সমতল মাঠ তৈরিতে তৎপর সংস্কার কমিশন


২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০০:০০

# ভোট বাতিলের ক্ষমতা পেতে পারে ইসি, থাকছে না ইভিএম
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় নির্বাচন ঠিক কবে হচ্ছে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। কবে নির্বাচন হবে, তার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চাচ্ছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো। বিশেষ করে সবাই ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। বিএনপি চায়, যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন দেওয়া হোক আর জামায়াতে ইসলামীও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন চেয়েছে। এ বিষয়ে কোনো তারিখ নির্ধারণ করা না হলেও সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে হতে পারে। আবার এ নিয়ে সরকারের ভেতরেই ভিন্নমত রয়েছে। এদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচন আইন সংস্কার, ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ নানা কার্যক্রম নিয়ে তৎপর রয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচন সংস্কার কমিশনও একটি সুন্দর নির্বাচন দিতে সক্রিয় ভূমিকায় রয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার এগিয়ে নিচ্ছে তারা। যাতে একটি সমতল মাঠ তৈরি হয়।
বিরূপ পরিস্থিতিতে নির্বাচন বন্ধের ক্ষমতা পাচ্ছে ইসি
তফসিল ঘোষণা থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিরূপ পরিবেশ তৈরি হলে পুরো নির্বাচনই বাতিল করতে পারবে ইসি। এমন ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ৯১(এ) উপধারা সংশোধনের সুপারিশ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। এছাড়া প্রার্থীদের হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে বা তথ্য গোপন করলে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা যেকোনো সময়ে বাতিলের ক্ষমতা পাচ্ছে ইসি। এমনকি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও তা বাতিল করতে পারবে কমিশন। এটিসহ আরও কিছু ক্ষমতা ইসিকে দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করতে যাচ্ছে এ কমিশন। ১ জানুয়ারির মধ্যে কমিশনের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়ার কথা। ইতোমধ্যে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে কমিটি। নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আগাছা উপড়ে ইভিএম ছাড়াই নির্বাচন
গত ২৩ ডিসেম্বর সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ খান মিলনায়তনে ‘ভোটার সচেতনতা ও নাগরিক সক্রিয়তা কার্যক্রম’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার নির্বাচনের নানা দিক নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৬ বছরে নানা অনিয়মের কারণে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল। এখন আমরা মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। যেসব আগাছা রয়েছে, সেগুলো উপড়ে ফেলে একটি সুন্দর নির্বাচন ব্যবস্থা প্রণয়নের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার থাকবে না। একই সঙ্গে অতীতে যারা নির্বাচনী অপরাধ করেছেন, তাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। কমিশনপ্রধান আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে নিজেদের প্রতি নিজেদের আস্থা ফিরিয়ে আনা। ৫৩-৫৪ বছরেও আমরা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত করতে পারিনি। এখন কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করে আগাছাগুলো পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনী মাঠকে সমতল করা। এর মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। আর পরবর্তী যে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারাও মনে রাখবে যে কী প্রেক্ষাপটে তারা ক্ষমতায় এসেছে।