সবজিতে স্বস্তি, আলু পেঁয়াজের বাজার অস্থির


১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০০

স্টাফ রিপোর্টার : বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে। একইসঙ্গে দাম কিছুটা কমতির দিকে। কিন্তু অস্থিরতা কাটেনি অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজিখ্যাত আলুর মূল্যে। কৃষক যে আলু বিক্রি করছেন ২৮ টাকা, ভোক্তা তা কিনে খাচ্ছেন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজিদরে। গত ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন লেখার এক সপ্তাহ আগেও আলুর সর্বোচ্চ দাম ছিল ৬০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের মূল্য ৯০ টাকা থেকে ১২০ টাকার মধ্যে সাম্প্রতিক সময় ওঠানামা করলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি। অর্থাৎ সাধারণ ক্রেতাদের জন্য সুখবর নেই। তাদের বাড়তি মূল্যেই সব কিছু কিনতে হচ্ছে।
তিন থেকে চার বছর আগেও ৫০০-৬০০ টাকায় পাওয়া যেত পুরো ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা আলু, এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭০০-২৯০০ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগে ছিল ২২০০-২৩০০ টাকা। এ মৌসুমে হিমাগারে সাধারণ চাষিদের তেমন আলু না থাকায় এতে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে অসাধু সিন্ডিকেট। ফলে হিমাগার থেকে বের করার পর হাত বদলালেই বেড়ে যাচ্ছে আলুর দাম। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে উৎপাদক পর্যায়ে ২৮ টাকার আলু হাতবদলে ভোক্তার ব্যাগে উঠছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজিদরে। ফলে ‘লাভের মধু’ খাচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। অথচ গত বছরের অক্টোবরের এ সময়ে খুচরা বাজারে আলুর দর ছিল ৪০ টাকা কেজি। পাইকাররা দুষছেন হিমাগার সিন্ডিকেটকে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, হাত বদলালেই বাড়ছে দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে সিন্ডিকেট। ফোনে ফোনে দাম বাড়াচ্ছেন মজুদদাররা। এ অবস্থায় বাজার মনিটরিং জোরদার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ভোক্তারা।
এদিকে সরবরাহ কমের অজুহাতে দুই সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে ভালোমানের এক কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা। অন্যদিকে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, অতিবৃষ্টিতে চাষাবাদ বিঘ্নিত হওয়ায় বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ আসতে দেরি হবে। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও আগের তুলনায় বেশি। এসব কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৬ থেকে ২৭ লাখ টন। এ চাহিদার ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশই পূরণ হয় স্থানীয়। বাকি চাহিদা পূরণ করা হয় আমদানিকৃত পেঁয়াজে।
অন্যদিকে শীতকালীন সবজির বাজারে আসায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে দামে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৪০০ টাকার মরিচের দাম নেমে এসেছে ১০০ টাকায়। এছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির দামও কমেছে। সরকার কঠোর পদক্ষেপ এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে মনে করছেন ক্রেতারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অস্বাভাবিক মুনাফা রোধে সরকারকে সার্বক্ষণিক সক্রিয় থাকতে হবে।