সংবাদ শিরোনামঃ

তুরস্কে জনতার বিজয় ** এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ রুখে দিল সেনা অভ্যুত্থান ** সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য ** ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ** তুর্কী গণপ্রতিরোধে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ** রফতানি বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ : রাজনৈতিক অস্থিরতা ** মানবতাবাদী বিশ্ব ও সন্ত্রাসবাদী বিশ্বের মাঝখানে মুসলমানদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে ** সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য : নজরুল ইসলাম খান ** তুর্কী জনগণকে অভিনন্দন ** জাতীয় স্বার্থ বনাম হুকুম তামিল করার দৌড়ঝাঁপ ** এ শিক্ষা আমাদের কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ** দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও হরিলুটের অভিযোগ ** দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছার কপিলমুনি শহর ** কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট : সেবা কার্যক্রম ব্যাহত ** কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ** ইসলামী সংস্কৃতির আলোকেই হোক ঈদ আনন্দ ** বাংলা ভাগের জন্য মুসলমানরা নন হিন্দুরাই দায়ী ** কবির বিশ্বাস ** সানজিদা তাহসিনা বেঁচে থাকবে সবার মাঝে ** জাতির নিকট রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ শ্রাবণ ১৪২৩, ১৬ শাওয়াল ১৪৩৭, ২২ জুলাই ২০১৬

আবু মালিহা
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। পৃথিবীর আর কোনো দেশে এমন বৈচিত্র্যময় ঋতুর সমাবেশ সম্ভবত আর নেই। মোহন রূপে নানা বৈচিত্র্য নিয়ে একেক  ঋতুর একেক বৈশিষ্ট্য এ দেশের মানুষের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। এ সমস্ত ঋতুর অন্যতম হলো বসন্তকাল। যাকে ঋতুর রাজা বলা হয়। প্রাণময় বৈচিত্র্যে উদ্বেলিত করে বসন্তকাল প্রতিটি প্রাণে মনে। হৃদয়ের উচ্ছলতা বাড়ায় নব প্রেরণার নব উন্মাদনায়। আবেগ মথিত হৃদয়ের নানা আকুলতা জেগে উঠে বসন্তের পরশে। প্রেম ভালবাসা ও হৃদয় গানে একে অন্যকে আপন করে নেয়ার প্রাকৃতিক উচ্ছলতায় সকলেই যেন হারিয়ে যায় দিগন্ত ছোঁয়া রংধনুর মেঘলায়। একি চিত্তের ব্যাকুলতা। মানব সত্তার এযে চিরন্তন আবেগ অনুভূতি জড়িয়ে আছে আমাদের বৈচিত্র্যময় ঋতুর প্রতিটি পরিবেশে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত বাংলার প্রকৃতিতে আনে একেকটি সৌম্য পরিবেশ নিয়ে। যা মাটি মানুষ ও প্রকৃতির জীবনে একাত্ম হয়ে আছে এ দেশের প্রতিটি ধূলিকণার সাথে। নদী, খাল, বিল, পাহাড়, পর্বত ও বনলতা ও সাগরের উর্মিমালার মতো উচ্ছল জীবনের মোহন পেলবতায় ও প্রাণময়তায় এক অনুরনণ সংগীত মূর্চ্ছনায় জীবনে নানা দোল খায় অফুরন্ত প্রাণোচ্ছ্বাসের বালুকাবেলার গোধূলীলগ্নের অস্তাচলগামী রক্তিমাভার সূর্যালোকে মায়াময় আবির রাঙা আল্পনার ভালোবাসার রঙে। এদেশকে দেখে মনে হয় স্বপ্নালোকের কল্পনার রঙে রঞ্জিত অচিনপুরের স্বর্গীয় রাজ্য যেন।

মেঘের ভেলা আবেগের রঙ মেখে আকাশ গাঙে খেলা করে যেন। নদীর দু’কূল ঘেঁষে কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় হৃদয় আপ্লুত করে ভাবলোকের অপ্সরীকে পেতে। বর্ষাকালে এ দেশ অনন্যরূপ ধারণ করে। সারাদিন ঝরঝর বৃৃষ্টি, মেঘের ডাক আর ঝড়ো হাওয়ার ঝাপটায় সব সময় যেন মনটাকে ভিজিয়ে রাখে। কতো গল্প আর উপন্যাসে বর্ষাকাল যেন মনময়ুরীর নৃত্যকে সব সময় চোখের সামনে উতলা হয়ে ধরা পড়ে। নদী, খাল, বিল, পুকুরপাড়সহ সব জায়গায় পানির টইটুম্বুর করা ভরপুর সবখানে অনাবিল মানসিকতায় কল্পনার সমস্ত রং এসে ধরা দেয় বর্ষা ঋতুতে। গুরুগম্ভীর মেঘের গর্জন, যখন তখন ঝুপঝুপ করে বৃষ্টিপড়ার নান্দনিক তালে মনটাকে উন্মনা করে তোলে মেঘের দেশে হারিয়ে যাওয়ার উন্নাসিকতায় ময়ূর পঙ্খী নায়ের উতুঙ্গ ছায়ে বসে দৃশ্যমান জলরাশির গভীর প্রেমের মিতালী যেন একাকার করে ফেলে অন্তরের ঢেউয়ের সাথে। আহা! কী মনোরম দৃশ্য। মনভোলানো অপরূপ দৃশ্য কাব্য যেন। এ দেশের মাঝিমাল্লারা যেন যৌবন ফিরে পায় এ ঋতুতেই। আহ! কতইনা সুন্দর প্রাকৃতিক সুষমা। এ যেন বাংলা মায়ের অমিয় ধারার প্রস্রবন অবিরল ধারায় সজীবতা এনে দেয় মনমাধুর্য্যে অনুপম চিত্তদোলায়। শেষ হবেনা এদেশের মানুষের উচ্ছলতায় প্রাণরস।

ঋতু বৈচিত্র্যে মোহনরূপ নিয়ে শরৎকাল। শরতের আকাশ থাকে সাদা মেঘের ভেলার উড়াউড়ি। নীল গগণে দলছুট মেঘের ভেলারা অনিন্দ্যরূপে খেলা করে আকাশ জুড়ে। দিগন্ত জোড়া স্বপ্নীল আবহে মুখরিত রাখে গ্রামীণ বাংলার প্রতিটি পরতে। নদীর ধারে কাশফুলের ছন্দতালের নৃত্য দেলায় মনোমুগ্ধ করে হৃদয়ে কন্দরে। তন্ত্রীবীণায় সুরের লহরী তুলে মাঝিমাল্লার জারিসারি গানের অপূর্ব সুরে দু’কুল ঘিরে তরঙ্গায়িত হয় নান্দনিক শৈল্পিক চেতনায়। আহা! এমন তরের দেশ যেন আর হয়না। শিল্পী, কবিরা হেথা এসে হারিয়ে যায় অচিনপুরের কল্পনার রাজ্যে দিগি¦à¦¦à¦¿à¦• শিহরণ তোলে আবেগের স্বপ্ন রঙিন ভাবালুতায়।

হেমন্তে বাংলার রূপ মহিমায় অনন্য মাধুর্য্যতায় ভরে উঠে সমস্ত হৃদয় মন জুড়ে। বাংলার প্রকৃতিতে শুরু হয় ফল ফসলের মওসুমী ঘ্রাণের আকুলতায় চিত্ত উতরোল হয়ে উঠে। নবান্ন শুরু হয় গ্রামেগঞ্জে। নতুন ধানের ঘ্রানে ঘ্রানে প্রাণে জাগায় নতুন উন্মাদনা। শুরু হয় পিঠাপুলির উৎসব।

 

নবান্নের নানা উৎসবে মুখরিত বাংলার চিরায়িত রূপকে আরো করে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত। সত্যিই বাংলার রূপ মাধুর্যে বিশ্বের সকল মানুষকেই মোহিত করে তোলে। আবহমান বাংলার চিরন্তন এ ধারা বহুকাল ধরে চলে আসছে। হাজারো পাখ পাখালির কল-কুঞ্জনে বনে বনে পত্র পল্লবের শাখায় শাখায় মৃদুমন্দ হাওয়ার তালে প্রাণ রসকে করে আরো উতলা। নৃত্যানন্দে উচ্ছ্বল করে তোলে পল্লী বালিকার দীপ্তি ছড়ায়ে মেঠো পথের আল্পনার বাঁকে বাঁকে শৈল্পিক দীঘল মাঠের প্রান্ত জুড়ে। উন্মনা হয় মেঘ বালিকার উচ্ছল আনন্দে উদাস হাওয়ায় দিগন্ত ছোঁয়ায় উড়ে চলা। যেন এদেশ স্বপ্নীল আবরণে মোহন রূপে ফুটে উঠে নানা ঐতিহ্যকে ধারণ করে। সত্যিই এদেশের তুলনা আর কোন দেশের সাথে হয়না।

শীতকাল যখন আসে, তখন দেখি শুকনো বৃক্ষ শাখা আর ঝরা পাতার মর্মর ধ্বনিতে যেমন শীতের শুষ্কতা বিরাজ করে, তেমনি কুয়াশার চাদর ঘেরা শীতের সকাল এক মোহনীয় রূপ নিয়ে বাংলার প্রকৃতিতে আসে নব স্বপ্নের জালবোনা উদ্দীপনার শিহরণে। পিঠাপুলির ধুম পড়ে যায় গ্রামে-গঞ্জে। অনন্য এক পুলক জাগায় হৃদয় কন্দরে। আবেগ, ভালোবাসা উপচে পড়ে শীতকালীন আমেজের সামাজিক পরিবেশে। অনন্য শীত অনুভবে হিমশীতল পরিবেশ বাংলার চিরন্তন শীতকাব্য রচনা করে গল্প, উপন্যাস ও কবিতাকে। জড়সড় হয়ে মাঘের শীতে রোদ পোহানো অথবা খড়কাঠ জ্বালিয়ে আগুন তাপানোর দৃশ্য গ্রামে-গঞ্জে অপরূপ দৃশ্যই যেন শীতটাকে জানিয়ে দিয়ে যায়। এ এক অন্য রকম বাংলার রূঢ় প্রকৃতি। তাই শীতের কষ্ট সয়েও মানুষের আবেগ থাকে আবারো আসুক শীত! জীবনটাকে নতুন উপাখ্যানে নিয়ে যেতে। তাই এদেশের মানুষ প্রাণের উচ্ছাসে মাটি ও মানুষকে ভালোবাসে আপন করে। ভালোবাসার বন্ধন হয় দৃঢ় ও সংস্কৃতির লালনে সহযোগী হয় অপূর্ব রঙিন কোলাহলে। শ্বাশ্বত বাংলার চির বৈচিত্র্যের প্রাকৃতিক শোভা সৌন্দর্যকে ধারণ সৃষ্টিকর্তার প্রতি জানায় অশেষ কৃতজ্ঞতা। তাইতো কবি হৃদয় উজাড় করে গেয়েছেন- ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি আমার দেশের মাটি’ অথবা একী অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী। ফুলে ও ফসলে, কাদা মাটি জলে, ঝলমল করে লাবনী॥ ইত্যাদি বহু গান ও কবিতা এ দেশের কবি-সাহিত্যিকদের আবেগে হাজারো গানের সুরেলায় ঝংকৃত করে তোলে হৃদয়ের গভীরে। মনের মাধুরীতে ভরে উঠে প্রতিটি ঋতুর শৈল্পিক বৈচিত্র্যতা। এমনই রূপ দেখে তাইতো কবি বলেছেন-বাংলার রূপ আমি দেখিয়াছি/ তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাইনা আর। বাস্তবিক পৃথিবীর রূপ যেন এ বাংলাতেই উপচে পড়েছে। তাইতো কবিদের কল্পনায় নানা আল্পনার রং ছড়িয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন বাংলার সুরভিত মোহন রূপকে। পাহাড়, নদী, বন, জঙ্গল, ঝর্ণাধারা, ফল, ফসলে এবং পাখীদের কল কাকলিতে চির রূপ মাধুর্যে ‘দুগ্ধ স্রোতরূপী’ বাংলাদেশ সকলের অন্তরে সূধা ঢেলে উজ্জীবনী চেতনায় সুর তরঙ্গে ছল ছল কূলুকূলু রবে নদীর স্রোতে পাল তোলা নৌকা অজানার পানে বয়ে চলুক .... এ কামনা সকলের। আহা..এ যে আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।