সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ


১৩ মার্চ ২০২৫ ১৬:১৯

যুক্তরাষ্ট্র ‘ইসরাইলের দালাল নয়’: মার্কিন দূত
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিযুক্ত জিম্মি বিষয়ক দূত অ্যাডাম বোহেলার হামাস কর্মকর্তাদের সাথে তার সরাসরি আলোচনার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে জোর দিয়ে বলেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষে কাজ করার পরিবর্তে নিজস্ব এজেন্ডা অনুসরণ করছে। ‘আমরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ইসরাইলের দালাল নই,’ আলোচনার বিপক্ষে অবস্থান নেয়া ইসরাইলি কর্মকর্তাদের সমালোচনার জবাবে বোহেলার গত ৯ মার্চ রোববার ইসরাইলের চ্যানেল ১২-কে বলেন। কাতার এবং মিশরের চলমান মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার সমান্তরালে চলমান আলোচনাগুলো মূলত গাজায় আটক আমেরিকান জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। বোহেলার সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জিম্মিদের বাড়িতে দেখার একটি বাস্তব সুযোগ রয়েছে।’
একটি পৃথক সাক্ষাৎকারে বোহেলার প্রকাশ করেছেন যে, হামাস একটি উল্লেখযোগ্য ছাড়ের প্রস্তাব করেছে- পাঁচ থেকে দশ বছরের যুদ্ধবিরতি যার সময়কালে দলটি নিরস্ত্রীকরণ করবে এবং গাজার রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে সরে আসবে। ‘তারা সকল বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছে … এবং পাঁচ বছর থেকে দশ বছরের যুদ্ধবিরতি যেখানে হামাস সব অস্ত্র সমর্পণ করবে,’ তিনি এটিকে ‘কোনো খারাপ প্রস্তাব নয়’ বলে বর্ণনা করেন। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, হামাস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ শর্তাবলিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলি জিম্মিদের চেয়ে আমেরিকান বন্দিদের মুক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে পারে এমন উদ্বেগের বিষয়ে বোহেলার আশ্বাস দিয়েছিলেন, ‘আমাদের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ। আমরা আমেরিকান এবং ইসরাইলি উভয়কেই বের করে আনতে চাই।’ নিউইয়র্ক টাইমস।

ট্রাম্পকে কঠোর বার্তা দিলেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কঠোর বার্তা দিলেন মার্ক কার্নি। ৫৯ বছর বয়সী কার্নি তার বিজয় ভাষণের বেশিরভাগ অংশে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, যিনি কানাডার ওপর শুল্কারোপ করেছেন এবং বলেছেন যে, তিনি দেশটিকে ৫১তম মার্কিন রাজ্যে পরিণত করতে চান; আমি মনে করি ‘আমেরিকানদের কোনো ভুল করা উচিত নয়’। কারণ হকির মতো বাণিজ্যেও কানাডারই জয় হবে। গত ৯ মার্চ রোববার রাতে কানাডার ক্ষমতাসীন দল লিবারেল পার্টি মার্ক কার্নিকে নতুন দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেন লিবারেল পার্টির প্রেসিডেন্ট সচিত মেহরা। মার্ক কার্নি ব্যাংক অব কানাডার গভর্নর ছিলেন। তিনি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
আমেরিকা প্রসঙ্গে কার্নি বলেন, নতুন হুমকি এলে তো নতুন ধরনের ভাবনা এবং পরিকল্পনা দরকার হয়। আমরা আরো নির্ভরযোগ্য দেশের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করব। তিনি বলেন, আমেরিকা তাদের পণ্যে বাড়তি শুল্কারোপ করলে কানাডাও পাল্টা কর চাপাবে। আমেরিকানরা যতদিন না আমাদের সম্মান করছে, ততদিন পারস্পরিক শুল্ক থাকবে। কার্নি বলেন, ট্রাম্প কানাডা দখল করে নিতে চাইছেন। সেই উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া যাবে না। আমেরিকানরা আমাদের পানি, আমাদের জমি, আমাদের যাবতীয় সম্পদ লুটে নিতে চায়। ওরা আমাদের দেশটাকেই চায়। ট্রাম্প কানাডার শ্রমিক, তাদের পরিবার এবং কানাডার বাণিজ্যকে বার বার আক্রমণ করছেন। তাকে সফল হতে দেওয়া যাবে না। বিবিসি।

রাজনীতির প্রতি হতাশ জনতা নেপালে রাজতন্ত্র ফেরাতে চায়
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্র পুনর্বহাল এবং হিন্দুধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ফিরিয়ে আনার দাবিতে হাজার হাজার মানুষ মিছিল করেছে। গত ৯ মার্চ রোববার রাজধানীর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধান ফটক বন্ধ করে প্রায় ১০ হাজার মানুষ সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে সংবর্ধনা জানিয়ে এমন দাবি উত্থাপন করে। এ সময় তারা স্লোগান দিতে থাকে- ‘রাজার জন্য রাজপ্রাসাদ খালি করুন।’ ‘রাজা ফিরে আসুন, দেশকে রক্ষা করুন।’ ‘আমাদের প্রিয় রাজা দীর্ঘজীবী হোন।’ ‘আমরা রাজতন্ত্র চাই।’ দেশটির পশ্চিমাঞ্চল সফর শেষে রাজধানীতে ফেরেন জ্ঞানেন্দ্র শাহ। এ সময় তাকে সংবর্ধনা জানিয়ে ওই মিছল করা হয়। বিমানবন্দরের প্রবেশ পথ বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বিমানবন্দরে হেঁটে আসা-যাওয়া করতে বাধ্য হয়। অবশ্য স্থানীয় দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিমানবন্দরে প্রবেশে বাধা দেয়। তবে সেখানে কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটেনি।
২০০৬ সালে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে জ্ঞানেন্দ্রকে তার কর্তৃত্ববাদী শাসন ত্যাগ করতে হয়। দুই বছর পর দেশটির সংসদ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করার পক্ষে ভোট দেয়। জ্ঞানেন্দ্র তখন রাজপ্রাসাদ ছেড়ে সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন শুরু করেন। তবে অনেক নেপালি প্রজাতন্ত্রের প্রতি হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা বলছেন, এটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে ব্যর্থ। তারা ভঙ্গুর অর্থনীতি ও ব্যাপক দুর্নীতির জন্য প্রজাতন্ত্রকেই দায়ী করছেন। ২০০৮ সালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে নেপালে ১৩টি সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এপি।

ইসরাইলি পরমাণু স্থাপনাগুলোকে আইএইএ’র নজরদারির আওতায় আনতে হবে : কাতার
ইসরাইলের সকল পরমাণু স্থাপনাকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নজরদারির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৯ মার্চ রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, ইসরাইলি পরমাণু স্থাপনাগুলোকে আইএইএ’র আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। গত শনিবার (৮ মার্চ) ভিয়েনায় আইএইএ’র এক বৈঠকে ওই সংস্থায় নিযুক্ত কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি জাসিম ইয়াকুব আল-হাম্মাদি এ আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তেলআবিবকে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ করার চুক্তি (এনপিটি) স্বাক্ষরে বাধ্য করারও দাবি তোলেন। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, হাম্মাদি ভিয়েনা বৈঠকে বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের একাধিক প্রস্তাব এবং এনপিটি চুক্তির ভিত্তিতে ইসরাইলকে তার সকল পরমাণু তৎপরতা আইএইএ’র সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে। কাতারের রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল ছাড়া আর সকল দেশ এনপিটি চুক্তিতে সই করেছে এবং প্রতিটি দেশ আইএইএ’র আইনের আওতায় রয়েছে।
ইসরাইলের কাছে ২০০ থেকে ৪০০টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে একমাত্র ইসরাইলের কাছে এ গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে। তবে তেল আবিব কখনো তার কাছে এ মারণাস্ত্র থাকার কথা স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। এছাড়া ইসরাইল তার পরমাণু স্থাপনাগুলোকে আইএইএ’র নজরদারির আওতায় আনতে বা এনপিটি চুক্তিতে সই করতেও নারাজ। আমেরিকা নামক বিশ্ব মোড়লের পৃষ্ঠপোষকতায় আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি এরকম বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করার সাহস করে আসছে তেলআবিব। তবে বিষয়টি নিয়ে ইরান ছাড়া এর আগে আর তেমন কোনো দেশকে সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। এবার অনেকটা অভূতপূর্বভাবে কাতার ইসরাইলকে আইএইএ’র পরিদর্শনের আওতায় আনার আহ্বান জানাল। পার্সটুডে।

জমজমের পানি ব্যবহারে কঠোর নির্দেশনা
রমজান মাসে মুসল্লি ও ওমরাহ পালনকারীদের বিশাল ভিড় সামলাতে সৌদি সরকার জমজমের পানির ব্যবহার নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে। গ্র্যান্ড মসজিদ ও মসজিদে নববীর দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ কর্তৃপক্ষ (প্রেসিডেন্সি) মুসল্লিদের জমজমের পানি ব্যবহারে শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এ লক্ষ্যে গ্র্যান্ড মসজিদজুড়ে ২০ হাজার জমজমের পানির পাত্র স্থাপন করা হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জমজমের পানি যেন সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়, সেজন্য মুসল্লিদের কয়েকটি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। ব্যবহৃত প্লাস্টিকের কাপ নির্ধারিত বর্জ্যের বিনে ফেলতে হবে এবং পানির পাত্র খোলার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মূলত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং ইবাদতের পরিবেশ নির্বিঘ্ন করতেই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জমজম পানির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে গ্র্যান্ড মসজিদের বিভিন্ন স্থানে সুসজ্জিত ওজুখানা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কিং ফাহাদ সম্প্রসারণ এলাকা, মাসআ এলাকা (আল-মারওয়ার কাছে) এবং মসজিদের পূর্ব ও পশ্চিম আঙ্গিনা। এছাড়া মক্কা কোম্পানি ও দার আত-তাওহিদের মধ্যবর্তী স্থানে এবং উত্তর আঙিনায় অতিরিক্ত ওজুখানা স্থাপন করা হয়েছে, যাতে মুসল্লিরা সহজেই ওজু করতে পারেন। প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ মুসল্লিদের আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে যে, জমজমের পানি শুধুমাত্র পান করার জন্য সংরক্ষিত, ওজুর জন্য নয়। মুসল্লিদের নির্ধারিত ওজুখানাগুলো ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে জমজমের পানির অপচয় না হয় এবং পবিত্রতা বজায় থাকে। সৌদি সরকারের এ উদ্যোগ রমজান মাসে ইবাদতকারীদের জন্য জমজমের পানি সহজলভ্য করার পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করবে। মুসল্লিদেরও উচিত এ নির্দেশনাগুলো মেনে চলা, যাতে পবিত্র মসজিদের পরিবেশ সবার জন্য আরও শান্তিপূর্ণ হয়। গালফ নিউজ।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান