রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ৩য় সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ২২ চৈত্র ১৪৩০ ॥ ২৫ রমজান ১৪৪৫ হিজরী ॥ ৫ এপ্রিল ২০২৪

॥ নূরুন্নাহার নীরু॥
পবিত্র মাহে রমযানের একমাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়ালের প্রথম দিনই মুসলমানদের জন্য এক আনন্দ-উৎসবের দিন, ইতিহাসে যা ঈদুল ফিতর নামে অভিহিত। যার অর্থ রোজা খোলার আনন্দ।  কিন্তু আল্লাহ-রাসূলের অনুমোদিত বিশ্ব মুসলিমের জন্য এ দিবসটি শুধুই কী আনন্দ-ফুর্তির দিন কিংবা নিসক ভোগবিলাসের জন্যই নির্ধারিত? নাহ! কখনো নয়। সাম্যের ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম ইসলাম দাবি করে ভিন্ন কিছু। আর সেটিরই বাস্তব রূপ ঈদুল ফিতরে নিহিত এবং ঈদুল ফিতরের সে আনন্দ উপভোগ করার মাধ্যম যা, তাই হচ্ছে সাদকাতুল ফিতর।
কাজী নজরুল ইসলাম সে কথাটিই তার কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন এভাবে: “কারো আঁখি জলে কারো ঘরে ফিরে জ্বলিবে প্রদীপ/দুজনার হবে বুলন্দ নসীব।/এ নহে বিধান ইসলামের।/ঈদুল ফেতর আনিয়াছে তাই নববিধান,/ওগো সঞ্চয়ী উদ্বৃত্ত যা করবে দান,/ক্ষুধার অন্ন হক তোমার।/ভোগের পেয়ালা উপচায়ে পড়ে তব হাতে,/তৃষ্ণাতুরের হিসসা আছে এ পেয়ালাতে,/দিয়া ভোগ কর, কর বীর দেদার।”
সুবহানাল্লাহ! এত সুন্দর আহ্বান যে ধর্মে সে বিধান পরিপূর্ণ করতেই প্রয়োজন সাদকাতুল ফিতর একটা যুগান্তকারী ব্যবস্থা।
তাহলে আমাদের অবশ্যই জানতে হচ্ছে: সাদকাতুল ফিতর কী? কেন? কীভাবে? কার জন্য? কে দেবেন? কাকে দেবেন? ইত্যাদিসহ এর শিক্ষা ও তাৎপর্য।
১. ফিতরা কী : ফিতর একটি আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে রোজা ভাঙা। হাদীসে একে ‘যাকাতুল ফিতর’ বা ‘সাদাকাতুল ফিতর’ এ দুই নামেই অভিহিত করা হয়েছে। হিজরী দ্বিতীয় সালে রমযানের রোজা ফরজ হওয়ার সাথে সাথে সাদকাতুল ফিতরকেও আবশ্যক করা হয়েছে। মহান আল্লাহ কুরআনুল কারীমের সূরা তাওবার ১০৩-১০৪নং আয়াতে বলেছেন, “হে নবী! তাদের ধন-সম্পদ থেকে সাদাকা নিয়ে তাদেরকে পাক-পবিত্র করো, নেকির পথে তাদেরকে এগিয়ে দাও এবং তাদের জন্য রহমতের দোয়া কর।” আরো বলেছেন, “তারা কি জানে না, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের থেকে তাওবা কবুল করেন এবং সাদাকা গ্রহণ করেন? নিশ্চয়ই  আল্লাহ তাওবা কবুলকারী পরম দয়াময়।”
২. ফিতরা কেন : ইসলামে সাদকাতুল ফিতরার গুরুত্ব অপরিসীম। এর প্রধান কারণ দুটি। যথা :
ক. পবিত্রকরণ ও
খ. পারস্পরিক অংশগ্রহণ।
পবিত্রকরণ এজন্য যে, এক মাসকালীন সিয়াম-সাধনাকারীর যাবতীয় ছোটখাটো, ভুলত্রুটি থেকে পবিত্র হওয়ার উপায় এ ফিতরা প্রদান। আর দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছেÑ শাওয়ালের এক তারিখে ঈদ উৎসবের আনন্দে ধনী-গরিব, ছোট-বড় সকলের অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা।
হাদীসে আছে রাসূল সা. বলেছেন, “আজ তাদের ধনী করে দাও অর্থাৎ ঈদের দিন গরিব-মিসকিন ও অসহায় মানুষকে ধনীদের মতো আনন্দ দান করার উদ্দেশ্যে সচ্ছল করে দাও।” হাদীস থেকে আরো জানা যায়, নবী করিম সা. শহরের অলিগলিতে লোক পাঠিয়ে এ ঘোষণা করে দেন যে সাবধান! সদকায়ে ফিতরা প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষ, আযাদ-গোলাম, ছোট-বড় সকলের ওপর ওয়াজিব। (তিরমিযী)।
৩. ফিতরা প্রদান কাদের ওপর ওয়াজিব : হাদীসের আলোকে জানা গেছে, সাধারণত যার নিকট যাকাত ফরজ হওয়ার পরিমাণ অর্থ সম্পদ থাকে তার ওপর সাদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। এক্ষেত্রে পূর্ণ বছর নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়ার দরকার নেই। বরং যার কাছে ঈদুল ফিতরের দিন সকাল হবার পূর্ব পর্যন্ত এক রাত এক দিনের খাবার মজুদ আছে তার ওপরই ফিতরা ওয়াজিব। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, ফিতরা শুধু নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন এমন বিত্তবানের ওপরই ওয়াজিব নয়, বরং রাসূল সা. প্রত্যেক মুসলিমের ওপর তা ওয়াজিব করেছেন চাই সে স্বাধীন কি দাস,  পুরুষ বা নারী, নয়তো বালেগ কি নাবালেগ! যার ফলে হাদীস থেকে জানা যায়, ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের পূর্বে যে শিশুটি জন্ম নেবে তার পক্ষ থেকেও ফিতরা প্রদান করা ওয়াজিব।
৪. সাদকাতুল ফিতরের জন্য কী দান করতে হবে? হাদীসের আলোকে জানা যায়, এর জন্য উত্তম দান হচ্ছে খাদ্যদ্রব্য। যার ফলে মালিকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী মাযহাবের ইমামগণের মতে যেহেতু রাসূলের যুগে খাদ্যদ্রব্য দিয়েই ফিতরা দেয়া হয়েছে, সেহেতু টাকাপয়সা দিয়ে তা প্রদান করা জায়েজ হবে না কিন্তু হানাফী আলেমগণ বলছেন অন্যরকম। কিয়াসের আলোকে তাঁরা বলেন টাকা-পয়সা দিয়েও ফিতরা প্রদান জায়েজ। যেহেতু ইসলামে কঠিন বলে কিছু নেই, উপরন্তু এটি যুগোপযোগী বিধান সেহেতু মানুষের প্রয়োজন বিবেচনা করে টাকাপয়সা দ্বারাই ফিতরা প্রদান শ্রেয়।
মূলত আমরা মনে রাখবো একজন ঈমানদার ব্যক্তির বিবেকের কাছে যেখানে যেটি যৌক্তিক বলে মনে হবে সেটিই সে আমল করতে পারবেÑ এ ক্ষেত্রে বিতর্ক এড়ানোই হবে উত্তম।
৫. সাদকাতুল ফিতরার পরিমাণ কী হবে? আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সা. লোকদের ওপর সাদকাতুল ফিতর ফরজ করেছেন, যার পরিমাণ এক সা’ খেজুর, এক সা’ যব (সহীয় মুসলিম)। আরো  জানা যায়, আবু সাইদ খুদরী রা. বলেন, আমরা সাদকাতুল ফিতরা হিসেবে  ‘এক সা’ খাদ্য দ্রব্য যেমন, এক সা’ যব/এক সা’ খেজুর/এক সা’ পনীর/এক সা’ কিশমিশ দিতাম। (বুখারী ও মুসলিম)। এখানে জানতে হবে  সা’ কী? হ্যাঁ, এ প্রসঙ্গে হাদীসের বয়ান থেকে জানা গেছে, এটি হচ্ছে মদীনায় প্রচলিত খাদ্যশস্য পরিমাপের ‘একক’ বা পাত্র। কোনো কোনো আলেমগণ এ পরিমাপটি বোঝাতে দু’হাতকে মোনাজাতের ভঙ্গিতে একত্রিত করে দেখিয়েছেন, যা একটি পাত্রের আকার ধারণ করে এবং তার মতো করে তিনবার খাদ্যদ্রব্য তুলে রাখাই এক সা’। তৎকালীন মদিনায় প্রচলিত আকারের এক সা’ সমপরিমাণ বর্তমানকালের মেট্রিক পদ্ধতির ওজনে কয়েকটি খাদ্য শস্যের আনুমানিক পরিমাণ নিম্নরূপ : গম= ২১৭৬ গ্রাম, চাল=২৫২০ গ্রাম, খেজুর = ২৪৮০ গ্রাম। মূলত যখন যে সময়ে যে দেশের প্রধান খাদ্য, যা হবে এবং যে ব্যক্তি যে ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন এমন কি তার মূল্য যেমন হবে তার ভিত্তিতেই সাদকাতুল ফিতর প্রদান করতে হবে নতুবা জায়েজ হবে না। এটিই হাদীসের দাবি।
আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়ে ঘোষণা দেয়া হয় আমাদের সেটিই অনুসরণ করতে হবে। যেমনÑ এ বছরেও ইসলামিক ফাউন্ডেশন হতে প্রকাশিত ২০২৪ সালের বাজার দর অনুপাতে গম, যব, কিশমিশ, খেজুর, পনির এর মূল্যমান যথাক্রমে ১১৫/-, ৪০০/-, ২১৪৫/-, ২৪৭৫/-, ২৯৭০/-। এখন যে ব্যক্তি যেমন খাদ্যে অভ্যস্ত তিনি সেই হারে ফিতরা প্রদান করবেন।
৬. ফিতরা কাদের দিতে হবে? : প্রথমেই জানতে হবে আমাদেরকে সাদকাতুল ফিতর হচ্ছে শুধুমাত্র মুসলিম ফকির, মিসকিন, অভাবীদের হক। কেননা ঈদুল ফিতরের দিনে সমগ্র মুসলিম জাতি আল্লাহর মেহমান হয়ে যায়। হাদীসের আবেদন হচ্ছে এ মেহমানদের উপযুক্ত মর্যাদার সাথে খাদ্য-পানীয়, হাসি-আনন্দে শামিল করানোর দায়িত্ব অপর মুসলিমের। যেহেতু ‘মুসলিম মাত্রই ভাই ভাই।’ হাদীসে রয়েছে সাদকাতুল ফিতর মিসকিনদের খাবার প্রদানের নিমিত্তে ফরজ করেছেন।” (সুনানে আবু দাউদ: ১৬১১)। এ হাদীস দ্বারা জানা যায় অপেক্ষাকৃত বেশি গরিব বা মিসকিনকে দিতে হবে এ সাদাকা। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, গৃহের কাজে আমাদের হেল্পিং হেন্ডরা যদি বেতনর্ভুক্ত হয় তবে ফিতরা দিয়ে সে পারিশ্রমিক দেয়া যাবে না  যেমনি, তেমনি তার চেয়েও  যদি কোনো অভাবীকে পাওয়া যায় তবে তাকেই ফিতরা প্রদান করা হবে উত্তম। এ প্রসঙ্গে আরো জেনে রাখা যায় যে একব্যক্তির ফিতরা যেমন একজনকে দেয়া যায়, তেমনি আবার একাধিক জনকেও দেয়া যায় তদ্রƒপ অনেকের ফিতরা ও শুধুমাত্র যেমন একজনকে দেয়া যাবে তেমনি অনেকের মধ্যেও একজনেরটা ভাগ করে দেয়া যায়।
৭. সাদকাতুল ফিতর স্থানান্তরযোগ্য কি না: আলেমগণের মতে, সাদকাতুল ফিতর নিজ দেশে বিতরণ করাই উত্তম তবে চাহিদা না থাকলে ভিন্ন দেশে বা ভিন্ন এলাকায়ও তা বিতরণ করা যাবে। তবে শর্ত হচ্ছে অবশ্যই তা ঈদুল ফিতরের নামাযের পূর্বেই  আদায় করতে হবেÑ যাতে করে প্রাপকরা ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারে।
৮. ফিতরা প্রদানের সময় : হাদীসের আলোকে জানা যায় ফিতরা প্রদানের সময়কাল দুটি যথা: উত্তম সময় ও বৈধ সময়। উত্তম সময় হচ্ছে শেষ রোজার সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদ সালাতের পূর্ব পর্যন্ত এবং বৈধ সময় হচ্ছে ঈদের দু-একদিন আগেই ফিতরা প্রদান করা। হযরত ইবনে ওমর রা. বলেছেন, নবী করিম সা. লোকদের ঈদের সালাত আদায় করার আগেই ফিতরা দেয়া নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারী মুসলিম)। অপর এক হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি তা ঈদের সালাতের আগে আদায় করবে, তার আদায়টি সাদকাতুল ফিতর হিসেবে গৃহীত হবে কিন্তু যদি সালাতের পরে আদায় হয় তবে তা নিছক দান হিসেবে ধর্তব্য হবে। (সুনানে আবু দাউদ)
৯. ফিতরা আদায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিটি কে?: মূলত পরিবারের প্রধানই সবার পক্ষ থেকে এ দায়িত্বটি পালন করবেন। এক্ষেত্রে যাদের পক্ষ থেকে আদায় করতে হবে, তারা সিয়াম পালনকারী হতে হবে এমন শর্ত নেই। বরং তাদেরে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে বলে হাদীসের দাবি। এজন্যই যে শিশুটি সুবহে সাদিকের পূর্বে জন্ম নেবে তারও ফিতরা আদায় করতে হবে এবং এর দায়িত্বশীল হলেন পরিবার প্রধান।
১০. যাকাত ও ফিতরার মধ্যে পার্থক্য : ১. যাকাতের কথা সরাসরি আল কুরআনে উল্লেখিত, কিন্তু ফিতরার কথা হাদীসের মাধ্যমেই বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে। ২. যাকাতের জন্য সম্পদ এক বছর মজুদ থাকতে হবে, কিন্তু ফিতরা প্রদান করতে হবে একদিন এক রাতের খাদ্য আছে যার সংগ্রহে তাকেই। ৩. যাকাত হয়ে থাকে ব্যক্তির সম্পদের ওপর চাই সেটা সোনা-রুপা, নগদ টাকা, ব্যবসায়ের পণ্য ইত্যাদি কিন্তু ফিতরা মূলত খাদ্যদ্রব্যের ওপর প্রদান করা আবশ্যকীয়। ৪. যাকাত প্রদান করা ব্যক্তি বিশেষের জন্য ফরজ হুকুম আর ফেতরা প্রদান হচ্ছে ওয়াজিব।
প্রকৃতপক্ষে সাদকাতুল ফিতরের উপরিউক্ত বিধানমালা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, সমাজে ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ মুছে দিয়ে সাম্য ও প্রীতির একটি সেতুবন্ধন গড়ে তোলার জন্যই সাদকাতুল ফিতরের ব্যবস্থা এবং তা ঈদুল ফিতরের দিনেই এমনকি সালাতের পূর্বেই।
সুতরাং ইসলামের এ মহানব্যবস্থাপনা থেকে আমরা বেশকিছু শিক্ষা নিতে পারি যেমনঃ
 ১. সিয়ামপালনকারীকে সিয়াম পালনকালীন সংঘটিত বিভিন্ন দোষত্রুটি থেকে পবিত্রকরণ।  এ সম্পর্কে ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. ঈদুল ফিতরের যাকাত নির্ধারণ করেছেন; ক. রোজাদারের বেহুদা অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করন এবং খ. মিসকিনদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা স্বরূপ।
 ২. সমাজে বসবাসকারী বিত্তহীন, দুঃখী, অসহায় মানুষকে খাদ্যের ব্যবস্থা করে দিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়া। রাসূল সা. বলেছেন, “আজ তাদেরে ধনী করে দাও।”  উদ্দেশ্য হলো তারাও যেন ধনীদের মতো সচ্ছলতা উপভোগ করতে পারে।  
৩. সাদকাতুল ফিতরার একটি বিশেষ শিক্ষা হলো মুসলমানদের দানের হাত গড়ে তোলা। তাই তো সকল শ্রেণির সকল মুসলিমই সেদিন অপেক্ষাকৃত গরিবকে সাদাকা দানে উদ্বুদ্ধ হবে যাতে তার দানের হাত উঁচু হয়। হাদীসে আছে, আল্লাহ তোমাদের ধনীকে সাদকায়ে ফিতরের মাধ্যমে পবিত্র করেন আর দরিদ্রকে তার দানকৃত পরিমাণের চেয়ে বেশি ফিরিয়ে দিবেন।    
৪. এ ফিতরা প্রদানের মাধ্যমে মুসলিমদের অমুখাপেক্ষী হওয়া শেখানো হচ্ছে। ফলে বলা হয়েছে, যার ঘরে এক দিন এক রাতের খাবার মজুদ আছে, সে যেন পরমুখাপেক্ষী না হয়ে বরং অন্যের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। রাসূল সা. বলেছেন; যে ব্যক্তি অমুখাপেক্ষী হওয়া সত্ত্বেও ভিক্ষা করে সে জাহান্নামের দিকে বেশি অগ্রসর হলো। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেন হে রাসূল সা. অমুখাপেক্ষী হবার মাপকাঠি কি? তিনি বলেন, ‘এক দিন এক রাতের খাবার মজুদ থাকা।’
৫. ভেদাভেদভুলে মানুষকে সম্মান প্রদানের স্পৃহা গড়ে তোলাও সাদকাতুল ফিতরের শিক্ষা। যেমনÑ ফিতরা প্রদানে যে ব্যক্তি যে মানের খাবার খাবে অভাবীজনকেও তাই দিতে হবে, বরং তার চেয়েও উন্নত মানের দিলে সাওয়াবের পাল্লা ভারী হবে কিন্তু কম মানের করা যাবে না এতে বরং গুনাহই বাড়বে।
৬. সাদকাতুল ফিতরের ব্যবস্থাটি সমাজের সকল শ্রেণির লোকদের ওপর ওয়াজিব করে সাম্যের এক সেতুবন্ধন করা হয়েছে যেখানে আজাদ-গোলাম, নারী-পুরুষ, বালেগ-নাবালেগ, ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য ভুলে গিয়ে  সকলের মধ্যে একটি দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত হতে পারে।
সুবহানাল্লাহ! একটা উৎসবের মধ্য দিয়ে ইসলাম জগদ্বাসীকে যে সাম্যমৈত্রীর বন্ধন শেখাচ্ছে, তা সহজেই একটি সমাজের শৃঙ্খলা-মানবতা-ভ্রাতৃত্ববোধকে উজ্জীবিত করে তুলতে পারে অনায়াসেই। সুতরাং সাদকাতুল ফিতরের এ শিক্ষা গ্রহণ করে আসুন আজ আমরাও এগিয়ে যাই ঈদ আনন্দ উপভোগে আর  ফুটিয়ে তুলি ইসলামের মহিমাময় রূপকে। আমিন।



অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।