বিশ্বজনীন ইসলামী ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় হজের ভূমিকা

অতিথি লেখক
৮ মে ২০২৫ ১৪:২৯

॥ মনসুর আহমদ ॥
হজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চম রোকন বা স্তম্ভ। হজে রয়েছে ঈমানী উদ্দীপনার অতলান্ত উৎস। কুফর ও শিরক পরিবেষ্টিত সমাজের সব বাধা লঙ্ঘন করে বাতিল ও তাগুতি শক্তির ধারক রাষ্ট্রক্ষমতাকে উপেক্ষা করে একটি খাঁটি ঈমান ও তাকওয়াভিত্তিক জাতি পয়দা করতে হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর সেই ত্যাগ স্বীকারের ইতিহাস, ঈমানের দৃঢ়তা প্রদর্শনে অনলকুণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়ার ইতিহাস, ইসমাইলের ধৈর্যের ইতিহাস নতুন করে স্মরণ করার প্রয়োজনে এবং বান্দার মনে খোদায়ী প্রেমের আবেগ ও উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করার জন্য মুসলমান জাতির দেহে মজবুতি ও অন্তরে ঈমানী ঐক্যের জোয়ার সৃষ্টির জন্য প্রতি বছর দূরদূরান্ত থেকে তাওহিদের প্রেমে পাগল পতঙ্গরূপ মুমিনরা ছুটে আসে ইবরাহীম (আ.) প্রতিষ্ঠিত খানায়ে কা’বায় পবিত্র মক্কায়। পৃথিবীর বিভিন্ন কোণ থেকে আগত মুসলমান সমবেতভাবে ইবাদতে লিপ্ত হয়ে ঐ কাজগুলো করে, যা তাদের নেতা, জাতির পিতা ও পথপ্রদর্শক হযরত ইবরাহীম (আ.) করেছিলেন। ‘মাঝে মাঝে মানুষ তার রবের প্রতি সুতীব্র আকর্ষণ অনুভব করে এবং তাঁর প্রেমে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। তখন সে তার আবেগ ও উচ্ছ্বাস শান্ত ও তৃপ্ত করার অবলম্বন খুঁজতে শুরু করে। অবশেষে সে এ সিদ্ধান্তে উপনিত হয় যে, হজ-ই হচ্ছে একমাত্র উপায় এবং বায়তুল্লাহ-ই হচ্ছে সেই অবলম্বন।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা)। খোদাপ্রেমে উদ্বেলিত মানুষগুলো দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে আল্লাহর কাছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে। আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের সওয়াব ও কল্যাণে বিভূষিত করেন। হজে রয়েছে মুমিনের জন্য প্রচুর কল্যাণ। বায়তুল্লাহর নির্মাণ শেষে হযরত ইবরাহীমের প্রতি আল্লাহর যে নির্দেশ এসেছিল, তাতে খোশ খবর দেয়া হয়েছে কল্যাণের। বলা হয়েছে-‘মানুষের সভায় আপনি ঘোষণা দিন। তখন তারা পায়ে হেঁটে এবং দুর্বল উটে চড়ে এসে হাজির হবে যে উটগুলো দূরান্তের পথ অতিক্রম করে পৌঁছে। যেন তারা তাদের কল্যাণসমূহ প্রত্যক্ষ করতে পারে। ‘লিয়াশহাদু মানাকেয়া লাহুম’- মানুষ এসে দেখুক যে, এই হজব্রত উদযাপনে তাদের জন্য কী কী কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
এখানে বর্ণিত ‘মানায়েকা’ একটি অনির্দিষ্ট জ্ঞাপক শব্দ। এ শব্দ প্রয়োগের মাধ্যমে হজের কল্যাণের ব্যাপকতার দিকে ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে। হজ পালনের মধ্য দিয়ে মানুষ কী এবং কেমন কল্যাণ লাভ করে, তা একমাত্র হজে আগমনকারী অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন মুমিনরাই অনুভব করতে পারে। তবে বাহ্যিকভাবে যে কল্যাণসমূহ লাভ করা যায়, সেগুলোও কম নয়।
একজন মুমিন একটা দীর্ঘসময়ের জন্য নিজের আত্মীয়-স্বজন, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করে দীর্ঘ সফরের কষ্ট স্বীকার করে হজব্রত পালন করতে পারে, তখনই যখন তার হৃদয় আল্লাহর ভয়ে এবং ভালোবাসায় পূর্ণ হয়।
তাই হজের প্রথম ও প্রধান কল্যাণ হলো, এ হজব্রত পালনের মাধ্যমে হজ পালনকারীর অন্তরে নতুন করে অর্জন করেন ঈমান ও বিশ্বাসের দৃঢ়তা। ফলে তিনি আল্লাহর কাছে যে প্রার্থনা জানান, তা আল্লাহ কবুল করেন। এ ব্যাপারে একটি হাদিস, হজ ও ওমরাহকারী আল্লাহর মেহেমান। সে তার মেজবান আল্লাহর কাছে দোয়া করলে তিনি তা কবুল করেন। সে তাঁর কাছে মাগফিরাত চাইলে তিনি তাকে মাগফিরাত দান করেন। (ইবনে মাজাহ)।
হজ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মুসলিম মিল্লাত ইবরাহীম (আ.)-এর সাথে তাদের সম্পর্ক নবায়ন করে। অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াবার জন্য আল্লাহর পথে মনপ্রাণ কুরবানির জজবা লাভ করে হজ পালনের মাধ্যমে। প্রকৃত পক্ষে হজ হলো ইসলামী উম্মাহ তথা গোটা ইনসানিয়াতের অস্তিত্ব রক্ষার ও সত্য সফলতার পথে অগ্রযাত্রার মহান রক্ষাকবচ।
এহরাম বাঁধার পর থেকে হাজীদের একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতে হয়। ইবরাহীম খলিলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল মানুষের সভায় আপনি হজের ঘোষণা দিন তখন তারা পায়ে হেঁটে হাজির হবে। খলিলুল্লাহর সে ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলমান খানায়ে কা’বায় এসে উচ্চকণ্ঠে সমবেত স্বরে ঘোষণা দেয়, ‘‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা …’ প্রভুহে তোমার বান্দা হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই। বান্দা হাজির। সব প্রশংসা ও নিয়ামত তোমারই। রাজত্ব ও ক্ষমতা তোমারই, তোমার কোনো শরিক নেই। ‘এ ডাক যেন আল্লাহর তরফ থেকে হযরত ইবরাহীম (আ.) ডাকছেন। হাজীরা সম্মুখে অগ্রসর হচ্ছেন আর জওয়াব দিচ্ছেন, ‘প্রভু হে! আমি হাজির।’
এভাবে তালবিয়া পাঠের মাধ্যমে গোটা মিল্লাত যেন শরিক হচ্ছে হযরত ইবরাহীম ও হযরত ইসমাইলের সময় হতে প্রচলিত ইসলামী আন্দোলনের সাথে। মুসলিম জাতি শক্তিশালী ঈমান, নির্ভেজাল আল্লাহপ্রেম ও নজিরবিহীন ত্যাগ ও কুরবানির ইবরাহিমী আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে সমাজের বদ্ধমূল সংস্কার-কুসংস্কার, অসত্য ও খোদাদ্রোহিতার বিরূদ্ধে জিহাদ ঘোষণার অনুপ্রেরণা লাভ করে।
পৃথিবীর বিভিন্ন ভূখণ্ডে বিভিন্ন পারিবেশে ইসলামী উম্মাহর অধিবাস হওয়ার কারণে স্বভাবতই তাদেরকে অনুকূল প্রতিকূল বিভিন্ন সমস্যা ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। কখনো তাদের জীবনে থাকে গতি সজীবতা ও প্রাণচাঞ্চল্য। কখনো আবার নেমে আসে সীমাহীন নির্জীবতা অবসাদ ও হীনম্মন্যতা। কখনো শিকার হয় সংঘাত সংঘর্ষের, নিপীড়ন-নির্যাতনের। কখনো বা মোকাবিলা করে তাহজীব-তমদ্দুন ও সভ্যতা সংস্কৃতির মতো গুরুতর সমস্যা কিংবা বৈষয়িক ও রাজনৈতিক প্ররোচনা-প্রলোভনের।
জীবন কখনো হয় সম্পদ প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ, আবার কখনো চরম দৈন্য ও দারিদ্র্যপীড়িত। কখনো তাদের ওপরে চেপে বসে, কোনো স্বৈরাচারী বাদশাহ ও জালিম শাসক। কখনো বা তাদের ভাগ্য নিয়ে পৈশাচিক খেলায় মেতে ওঠে রাজনীতির পাকা খেলোয়াড়ের দল। এমনি আরো অসংখ্য সমস্যা, জটিলতা ও প্রতিকূলতা আসে তাদের ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনে।
এসকল সমস্যা, জটিলতা প্রতিকূলতার সফল মোকাবিলার জন্যই প্রয়োজন ঈমানের সেই ছাইচাপা নিভু নিভু স্ফুলিঙ্গকে বার বার উসকে দেয়া। ইশক ও মুহব্বতের শীর্ণধারাকে ছল ছল কল কল রবের ছন্দময় ও বেগবান ঝর্ণাধারায় রূপান্তরিত করা এবং উম্মাহর প্রতিটি সদস্য ও শ্রেণিকে ত্যাগ ও কুরবানি এবং আনুগত্য ও সমাধানের ইবরাহিমী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে তোলা। বলা বাহল্য যে, খলিলুল্লাহ ইবরাহীমের স্মৃতিধন্য পবিত্র ভূমির জিয়ারত ও হজ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই শুধু সম্ভব উম্মাহর জীবনে এ আমূল পরিবর্তন ও মহাবিপ্লব সাধন। (আরকানে আরবায়া)। হজের মাস ইসলামের পুনর্জাগরণের মৌসুম। হজ এমন এক পবিত্র অনুষ্ঠান যেখানে আলমে ইসলামের তথা দুনিয়ার সকল সামর্থ্যবান মুসলমান একত্রিত হয়ে গোটা উম্মাহকে এক অভিন্ন প্রায় কর্মে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা গ্রহণের এবং বিভিন্ন জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে ঠিক করে কর্মপন্থা নির্ধারণের।
হজের বিভিন্ন কল্যাণের রূপ বিভিন্নভাবে দেখা যেতে সময় ও সুযোগের বিবর্তন ধারায় কল্যাণের নিত্যনতুন রূপ ও বৈচিত্র্য ধরা দেয় মুমিনের কাছে। কল্যাণের একটি বিশেষ রূপ মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠা। হজের জন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বংশ- রঙের অসংখ্য মুসলমান সম্মিলিত হয় বায়তুল্লাহয়, আরাফাতে। সেখানে লাখ লাখ মানুষের ভাষা, জাতি, বর্ণ, বংশ ও গোত্রের কৃত্রিম বৈষম্য চূর্ণ হয়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে সমগ্র মানুষের সমন্বয়ে খোদার প্রতি বিশ্বাসী একটি বিরাট জামায়াত রচিত হয়ে। বিশ্বসম্মেলনের এ বিরাট জামায়াত কেন্দ্রীয়ভাবে নিতে পারে মুসলিম জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের উপযুক্ত সিদ্ধান্ত। এ কথা ঠিক যে, স্থান থেকে স্থানান্তরে গমন এবং একের পর এক নানা আহকামে সদাব্যস্ত ও নিমগ্নতা হচ্ছে হজের প্রধান বৈশিষ্ট্য। তারপরও ইমাম, ফকীহগণ হজের আহকাম শুরু বা শেষ করার আগে বা পরে একটা সময় নির্ধারণ করে এ বিশ্বসম্মেলনে মুসলিম জাহানের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের উপযুক্ত পথ বের করে নিতে পারেন।
পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতির মহাসম্মেলন বহুবার হয়েছে। আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন জাতির ‘সম্মেলন হয় যুদ্ধের ময়দানে একে অপরের গলা কাটবার জন্য অথবা সন্ধিসম্মেলনে বিজিত দেশগুলোকে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেওয়ার জন্য কিংবা বিশ্বজাতি সম্মেলনে এক একটি জাতির বিরুদ্ধে ধোঁকা, প্রতারণা, ষড়যন্ত্র, জুলুম ও বেঈমানির জাল ছড়াবার জন্য অথবা পরের ক্ষতিসাধন করে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করার মতলবে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লীগ অব নেশনস এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘ গঠন বিশ্বশান্তি রক্ষার প্রচেষ্টার ব্যর্থ ফসল। এ সংগঠন বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচিত মুসলমানদের জন্য কোনোই কাজে আসেনি। বরং ভেটো প্রদানের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে বার বার তা প্রয়োগ করা হয়েছে মুসলমানদের স্বার্থের বিরুদ্ধে। আজ যখন গোটা মুসলিম জাতি পৃথিবীর বিভিন্ন কোণে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত, ইহুদি-খ্রিষ্টানদের হাতে চরমভাবে লাঞ্ছিত। যখন সন্ত্রাসবাদের নামে গোটা মুসলিম জাতির ওপর চলছে ধ্বংসযজ্ঞ, তখন বিশ্ব সংস্থাগুলো নিশ্চুপ।
এহেন পরিস্থিতিতে হজের মতো একটা পবিত্র বিশ্বসম্মেলনকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম জাতি তাদের সাথে কল্যাণের পথ তৈরি করে নিতে পারে অতি সহজেই। এ কল্যাণ লাভের সুযোগ বার বার প্রতি বছর ঘুরে ঘুরে আসে মুসলমান জাতির সামনে।
এ বিরাট সম্মেলনকে কাজে লাগানোর জন্য বিশ্বমুসলিম সমাজের ওলামা ফকীহ রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা ঐক্যবদ্ধভাবে চিন্তা করে যুগোপযোগী একটি উত্তম পন্থা বের করতে পারেন। এ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অতি সহজেই একই সময় গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে হাজীগণের মাধ্যমে। তাছাড়া আরাফাতের বক্তৃতা হতে পারে মুসলিম জাতির কল্যাণের উৎস। এভাবে এক বিরাট কল্যাণ প্রাপ্তির রাজপথ খুলে দিতে পারে হজের সম্মেলন।
হজ শুধুমাত্র একটি স্বাভাবিক ইবাদতই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী সংহতির প্রস্তুতি। উম্মাহর জীবনে নতুন চেতনার উন্মেষ, নতুন শান্তি উদ্বোধন এবং নতুন আধ্যাত্মিকতার স্ফুরণ ঘটাতে এক কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। বোখারী শরীফে হজকে অভিহিত করা হয়েছে শ্রেষ্ঠতম জিহাদ বলে। হযরত আয়েশা থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা.) বলেন, ‘হজের প্রস্তুতি নাও এবং উপকরণ সংগ্রহ করো। কেননা তা-ও এক প্রকার জিহাদ’।
হজ একটি বার্ষিক মুসলিম সম্মেলন। এ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে মুসলিম উম্মাহর সদস্যগণ ইসলামবিরোধী জাতিসমূহের অনেক অনৈসলামিক প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষাব্যূহ তৈরি করতে পারে। এটি হচ্ছে হজের মাধ্যমে বিরাট কল্যাণ লাভের অন্যতম তরিকা।
হযরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ (র.) বলেছেন, ‘হজের একটি উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য হলো সাইয়েদেনা হযরত ইবরাহীম (আ.) এবং সাইয়েদেনা হযরত ইসমাইল (আ.)-এর উত্তরাধিকারী ধারার সম্পদের যথার্থ হেফাজত। কেননা এরা দুজনেই মিল্লাতে হানাফী ও তাওহিদী উম্মাহর ইমাম ও পুরোধা। এ মিল্লাতে হানাফীকে দুনিয়ায় বিজয়ী শক্তিরূপে প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আবির্ভাবের উদ্দেশ্য।
আল্লাহপাক এরশাদ করেন, ‘এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাত।’ তাই আমাদের জন্য একান্ত অপরিহার্য যে, আমরা মিল্লাতের ইমাম থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে যা পেয়েছি- যথা দশটি স্বভাব সুন্নত এবং হজের বিধান ও ক্রিয়াকর্ম সেগুলোর হেফাজত করব। আজ আমাদের সুন্নতে ইবরাহীমকে অনুসরণ করে হজ পালনের মাধ্যমে দুনিয়ার বিজয়ী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে হবে।
হজের একটি অর্থনৈতিক কল্যাণের দিকও রয়েছে। একটি বিরাট অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পাদিত হয় হজকে কেন্দ্র করে। হজ মানুষকে সচ্ছলতা প্রদান করে। আল্লাহর রাসূল ফরমান, ‘হজ ও ওমরাহ পালন করতে থাক। কারণ হজ ও ওমরাহ উভয়ই দারিদ্র্য অভাব এবং মানুষের গুনাহসমূহকে এমনভাবে দূর করে দেয়, যেমন আগুনের ভাট্টি -লোহা সোনা-চাদির ময়লা দূর করে দেয়। এ হজের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের পাপ থেকে পবিত্র করুন; বিশ্বব্যাপী নির্যাতনের হাত থেকে মুসলিম জাহানকে আল্লাহ রক্ষা করুন এবং আমাদের অর্থনৈতিক সফলতা প্রদান করুন, এটাইÑ হোক আলমে ইসলামীর কামনা।