জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সংবাদ

শপথের মর্যাদা রক্ষা করে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে : নূরুল ইসলাম বুলবুল

সোনার বাংলা অনলাইন ডেস্ক
৭ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৩৭

রবিবার (০৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হলরুমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নুরুল ইসলাম বুলবুল

 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নতুন সদস্যদের (রুকন) শপথ গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (০৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হলরুমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নুরুল ইসলাম বুলবুল রুকনদের শপথ পাঠ করান। শপথ পরবর্তী সভায় নূরুল ইসলাম বুলবুল রুকনদের উদ্দেশ্যে বলেন, শপথের মর্যাদা রক্ষা করে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। আল্লাহ মুমিনদের মাল ও জান দিয়ে দ্বীন কায়েম করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ যা নির্দেশ দেন তাই ফরজ বিধান। তিনি আরো বলেন, শপথ নেওয়া মানেই জান্নাত অর্জন করা নয়, শপথের আলোকে নিজেকে পরিচালিত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ব্যতীত জান্নাত লাভ করা যায় না। ইসলাম বিদ্বেষীরা জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বলে, জামায়াতে ইসলামী জান্নাতের টিকেট বিক্রি করে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী জান্নাতের টিকেট বিক্রি করে না, জান্নাতের পথ দেখায়। ইসলামের শিক্ষা অর্জন এবং বাস্তবায়নের জন্য জামায়াতে ইসলামী গাইলাইন হিসেবে ভূমিকা পালন করে।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দাঁড়িপাল্লার পক্ষে নিরব বিপ্লব সাধনের মাধ্যমে জনগণ পরিবর্তনের পথ তৈরি করবে। এদেশের জনগণ যেই পরিবর্তন চায় সেই পরিবর্তনের জন্য জনগণ দাঁড়িপাল্লাকে বাছাই করবে ইনশাআল্লাহ। দাঁড়িপাল্লা ইনসাফ ও ন্যায়ের প্রতীক। জামায়াতে ইসলামী এদেশে ইনসাফ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জনগণও ইনসাফ ও ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা চায়। জনগণের চাওয়া আর জামায়াতে ইসলামীর দলীয় কর্মসূচি একই। তাই জনগণ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের মাধ্যমে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণ করে মানুষের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতি একবাক্য নিশ্চয়ই স্বীকার করবে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি। কারণ মানুষের তৈরি মতবাদে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা সমানভাবে নিশ্চিত হয় না। মানুষের তৈরি আইনে কেবলমাত্র যারা আইন তৈরি করেছে তারাই সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু আল্লাহর আইনে ইসলামী বিধানে সকল শ্রেণিপেশার, সকল ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী সমান সুযোগ-সুবিধা, মর্যাদা ও অধিকার লাভ করে। তাই ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের বিকল্প নেই। জামায়াতে ইসলামীর ৪ দফা কর্মসূচির অন্যতম হচ্ছে সমাজ সংস্কার ও সমাজ সেবা। অতীতের মত দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সমাজ সেবা অব্যাহত রাখতে তিনি উপস্থিত রুকনদের প্রতি আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে ড. আব্দুল মান্নান ও মো. শামছুর রহমান, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে এডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, অধ্যাপক নুর নবী মানিক, আবদুস সালাম, ডা. আতিয়ার রহমান, শেখ শরীফ উদ্দিন আহমদ, কামরুল আহসান হাসান, সৈয়দ সিরাজুল হক সহ মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

নতুন মোড়কে পুরাতন মতবাদ জনগণ আর গ্রহন করবে না – ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, নতুন মোড়কে পুরাতন মতবাদ জনগণ আর গ্রহন করবে না। ভোট চাইতে আসলে প্রশ্ন করতে হবে; দেশ কীভাবে দুর্নীতিতে টানা ৫ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। যারা সরকারে থেকে দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে, কানাডায় বেগমপাড়া গড়েছে, লন্ডনে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে তারা এখন যতই নীতি কথা বলুক এসব কেবলই জনগণকে ধোঁকা দিয়ে আবারও ক্ষমতার মসনদে বসার অভিনয়। কথার ধোঁকায় পড়ে জনগণ আর ভোট দিবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ এবার ভোট দিবে দলীয় কর্মকাণ্ড দেখে। কারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, দখল, লুটপাট করছে আর কারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে জনগণ সবই দেখে এবং জানে। ক্ষমতায় বসার আগেই যারা নদীর বালু,পানি, পাথর লুট করে নিয়ে গেছে তাদের হাতে কখনো দেশ ও জাতি নিরাপদ নয়। তাই দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করতে হবে। তিনি প্রত্যেক ভোটারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী বিগত ৫৪ বছরে মানুষের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে কেন পারেনি যারা অতীতে সরকারে ছিল তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।

সোমবার (০৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর জিগাতলায় ঢাকা-১০ আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ পূর্বক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতে ইসলামী ব্যক্তি ও দল হিসেবে দুর্নীতিমুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ ৩টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছে। তাদের দায়িত্ব পালনকালে ২টাকার দুর্নীতি হয়েছে এমন প্রমাণ কেউ করতে পারেনি। তারা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে রাষ্ট্রের ১ পয়সা দুর্নীতি করেছি তবে শুধু মন্ত্রীত্ব নয় জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নিবো। তাদের সেই চ্যালেঞ্জ আজ পর্যন্ত কেউ প্রমাণ করতে পারেনি। কারণ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। জামায়াতের নেতারা এক আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করে না। যারা আল্লাহকে ভয় করে তারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী করে না, জনগণের সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করে না। জামায়াতে ইসলামীকে একটিবার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিলে জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী জাতিকে বৈষম্যহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র উপহার দিতে চায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১০ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, যেই অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশ ৫৪ বছর আগে স্বাধীন হয়েছে, সেই অঙ্গীকার ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। মানুষের মৌলিক ৫টি অধিকারের মধ্যে একটিও রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত হয়নি। জনগণের মৌলিক অধিকার সরকার নিশ্চিত করতে না পারলে সেই সরকার কখনো জনগণের সরকার হতে পারে না। বিগত সময়ে যারাই সরকারে ছিল তারা কেউ জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেনি। কারণ তারা জনগণের সরকার ছিল না। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে মানুষের মৌলিক ৫টি অধিকার (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা) রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করবে। তিনি ঢাকা-১০ আসনের ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটিবার জামায়াতে ইসলামীকে সুযোগ দিন। আমরা জনগণের আমানতের খেয়ানত করব না। আমীরে জামায়াত ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, আমরা দুর্নীতি করব না; কাউকে দুর্নীতি করতে দিবো না, আমরা চাঁদাবাজি করব না; কাউকে চাঁদাবাজি করতে দিবো না, আমরা সন্ত্রাসী করব না; কাউকে সন্ত্রাসী করতে দিবো না। আমরা এমনভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করব ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালাতে হবে না। ক্ষমতায় থাকলেও আমরা জনগণের সাথে থাকব, ক্ষমতায় না থাকলেও আমরা জনগণের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকব।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১০ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালক অধ্যাপক নুর নবী মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১০ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সহকারী পরিচালক শেখ শরীফ উদ্দীন আহমদ, হাজারীবাগ উত্তর থানা আমীর মাহফুজ আলম প্রমুখ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধানমন্ডি জোন টিম সদস্যএডভোকেট জসিম উদ্দিন তালুকদার, কাউন্সিলর প্রার্থী যথাক্রমে আসলাম হাকিম, গোলাম মোস্তফা ও একরামুল হক, কামরাঙ্গীরচর পশ্চিম থানা আমীর মুজিবুর রহমান খান, নিউ মার্কেট থানা আমীর মাওলানা মহিব্বুল হক ফরিদ, ধানমন্ডি থানা আমীর হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, কলাবাগান পূর্ব থানা আমীর জাহিনুর রহমান, কলাবাগান পশ্চিম থানা আমীর মাহবুবুর রহমান, হাজারীবাগ দক্ষিণ থানা আমীর আখতারুল আলম সোহেল সহ ঢাকা-১০ সংসদীয় এলাকার সাংগঠনিক বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।

সভা শেষে, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে ঢাকা-১০ সংসদীয় এলাকায় দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে নেতৃবৃন্দ গণসংযোগ করেন। এসময় বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানের মালিক-কর্মচারী এবং পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

নির্বাচনকে অর্থবহ করতে ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই
– ড. হেলাল উদ্দিন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করতে জামায়াতে ইসলামীর উত্থাপিত ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তিনি বলেন ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করার ৫ দফা দাবি জামায়াতে ইসলামীর একক দাবি নয়। একটি দল ব্যতীত দেশের অন্য সকল রাজনৈতিক দলও ৫ দফা দাবির সপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পুরো জাতি ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন চায়। ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া সম্ভব। জাতি এমন একটি নির্বাচনের জন্য উম্মুখ হয়ে আছে।
রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মতিঝিল পূর্ব থানার উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগ পক্ষের দাওয়াতী অভিযান পূর্বক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, তরুণ প্রজন্ম যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ এর মধ্যে এরা জন্মের পর থেকে একটিবারও ভোট দিতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার পথ তৈরি হয়েছে। সরকার যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করে তবে জনগণ ডাকসু নির্বাচনের মতোই ইসলামের পক্ষে আরেকটি বিপ্লব ঘটাবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, বিচার ও সংস্কার ব্যতীত অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহন মূলক নির্বাচন আশা করা যায় না। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের নির্বাচনের আগেই বিচারের আওতায় না আনলে তারা দুর্নীতি-চাঁদাবাজির কালো টাকার ছড়াছড়ি করে নির্বাচনকে বিতর্কিত করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সোচ্চার হতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা চাঁদাবাজি করছে তারা ধরেই নিয়েছে তারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছে এবং আসেব। কিন্তু জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে চাঁদাবাজদের ভোটের মাধ্যমেই বয়কট করবে। জাতি চায় জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি বৈষম্যহীন সুখি-সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে। জামায়াতে ইসলামী জাতিকে ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
সভা শেষে, ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে মতিঝিলের ইডেন কলেজ চত্বর ও আরামবাগ এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াতী অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় মতিঝিল পূর্ব থানা আমীর নুর উদ্দিন, সেক্রেটারি খলিলুর রহমান, ওয়ার্ড দায়িত্বশীর মুক্তার হোসেন, মোস্তফা খান, ববি উল্লাহ, আব্দুল মালেক, মহি উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। নেতৃবৃন্দ জনসাধারণের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত পত্রের লিফলেট বিতরণ করেন।
এদিকে ঢাকা-১০ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার হাজারীবাগ থানার ১৪ নং ওয়ার্ডের বউ বাজারে এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাজারীবাগ উত্তর থানা আমীর মো. মাহফুজ আলম, থানা সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম সোহেল, এসিস্টেন্ট সেক্রেটারি হাসান আল বান্না, বায়তুল মাল সম্পাদক মোতাহার হোসেনসহ থানা কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।
অপরদিকে ঢাকা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত দাঁড়িপাল্লার প্রার্থী মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন, কদমতলী থানার ৬৫ নং ওয়ার্ড মুজাহিদনগরে গণসংযোগ করেন। এসময় তার সঙ্গে কদমতলী থানা জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। নেতৃবৃন্দ দোকান মালিক ও কর্মচারি এবং পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন।

চাঁদাবাজদের ভোটের মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে – ড. আব্দুল মান্নান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেছেন, চাঁদাবাজদের ভোটের মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে। যারা আওয়ামী লীগের ভূমিকা আবির্ভূত হয়ে সারাদেশে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, দখলদারিত্বে মেতে উঠেছে তারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে দাঁড়িছে। তরুণ প্রজন্ম এদেরকে নব্য ফ্যাসিবাদ হিসেবে বিবেচনা করে বয়কট করবে। তিনি বলেন, যেই দলের নেতারা এখন বলতেছে ক্ষমতায় গিয়ে তারা একবছরে দেড় কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে তারা বিগত সময়ে ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে কী করেছে জাতি দেখেছে। দেশকে যারা দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান করেছে তাদের দ্বারা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা অসম্ভব। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত দলের হাতে দায়িত্ব দিতে হবে। তবেই জনগণের প্রত্যাশিত বৈষম্যহীন, সুখি-সমৃদ্ধ একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হবে। জামায়াতে ইসলামী জাতিকে বৈষম্যহীন, সুখি-সমৃদ্ধ একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গত ৬ অক্টোবর বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সূত্রাপুর থানার উদ্যোগে রাজধানীর ধোলাইখালে ঢাকা-০৬ সংসদীয় আসনের নাগরিক উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি ঢাকা-৬ সংসদীয় এলাকাকে নতুন বাংলাদেশের মডেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, এই আসনের জনগণ যদি সুযোগ দেয় তবে ঢাকা-৬ আসনকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, খুন, ধর্ষণ, লুটপাটকারীদের হাতকে মুক্ত করা হবে। বুড়িগঙ্গকে দখলমুক্ত করার অঙ্গিকার করে তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গা ঢাকার প্রাণ। বুড়িগঙ্গাকে দখলমুক্ত করে ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা হবে।
সূত্রাপুর উত্তর থানা আমীর মো. রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সূত্রাপুর পূর্ব থানা আমীর নোমান শিকদারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ ছিলেন সুত্রাপুর-ওয়ারী জোন পরিচালক ও ঢাকা ০৬ সংসদীয় আসন কমিটির নির্বাচন পরিচালক মো. কামরুল আহসান হাসান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জোন টিম সদস্য মাওলানা নেছার উদ্দিন, সূত্রাপুর দক্ষিণ থানা আমীর দাইয়ান সালেহীন, ওয়ারী পূর্ব থানা আমীর মোতাসিম বিল্লাহ, ৪৪ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদ প্রার্থী শাহাদাত হোসেন আকন্দ, সিঙ্গটোলা জামে মসজিদের সাবেক খতিব মাওলানা আবু হানিফ নেছারী প্রমুখ।
এদিকে ‘‘আধুনিক, নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও মানবিক’’ ঢাকা-০৫ গড়ার লক্ষ্যে ৬৪ ওয়ার্ডের বাড়ীওয়ালা, পেশাজীবী, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে নাগরিক উন্নয়ন ভাবনা শীর্ষক মতবিনিময় সভা করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন। কোনাপাড়া থানা আমীর আকতারুজজামান চয়নের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারী মাওলানা ওমর ফারুকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ ছিলেন মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য এবং ডেমরা জোনের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী। আরো উপস্থিত ছিলেন ৬৪ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ইমাম হোসেন মিরাজ, থানা কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে হারুন রশিদ, ইঞ্জিনিয়ার ইমামুল হক, মাওলানা মীর আল আমিন, খন্দকার সামদানী পলাশ, মাস্টার তারিকুল ইসলাম, ওয়ার্ড সভাপতি মনিরুজ্জামান, ওয়ার্ড সেক্রেটারি মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, মনজিল মাহমুদ, অহিদুজ্জামান, হাফেজ সোহেল, রওশন আলী এবং মনজুরুল ইসলাম, হাফেজ ফয়জুল, হারুনুর রশিদ, ইকবাল হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মোহাম্মদ কামাল হোসেন উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামী লীগের অপশাসনের ১৫ বছর জাতি যেভাবে শোষিত হয়েছে একইভাবে জুলাই বিপ্লব পরবর্তীতে আরেকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা সমাজের প্রতিটি শ্রেণিপেশার লোকজন শোষিত হচ্ছে। তারা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অবৈধ দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। নিজ দলের এক নেতা আরেক নেতাকে পাথর দিয়ে থেঁতলে থেঁতলে হত্যা করছে। গত বছরে দলীয় কোন্দলে প্রায় ২ শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। যারা প্রত্যেকেই তাদের দলীয় নেতা কিংবা কর্মী। যাদের কাছে নিজ দলের নেতাকর্মী নিরাপদ নয়, তাদের কাছে দেশ ও জাতি কখনো নিরাপদ নয়। যারা ক্ষমতায় বসার আগেই দুর্নীতি, লুটপাট করতে করতে নদীর পানি, বালু এবং পাথর পর্যন্ত লুট করে তারা ক্ষমতায় বসতে পারলে দেশের অবস্থা কতটা ভয়াবহ হবে তা কল্পনাও করা যায় না। তাই জনগণকে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণে সচেতন এবং সাহসী হতে হবে। এদেরকে আগামী নির্বাচনের ভোটের মাধ্যমে বর্জন করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আল্লাহভীরু দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে হবে। যারা আল্লাহকে ভয় করে তারা জনগণের সম্পদ লুট করবে না, পাচার করবে না। দেশ ও জাতি তাদের কাছেই নিরাপদে থাকবে। অবহেলিত ঢাকা-৫ আসনের উন্নয়নে জনগণ তাকে সুযোগ দিলে তিনি ঢাকা-৫ সংসদীয় এলাকাকে আধুনিক ঢাকা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অপরদিকে ঢাকা-৪ সংসদীয় এলাকার ৫৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাড়িওয়ালাদের সাথে মতবিনিময় করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন। শ্যামপুর দক্ষিণ থানা আমীর মো. কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায়। শ্যামপুর দক্ষিণ থানার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ও জনশক্তি উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দ জয়নুল আবেদীন স্থানীয়দের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে আর কোনো বাড়িওয়ালাকে বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে চাঁদাবাজদের চাঁদা দিতে হবে না। একজন মানুষের সারাজীবনের কষ্টার্জিত স্বপ্নের বাড়িতে গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ কিংবা পানির সংযোগের জন্য ধারে-ধারে ঘুরতে হবে না। কাউকে এক পয়সাও ঘুষ দিতে হবে না। নাগরিকের প্রয়োজনে গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ কিংবা পানির সংযোগ আবেদনের সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবে। তিনি বলেন, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণের ফলে উন্নয়নের জন্য হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও ঢাকা-৪ সংসদীয় এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। আগামীতে জনগণ তাকে সুযোগ দিলে তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঢাকা-৪ আসনের উন্নয়ন করবেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার ফলে এই এলাকার মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায় গুরত্বরোপ করা হবে। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে ঢাকা-৪ সংসদীয় এলাকাকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত করতে তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি