সংবাদ শিরোনামঃ

আল্লাহর সান্নিধ্যে শহীদ কামারুজ্জামান ** কামারুজ্জামানের সংগ্রামী জীবন ** শহীদের প্রতিফোঁটা রক্ত ইসলামী আন্দোলনকে বেগবান করবে ** শহীদ কামারুজ্জামান ‘মৃত্যুহীন প্রাণ’ ** বাংলাদেশে এখন বড় দুঃসময় ** মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত ** বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে লুটপাট ও সেøাগানের রাজনীতি সৃষ্টি হয়েছে ** যাঁর আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিলো একটি কল্যাণমূলক বাংলাদেশ ** বিরোধী দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে কাক্সিক্ষত বিজয় আসবেই ** হাইড্রোজেন গ্যাসে গাড়ি চলবে ** কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডে জাতিসংঘ যুক্তরাষ্ট্র ইইউসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ ** প্রশ্নবিদ্ধ দেশীয় গণমাধ্যম ** ‘ দুশমনরা এ দেশ থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংস করতে চায়’ ** জামায়াতের ডাকে সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত ** বাজিতখিলায় সূর্য উঠতেই অন্যরকম দৃশ্য ** আল্লাহর পথে আহ্বান কারিণীদের প্রয়োজনীয় গুণাবলী **

ঢাকা, শুক্রবার, ৪ বৈশাখ ১৪২২, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৩৬, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

॥ এম গজনবী॥
তিন সিটির একটিতেও প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিকে ছাড় দিতে নারাজ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম এই তিন সিটি নিজেদের দখলে রাখতে নানা ধরনের কৌশল নেয়া হচ্ছে। দলটির একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বললে তারা এমন আভাস দিয়ে জানিয়েছেন, প্রশাসন  আমাদের পক্ষে। তাছাড়া বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটের অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে, আবার অনেকে পলাতক। অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা ঝুলছে। তারা প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় নামতে পারবে না গ্রেফতার আতঙ্কে। সুতরাং এক্ষেত্রে একটু কৌশল অবলম্বন করলে তিন সিটি আমাদের দখলে চলে আসবে। তবে কি কৌশল অবলম্বন করা হবে তা কেন্দ্রীয় নেতারা সময় মতো বলে দেবেন। আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সে নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বললে তারা আরো জানান, বিএনপি সরকার পতনের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। দলটির প্রধান বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন বর্তমান সরকার অবৈধ। এই অবৈধ সরকারকে মানি না এবং এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। তিনি সে অবস্থানে থাকতে পারেননি। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিয়ে নিজ বাড়িতে চলে গেছেন। এখন তিনি সিটি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তার স্বপ্ন আমরা সফল হতে দেবো না। তিন সিটিই আমাদের দখলে থাকবে। এখাে নও তাকে পরাজিত করা হবে। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আতঙ্কের কথা জানালেন। তাদের আতঙ্ক হলো : সিটি নির্বাচন যদি নিরপেক্ষভাবে হয় আর যদি ভোটাররা অবাধে ভোট দিতে পারে সে ক্ষেত্রে নীরব ভোট বিপ্লব ঘটে যেতে পারে। নিরব ভোট বিপ্লব হলে তিন সিটি আমাদের বেদখলে চলে যেতে পারে। এমন শঙ্কা বা আতঙ্ক কাজ করছে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনী প্রচারণায় নামবে এমন খবরে সরকারের উচ্চ মহলেও শঙ্কা বেড়ে গেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণ জনপ্রিয়তার দিক থেকে বেগম খালেদা জিয়া এখন শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা সারাদেশময়। সুতরাং তিনি ঢাকা এবং চট্টগ্রামে নির্বাচনী সমাবেশ এবং গণসংযোগ চালাতে পারলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয় ঠেকানো কঠিন হবে। এমন আতঙ্ক থেকে সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান ইতোমধ্যেই বলেছেন, বেগম জিয়াকে মাঠে নামতে দেয়া হবে না। তিনিসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতার লাগামহীন এবং প্রতিহিংসামূলক বক্তব্যে সিটি নির্বাচন ঝুঁকির মধ্যে চলে গেছে। নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় কি না সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

পক্ষপাতিত্ব প্রশাসন

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রশাসনের সর্বস্তরে দলীয়করণ করেছে। সবচেয়ে বেশি দলীয়করণ করেছে পুলিশ প্রশাসনে। নিজেদের ক্ষমতায় থাকার জন্য এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন চালাতে পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত করেছে। এই লাঠিয়াল বাহিনীকে সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিটি নির্বাচনে প্রচারণা এখন জমে উঠলেও বিএনপি সমর্থিত মেয়র ও ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থীদের পক্ষে দলটির নেতাকর্মীরা মাঠে নামতে পারছেন না। বিএনপি থেকে বলা হয়েছে : সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এমন আশি শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে।  ঢাকা দক্ষিণের প্রভাবশালী নেতা মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে। যে কারণে তিনি মাঠে নামতে সাহস পাচ্ছেন না। তার পক্ষে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। এ সুযোগে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এমন অবস্থা শুধু রাজধানী ঢাকাতে নয়, চট্টগ্রামেও।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কথা বললে তারা সকলেই বলেন, প্রশাসন আমাদের পক্ষে রয়েছে। আমাদের কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা নেই। নির্বাচনে আমাদের জয়ী হতে হবে। দুই সিটি আমাদের দখলে না থাকলে বিএনপি আন্দোলন গড়ে তোলার সুযোগ পাবে।  বিএনপির ঘোর সমর্থক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ী হলে আগামী তিন মাসের মধ্যে সরকার জাতীয় নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। প্রফেসর এমাজউদ্দীনের এ খায়েশ কোনো দিনই পূরণ হতে দেবো না।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেছে, বিএনপির যেসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের কেউ প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করবে। এমন নির্দেশনা উপর মহল থেকে দেয়া হয়েছে। কাদের কাদের গ্রেফতার করা হবে তাদের তালিকা নাকি পুলিশ তৈরি করে রেখেছে।

এদিকে পুলিশি হয়রানির বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে অবহিত করলে তিনি কোনো প্রার্থীকে হয়রানি না করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা রয়েছে তাদের ব্যাপারে কমিশন কিছু করবে না। নির্বাচন কমিশনের দুই ধরনের বক্তব্যে অনেকের মধ্যে শঙ্কা দূর হচ্ছে না।

ঢাকার একাধিক নিরপেক্ষ ভোটারের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করলে নির্বাচন কোনোভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। আওয়ামী লীগের নেতারা যে ভাষায় কথা বলছেন, তাতে মনে হয় না নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে। তাছাড়া প্রশাসন তো সরকারের নির্দেশনার বাইরে যাবে না। সরকার যা বলবে পুলিশ সেটাই করবে। বিগত নির্বাচনেও সেটা লক্ষ্য করা গেছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন কিভাবে হয়েছে তা সারাদেশের মানুষ দেখেছে। ৫ জানুয়ারিতে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যায়নি, কিন্তু এবার ভোট কেন্দ্রে গেলেও ভোট দিতে পারবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

নীরব ভোট ঠেকাতে কৌশল

নাম প্রকাশ করতে চাননি আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে বলেন, সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী সমর্থকরা অদৃশ্য অবস্থায় আছেন। বিএনপির  নেতাকর্মীরা কেউ কেউ মাঠে নামলেও অনেকে পলাতক। এ অবস্থায় বেগম জিয়া নির্বাচনী মাঠে নামলে দৃশ্যপট অনেকটা বদলে যেতে পারে। আর বেগম জিয়াকে বাধা দিলে দৃশ্যপট আরো বদলে যেতে পারে। তখন নীরবে ভোট বিপ্লব ঘটে যেতে পারে।  গত তিন মাসের আন্দোলনের জবাব জনগণ ভোটের মাধ্যমে দিতে পারে। এমন আশঙ্কা সরকারের নীতি নির্ধারক মহলের মধ্যে। তিনি আরো বলেন, সত্যিকার অর্থে নির্বাচনে ভোটাররা স্বাধীন মতো ভোট দিতে পারলে বিএনপিকে কোনোভাবে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। তারা বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতে যাবে। আর সে কারণে নয়া কৌশল অবলম্বন করা ছাড়া তাদের ঠেকানো যাবে না।

রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের অন্তত ডজন খানেক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, সরকার যতই উন্নয়ন করুক না কেন, রাজধানীর সাধারণ ভোটাররা সরকারের উপর বিরক্ত। গত ৬ বছরে পুলিশ দিয়ে যেভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে তাতে আমরা ভোট পাবো না। আমাদের ভোট পেতে হলে গায়ের জোর খাটাতে হবে। পুলিশকে কাজে লাগাতে হবে। জোর করে ৫ জানুয়ারিতে নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার ফলাফল যে শুভ হয় না তা ভোটাররা হয়তো  দেখিয়ে দেবে নীরব ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে। তারা আরো জানান, সিটি নির্বাচনে বিএনপি জিতে গেলে তাদের জাতীয় নির্বাচনের দাবি আরো জোরালো হবে। তাদের নৈতিক শক্তিও বেড়ে যাবে। আর নির্বাচনে জোর করে জিতে গেলেও ক্ষমতায় টিকে থাকা কঠিন হবে। তখন দেশের জনগণ সিটি নির্বাচনকে ইস্যু করে সরকার পতনের আন্দোলনে রাস্তায় নেমে পড়তে পারে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।