সংবাদ শিরোনামঃ

গণআন্দোলনের ডাক ** সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও ব্যর্থতার কারণে দেশজুড়ে গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে ** বিচারপতিদের অভিশংসন, সম্প্রচার নীতিমালা গণতন্ত্রের ওপর ডেমোকিসের ছুরি ** ইরাকে পশ্চিমাদের হোলি খেলা ** অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন ** সরকার স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ভিত্তিমূলে আঘাত করছে ** বন্যাকবলিতদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ প্রয়োজন ** হীনম্মন্যতাবোধ এবং সেবাদাসদের দৌরাত্ম্য ** সাম্রাজ্যবাদ ও কাজী নজরুল ইসলাম ** পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেভাবে উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর ** উপমহাদেশে রেল দুর্ঘটনার শীর্ষে বাংলাদেশ, ক্ষয়ক্ষতিতে ভারত ** বন্যাপরিস্থিতির চরম অবনতি ** মুসলমানদের অনৈক্যের কারণেই ইসরাইল গাজায় নির্বিচার গণহত্যা চালাচ্ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪২১, ২৫ শাওয়াল ১৪৩৫, ২২ আগস্ট ২০১৪

নতুন বার্তা ডটকম : ব্রিটেন বিএনপির সহ-সভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান মুজিবের অপহরণ ও মুক্তির বিষয়টি সারাদেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে চলেছে। সবার কৌতূহল, তিনি কিভাবে অপহরণ হলেন আর মুক্তিই বা পেলেন কিভাবে। পুলিশি নজরদারিতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। গণমাধ্যমের সঙ্গে তার কথা বলার েেত্র কড়াকড়ি রয়েছে। তবুও তিনি এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন। আত্মীয়-স্বজন ও পুলিশের কাছে অপহৃত অবস্থায় থাকা ১০৫ দিনের বর্ণনা দিয়েছেন। তার দেয়া তথ্যগুলো খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

যেভাবে অপহরণ

মুজিব জানান, সুনামগঞ্জের টোকেরবাজারে পুলিশের পোশাক পরা লোকজন তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। কিছু সময় গাড়ি চলার পর তাদের একজন বলেন, গাড়িতে দুর্গন্ধ, এয়ার ফ্রেশনার (সুগন্ধি) স্প্রে করো। আরেকজন সেই সুগন্ধি স্প্রে করার ১৫ থেকে ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি জ্ঞান (চেতনা) হারান। পরে সম্বিত ফিরে পাওয়ার পর দেখেন, একটি অন্ধকার ঘরের মেঝেতে তাকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। চোখ কাপড় দিয়ে বাঁধা। হাতে হাতকড়া পরানো, পা বাঁধা। সে সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা। ভয় পেয়ে তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলে বুটজুতা পরা কেউ একজন আমাকে লাথি দেন। তিনি ধমক দিয়ে বলেন, শাট আপ, আইদার আই উইল কিল ইউ (চুপ করো, না হলে তোমাকে মেরে ফেলব)। তখন ভয়ে তিনি চুপ করে থাকেন।

দুঃসহ সেই দিনগুলো : মুজিবুর রহমান ১০৫ দিন কাটিয়েছেন অপহৃত অবস্থায়। দুঃসহ সেই দিনগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, প্রথম দিন থেকেই মাঝে মধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই তারা আমাকে মারধর করেছে। রাবার জাতীয় কোনো লাঠি দিয়ে তারা আঘাত করে। এর ফলে প্রচণ্ড আঘাত লাগলেও ত্বক কেটে যায়নি বা হাড় ভাঙেনি। কিন্তু দুই বা তিন দিন পর আমার বাম হাতের নখ প্লায়ার্স জাতীয় কিছু দিয়ে তুলে ফেলা হয়। তখন প্রচণ্ড কষ্ট পেয়েছি। তবে রমজান মাসে আমার সঙ্গে তারা ভালো ব্যবহার করেছে। আঘাতের স্থানগুলোয় মলম লাগিয়ে দিয়েছে। তারা আমাকে পানির সঙ্গে নেশাজাতীয় কিছু মিশিয়ে খাওয়াত। মাঝে মধ্যে কী যেন একটা ইনজেকশন দিত। পুরো সময় নেশাগ্রস্তের মতো লাগত।

তিনি জানান, অপহরণকারীরা তার কাছে ১২ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল। জবাবে তিনি বলেছেন, এত টাকা তার পে দেয়া সম্ভব নয়। মুক্ত হওয়ার পর শুনেছেন, তার ছেলে রিপন মিয়ার কাছেও ফোন করে টাকা দাবি করা হয়েছে। বেশ কয়েকবার টাকা চাইলেও সেটাই অপহরণের উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে হয়নি।

মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে মুজিবুর রহমান দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন মাস ছোট্ট একটি কইে বন্দী ছিলেন বলে তার আত্মীয়দের জানিয়েছেন। ওই সময় তিনি অজ্ঞান থাকায় অপহরণের স্থল থেকে সেটি কত দূরে অনুমান করতে পারেননি।

মুজিবুর জানান, যে কে মুজিব ছিলেন সেটির পাশেই লাগোয়া টয়লেট ছিল। তিনি ফোরেই ঘুমাতেন। সেখানে বালিশ ও কম্বল ছিল। তা ছাড়া বসার জন্য একটি চেয়ারও রাখা ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় নেতাগোছের এক ব্যক্তি ওই চেয়ারে বসত। যাকে অন্যরা স্যার বলে সম্বোধন করত। টয়লেটে যাওয়ার সময় তার চোখ খুলে দেয়া হতো। অন্ধকার রুমে মাঝেমধ্যে একজন যুবককে দেখতেন। সপ্তাহে একবার গোসল ও দুই তিন দিন পর দাঁত ব্রাশ করার সুযোগ দেয়া হতো। তিনি জানান, বন্দী অবস্থায় তাকে কোনো দিন এক বেলা কোনো দিন তিন বেলা খাবার দেয়া হতো। খাবারের মধ্যে সকালে পাউরুটি কিংবা পরটা, দুপুরে ভাত, ডাল ও সবজি আর রাতে কখনও রুটি কখনো ভাত। কোনো কোনো দিন একবেলা খাবার দেয়া হতো তাকে। ঈদের দিন তাকে মুরগির গোশতসহ ভালো খাবার ও সেমাই দেয়া হয়েছিল।

মুজিবুর জানান, রাতে ঘুমানোর সময়ও তার হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে রাখা হতো। কোনো কোনো দিন অন্ধকার কে চোখ খুলে দিত। কিন্তু দিন-রাতের অধিকাংশ সময় তার চোখ গামচা দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। কোনো কোনো দিন টয়লেটে যাওয়ার সময় বাদে টানা ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে রাখা হতো বলে আত্মীয়দের জানিয়েছেন তিনি।

যেভাবে মুক্তি : মুজিবুর তার স্বজনদের কাছে যেভাবে মুক্তি পেয়েছেন এর পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছেন। স্বজনরা জানান, সোমবার ভোর ৩টার দিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ওই ক থেকে বের করে একটি সিঁড়ি দিয়ে মুজিবুরকে নামানো হয়। একটি ফোর নামার পর কিছুদূর হাঁটিয়ে নিয়ে তাকে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। মাইক্রোবাসটি কয়েক ঘণ্টা চলার পর তাকে চোখ বেঁধে টঙ্গীর কাছে নামিয়ে দেয়। অপরহরণকারীরা নামিয়ে দেয়ার ১০ মিনিট পর চোখ খোলার নির্দেশ দেয়। এর আগে চোখ খুললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। কিছুণ পর চোখ খুলে তিনি দেখেন বোরকা পরিহিত অবস্থায়।

তিনি আরো জানান, চোখ খুলে তিনি দেখেন, গাড়িচালক সোহেলও তার পাশেই পড়ে আছে। তার পকেটে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা দেয়া ছিল। তবে তার ঘড়ি ও ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ফিরে পাননি।

জট খুলছে না রহস্যের : মুজিব মুক্তি পেলেও তার অপহরণ রহস্যের জট খুলছে না। মুজিবের কাছে অপহরণের পর মুক্তিপণ হিসাবে ১২ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেটা দিতে অস্বীকার করেছেন বলে তার শ্যালক ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন। মুজিবের লন্ডন প্রবাসী ছেলে রিপনের কাছে বাংলাদেশ থেকে ফোন করে একবার ১০ কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, অপহরণকারীরা মুক্তিপণের জন্য মুজিবুর রহমানকে নির্যাতন করলেও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য, তার শ্যালক, রাজনৈকি বন্ধু বা অন্য কারো কাছে মুক্তিপণ চায়নি। এছাড়া তার কাছে চাওয়া হয়েছে ১২ কোটি টাকা কিন্তু ছেলের কাছে ১০ কোটি। বিষয়টি নিয়েও রহস্যের জন্ম দিয়েছে। পরিবারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নিখোঁজ থাকা অবস্থায় তাদের সঙ্গে মুজিবের কথা হয়নি বা তিনি কখনো ফোন করার সুযোগ পাননি।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।