে দেশের প্রতিষ্ঠিত একটি রাজনৈতিক দলের সুপরিচিত ও জননন্দিত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী এবং বিভিন্ন ভিত্তিহীন মিথ্যা অপবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুস সুবহান, মাওলানা একেএম ইউসুফ, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সফল উদ্যোক্তা মীর কাসেম আলী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ জাতীয় নেতাদের কয়েকজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অন্যদের কারাগারে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। এছাড়া গায়েবি মামলা, জঙ্গিবাদের গুজব ও ভিত্তিহীন নাটকের ফাঁদে দেশের বিরোধীদলের লাখ লাখ নেতা-কর্মী, আলেম-ওলামা ও নিরীহ মানুষকে জেল-জুলুম, গুম-খুন করে সন্ত্রাস দমনের অপতথ্য প্রচার করে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে তাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার কূটনৈতিক কূটচালের ব্লেম গেমে বিজয়ী হয়েছে। নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার নির্লজ্জ দেনদরবারও করেছে। ভুয়া তথ্য-উপাত্ত দেখিয়ে আন্তর্জাতিক মহল ও দেশের মানুষকে বোকা বানিয়ে উন্নয়নের ফানুস উড়িয়েছে এবং বিনাভোটের নির্বাচনকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ বলে প্রচার করে দীর্ঘ দেড় যুগ দুঃশাসন চালিয়েছে। এসবই আওয়ামী গুজব অস্ত্রের সাফল্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হয়নি। হিটলারের তথ্যমন্ত্রী ড. পল জোসেফ গোয়েবলস ও মুসোলিনির পত্রিকা ‘অ্যাভান্তি’ যেমন তাদের রক্ষা করতে পারেনি, তেমনি পতিত ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার হাসিনার সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের ‘গুজব ও ভুয়া খবর’ মিশনও ব্যর্থ হয়েছে। হাসিনাও পালিয়েছেন ‘গুজব ও ভুয়া খবর’ ফ্যাক্টরির প্রধান দফতর দিল্লিতে।
আরাফাতের ‘গুজব ও ভুয়া খবর’ মিশন
ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের সুদৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে দেশের জনগণের লাখ লাখ কোটি টাকা খরচ করে ভুয়া পরিচয়, ছবি এবং নাম ব্যবহার করে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া, ওয়াশিংটনভিত্তিক ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের সাউথ এশিয়া ব্রিফসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শত শত লেখা প্রকাশ করেছিলেন। পরে বিষয়টি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ধরা পড়ে। অবশ্য জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত অন্য একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গুজবনির্ভর সংবাদ পরিবেশন বা ভুয়া খবর প্রচার বেশ পুরনো বিষয়, অর্থাৎ অনেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগ এটি করে আসছিল। ফ্যাক্ট চেকারদের গ্রুপগুলো সেগুলো আগে ধরিয়েও দিয়েছে। তবে এবার (২০২৩ এর সেপ্টেম্বর) এসেছে ভুয়া কলাম বা ভুয়া বিশেষজ্ঞদের কলাম। সেগুলো ইংরেজিতে কিছু অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখান থেকে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমও ছেপেছে। এএফপির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, লেখক হিসেবে যাদের নাম ও পরিচয় দেয়া হয়েছে ওইসব কলামে, বাস্তবে তাদের অস্তিত্বই নেই। এরকম মোট ৩৫ জন ভুয়া কলামিস্টের ৭০০ নিবন্ধ গত এক বছরে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো সরকারের পক্ষে প্রশংসা করে লেখা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উন্নয়ন কর্মসূচি, কূটনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের প্রশংসা করে কথিত ওই নিবন্ধগুলো দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কথিত বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন। তাদের কেউ কেউ আবার প্রকৃত বিশ্লেষকদের নামে বানোয়াট মন্তব্যও উদ্ধৃত করেছেন। কথিত কলামিস্ট হিসেবে আলোচিত নামগুলোর মধ্যে ১৭টির সঙ্গে পশ্চিমের এবং এশিয়ার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত সংযোগ দেখা যায়। তাদের মধ্যে ৯ জন যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন বলে পরিচয়ে লিখেছেন, সেসব বিশ্ববিদ্যালয় এএফপিকে নিশ্চিত করেছে, ওইসব নাম তারা কখনো শোনেনি। এসব কলামিস্টের মধ্যে আটজন যেসব ছবি ব্যবহার করেছেন, সেগুলো অন্য মানুষের। তাদের মধ্যে ভারতের একজন জনপ্রিয় ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সারের ছবিও রয়েছে। কথিত লেখকদের একজনের নাম ডরিন চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের প্রশংসা করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতার সমালোচনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশংসা করে অন্তত ৬০টি নিবন্ধ লিখেছেন। ডরিন চৌধুরী তার পরিচয়ে একজন ভারতীয় অভিনেত্রীর ছবি ব্যবহার করেছেন। তিনি নেদারল্যান্ডসের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন বলে জানিয়েছেন, সে প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তার নামে কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি। ব্যাংকক পোস্ট এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের একটি ব্লগসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন ফুমিকো ইয়ামাদা নামে একজন। তাকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডিজের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলা হয়েছে। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার উপস্থিতির কোনো প্রমাণ নেই এবং বাংলাদেশ স্টাডিজ নামে সেখানে গবেষণার কোনো ক্ষেত্রও নেই। নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজের একজন অধ্যাপক জেরার্ড ম্যাকার্থি বলেছেন, পৃথ্বীরাজ চতুর্বেদী নামে মিয়ানমারের প্রতি ‘পশ্চিমা দ্বিচারিতার’ নিন্দা করে একটি নিবন্ধ তার চোখে পড়েছে। এতে তার নামে সম্পূর্ণ বানোয়াট উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হয়েছে।’
হাসিনার পতনের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় আরাফাত, হাছান মাহমুদ, আসাদুজ্জামান কামাল পালিয়ে ভারত, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু তাদের প্রোপ্রাগান্ডা মিশন বন্ধ হয়নি। বিদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারের নামে তাদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে জঙ্গিদের ক্ষমতা দখল বলে মিথ্যাচার করছে। ইসলাম, ইসলামী রাজনৈতিক দল, জাতীয়তাবাদী শক্তি, সেনাবাহিনী ও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের ট্যাগ লাগিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে উসকে দিচ্ছে। তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো নোবেল বিজয়ী বিশ্বনন্দিত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকেও ‘জঙ্গি’ ট্যাগ দেয়ার মতো হাস্যকর উক্তি করেছে।
ভারতের উগ্রপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী মোদি সরকার পতিত আওয়ামী লীগের পতন মেনে নিতে পারছে না। কারণ তাদের সমর্থনেই বিনাভোটের আওয়ামী লীগ এতদিন গণতন্ত্রহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেও দেড় দশক ক্ষমতা ধরেছিল। দুঃখজনক হলেও সত্য, ভারতের কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং একশ্রেণির জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ব্লগার অব্যাহতভাবে গুজব, অপতথ্য ও মিথ্যাচারে আওয়ামী লীগের পক্ষে দেশে-বিদেশে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। তাই বিষয়টিকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।
কেন হালকা করে দেখার সুযোগ নেই
প্রতিবেদনের শুরুতে গুজব ও মিথ্যাচারে আওয়ামী লীগের সাফল্যের যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে- একথা মনে রাখলে অবশ্যই স্বীকার করতেই হবে, বিষয়টি হলকা করে দেখার সুযোগ নেই। শক্তভাবে ওদের এ ভোঁতা অস্ত্রের বিরুদ্ধে শানিত হাতিয়ার প্রয়োগ করতে হবে। সত্যের বিজয় হবেই, সত্যের পরাজয় নেই- এ আপ্তবাক্য বিশ্বাস করে বসে থাকার সুযোগ নেই। সত্যের বিজয় ন্যায়ের পক্ষের সৈনিকদের দক্ষতা ও তৎপরতার ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে মিথ্যা ও গুজব শয়তানের ওপর সওয়ার হয়ে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে মার্ক টয়েনের (Mark Twain) বিখ্যাত উক্তি,“A lie can travel half way around the world while the truth is putting on its shoes.” (সত্য জুতা পায়ে পরার আগেই মিথ্যার অর্ধ পৃথিবী ভ্রমণ করা হয়ে যায়।) মার্ক টয়েনের কথাটি একটু সংক্ষেপ করে নাম “Peaky blinders” ওই ওয়েব সিরিজের নায়ক একজনকে বলছিল, “But lies travel faster than the truth” শোনা যায়। অর্থাৎ সত্যের চেয়ে মিথ্যা বা গুজব দ্রুতগতিতে ছড়ায়।
অবশ্য সত্য প্রকাশিত হলে মিথ্যা বা গুজব পালায়ও খুব দ্রুতগতিতে। কিন্তু তা নির্ভর করে সত্য প্রকাশের দায়িত্ব যাদের ওপর। আর এজন্যই সত্য প্রচারকারীদের কথাকে সর্বোত্তম বলে উল্লেখ করেছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, মিথ্যার মোকাবিলা মিথ্যা দিয়ে দিয়ে নয়, সত্য ও সুন্দর বাক্য দিয়ে করার আদেশ দিয়েছেন।
হাসিনা ও আওয়ামী লীগ একনায়ক হিটলার-মুসোলিনির চেয়ে কম নয়, মুসোলিনিকে দৈত্যে পরিণত করার নেপথ্যে ব্রিটেনের হাত আছে বলে অনেক বিশ্লেষক অভিযোগ করেন। অন্যদিকে হাসিনার শক্তির উৎস ভারত- এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। এ প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা একনায়ক হিটলার-মুসোলিনির প্রতিভূ ছিলেন। তিনি জাতীয় উন্নতি ও সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ প্রসঙ্গে বলেন, গুজব ও অপপ্রচার চালিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসররা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, তাতে সাংবাদিক ভাইদেরও ঐতিহাসিক ভূমিকা ও অবদান রয়েছে। গুজব ও অপপ্রচারের মোকাবিলায় তারা সত্যকে তুলে ধরলে কোনো অপশক্তিই আমাদের ক্ষতি করতে পারে না, ইনশাআল্লাহ।
পর্যবেক্ষরা মনে করেন, চিহ্নিত ফ্যাসিস্টরা হাসিনার সাথে পালিয়ে গেছে, কিন্তু তার দোসররা রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসন ও মিডিয়ার স্তরে স্তরে বর্ণ লুকিয়ে বসে আছে। সময় ও সুযোগের অপেক্ষা করছে। আওয়ামী-গুজব হচ্ছে তাদের ভয় আতঙ্কিত চেতনার টনিক। এ টনিকের ব্যবহার বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে ওরা আবার ভয় কাটিয়ে ভয়ংকর হয়ে দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলবে।

আওয়ামী লীগ