আলোকে তিমিরে

সর্বক্ষেত্রে যেন দেশীয় মননের স্পন্দন থাকে

মাহবুবুল হক
৮ মে ২০২৫ ১৪:১৬

লেখক : মাহবুবুল হক,  সিনিয়র সাংবাদিক,কথাসাহিত্যিক ও  কবি।

আমাদের দেশের রাজনীতিতে বহুদিন থেকে দুটি কথা প্রচলিত আছে- একটি হলো, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই; আরেকটি হলো, প্রায় একই ধরনের কথা, রাজনীতি হলো নদীর জোয়ার-ভাটার মতো। সকালে একরকম তো রাতে একরকম। কথিত আছে, এ ধরনের জোয়ার-ভাটা দেখে যারা এ দেশটি বিজয় করতে চেয়েছিলেন, তারা নাকি ভয়ে প্রস্থান করেছেন। এ বিষয়ের একটি ইন্টারভিউ প্রকাশ করে লেখা শুরু করছি :

ওরিয়ানা ফালাচি : ইন্দিরা গান্ধী বলেছেন, আপনি ভারসাম্যহীন একজন লোক। আজ এক কথা বলেন, আগামীকাল আরেকটা। কেউ বুঝতে পারে না, আপনার মনে কী আছে?
জুলফিকার আলী ভুট্টো : হ্যাঁ। আমি সরাসরি এর জবাব দিচ্ছি। দার্শনিক জন লকের একটি বক্তব্যই আমি উল্লেখ করছি, ‘ছোটমনের গুণই হলো সামঞ্জস্যবিধান।’ অন্যভাবে বলা যায়, আমি মনে করি, একটি মৌলিক ধারণায় অত্যন্ত দৃঢ় থাকা উচিত। মূল ধারণার মধ্যে একজন অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করতে সক্ষম হয়। একবার এই প্রান্তে, আরেকবার অপরপ্রান্তে। একজন বুদ্ধিজীবী কখনো একটিমাত্র ও সংক্ষিপ্ত ধারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেন না- তার ভাবনার নমনীয়তা থাকা উচিত। তা না হলে একটি গণ্ডির মধ্যে গোঁড়ামির মধ্যে তিনি নিমজ্জিত হন। একজন রাজনীতিবিদও তাই। রাজনীতি একটি আন্দোলন এবং রাজনীতিবিদকেও হতে হবে সচল। একবার তাকে ডানে, আরেকবার বামে যেতে হবে। তাকে আসতে হবে দ্বন্দ্ব ও সন্দেহ নিয়ে। অব্যাহতভাবে তার পরিবর্তন হবে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন, সবদিক থেকে আক্রমণ করবেন। ফলে বিরোধী দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে আঘাত হানতে পারেন। মূল ধারণার দিকে যিনি দ্রুত মনোযোগী হন, তার কাছেই শেখা যায়। তার কাছে শিখুন, যিনি সত্য প্রকাশ করেন।
দৃশ্যত সামঞ্জস্যতা বুদ্ধিমান মানুষের প্রধান গুণ। মিসেস গান্ধী যদি তা না বুঝেন, তাহলে তিনি তার পেশার সৌন্দর্য বুঝেন না। তার পিতা (জওহর লাল নেহেরু) এ বিষয়টি খুব ভালোভাবে বুঝেছিলেন। -ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরি/ওরিয়ানা ফালাচি, অনুবাদ : আনোয়ার হোসাইন মঞ্জু।

অনেক আগের ইন্টারভিউ। কিন্তু আমাদের সেক্যুলার রাজনীতিতে এসব এখনো প্রণিধানযোগ্য। সুযোগমতো সব পক্ষই এসব বচন উল্লেখ করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। কিন্তু সাধারণত আমাদের দেশে ইসলামিস্টরা এ ধরনের সুযোগসন্ধানী সেক্যুলার বাণী বয়ান করতে চান না। কুরআনে যুদ্ধ চলাকালে স্ট্র্যাটেজি বা কৌশলের কথা আছে। বিবেক ও সৎ বিবেচনার সাথে কাণ্ডজ্ঞানের কথা আছে। আছে বুদ্ধির কথাও। যুদ্ধে শুধু শক্তির কথা নেই, সাধ্য ও সামর্থ্যরে কথা নেই, আছে মানবিক যোগসাজ উল্লম্ফনের কথা। কূটবুদ্ধির কথা নয়, কূটনীতির কথা। যেটাকে আমরা সরলভাবে ডিপ্লোম্যাসি বলি। সবকিছু নির্ভর করে স্থান, কাল, পাত্রের ওপর। ইসলামিস্টরা যখন বলেন, নির্বাচনের পূর্বে অবশ্যই আন্তর্জাতিক অপরাধীদের বিচার ও সংস্কার শেষ করতে হবে তখন ইসলামিস্টসহ অন্যরা এ বাক্যটিকে মূল বাক্য বলে গ্রহণ করে নেয়। কিন্তু একই বাক্য অন্যরা যখন বলেন, তখন সেই বাক্যটিকে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেন না। তখন তারা এ বাক্যের মধ্যে অনেক ফাঁকফোকর তালাশ করেন। কী ধরনের সংস্কার, সংস্কারের মূল লক্ষ্য কী? নির্বাচনের সাথে এর সম্পর্ক কী? রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতির সাথে এর সাযুস্যতা কী? এটা সংবিধানসম্মত কিনা? এ ধরনের বিষয় আমাদের রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতির মধ্যে সংযোজন ও বিয়োজন করলে সংবিধানকে কাঁটাছেড়া করতে হবে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। বিচারের প্রসঙ্গ উঠলে যুক্তিবাদীরা ‘সওয়াল’ শুরু করেন। কার কার বিচার? কয়জনের বিচার? সবার বিচার কিনা ইত্যাদি।

এবার একটা দেশের রাজনীতিতে মৌলিক পরিবর্তন দেখা গেছে। তা হলো রাজনীতিতে বড় দল বলে খ্যাত বিএনপি ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর থেকেই নির্বাচনের ডাক দিয়েছে। মনে হয় অভ্যুত্থান বা বিপ্লবের কথা ওরা পূর্ব থেকেই জানতো। না জানলে এ অভ্যুত্থানের মূল স্টেকহোল্ডার কারা, তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই তারা নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলল, জাতি হকচকিয়ে গেল। কারণ ওই বছর জানুয়ারি মাসেই তো ইলেকশন হয়ে গেছে। আবার এত তাড়াতাড়ি ইলেকশন ক্যান। বিএনপির কথায় মৃদু সমালোচনাও হলো। যুদ্ধে যারা শাহাদাতবরণ করেছেন, তাদের সমাধিস্থ করা তখনো সম্পন্ন হয়নি। আহত গাজীদের দেশে-বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থাও হয়নি। প্রতিনিয়ত আহত গাজীরা বিভিন্ন হাসপাতালে শাহাদাতবরণ করছে। নানা শ্রেণি-পেশার চাপ সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠান ও প্রেসার গ্রুপ মিছিল, পথসভা, সচিবালয়, জাতীয় মেহমানখানা (অতিথি ভবন) ইত্যাদি ঘেরাও করার চেষ্টা করছে, মিল-কারখানা ও গার্মেন্টশিল্প বন্ধ করার অপচেষ্টা করছে, খুন-গুম ও আয়নাঘরের ক্ষতিগ্রস্ত ও মজলুমরা দফায় দফায় পথসভা ও মানববন্ধন করছে। শিক্ষক ও আলেমদের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে দাবি-দাওয়া নিয়ে আস্ফালন করছে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর বার বার আঘাত আসছে। পাবলিক, প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো না খোলার ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশি রাষ্ট্রীয় ও সরকারি মেহমান অনবরত আশা-যাওয়া করছে। রোহিঙ্গাদের সমস্যা তুঙ্গে তোলা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ও বিচারপতিদের অপসারণের জন্য ঘেরাও, মিছিল, মিটিং হচ্ছে। সারা দেশে সর্বক্ষেত্রে সকল এসোসিয়েশনে কর্মকর্তা রদবদল হচ্ছে। লুটপাট ও সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা চলছে। এ ধরনের একটা বিশৃঙ্খলার মধ্যে বিএনপি চোখে কালো চশমা দিয়ে এবং কানে তুলা দিয়ে শুধু নির্বাচন নির্বাচন নিয়ে জিকির, কান্নাকাটি, হুঙ্কার, আস্ফালনসহ সবকিছুই করে চলেছে। ঘুরেফিরে নানা রকমারী ভাষায় তারা সবকিছুর সমাধান, ইলেকশন-ইলেকশন বলে দেশ-বিদেশের সকল ধরনের স্টেকহোল্ডারদের সান্ত্বনা দিয়েছে।
বিএনপি এবং তার সমগোত্রীয় সেক্যুলার গোষ্ঠী এ একই কথা গত আগস্ট মাস থেকে এখনো বলছে। ওদের একমাত্র একটাই দাবি- তা হলো ইলেকশন বা নির্বাচন। এর বাইরে তাদের আর তেমন কোনো উচ্চবাচ্য ছিল না। কিন্তু তাদের অনুবর্তীরা ছাড়া এ বিষয়টি অন্যরা খুশিমনে গ্রহণ করেনি। বিশেষ করে যারা সরাসরি অভ্যুত্থানের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল এবং যারা এ দেশে ইসলামী মূল্যবোধকে প্রসারিত দেখতে চায়, তারা বিএনপির প্রতি সম্মান ও মর্যাদা রেখে বার বার বিনয়ের সাথে উত্থাপন করেছে যে, ‘যত যাই বলুন, অপরাধীদের মধ্যে যারা রাঘব-বোয়াল এবং মৌল কিছু দেশজ সংস্কার ছাড়া এ দেশের মানুষ নির্বাচন চাইবে না। নির্বাচনের পূর্বে তারা অবশ্যই চাইবে কিছু বিচার-আচার হোক এবং কিছু মৌলিক সংস্কার ছাড়া এ দেশের মানুষ নির্বাচন চাইবে না।

এদিকে ইসলামিস্টরাও দেশ-বিদেশের নানা চাপে তাদের মূল দাবি-দাওয়া থেকে অনেক দূরে সরে পড়েছে। সরে পড়েছে মানে সেক্যুলারিস্টদের কাছাকাছি হয়েছে। মাঝে মাঝেই তারা ঐক্যের নামে নানা মেরুকরেেণর ছাতা উত্তোলন করেছে।

এ দেশের ইসলামিস্টরা সবসময় আশা করে থাকে, ইসলামী দলগুলো একটা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলবে। তাদের মুরুব্বিদের কাছে ইসলামিস্টদের একটাই বড় প্রশ্ন- আপনারা নির্বাচনের সময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারেন না কেন? মুরুব্বিরা নানাভাবে জবাব দেয়ার চেষ্টা করেন এবং অনেক সময় দারুণভাবে আশা পোষণও করেন যে, আচ্ছা এতদিন হয়নি, এবার ইনশাআল্লাহ হবে।
এ ধরনের জবাবে নতুন কোনো আশাবাদে উল্লসিত হতে পারেনি। তারা দেখতে পাচ্ছে, ইসলামিস্টরা সকল মঞ্চে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সময় দিচ্ছে। অবশেষে দেখা যাচ্ছে, সেক্যুলাররাও এবার পূর্বের মতো ইসলামিস্টদের অবজ্ঞা বা উপেক্ষা করছে না। সেক্যুলাররাও ইসলামিস্টদের সাথে চা-চক্র, হাই-টি, ভূরিভোজ, সামাজিক দাওয়াত, ধর্মীয় জলসা ইত্যাদিতে মনোযোগ দিচ্ছে। এ ধরনের খোলামেলা সম্পর্ক ইতোপূর্বে কখনো তেমন দেখা যায়নি।

এদিকে ফিলিস্তিনের ওপর জায়নিস্টদের বর্বর আক্রমণ তথা নিশ্চিহ্ন করার শেষ প্রান্তে সারা বিশ্বে যখন তুমুল প্রতিবাদ চলছে, বাংলাদেশের আপামর জনতা তখন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো গর্জে ওঠে। এ গর্জন পূর্বের মতো স্পন্দনহীন ছিল না। বাঘের গর্জনের সাথে মেঘের গর্জন, তার সাথে আবার যুক্ত হয়েছিল সাগরের গর্জন। সব মিছিলে বাংলাদেশিদের আমরা দুর্বার হতে দেখলাম। এটা লোকদেখানো ছিল না। ছিল প্রকাশ্য আর্তনাদ। ভেতরে যাই থাক, সেক্যুলার বিশ্ব এ সম্মিলিত গর্জনকে ইসলামফোবিয়া বা জঙ্গিজ হুঙ্কার বা আস্ফালন মনে করেনি। এর বিরুদ্ধে তেমন কোনো উচ্চারণ করেনি। বাহ্যিকভাবে এ মহামিলনকে প্রশংসাই করেছে। বাংলাদেশের সেক্যুলার সরকারগুলো নিজের দেশকে বিদেশিদের কাছে ‘জঙ্গি দেশ’ হতে যাচ্ছে বলে যে উদ্ভট প্রচারণায় কয়েক বছর মত্ত্ব ছিল, সেই প্রচারণায় নবতর ধাক্কা উপস্থিত হয়েছে। তারা এখন উপলব্ধি করতে পারছে, কোনো একটি দেশ সম্পূর্ণভাবে ‘জঙ্গি দেশ’ হতে পারে না। ‘জঙ্গি’ হতে পারে কোনো দেশের সরকার বা বিচ্ছিন্নভাবে কোনো দলÑ যারা কমিউনিস্টদের মতো মাটির নিচে গুপ্তভাবে বসবাস করে। তাদের কথা, আচরণ, বিধিব্যবস্থা সবই থাকে গোপনীয়। গত সরকারসমূহে ‘জঙ্গিগত’ প্রচারণা যে মিথ্যা প্রচারণা ছিল, অসত্য নাটক ছিল, তার তো হাজারো প্রমাণ এখন বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যাচ্ছে। বালু দিয়ে পাহাড় বানানো যায় না। কৃত্রিম হাজারো নল দিয়ে নদী সৃষ্টি করা যায় না। সবকিছু যে বালুর বাঁধ, তা একটা সময় পরিষ্কার হয়ে যায়। সর্বশেষ এ প্রতিবাদের দ্বারা বিশ্বের সচেতন মানুষ অনুধাবন করেছে, বাংলাদেশের মানুষ, ‘বিশ্বাসী মানুষ’। তারা একজন সর্বশক্তিমান মহান ‘সৃষ্টিকর্তা’ আল্লাহকে বিশ্বাস করে। অনৈক্য দূর করতে এবং ঐকমত্যে পাহাড় সৃষ্টি করতে তাদের কোনো তুলনা নেই। এই যে নবতর অনুধাবন, নিশ্চয়ই তা সেক্যুলার বিশ্বকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে।

ভুল করা বা জেনেশুনে ভুল করা অন্যায়, কিন্তু ভুলকে চিহ্নিত করা, ভুলকে উপলব্ধি করা, ভুলের বিপরীত স্বচ্ছতা, শুভ্রতা এবং সঠিকতায় ফিরে আসা বীরের কাজ। আমরা বীরের জাতি, আমরা শহীদের জাতি, আমরা বার বার ফিরে আসব- এই মহৎ কামনায় এখন আমরা দোল খাচ্ছি। এখনকার বিশ্বের সর্বোচ্চ নন্দিত মানুষটি আমাদের নেতা। তার সব কাজের মৌল স্বপ্ন, আকাক্সক্ষা এবং সাহসী প্রয়াস হলো ‘গ্রামীণ’। এ গ্রামীণ কী, যুক্তরাষ্ট্রের, ইসরাইলের, যুক্তরাজ্যের, রাশিয়ার, ফ্রান্সের, অস্ট্রেলিয়ার, ভারতের বা চায়নার গ্রামীণ? এখনো হয়তো অনেকেই আমরা তেমন একটা ধারণাই করে থাকি। যেসব দেশের কথা এখানে উল্লেখ করলাম, তাদের নগর আর গ্রাম কি অভিন্ন, পৃথক বা লোকজধারায় গড়ে ওঠা? নিশ্চয়ই না। যে বয়সে অধ্যাপক ড. ইউনূসের চোখে গ্রামীণের ক্যানভাস গড়ে উঠেছিল, যে দেশের ল্যান্ডস্কেপ তার চক্ষুযুগলকে বিমোহিত করেছিল, তা নিদ্বির্ধায়, নির্ভয়ে, নিঃসংকোচে বলা যায় সেটা ‘পূর্ব বাংলার গ্রাম।’ সৈয়দ আলী আহসানের ‘আমার পূর্ব বাংলা’  এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই বিঘা জমি।
‘তিনটি ফুল আর অনেক পাতা নিয়ে
কদম্ব তরুর একটি শাখা মাটি
ছুঁয়েছে
আরও অনেক গাছ পাতা লতা
নীল হলুদ বেগুনী অথবা সাদা
অজস্র ফুলের বন্য অফুরন্ত
ঘুমের অলসতায় চোখ বুজে আসার মতো
শান্তি
কাকের চোখের মতো কালোচুল
এলিয়ে
পানিতে পা ডুবিয়ে—রাঙা–উৎপল
যা’র উপমা
হৃদয় ছুঁয়ে–যাওয়া সিক্ত নীলাম্বরীতে
দেহ ঘিরে
যে দেহের উপমা স্নিগ্ধ তমাল—
তুমি আমার পূর্ব–বাংলা
পুলকিত সচ্ছলতায় প্রগাঢ় নিকুঞ্জ।’ (আমার পূর্ব বাংলা) ।

এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই বিঘা জমি

অবারিত মাঠ, গগনললাট চুমে তব পদধূলি,
ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামগুলি।
পল্লবঘন আম্রকানন রাখালের খেলাগেহ,
স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল- নিশীথ শীতল স্নেহ।’
আসুন, আমরা সবাই মিলে ‘এই গ্রামীণে’ ফিরে যাই। (দুই বিঘা জমি)

এছাড়া একটা সৌভাগ্যের কথা উদ্ভাসিত হয়েছে। বলেছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে আমরা একটা ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করব। তাকে অভিনন্দন জানাই। এ বিষয়ে তাকে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। আমাদের শেষ রোলমডেল যে ‘মদিনা সনদ’ তৈরি করে ছিলেন, সেখানে ফিরে গেলেই আপনি সবকিছু খুঁজে পাবেন।
লেখক : মাহবুবুল হক,  সিনিয়র সাংবাদিক,কথাসাহিত্যিক ও  কবি।

সংশেধানী

এ উপ সম্পাদকীয় নিবন্ধের    প্রিন্ট ভার্সনে আমার পূর্ব বাংলা কবিতার অংশ টুকু বাদ পড়েছে। দুই বিঘা জমি কবিতার  ফুটনোট আমার পূর্ব বাংলা ছাপা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এ ভূলের জন্য আমরা আন্তনিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।-বিভাগীয় সম্পাদক