সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ


২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০০:০০

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্যের সাথে আলোচনায় বসবে ইরান
ইরান গত রোববার (২৪ নভেম্বর) জানিয়েছে যে, তারা আগামী দিনগুলোয় ওই তিনটি ইউরোপীয় দেশের সাথে পারমাণবিক আলোচনা করবে যারা জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা দ্বারা গৃহীত একটি নিন্দা প্রস্তাবের সূচনা করেছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমায়েল বাঘাই কোনো স্থান নির্দিষ্ট না করেই বলেন, শুক্রবার ইরান, ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে মুখপাত্র বলেন, ‘ফিলিস্তিন ও লেবাননের পাশাপাশি পারমাণবিক বিষয়সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।’ বাঘাই আসন্ন বৈঠকটিকে সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের সময় পার্শ্ব বৈঠকে দেশগুলোর সাথে অনুষ্ঠিত আলোচনার ধারাবাহিকতা হিসেবে উল্লেখ করেন।
গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) জাতিসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার ৩৫টি দেশের গভর্নর বোর্ড ইরানের বিরুদ্ধে সহযোগিতার অভাবের অভিযোগ এনে একটি নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করে। এই পদক্ষেপটি এসেছে যখন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সমালোচকদের আশঙ্কা কর্মসূচিটির লক্ষ্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি। কিন্তু তেহরান তা বার বার অস্বীকার করেছে। পদক্ষেপটি আবার আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি তেহরান সফর থেকে ফিরে আসার পর নেয়া হয়েছে। সেখানে তিনি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সফরের সময় ইরান অস্ত্র উৎপাদনের জন্য নির্ধারিত মানের ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধতা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের সংবেদনশীল মজুদ সীমাবদ্ধ করার জন্য আইএইএ-এর দাবিতে সম্মত হয়।
প্রস্তাবের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইরান ঘোষণা করে তারা এক রাশ ‘নতুন এবং উন্নত সেন্ট্রিফিউজ’ চালু করছে। সেন্ট্রিফিউজগুলো গ্যাসে রূপান্তরিত ইউরেনিয়ামকে অত্যন্ত উচ্চগতিতে ঘুরিয়ে তার মধ্যে ফিসাইল আইসোটোপ (ইউ-২৩৫)-এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি রাষ্ট্রীয় মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন ধরনের উন্নত মেশিন ব্যবহার করে সমৃদ্ধকরণের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করব।’ তবে দেশটি এটাও বলেছে, তারা আইএইএ-এর সাথে তাদের ‘প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা’ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। ভিওএ।

আরো ৯ দেশকে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার দিচ্ছে চীন
কোভিড-পরবর্তী মন্থর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চীন। এর অংশ হিসেবে পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভ্রমণ বাড়াতে আরো ৯টি দেশের নাগরিকদের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান। নতুন করে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়া দেশগুলো হলো- বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, মাল্টা, ক্রোয়েশিয়া, মন্টেনিগ্রো, নর্থ মেসিডোনিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও জাপান। ভিসা ছাড়াই ৩০ দিনের জন্য চীনে প্রবেশ ও অবস্থান করতে পারবেন এসব দেশের নাগরিকরা। এ নিয়ে গত বছর থেকে চীনে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়া দেশের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৩৮টিতে। এর আগে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়া দেশের নাগকিররা ১৫ দিনের জন্য চীনে অবস্থান করার সুযোগ পেতেন। তবে নতুন ঘোষণায় তা বাড়িয়ে ৩০ দিন করা হয়েছে বলে জানান লিন জিয়ান।
কোভিড-১৯ মহামারির আগে মাত্র তিনটি দেশের চীনে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার ছিল। মহামারি শুরু হলে তাদের প্রবেশাধিকারও বন্ধ করে দেশটি। অন্যান্য দেশের অনেক পরে লকডাউন তুলে নিয়ে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ব্রুনাই ও সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের জন্য আবারো ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার দেয় চীন। পরে ১ ডিসেম্বর ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও মালয়েশিয়াকে এ সুবিধা দেয় তারা। এরপর থেকে ধাপে ধাপে আরো দেশের জন্য নিজেদের সীমান্তের দ্বার উন্মোচন করে চলেছে দেশটি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিনহুয়া জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ৮২ লাখ বিদেশি নাগরিক চীনে প্রবেশ করেছেন, যার মধ্যে ৪৯ লাখই ভিসামুক্ত প্রবেশের সুযোগ গ্রহণ করেছেন। এএফপি।

ইসরাইলে হিজবুল্লাহর ৩৪০টি মিসাইল হামলা
ইসরাইলে একযোগে ৩৪০টি মিসাইল হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এছাড়া ড্রোন দিয়েও হামলা চালিয়েছে তারা। গত ২৪ নভেম্বর রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই রোববার ভয়াবহ এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ইসরাইলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ ইসরাইলের একটি নৌঘাঁটিতেও প্রথমবারের মতো হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। এসব হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১১ জন। হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ‘প্রথমবারের মতো’ দক্ষিণ ইসরাইলের আশদোদ নৌঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্ট্রাইক ড্রোন ব্যবহার করে তেলআবিবের একটি ‘সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেও’ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
এদিকে হিজবুল্লাহর হামলার মধ্যে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী তেলআবিবের শহরতলীসহ মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর খবর দিয়েছে। টাইমস অব ইসরাইলের খবর অনুযায়ী, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছেÑ তারা উত্তর ইসরাইলকে লক্ষ করে ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দিয়েছে। লেবানন থেকে ২৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। পরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর রেডিও জানায়, লেবানন থেকে ‘৩৪০টি মিসাইল’ নিক্ষেপ করা হয়েছে। এই হামলায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে একজন ‘মাঝারি থেকে গুরুতর’ অবস্থায় রয়েছেন বলে চিকিৎসা সংস্থাগুলো জানিয়েছে। টাইমস অব ইসরাইল।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : আবদুল কাইউম খান