লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় নিখোঁজ এমভি কর্ণফুলি-৫

শ্রমিক এনামূলসহ ২ জনের লাশ উদ্ধার ॥ নিখোঁজ ৩

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় নিখোঁজ এমভি কর্ণফুলি-৫ লাইটারেজ জাহাজের শ্রমিক শেখ এনামূল হক মুকিতের লাশ ভোলার মনপুরা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১৩ নভেম্বর সকালে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত রোববার রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মাছঘাট এলাকা থেকে সারেং নুর নেয়াজের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে উদ্ধার হলো এমভি কর্নূফুলি-৫ লাইটারেজ জাহাজের দুই শ্রমিকের লাশ। এখনো নিখোঁজ  সুকানি সাফিনুর রহমান শাকিল, আফছার উদ্দিন পিয়াস ও বাবুর্চিসহ তিনজন। নিহত জাহাজ শ্রমিক এনামূল হক মুকিতের বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার আত্তাইল গ্রামের মমিনুল শেখের ছেলে।

নিহতের ভাতিজা  সহেল রানা ও ভাগিনা আল আমিন এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে বলেন, আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় নিখোঁজ জাহাজ শ্রমিক শেখ এনামূল হক মুকিতের লাশ ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার মেঘনা নদীতে বুধবার বিকেলে ভাসতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে কমলনগর থানা নিয়ে আসে। গত ১৩ নভেম্বর সকালে নিহত শেখ এনামূল হক মুকিতের আতœà§€à§Ÿ স্বজন থানায় লাশ নিজেদের বলে সনাক্ত করে। পরে ময়নাতদন্তের জন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর শুক্রবারে চট্টগ্রাম থেকে সার বোঝাই এমভি কর্ণফুলি-৫ লাইটারেজ জাহাজ ৯ জন শ্রমিকসহ ১০ জন লোক নিয়ে পাবনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।  চট্টগ্রাম থেকে জাহাজটি ছাড়ার আগে জাহাজের শ্রমিক শামীম হোসেনের আতœà§€à§Ÿ পরিচয়ে এক ব্যক্তি  জাহাজে উঠে।  জাহাজটি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মেঘনা নদীর চরআবদুল্লাহ এলাকায়  পৌঁছলে  জাহাজের শ্রমিক শামীম হোসেন ও টিটু এবং শামীমের আতœà§€à§Ÿ পরিচয় একজন মিলে জাহাজের সারেং নুর নেয়াজকে জিম্মি করে। পরে জাহাজে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ মালামাল লুটে নেয়। শ্রমিকদেরকে বেদম মারধর ও কুপিয়ে আহত করে নদীতে ফেলে দেয় এবং দুই শ্রমিককে জাহাজে আটকিয়ে রেখে চলে যায়। এমভি কর্ণফুলি লাইটারেজ জাহাজটি ঘটনাস্থল থেকে নদীতে ভাসতে ভাসতে  কমলনগর উপজেলার বার্ত্তিরঘাট এলাকায় পৌঁছে। এসময় অন্য একটি লাইটারেজ জাহাজ কর্ণফুলি লাইটারেজ জাহাজটিকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে কমলনগর থানা পুলিশ ঘনাস্থলে পৌঁছে জাহাজটি আটক করে এবং জাহাজের ভিতর বন্দী অবস্থায় মাহাবুব হোসেন, জাহিদুল ইসলাম ও নদীর কূল থেকে পারভেজ হোসেনকে উদ্ধার করে। পরে জাহাজের মালিক আবদুস সালাম বাদী হয়ে  কমলনগর থানা একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় উদ্ধারকৃত শ্রমিক পারভেজ হোসন, শামীম হোসেন, টিটু, বাবুচি ও জাহাজের শ্রমিক শামীমের খালাতে ভাইসহ ৫ জনকে। পরে পারভেজকে পুলিশ গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত পারভেজ লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে নিজে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারা জবানবন্দী প্রদান করেন বলে দাবি করেছেন কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন করিব।

অপরদিকে কর্ণফুলি-৫ লাইটারেজ জাহাজের শ্রমিকদের অন্তর্কোন্দলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এটি কোনো ডাকাতির ঘটনায় নয় বলে জাহাজের মালিক আবদুস সালাম মামলায় উল্লেখ করেছেন।