রেজি : ডিএ ৫১৭ ॥ ৬৩ বর্ষ : ১ম সংখ্যা ॥ ঢাকা, শুক্রবার, ৮ চৈত্র ১৪৩০ ॥ ১১ রমজান ১৪৪৫ হিজরী ॥ ২২ মাচ ২০২৪

সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে পণ্যের বাজার

বেঁধে দেওয়া মূল্যে পণ্য মিলছে না

স্টাফ রিপোর্টার : নিত্যপণ্যের মূল্যের লাগাম টানতে পারছে না সরকার। কারণ ব্যবসায়ীরা সরকারের কোনো কথা শুনছে না, কোনো নির্দেশনা মানছে না। যে যার মতো করে মূল্য নির্ধারণ করে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কৃষক এক কেজি বেগুন বিক্রি করছেন মাত্র ১০ টাকা কেজিদরে আর ঢাকায় ভোক্তারা সেই বেগুন কিনছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে এ সবজি আসতে পাঁচ থেকে ছয়গুণ মূল্যবৃদ্ধির কারণও সরকারের জানা রয়েছে। পথে পথে চাঁদাবাজি ও অতিরিক্ত পরিবহন খরচের কারণে মূল্যবৃদ্ধিও হচ্ছে, কিন্তু সরকার এ চাঁবাবাজদের ধরছে না, কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞরা বলছেন, সরকারি লোক ছাড়া চাঁদাবাজি করা কখনোই সম্ভব নয়, আর সরকারদলীয় এ চাঁদাবাজদের ধরছে না বলেও পণ্যমূল্য আকাশছোঁয়া।
গত ১৪ মার্চ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। ওই সংবাদ সম্মেলনে পণ্যমূল্য না কমার জন্য তিনি সাপ্লাই চেইনকে সমস্যা বলে চিহ্নিত করেন। কিন্তু এ সাপ্লাই চেইন কারা নিয়ন্ত্রণ করে এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে কিনা, সে সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী কোনো ধারণা দেননি, কিছুই বলেননি। তিনি নিজে প্রশ্ন করেন ১০ টাকার বেগুন ঢাকা আসতে কীভাবে ৫০ টাকা হয়ে যায়। তিনি তো প্রশ্ন করার কথা নয়, এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা তার। তিনি তা করছেন না, দায়িত্ব নেওয়ার পর এক মাসের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার ঘোষণা দেন তিনি, কিন্তু এতে তিনি শতভাগ ব্যর্থ হয়েছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গত ১৫ মার্চ ২৯টি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। রমযান মাস উপলক্ষে মাছ-গোশতসহ ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও বাজারে ওই নির্দেশনার কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি।
বেঁধে দেওয়া দাম অনুসারে প্রতি কেজি গরুর গোশত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৬৪ টাকার মধ্যে হওয়ার কথা। কিন্তু রাজধানীর সব বাজারে ৭৫০ টাকায়ই কিনতে হচ্ছে গরুর গোশত। ক্ষেত্র ভেদে এই গরুর গোশত কসাইরা ১০০০ টাকা পর্যন্ত হাকছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২২০ এবং সোনালি মুরগি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেঁধে দেওয়া দাম ব্রয়লারের ১৭৫ ও সোনালি মুরগির ২৬২ টাকা হলেও তা কার্যকর নেই বাজারে। মাছের মধ্যে চাষের পাঙাশের খুচরা দাম ১৮১ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪ (ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করেছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিম্নোক্ত দামে কৃষিপণ্য বেচাকেনার অনুরোধ করা হলো। বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী, পাইকারি বাজারে ছোলার দাম সর্বোচ্চ সাড়ে ৯৩ এবং খুচরা পর্যায়ে ৯৮ টাকা কেজিদরে বিক্রি করা যাবে। মসুর ডাল খুচরা পর্যায়ে ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা এবং মোটা দানার মসুর বিক্রি হবে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সায়। খেসারি ডালের খুচরায় সর্বোচ্চ দাম হবে ৯৩ টাকা। এছাড়া মাষকলাই ১৬৬ টাকা ৫০ পয়সা এবং মুগডাল খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ১৬৫ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা, যা এখন বাজারে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুন ১২০ টাকা ও আদা ১৮০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও কিনতে হচ্ছে যথাক্রমে ৪০ টাকা ও ২০ টাকা বেশিতে। সবজির মধ্যে বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৩০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন ও শিম ৫০ টাকা ও আলু সাড়ে ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি টমেটো ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৪ টাকা খুচরা মূল্য বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি। তবে ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ এবং বেগুন ও শিম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি জাহেদি খেজুর (বাংলা খেজুর) ১৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও এ নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল। সে সময় খুচরা বাজারে অতি সাধারণ ও নিম্নমানের খেজুরের কেজিপ্রতি দাম হবে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা এবং বহুল ব্যবহৃত জাহেদি খেজুরের প্রতি কেজির দাম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে থাকতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দেয় সংস্থাটি। তবে বাজারে এখনো ২৫০ টাকার নিচে কোনো সাধারণ খেজুর মিলছে না। জাহেদি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিদরে। এছাড়া সাগর কলার হালি খুচরায় ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া চিড়ার খুচরা দাম ৬০ টাকা, বেসন ১২১ টাকা বেঁধে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। কিন্তু এ মূল্যে দেশের কোথায়ও পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে এক কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। দাম শুনে কেউ কেউ না কিনে চলে যাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ তর্কে জড়াচ্ছেন, কিন্তু বিষয়টি দেখার কেউ নেই।



অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।