সংবাদ শিরোনামঃ

তুরস্কে জনতার বিজয় ** এরদোগানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণ রুখে দিল সেনা অভ্যুত্থান ** সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য ** ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র ** তুর্কী গণপ্রতিরোধে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ** রফতানি বাণিজ্যের নতুন চ্যালেঞ্জ : রাজনৈতিক অস্থিরতা ** মানবতাবাদী বিশ্ব ও সন্ত্রাসবাদী বিশ্বের মাঝখানে মুসলমানদের দাঁড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে ** সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্য : নজরুল ইসলাম খান ** তুর্কী জনগণকে অভিনন্দন ** জাতীয় স্বার্থ বনাম হুকুম তামিল করার দৌড়ঝাঁপ ** এ শিক্ষা আমাদের কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ** দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজেও হরিলুটের অভিযোগ ** দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছার কপিলমুনি শহর ** কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট : সেবা কার্যক্রম ব্যাহত ** কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ** ইসলামী সংস্কৃতির আলোকেই হোক ঈদ আনন্দ ** বাংলা ভাগের জন্য মুসলমানরা নন হিন্দুরাই দায়ী ** কবির বিশ্বাস ** সানজিদা তাহসিনা বেঁচে থাকবে সবার মাঝে ** জাতির নিকট রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ শ্রাবণ ১৪২৩, ১৬ শাওয়াল ১৪৩৭, ২২ জুলাই ২০১৬

মো. আলী আশরাফ খান
নিঃসন্দেহে জাতি এখন নানান সমস্যায় বিপর্যস্ত। চারদিকে সমস্যার যেনো অন্ত নেই। একের পর এক ভয়াবহ সমস্যায় নিপতিত হয়ে দিগি¦à¦¦à¦¿à¦• হারিয়ে জাতি আজ বেসামাল প্রায়। হাঠাৎ হঠাৎ নিগূঢ় ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে এ জাতি চরম এক কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে সামগ্রিক জীবনে। এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সকল পথই যেনো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে। অথচ আমাদের মধ্যে তেমন কেউ ভেবে দেখছেন না জাতীয় সমস্যাগুলো সমাধানে কেউ এগিয়েও আসছে না। সিংহভাগ সাধারণ-ছোটখাট বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে ঘামাতেই অনেক সময় পার হয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশনেতা-নেত্রীদের; এমন অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে জাতীয় অস্তিত্বকে জুড়ে- যা রক্ষার প্রয়োজনে এখনই জাতীয়ভাবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে জাতীয় জীবনে যে মহাবিপর্যয় নেমে আসবে এটা কি দেশকর্ণধার ও তথাকথিত সচেতনরা ভেবে দেখেছেন?

অপ্রিয় সত্য কথা, আজ শুধু সরকারকেই নয়, প্রত্যেক দেশপ্রেমিকদের বিষয়টিকে নিয়ে ভাবতে হবে, বুঝতে হবে শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, বস্ত্র  ও বিনোদেনের মতো বেঁচে থাকার প্রয়োজনে যেসব আমরা পেয়ে থাকি এ অতি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি খাত থেকে, সে খাদ্য তথা কৃষি খাতকে আমাদের যেকোনো মূল্যে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কৃষিকে রক্ষা না করতে পারলে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে তা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কিন্তু আজকে যে হারে আমাদের দেশে জনসংখ্যা বাড়ছে এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সুপরিকল্পিত নগরায়ন ও বাসস্থানের অভাবে কৃষিজমির পরিমাণ অধিক হারে কমে যাচ্ছে; আমাদের জাতীয় জীবনে ধেয়ে আসছে মহাবিপর্যয়, দেখা যাচ্ছে অশনিসংকেত, কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভরাট হয়ে যাচ্ছে কৃষিজমি, পুকুর, খালবিল ও ডোবা; বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীসহ বহু জলাশয়। অপরিকল্পিতভাবে এসব ভরাট হয়ে যত্রতত্র গড়ে উঠছে রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, কল-কারখানা, দোকানপাট, বিলাসবহুল মার্কেট ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

 à¦†à¦®à¦¿ যে এলাকায় বাস করি, দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুরের ৬-৭ বছর পূর্বের অবস্থা আর এখনকার অবস্থা অনেক তফাৎ। যেখানে অনেক কৃষিজমি, পুকুর, খালবিল ও ছিল ডোবা। এসব রাতারাতি ভরাট হয়ে আলিশান অট্টালিকায় ভরে গেছে এখন। এমনও দেখা গেছে সরকারি জায়গা লিজ নিয়ে ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা, চলছে দখলদারিত্বের মহোৎসব। ড্রেনেজ সিস্টেমও রাখা হয়নি এসব স্থাপনাগুলো। যার ফলে এক আধটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার কঠিন মাশুল দিতে হচ্ছে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র গৌরীপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের এবং স্থানীয় অনেক পরিবারকে। শুধু দাউদকান্দি তথা গৌরীপুরেই নয়, সামগ্রিকভাবে দেখলে দেশের প্রায় সব জায়গায় একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ মহাবিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে সরকারের কঠোর ও কঠিন নীতি অবলম্বন ও দেশপ্রেমিকদের জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখনই কাজ শুরু করতে হবে দেশের সর্বত্র।

সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, গত দুই দশকে নানা কারণে দেশে কৃষিজমির পরিমাণ কমে গেছে ৫০ লাখ একরেরও বেশি। এসব ভরাটকৃত জমিতে অপরিকল্পিতভাবে বিস্তৃতি ঘটেছে নগরায়ন, জনবসতি ও শিল্পায়নের। এতে কৃষিজমির উপর যেমন প্রভাব পড়ছে তেমনি কৃষকরাও সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু দেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় পর্যটন ও হোটেল ব্যবসার জন্যই নয়, দেশের যত্রতত্র বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি, রিয়েল এস্টেট ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা স্ব-স্ব উদ্যোগে জমি, পুকুর, খালবিল-ডোবা অধিক দামে ক্রয় করে ভরাটের মধ্যদিয়ে মিল-ফ্যাক্টরি, বিলাসবহুল মার্কেট, হোটেল-মোটেল, সিএনজি-তেলের পাম্প ও বাড়ি-ঘর তৈরিসহ নিজেদের দখলে নিয়ে নিচ্ছে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে। এমনও দেখা যায় এক লাখ টাকার সম্পদ তিন লাখ বা কখনও কখনও পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়ার কারণে এবং প্রভাবশালীদের হাতে ভূমি খোয়া যাওয়ার ভয়ে অনেকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিজেদের শেষ সম্বল জমি, পুকুর-ডোবা, জলাশয় এমনকি বাড়ি-ঘরের পাশের জায়গাটিও বিক্রি করে দিতে দ্বিধা করছে না। এতে যেমন কমছে কৃষিজমি, পুকুর, ডোবা ও জলাশয় তেমনি সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা এবং পাশাপশি জমির মালিকরাও সহায়-সম্বল হারিয়ে দিন দিন হচ্ছে নিঃস্ব।

এক তথ্যে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৩০ হেক্টর শুধু কৃষিজমি চলে যাচ্ছে উল্লিখিত বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন বিনষ্ট হচ্ছে, তেমনি দ্রুত সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে দেশের কৃষিজমি। এ ছাড়া আতংকের বিষয় হলো দেশের কিছু ভূমিখেকো প্রভাবশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নানা ফসল ফলানো বা হাউজিং ব্যবসা ও ল্যান্ড বিজনেসের নামে চুক্তিভিত্তিক গ্রামের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সব কৃষিজমি একেবারে কিনে ফেলছে। এভাবে কৃষিজমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। সাধারণদের ফাঁদে ফেলে বিভিন্নভাবে মালিকানা বদল হওয়াতে কৃষিজমি কমে যাওয়ার পাশাপাশি জমির ওপর কৃষকের সব ধরনের অধিকার বিলুপ্ত হচ্ছে। যদিও কৃষিজমি রক্ষা ও ভূমির যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে ভূমি মন্ত্রণালয় সারা দেশে ল্যান্ড জোনিং কর্মসূচি নিয়েছে কিন্ত তা কার্যকরী কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না, কেউ কারো কথা শুনছে না। স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কালোছায়ায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিখাত। অথচ এই জমি থেকেই খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এমনকি জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় উপাদানের সব চাহিদাই আমরা পেয়ে থাকি। আয়তনে ছোট আমাদের এই দেশের মতো জনবহুল দেশে ভূমির গুরুত্ব যে কতটা তা বিশ্লেষণের প্রয়োজন পড়ে না। সময় থাকতে এ অতি গুরু“ত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে সরকার আমাদের সকলকে।

যদিও কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি জোনিং আইন ২০১০ নামে একটি আইন করার মাধ্যমে সরকার চেষ্টা করছে এ সমস্যা সমাধানে। কিন্তু দিন দিন সমস্যা প্রকটাকার ধারণ করছে। সরকার বলছে ‘অকৃষক’ কোনো ব্যক্তি কৃষি জমি কিনতে বা ভোগদখল করতে পারবে না, জমির শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না, কৃষি জমিতে বসতবাড়ি, ইটখোলা, শিল্প-কলকারখানা এবং অন্য কোনো অকৃষি স্থাপনা তৈরি করতে পারবে না ইত্যাদি। কিন্তু এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে স্বয়ং সরকার দলীয়রাই লিজ দিয়ে নিয়ে পরিবেশ ও জনসাধারণের ক্ষতি করছে। আমরা মনে করি, এই আইন বাস্তবায়নে সরকারকে আরো বেশি আন্তরিক ভূমিকা পালন করতে হবে; খাই খাই ও দলীয় কর্মীদের ‘পাইয়ে দিই’ এ চিন্তা বাদ দিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে। প্রয়োজনে সরকারকে জমি, পুকুর ও জলাশয় ইত্যাদি অধিগ্রহণের মাধ্যমে দলীয় নয়, প্রকৃত কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠু বণ্টনের ব্যবস্থা করতে হবে। আর নচেৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি খাদ্যের এমন এক অভাব দেশে দেখা দেবে যার সমাধান আদৌ সম্ভব হবে না। তখন কপাল চাপড়ালে কোনও লাভ হবে না।

লেখক: কবি, কলামিস্ট ও সংগঠক

গৌরীপুর, দাউদকান্দি, কুমিল্লা

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।