সংবাদ শিরোনামঃ

গণআন্দোলনের ডাক ** সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও ব্যর্থতার কারণে দেশজুড়ে গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে ** বিচারপতিদের অভিশংসন, সম্প্রচার নীতিমালা গণতন্ত্রের ওপর ডেমোকিসের ছুরি ** ইরাকে পশ্চিমাদের হোলি খেলা ** অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন ** সরকার স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ভিত্তিমূলে আঘাত করছে ** বন্যাকবলিতদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ প্রয়োজন ** হীনম্মন্যতাবোধ এবং সেবাদাসদের দৌরাত্ম্য ** সাম্রাজ্যবাদ ও কাজী নজরুল ইসলাম ** পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেভাবে উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর ** উপমহাদেশে রেল দুর্ঘটনার শীর্ষে বাংলাদেশ, ক্ষয়ক্ষতিতে ভারত ** বন্যাপরিস্থিতির চরম অবনতি ** মুসলমানদের অনৈক্যের কারণেই ইসরাইল গাজায় নির্বিচার গণহত্যা চালাচ্ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪২১, ২৫ শাওয়াল ১৪৩৫, ২২ আগস্ট ২০১৪

স্টাফ রিপোর্টার : এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সম্প্রতি প্রকাশিত টেকনিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের ৭৩ শতাংশ মহাসড়কই মানহীন। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের (সওজ) অধীন সারা দেশে জাতীয় মহাসড়ক রয়েছে ৩ হাজার ৫৮০ কিলোমিটার। এর ৭৩ শতাংশই আন্তর্জাতিক মানের নয়। দুই লেনের এসব মহাসড়কে কোনো সড়ক বিভাজক (ডিভাইডার) নেই। সড়কের দুই পাশে সীমানা প্রাচীরও অনুপস্থিত। আর পৃথক লেন না থাকায় একই সঙ্গে চলছে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যান। এতে দুর্ঘটনাপ্রবণতা বাড়ছে মহাসড়কগুলোয়।

সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল রোড অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রামের (আইআরএসপি) আওতায় প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে এডিবি। প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোকে মানের ক্রমানুসারে পাঁচ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সওজের অধীন মহাসড়কের ৪৫ শতাংশ রয়েছে পঞ্চম ক্যাটাগরিতে। এক তারকা গ্রেডের এসব সড়ক কালো তালিকাভুক্ত। কোনো মানদণ্ডেই এগুলো মহাসড়কের মধ্যে পড়ে না। চতুর্থ ক্যাটাগরিতে রয়েছে ২৮ শতাংশ মহাসড়ক। এগুলো দুই তারকা বা লাল তালিকাভুক্ত। মহাসড়কের মানদণ্ডের খুব কম বৈশিষ্ট্য এগুলোয় বিদ্যমান। অর্থাৎ এডিবির বিবেচনায় এ ৭৩ শতাংশ মহাসড়কই মানহীন। অবশিষ্ট মহাসড়কের মধ্যে ২৫ শতাংশ মাঝারি মানের বা তিন তারকার। এগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কমলা তালিকায়। আর মোটামুটি আদর্শ মানের মহাসড়ক রয়েছে ১ শতাংশ। এগুলো চার তারকা বা হলুদ তালিকাভুক্ত। তবে আদর্শ মহাসড়ক বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে আদর্শ মহাসড়ক পাঁচ তারকা বা সবুজ তালিকাভুক্ত।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম (এন১) মহাসড়কের ৮৭ শতাংশ নিম্নমানের। এর মধ্যে ৭২ শতাংশ কালো তালিকা বা এক তারকা গ্রেডের। আর ১৫ শতাংশ লাল তালিকা বা দুই তারকা গ্রেডের। এছাড়া ঢাকা-সিলেট (এন২) মহাসড়কের ৪৪ শতাংশ, ঢাকা-ময়মনসিংহ (এন৩) মহাসড়কের ৯৩, জয়দেবপুর-জামালপুরের  (এন৪) ৬০, জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গার (এন৪০৫) ৫৭, ঢাকা-বাংলাবান্ধার (এন৫) ৭৬, কাশিনাথপুর-রাজশাহীর (এন৬) ৮১, দৌলতদিয়া-মংলার (এন৭) ৭৫ ও ঢাকা-পটুয়াখালী (এন৮) মহাসড়কের ৮২ শতাংশ নিম্নমানের।

গুণগত মান খারাপ হওয়ায় বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোয় দুর্ঘটনাও ঘটছে বেশি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটিতে দুর্ঘটনা যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে দুর্ঘটনাপ্রবণ মহাসড়কের ১০ গুণ। অন্যান্য মহাসড়কের অবস্থাও একই রকম। ফলে বাংলাদেশের অধিকাংশ মহাসড়ক বিশ্বের মৃত্যুঝুঁকিপূর্ণ সড়কের তালিকায় রয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মহাসড়ক ন্যূনতম চার লেন ও সড়ক বিভাজক থাকতে হয়। অথচ বাংলাদেশের ৯৬ শতাংশ মহাসড়কই দুই লেনের। ফলে এগুলোয় কোনো সড়ক বিভাজক নেই। তবে ৭৭ শতাংশ মহাসড়কের মাঝে বিভাজক লাইন চিহ্ন টানা আছে। এছাড়া শতভাগ মহাসড়কেই সাইকেল বা অযান্ত্রিক যানের জন্য পৃথক লেন নেই। মাত্র ১ শতাংশ মহাসড়কের দুই পাশে নিরাপত্তামূলক বেষ্টনী বা সীমানা প্রাচীর রয়েছে।

৭৬ শতাংশ মহাসড়কের পাশে গাছপালা রয়েছে। তবে অধিকাংশ সড়কের বাঁকে গাছ দৃষ্টি প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। আর ৯০ শতাংশ সড়কের ঢালু ঠিকভাবে না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে যায়। এছাড়া কোনো মহাসড়কেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। ৯৯ শতাংশ সড়কের উপরিভাগের (পেভমেন্ট) পুরুত্ব এক মিটারের কম। মহাসড়কের ৯৫ শতাংশ মোড়েই কোনো সিগন্যালিং ব্যবস্থা নেই। ৩৫ শতাংশ মহাসড়ক খুবই সরু বা অপ্রশস্ত। আর ৪০ শতাংশ মহাসড়ক মাঝারি ধরনের প্রশস্ত। মোটরসাইকেল চলার জন্য পৃথক কোনো ব্যবস্থাও নেই এগুলোয়।

৯৮ শতাংশ মহাসড়কে গাড়ির ন্যূনতম গতিবেগ উল্লেখ থাকলেও গতি ব্যবস্থাপনা বা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেই। মাত্র ৩২ শতাংশ মহাসড়কের অবস্থা ভালো। তবে মহাসড়কে অবস্থিত কালভার্টের ৯৫ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। ৭৩ শতাংশ মহাসড়কেই সড়কবাতি নেই। ৭৮ শতাংশ সড়কের অবস্থান ও পরবর্তী জেলার নাম উল্লেখ নেই। সব মহাসড়কেই পথচারীদের হাঁটতে দেখা যায়, যা মহাসড়কের বৈশিষ্ট্য নয়।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে মহাসড়কের প্রায় তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো স্থাপনা বা বসতভূমি থাকার কথা নয়। অথচ বাংলাদেশে ৩৭ শতাংশ মহাসড়কের পাশে রয়েছে কৃষিজমি। এছাড়া ২১ শতাংশ মহাসড়কের পাশে বসতভূমি, ২৬ শতাংশের পাশে বাণিজ্যিক স্থাপনা (দোকান, বাজার প্রভৃতি) ও ৩ শতাংশের পাশে শিল্প-কারখানা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক ডিন ড. মুহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, মহাসড়কের মানোন্নয়নে এগুলো চার লেনে উন্নীত করা জরুরি। কিন্তু জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রামের ১৯০ কিলোমিটার আট বছরেও চার লেন হয়নি। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনের কাজও চলছে চার বছর ধরে। আর অন্যান্য জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কোনো উদ্যোগই নেই। এ অবস্থা উত্তরণে প্রয়োজন পরিকল্পিত ও দ্রুত বিনিয়োগ।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. মো. শামছুল হক বলেন, মহাসড়ক অন্তত চার লেনের হতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় মহাসড়কগুলো দুই লেনের। সড়কের দুই পাশে সীমানাও নেই। আর যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক যানবাহন চলছে একই সঙ্গে। দীর্ঘ পথ ভ্রমণের সময় সড়কের পাশে যানবাহন থামার কোনো ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ মহাসড়কের সব বৈশিষ্ট্যই বাংলাদেশে অনুপস্থিত। তাই এগুলোকে মহাসড়ক বলা কঠিন।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।