২ কোটি টাকা চাঁদা চেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে মাদরাসায় হামলার অভিযোগ আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে

সিদ্ধিরগঞ্জ (না’গঞ্জ) সংবাদদাতা : সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় অবস্থিত মক্কীনগর মাদরাসায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নামধারী নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় মাদরাসার প্রিন্সিপালসহ কয়েক শিার্থীকে মারধর করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। গত ৩০ জানুয়ারি শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় এ ঘটনাটি ঘটে। ২ কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে এ হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেছেন মাদরাসা কর্তৃপ। অপরদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া জানান, আমরা কোন হামলা করিনি বরং তারাই আমাদের উপর হামলা করার চেষ্টা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিার্থীদের শান্ত করে। এসময় মাদরাসার শিার্থীরা এক হামলাকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় মাদরাসার শিার্থীরা ও এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে বিােভ মিছিল করেছে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। মাদরাসার সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মাদরাসার প্রিন্সিপাল তাহের আল হোসাইন জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের মক্কীনগর মাদরাসার ভিতরে ক্রয়কৃত জমির উপর মসজিদ ও মাদরাসার ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। গত ৩০ জানুয়ারি শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় দিকে মনির, তার ভাই মফিজুল ইসলাম মজু এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া ৩৫-৪০ জন ক্যাডার বাহিনী নিয়ে মক্কীনগর মাদরাসায় যান। এসময় তারা মসজিদ ও মাদরাসার সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেন। এসময় তারা মাদরাসার প্রিন্সিপালের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে বলেন মাদরাসার প্রিন্সিপাল ও শিকরা সাংবাদিকদের জানায়। পরে মাদরাসার শিকরা চাঁদা চাওয়ার প্রতিবাদ করলে ইয়াছিন মিয়ার দেহরী ও ৭ খুন মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন আশিক, শরিফুল ইসলাম, মনির, মজুসহ ৩৫-৪০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাদরাসায় হামলা করে। তাদেরকে বাধা দিলে আমাকে (মাদরাসার প্রিন্সিপাল তাহের আল হোসাঈনকে) মারধর করে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী মাদরাসায় আসলে মাদরাসার ছাত্র ও এলাকাবাসী তাদেরকে ধাওয়া দিলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া জুতা ফেলে তার সহযোগীদের নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এলাকাবাসী ও শিার্থীরা মফিজুল ইসলাম মজুকে আটক করে। খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে শিার্থীদের শান্ত করেন। পুলিশ মজুকে আটক করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে মনির, মফিজুল ইসলাম মজু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, শরীফুল, বডিগার্ড আনোয়ার হোসেন আশিকের নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এলাকাবাসী জানায়, এলাকার মৃত সাইজউদ্দিন মিয়ার ছেলে ভূমিদস্যু মনির ও মফিজুল ইসলাম মজু ওই মাদরাসার কর্তৃপরে কাছে ইতঃপূর্বে কয়েক বার চাঁদা দাবি করে আসছিল। এ নিয়ে কয়েকবার উত্তেজনা দেখা দেয়। এমনকি সন্ত্রাসী মনির ও মফিজুল ইসলাম মজু চাঁদা না দেয়ায় ২০০৮ সালের ১২ মে হামলা এবং ছাত্র-শিকদের মারধর ও ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মাদরাসায় ককটেল হামলা করে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি সরাফতউল্লাহ জানান, হাজী ইয়াসিন মিয়া দখল করতে যাননি। তিনি ওই সময় ঘটনাস্থল দিয়ে যাচ্ছিলেন। হই চই শুনে ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া জানান, মক্কীনগর মাদরাসার মসজিদ তাদের সীমানা ছেড়ে বাইরে চলে আসলে মধ্যস্থতা করার জন্য আমি ওইখানে গিয়েছিলাম। তারা আমার কথা শুনেনি। আমরা কোন হামলা করিনি বরং তারাই আমাদের উপর হামলার করার চেষ্টা করেছে।  সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানায়, মসজিদ নির্মাণ নিয়ে দু’পরে মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। আমরা কোন হামলার ঘটনা পাইনি।