দেশে ফিরতে চান অনুপ চেটিয়া

গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী থাকা উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) নেতা অনুপ চেটিয়া নিজ দেশে ফিরে যেতে চান। বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনের কনস্যুলার জেপি সিং কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন কালে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া গত ২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার আগ্রহের কথা জানান। এ সময় জেপি সিংয়ের সঙ্গে ওই হাইকমিশন অফিসের দোভাষী দীপক দেব নাথও ছিলেন। জে পি সিংহ হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহামনের সঙ্গে শুভেচ্ছা সাক্ষাত করেন। তিনি প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা কারাগারে অবস্থান করেন।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেলার জান্নাতুল ফরহাদ সাংবাদিকদের জানান, কনস্যুলার জেপি সিং বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে কারাগারে আসেন। পরে কারা সুপার মো. মিজানুর রহমানের উপস্থিতিতে অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে কথা বলেন তারা। এ সময় কনস্যুলার অনুপ চেটিয়ার দেশে ফেরার আগ্রহের বিষয়ে জানতে চান। অনুপ চেটিয়া দেশে ফেরার সম্মতি প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি দেশে ফিরতে আগ্রহী। ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে অনুপ চেটিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশী মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। পরে তিনটি মামলায় তাঁকে যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন বাংলাদেশের আদালত। ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়াারি তার সাজার মেয়াদ শেষ হয়। ২০১২ সাল থেকে তিনি কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। অনুপ চেটিয়া নিজ দেশে ফেরার আগ্রহের কথা জানিয়ে এর আগে গত বছরের মে মাসে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি ইতঃপূর্বে বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য করা আবেদন প্রত্যাহারের কথাও বলেছেন বলে জানা গেছে। ওই চিঠিতে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়া চিঠিতে লিখেছেন, তাঁর দুই সহচর লক্ষ্মী প্রসাদ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকে নিয়ে তিনি নিজ দেশে ফিরতে চান। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের স্বাধীনতার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় উলফা। এরপর দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সশস্ত্র তৎপরতা চালায় সংগঠনটি। ২০০৯ সালের শেষ দিকে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়াসহ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব নেতাকে বাংলাদেশ থেকে ধরে ভারতের কাছে হস্তাস্তর করা হয়। এরপর ২০১০ সাল থেকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে উলফার শান্তি আলোচনা চলছে। এমন অবস্থায় অনুপ চেটিয়া ভারতে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।