বাম রাজনীতি ও লাল সন্ত্রাস
২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৭
বাম রাজনীতি ও বামপন্থা বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাস এবং রাজনীতির সাথে খাপ খায়নি কোনো সময়। এদেশের জনগণ কোনো সময়ই বামপন্থার নামে লাল রাজনীতিকে গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলে বাম ও কমিউনিস্ট রাজনীতির লাল সন্ত্রাসের কারনে শান্তিপূর্ণ জনপদগুলোয় অশান্তির আগুন জ¦লেছে অনেক দিন ধরে। বাংলা ভূখণ্ডসহ আশপাশের দেশ ও ভারতের রাজ্যগুলোয় রাজনৈতিক অস্থিরতা, খুন, রাহাজানির মূল কারণ হচ্ছে উগ্র বাম রাজনীতি ও লাল সন্ত্রাস। বামপন্থার এ লাল রাজনীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী। বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন বই ও সংবাদপত্রের বিভিন্ন কলামে এসব লাল রাজনীতি ও লাল সন্ত্রাসের খুন-রাহাজানির লাল চিত্র ফুটে উঠেছে।
সৈয়দ আবুল মকসুদ ‘সংসদে সংগীত, কবিতা ও গণবাহিনী’ ২০১৪ সালের ৮ জুলাই প্রথম আলো পত্রিকার এক কলামে লিখেছেন, “আওয়ামী লীগের দাবি, জাসদ তাদের ৩০-৩৫ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছিল। জাসদ নেতাদের দাবি, সরকারি দল আওয়ামী লীগ তাদের ২০ হাজার নেতা-কর্মী হত্যা করেছে। এতে একজন বালকও মনে করবে দুই দলই গণহত্যার জন্য দায়ী, দুই দলই মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। বিষয়টি সংসদের কার্যবিবরণীতে রেকর্ড হয়ে রইল। আওয়ামী লীগ ও জাসদ পরস্পরের যত লোক হত্যা করেছে তার যোগফল ৫৫ থেকে ৬০ হাজার। এটা তাদেরই হিসাব, অন্যদের নয়। একদিন তারা মানুষকে ‘আনন্দচিত্তে জবাই’ করেছে, এখন ইতিহাসচর্চা করতে গিয়ে দুই দল দুই দলকে জবাই করছে।” সৈয়দ আবুল মকসুদ সাহেব যে ৬০ হাজার মানুষের হত্যাকাণ্ডের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন, তা হচ্ছে ১৯৭০-র দশকের চিত্র। আর যে দুটি রাজনৈতিক দলের নাম তিনি উল্লেখ করেছেন, এ দুটি রাজনৈতিক দলই ইসলামী চেতনা ও মূল্যবোধ তথা মুসলিমবিরোধী। রাজনৈতিক ক্ষমতা গ্রহণ করে তারা লাল সন্ত্রাসের প্রধান অনুষঙ্গ হত্যা, খুন, রাহাজানিতে মেতে উঠেছে।
বাংলাদেশের বামপন্থি লেখক মহিউদ্দিন আহমদ ‘জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি’ নামক বইয়ে বিদ্রোহ নামক অধ্যায়ে বাংলাদেশের লাল রাজনীতির একটি সংক্ষিপ্ত রূপ তুলে ধরেছেন। উল্লেখিত অধ্যায়ে তিনি গণবাহিনী, জাসদ, পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, মাও সেতুং রিসার্চ সেন্টার, সিরাজুল আলম খান, সিরাজ সিকদার, কর্নেল তাহের, লে. কর্নেল জিয়াউদ্দিন, আনোয়ার হোসেনদের লাল সন্ত্রাস এবং অপরদিকে আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন আওয়ামী সরকারের শ্বেত সন্ত্রাসের কিছু সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেছেন। বইটির এ অধ্যায়ে ১৪৯ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন, “সর্বহারা পার্টির দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের লড়াই ছিল ‘শ্বেত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লাল সন্ত্রাস’ ছড়িয়ে দেওয়া। জাতীয় রক্ষীবাহিনীকে আইন করে সুরক্ষা দেওয়ার ফলে তাদের হাতে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের নিগ্রহ অনেক বেড়ে যায়। তাদের হাতে সর্বহারা পার্টির অনেক কর্মী ও সমর্থক নিহত হন। সর্বহারা পার্টির কর্মীদের হাতে রক্ষীবাহিনী ও আওয়ামী লীগের অনেক সদস্যও নিহত হন বলে সরকার ও রক্ষীবাহিনীর দাবি ছিল। জাসদ ও গণবাহিনী গঠিত হওয়ার পর জাসদের সদস্যরাও রক্ষীবাহিনীর টার্গেট হন। ততদিনে জাসদের ভেতরে সর্বহারা পার্টির অনেকেই অনুপ্রবেশ করতে সমর্থ হন। তাদের মধ্যে ছিলেন লে. কর্নেল (অব.) আবু তাহের এবং তার ছোট ভাই আবু সাঈদ ও আনোয়ার হোসেন।”
‘বামপন্থার সুরতহাল : বদউদ্দিন উমরের ইতিহাস পরিক্রমা’ বইয়ের সিরাজ সিকদার অধ্যায়ে লিখেছেন, ‘আরেকটা ছিল সিরাজ সিকদারের সর্বহারা পার্টি। সিরাজ সিকদারও এখানে সমাজতন্ত্র চাইতেন, মার্কসবাদের কথা বলতেন। কিন্তু আসলে গণমানুষের সঙ্গে কাজ করার পরিবর্তে তার চিন্তাটা ছিল সন্ত্রাসবাদি। সন্ত্রাসবাদীদের মূল কথা হচ্ছে আমরা দেশের ভালো চাই , স্বাধীনতা চাই, মুক্তি চাই, আমরা এর জন্য লড়ব। যেহেতু আমরা ভালো লোক, আমরা দেশ মুক্ত করলে জনগণ মুক্ত হয়ে যাবে। এটাই সন্ত্রাসবাদের মূল ভিত্তি। দেখবেন, সর্বহারা পার্টি জনগণের মধ্যে, কৃষকের মধ্যে, শ্রমিকের মধ্যে সেভাবে কোনো আন্দোলন করেনি। এটা যুবকদের জন্য একটা সংগঠন ছিল। সেখানে নানারকম উত্তেজনা-উন্মদনা ছিল। খুন করার মধ্যে একটা উন্মাদনা আছে। পরে চারু মজুমদারের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সর্বহারা পার্টির একজন আমাকে বলেছিলেন, তিনি নিজেই ১০০ জনের বেশি মানুষ খুন করেছেন। খুন করা একটা নেশার মতো ছিল। খুন করার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’
লাল সন্ত্রাস বা রেড টেরর হলো সোভিয়েত রাশিয়ায় বলশেভিকদের মাধ্যমে পরিচালিত রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং মৃত্যুদণ্ড, যা প্রধানত চেকা নামক বলশেভিক গোপন পুলিশের মাধ্যমে করা হতো। এ লাল সন্ত্রাস আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু করা হয় এবং ১৯২২ সাল পর্যন্ত চালানো হয়েছিল। ভøাদিমির লেনিনের হত্যাচেষ্টা এবং পেট্রোগ্রাদ চেকা নেতা মোইসেই ইউরিতস্কি ও পার্টি সম্পাদক ভি. ভলোদারস্কির সফল হত্যাকাণ্ডের পর, যা বলশেভিক গণপ্রতিহিংসার জন্য প্রতিশোধমূলক বলে করা হয়। রাশিয়ার বলশেভিকদের লাল সন্ত্রাসেরই অনুকরণে বাংলাদেশের বাম রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিকরা লাল সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করে। বাম রাজনীতিকরা মানুষের মুক্তির কথা বলে লাল রাজনীতির নামে লাল সালাম দেয়। কিন্তু লাল রাজনীতির নামে লাল সন্ত্রাসের কারণে বাংলার জনপদ বার বার রক্তে রঞ্জিত হয়েছে এবং বহু আদম সন্তান খুন হয়েছে এবং মায়ের বুক খালি হয়েছে। কিন্তু সাধারণ জনগণের কোনো মুক্তির দিশা দিতে পারেনি বাম রাজনীতি তথা লাল রাজনীতি।
লাল সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক ভারতের মদদপুষ্ট রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পতনের পর লাল রাজনীতি যখন অস্তিত্ব সংকটে, তখন দেশের প্রধান এক বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাম ছাত্রনেতা লাল সন্ত্রাসকেই একমাত্র পথ বা উপায় বলে এক বার্তা দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু তার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মন্তব্য করে বলেছেন যে, লাল সন্ত্রাসই একমাত্র পথ বা উপায়। গত ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে এক ইংরেজি বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি মনে করেন, জনগণের সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক সহিংসতা সংঘটিত করতে হবে।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেঘমল্লার বসু বলেন, একমাত্র পথ হলো লাল সন্ত্রাস। প্রান্তিক জনগণের সুরক্ষার জন্য প্রতিরোধমূলক সহিংসতা। যতদিন আমরা শুধু প্রার্থনা সভা এবং মিছিল করে যাব, যা কখনো সহিংস হওয়ার ক্ষমতা রাখে না, ততদিন তুমি তোমার সাথীদের সুরক্ষিত করতে পারবে না। মানুষ তোমাকে পছন্দ করবে, কিন্তু কেউ অনুপ্রাণিত হবে না। আর কেউ আরেকটি ‘উদারপন্থী’ দলের প্রয়োজন অনুভব করে না। কেউ ইচ্ছাকৃত শহীদদের পরোয়া করে না। একমাত্র ভালো ফ্যাসিস্ট হলো মৃত ফ্যাসিস্ট।”
তিনি বলেন, এই ডানপন্থী উন্মাদনার মধ্যে তোমাকে সার্বভৌমত্বের নামে হত্যা করা হবে এবং তারপর তোমার চরিত্র হনন করা হবে। মাতাল উদারপন্থী ও ‘কেন্দ্রপন্থীরা’, যারা ইতোমধ্যেই তাদের মন-প্রাণ ডানপন্থার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে, তারা দাবি করবে এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ এবং উভয় পক্ষই খারাপ। তোমার সাথী খুবই কম। তুমি একটিকেও হারানোর মতো অবস্থায় নেই। আর মানুষ ভেড়ার মতো। তুমি কি সারা জীবন একজন রাখাল হওয়ার জন্য প্রস্তুত?
মেঘমল্লার আরও বলেন, ‘পাবলিক ডেমোনস্ট্রেশন করা বন্ধ করো। কমিটির কার্যক্রম প্রকাশ্যে প্রচার করা বন্ধ করো। আমরা যদি সতর্ক না হই, তাহলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। দাঁত আর নখ বেরিয়ে আসছে। ট্রল আর মিম করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না। এবার এটি গোপনে নিয়ে যাও, কমরেড। অপেক্ষা করো। এর বেশি প্রকাশ্যে বলার প্রয়োজন নেই।’
বসুর এমন বক্তব্য সহিংসতাকে উসকে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন নেটিজেনরা। এ মন্তব্যের জেরে গভীর রাতে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাবি ক্যাম্পাস। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন থেকে আসে নানা ধরনের প্রতিবাদ। গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমবেত হয় একদল শিক্ষার্থী। এ সময় ‘লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’, ‘উদ্যানের গাঁজাখোর উদ্যানে ফিরে যা’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘জঙ্গি বসুর ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট রাইটস ওয়াচ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের নেতা ও ঢাবি শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, এরা ৮০ ও ৯০ এর দশকের মতো আবারও সন্ত্রাসবাদ কায়েম করতে চায়, তারা ডাকসুকে এভাবেই ভণ্ডুল করেছিল ৯০-এর দশকে। আজ ওই সন্ত্রাসীরা আবারও সন্ত্রাসবাদের ঘোষণা দিচ্ছে। এ সন্ত্রাসীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতেই হবে।
আজিজুল হক নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এ সংগঠন আওয়ামী লীগের বি-টিম হিসেবে কাজ করেছে। ছাত্রলীগ ছাত্রদল-শিবিরকে দমন করেছেন কিন্তু এদের জায়গা দিয়েছে। নতুন এ বাংলাদেশে বলতে চাই নতুন করে কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে দেয়া হবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, আমরা যখন ক্যাম্পাসে এসেছি সন্ত্রাসীরা একমাত্র এসকল বামদের জায়গা করে দিয়েছে। জুলাইয়ের মতো একটি বিপ্লবের পর এখনো দেখছি তারা আওয়ামী ন্যারেটিভকে শক্তিশালী করতে চায়। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সময়ে প্রতিটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে লাল সন্ত্রাসের হাত ছিলো। এদেরকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লাল সন্ত্রাসী মেঘমাল্লার বসুকে গ্রেফতার করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে এবি জুবাইর নামের এক ঢাবি শিক্ষার্থী বলেন, ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি দেখলাম সরাসরি লাল সন্ত্রাসের হুমকি দিয়েছেন। এরকম উসকানির কারণে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় কিনা, আমাদের ভাবা দরকার। নতুন করে কোনো ধরনের সন্ত্রাস, সংঘাত দেখতে চাই না।
যারা রাশিয়ার বলশেভিকদের মতো লাল সন্ত্রাস শুরু করতে চায়। যে লাল সন্ত্রাসের বলি হয়েছিল প্রায় দুই কোটি রুশ নাগরিক। তারা কি বাংলাদেশে লাল সন্ত্রাস করে জনগণকে হত্যা করতে চায়? মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিউনিস্ট আদর্শে তথা লাল সন্ত্রাসের রাজনীতির চেতনায় বিশ্বাসীদের রাজনীতি করার বিষয়টি এখন প্রশ্নসাপেক্ষ।
বাংলাদেশের রাজনীতিকে যারা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে দেখছেন, তাদের অভিমত হলো বাংলাদেশের জনগণের চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাসের সাথে বামপন্থা তথা লাল রাজনীতি খাপ খায় না। এদেশের অধিকাংশ তথা ৯০ শতাংশ মানুষ হচ্ছে মুসলিম ও তাদের চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাস হচ্ছে ইসলাম। অপরদিকে বাম রাজনীতির চিন্তা-চেতনা হচ্ছে নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতা। তাই তারা রাজনীতি করতে গিয়ে এদেশের জনগণের চেতনা ও বিশ্বাসের সাথে বিরোধই শুধু করেনি, তারা ইসলামী আদর্শ ও চেতনাকেই নির্মূল করার অপচেষ্টা চালিয়ে গেছে।
এ বামধারার দলগুলোর পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে হিন্দুত্ববাদী ভারত। বাংলাদেশে যত রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে তার মূলে রয়েছে এ লাল রাজনীতির ধারক বাহক কমিউনিস্ট ও সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো। দেরিতে হলেও বাংলাদেশের রাজনীতিক ও রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পেরেছে বাম ও লাল রাজনীতিই আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংকটের জন্য প্রধানত দায়ী। তাই বাংলাদেশ থেকে বাম তথা লাল রাজনীতির নামে লাল সন্ত্রাস প্রত্যাখাত হয়েছে।
বাম রাজনীতি তথা কমিউনিজমের রাজনীতি প্রধান ধারক বাহক হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়ন এবং এ দলটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গঠিত অন্য সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহ। বাম রাজনীতির নামে এ লাল ধারার রাজনৈতিক দল ও ছাত্রসংগঠনগুলো এদেশের কোমলমতি ছাত্রদের ধর্মীয় তথা ইসলামী চিন্তা-চেতনাকে বিভ্রান্ত করে নাস্তিকতার দিকে ধাবিত করছে। এখন সময় এসেছে দেশের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের আদর্শিক চিন্তা-চেতনাকে রক্ষা করা। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই বাম রাজনীতির নাস্তিক আদর্শ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। কারণ নাস্তিকতা মানুষকে অনৈতিকতা ও উচ্ছৃঙ্খল করে তোলে। তাই বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বাম রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন দেশ জাতির স্বার্থেই বাম তথা নাস্তিকতার রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গন থেকে শুরু করে সারা দেশেই নিষিদ্ধ করা সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা।