উল্লাপাড়ায় ৬ বছর পর ঘরে ফিরল ১৩ পরিবার

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : প্রশাসনের সহযোগিতায় দীর্ঘ ৬ বছর পর গত ৩০ জানুয়ারি শনিবার ঘরে ফিরলেন উল্লাপাড়া উপজেলার খাদুলি গ্রামের নির্যাতিত ১৩টি পরিবারের সদস্যরা। গ্রামের পাশের মাঠে প্রায় ৮০ বিঘা খাস ফসলি জমি ও পুকুরের দখল নিয়ে গ্রামের প্রভাবশালী নজরুল ইসলাম, নান্নু মিয়া, কোরবান আলী, মকবেল হোসেন, আবু শাহীনসহ বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সঙ্গে গোলযোগ সংঘর্ষ ও জীবননাশের হুমকির মুখে ২০১০ সালে উক্ত পরিবার গুলো গ্রাম ছাড়া হন। এদের অবর্তমানে প্রভাবশালী পরিবারগুলো এদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নেয়। অনেক পরিবার শনিবার একেবারে শূন্য ভিটাতে এসে উঠে। ঘর ছাড়া পরিবার গুলোর মধ্যে রয়েছে সৈয়দ আলী, নুর মোহাম্মদ, সকিম উদ্দিন, শাহাব আলী, হাকিম উদ্দিন, সিদ্দিক আলী, শহিদুল ইসলাম, জালাল উদ্দিন, নবীর উদ্দিন, আব্দুল জব্বার, আক্তার হোসেন, আব্দুস ছালাম ও আব্দুল হাকিম।

উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান কউশিক আহমেদ জানান, ২০১০ সালে খাস জমির দখল নিয়ে গ্রামে উভয় পরে মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষের সময় লাবু মিয়া নামের এক ব্যক্তি খুন হবার পর প্রভাবশালীরা কথিত ১৩টি পরিবারের উপর ব্যাপক নির্যাতন শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে তারা গ্রাম ছেড়ে অন্য গ্রামে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে এতদিন আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। উল্লাপাড়ার সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের নির্দেশে শনিবার উল্লাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকরাম আলী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সদস্যদের সহযোগিতায় পুলিশ নিয়ে গ্রামে একটি শান্তি সভা ডেকে ঘর ছাড়া পরিবারগুলোকে তাদের বাড়িতে তুলে দেন।

গ্রামে ফিরে আসা নির্যাতিত পরিবারগুলোর মধ্যে সৈয়দ আলী জানান, এতদিন যারা তাদের ওপর নির্যাতন করেছে তাদের অনেকেই শান্তি সভায় উপস্থিত ছিলেন না। ফলে তারা বাড়িতে ফিরে এসেও নিরাপদবোধ করছেন না। প্রশাসনের লোকজন চলে যাবার পর আবারও তাদের ওপর হামলা আক্রমণ চালানো হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

এ ব্যাপারে উক্ত গ্রামে অনুষ্ঠিত শান্তি সভার সভাপতি ও উল্লাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকরাম আলী জানান, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও চেয়ারম্যান সদস্যদের জিম্মায় ঘর ছাড়া পরিবারগুলোকে ফিরিয়ে এনে তাদের বাড়িতে তুলে দেয়া হয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এরপরও প্রভাবশালী কথিত পরিবারগুলোর প থেকে যদি কোনো হামলা নির্যাতন চালানো হয় তাহলে এর সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।