যশোরে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় দুই শিবির নেতা নিহত

যশোরে ছাত্রলীগের হাতে দুই শিবির নেতা হত্যার প্রতিবাদে গত ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার রাজধানীতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল

যশোর সংবাদদাতা : গত ২৩ নভেম্বর যশোরে দিন-দুপুরে একটি ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলায় দুই শিবির নেতা নিহত এবং অপর একজন আহত হয়। আহত কামরুল হাসান (২১) ২৩ নভেম্বর সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় মৃত্যুবরণ করেন। নিহত শিবির নেতা হাবিবুল্লাহ (২০) ছাত্রশিবির যশোর সরকারি এম এম কলেজ শাখার কলা অনুষদের সভাপতি এবং অর্থনীতি অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র। তিনি শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নের তেবাড়ীয়া গ্রামের ডা. নিয়ামত আলীর ছেলে। নিহত কামরুল হাসান যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ছোট খুদরা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

গত ২৩ নভেম্বর সোমবার বিকেলে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে তিন শিবির কর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাবিবুল্লাহ নামে একজনের মৃত্যু হয় এবং পরে মৃত্যু হলো কামরুল নামে আরো একজনের। অপর আহত শিবিরকর্মী আল-মামুন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি মাগুরার শালিখা উপজেলার আতিয়ার রহমানের ছেলে। হতাà¦%B±Y2f¦¤à¦°à¦¾ সবাই যশোর সরকারি এমএম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার আক্কাস আলী বলেন, নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সোমবার বিকেলে এমএম কলেজ সংলগ্ন এলাকার একটি মেসে শিবিরকর্মীরা বৈঠক করছে-এমন সংবাদে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ডেকে আনেন। পরে তাদের পিটুনিতে গুরুতর আহত হয়।

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ শাখা শিবিরের সভাপতি হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীরা মেসে হামলা করে শিবিরের ওই তিন কর্মীকে বেদম মারধর করেছে। প্রত্যদর্শীরা জানান, যশোর শহরের খড়কীর আশিক ভিলা নামক একটি দোতলা ছাত্রাবাসের প্রথম তলায় শিবির নেতা হাবিবুল্লাহসহ ১৫ জন সাধারণ ছাত্র ভাড়া থাকতেন। গত ২৩ নভেম্বর বেলা দেড়টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে চারজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী সেখানে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে শিবির নেতা হাবিবুল্লাহ ও অন্যদের সেখান থেকে মোটর সাইকেলে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং রড হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে অর্ধমৃত অবস্থায় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বেলা ৩টা ৩৭ মিনিটে কোতোয়ালী থানার এসআই আতাউর রহমান হাবিবুল্লাহকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে বিকাল ৫টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে রেলগেট জনতা ছাত্রাবাসে পুলিশ ও ছাত্রলীগ যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এ সময় পুলিশ দু’জনকে আটক করে। বোমা উদ্ধারের সাজানো মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে যশোর জেলা জামায়াত ও ছাত্রশিবির। তারা জানিয়েছে, পুলিশ ছাত্রদের নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো সন্ত্রাসীদের প নিয়ে তাদের জীবন ও লেখাপড়াকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা আরো ভেঙে পড়বে।