সংবাদ শিরোনামঃ

গণআন্দোলনের ডাক ** সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও ব্যর্থতার কারণে দেশজুড়ে গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে ** বিচারপতিদের অভিশংসন, সম্প্রচার নীতিমালা গণতন্ত্রের ওপর ডেমোকিসের ছুরি ** ইরাকে পশ্চিমাদের হোলি খেলা ** অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন ** সরকার স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ভিত্তিমূলে আঘাত করছে ** বন্যাকবলিতদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ প্রয়োজন ** হীনম্মন্যতাবোধ এবং সেবাদাসদের দৌরাত্ম্য ** সাম্রাজ্যবাদ ও কাজী নজরুল ইসলাম ** পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেভাবে উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর ** উপমহাদেশে রেল দুর্ঘটনার শীর্ষে বাংলাদেশ, ক্ষয়ক্ষতিতে ভারত ** বন্যাপরিস্থিতির চরম অবনতি ** মুসলমানদের অনৈক্যের কারণেই ইসরাইল গাজায় নির্বিচার গণহত্যা চালাচ্ছে **

ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪২১, ২৫ শাওয়াল ১৪৩৫, ২২ আগস্ট ২০১৪

সরকার স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ভিত্তিমূলে আঘাত করছে

॥ কামরুল হাসান॥
বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের ওপর ন্যস্ত করা হচ্ছে। এর ফলে সরকার স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ভিত্তিমূলে আঘাত করছে। এছাড়াও এখন বিচারব্যবস্থা কতখানি স্বাধীন তা নিয়েও মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছে।

গত ১৯ আগস্ট বেসরকারি টেলিভিশন বাংলাভিশনের ‘নিউজ অ্যান্ড ভিউজ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন জাতীয় প্রেস কাবে’র সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ।

সম্প্রচার নীতিমালা প্রসঙ্গে শওকত মাহমুদ বলেন, সরকার সম্প্রচার নীতিমালা চাপিয়ে দিয়েছে। এটি সম্প্রচার নীতিমালা নয়, এটি ভীতিমালা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। যদিও এ নীতিমালার আইনি কোনো অবস্থান নেই। এটি অমান্য করলে কী করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ এটি কোনো আইন নয়।

তিনি আরো বলেন, অনলাইনের নীতিমালা আলাদাভাবে করা হবে। সম্প্রচার নীতিমালার ভেতরে অনলাইনকেও নিয়ে আসা হয়েছে। টকশোতেও স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারব না।

শওকত মাহমুদ বলেন, বিএনপি সংবাদপত্র ও বাকপ্রকাশের স্বাধীনতা রাখতে চায়। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সম্প্রচার নীতিমালা এমনভাবে তৈরি করেছেন যেখানে সাংবাদিকেরা সংবাদ প্রচার করতে গেলে তথ্যমন্ত্রণালয় থেকে ফোন আসবে।

তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী কমিশন করে ৪ মাস পরে এই সম্প্রচার নীতিমালা করতে পারতেন। কিন্তু তারা এত আগে কেন নীতিমালা তৈরি করলেন। তথ্যমন্ত্রী মনে করছে এই সরকার ৪ মাস পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবে না বা মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তিনি বলেন, আইনের আগে নীতিমালা হয় না।

বাংলাদেশে কি সুশাসন আছে?

গত ১৪ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বাংলাভিশন টিলিভিশনের ‘নিউজ অ্যান্ড ভিউস’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশে কি শাসন আছে? শাসন থাকলে তা সু অথবা কু কোনো একটা মাত্রায় উপনীত হবে। কিন্তু বর্তমানে দেশের যে অবস্থা তাতে স্পষ্ট বোঝা যায় শাসনের ছিটে-ফোঁটার লেশ মাত্র নেই। শুধু পরিপূর্ণ অরাজকতার উপর দেশ টিকে আছে।

ড. সা’দত হুসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান।

সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন মন্ত্রীর চেয়ে সাধারণ জনগণের ক্ষমতা অধিক। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে যে আবহাওয়া চলছে তাতে তার উল্টো দৃশ্য দেখা যায়। দেশে আইন-শৃঙ্খলার যে করুণ অবস্থা সেখানে শাসনের নামে চলছে অত্যাচার। অন্যদিকে দেশে জনগণের প্রতিনিধি তথাকথিত মন্ত্রীরা তাদের সঠিক দায়িত্ব সম্পর্কে উদাসীন। সমাজকল্যাণমন্ত্রী অশালীন এবং অশোভন বক্তব্যের দ্বারা সাধারণ জনগণের বিরক্তি উৎপাদন করছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর আচরণ হতে প্রমাণিত যে তার কোনো বিদ্যা ও শিক্ষা নেই। কারণ মানুষ বিবেচনা করতে à¦¹à§ŸÑ à¦†à¦šà¦°à¦£, বচন, বসন এবং বিচরণ দিয়ে। সমাজকল্যাণমন্ত্রী কীভাবে মন্ত্রিত্ব পেলেন তা এখন শুধু প্রশ্ন। আমাদের দেশে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছ্।ে অথচ এর দায় কোনো মন্ত্রী নিতে চায় না। সাম্প্রতিককালে নৌ দুর্ঘটনায় অনেক মানুষের মৃত্যু হলো। আমার মতে নৌ মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। যদিও পদত্যাগ কোনো সমাধান নয়, তবে পদত্যাগ হল প্রতীক। এই সব মন্ত্রী মন্ত্রীসভায় থাকার চেয়ে না থাকাই উত্তম।

সরকার মিডিয়াকে বোবা এবং বোকা বানানো চেষ্টা করছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গত ১৩ আগস্ট জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় চ্যানেল আইয়ের ‘তৃতীয়মাত্রা’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, চালাক হওয়া ভালো তবে নিজে বোকা হয়ে অন্যদের বোকা বলা বা বানানোর চেয়ে বড় বোকামি আর হয় না। সম্প্রচার নীতিমালার মাধ্যমে বর্তমান সরকার মিডিয়াকে বোবা এবং বোকা বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

মইনুল হোসেন বলেন, গণতন্ত্রের মূলভিত্তি হলো বাক-স্বাধীনতা। রাষ্ট্রে জনগণের কথা বলার অধিকার সর্বাগ্রে। যেখানে জনগণের কথা বলার অধিকার থাকে না, সেখানে অন্য কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। বোবা লোকের কথা বলার কী কী অধিকার তা নিয়ে আলোচনা করার কোনো প্রয়োজন হয় না। কারণ বোবা লোকের বাক-স্বাধীনতা থাকে না।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা ২০১৪ এর মধ্যে রেডিও টেলিভিশনের কোনো নীতি নেই, শুধু রয়েছে সংবাদপত্রের। অর্থাৎ সাংবাদিকদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সম্প্রচার নীতিমালা তাই বলে। অথচ যে সরকার নিজেই বৈধ নয় সেই সরকার কীভাবে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে, কীভাবে নীতি নির্ধারণ করে।

নরম কর্মসূচিই বিএনপির জন্য লাভজনক

সিনিয়র সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান গত ১৩ আগস্ট মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঞ্চালনায় চ্যানেল আইয়ের ‘আজকের সংবাদপত্র’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির উচিত হবে স্বাভাবিক এবং সৃজনশীল কর্মসূচি পালন করা। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সাথে নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা। বিএনপি সামনের দিনে যত বেশি নরম কর্মসূচি পালন করবে ততই তারা রাজনৈতিক দিক দিয়ে লাভবান হবে। পক্ষান্তরে কর্মসূচি যত জটিল হবে সরকারের পক্ষ হতে ততবেশি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হবে।

নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ঈদের পর বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি মোটামোটি নিরিবিলি কর্মসূচি পালন করেছে। বিএনপি যদি মারমুখী আন্দোলনের কর্মসূচি হাতে নিত তবে তা নিজেদের জন্য অত্যন্ত আত্মঘাতি বলে বিবেচিত হত। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি কোনো মারমুখী দল নয়। এরা অত্যন্ত শান্ত মেজাজের একটি রাজনৈতিক দল।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার আলোকে বিএনপি আওয়ামী লীগের চেয়ে অনেক পিছিয়ে এবং দুইদলের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক পার্থক্য রয়েছে। ফলে দুই দলের রাজনৈতিক গতি ভিন্ন ধাচের। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগের মতো বা তাদের সাথে তাল মিলিয়ে রাজনীতি করা বিএনপির জন্য মোটেও উপযুক্ত হবে না। কারণ সঠিক আবহাওয়া ছাড়া যেমন ঠিক মতো খেলা সম্ভব নয় ঠিক তেমনি উপযুক্ত আবহাওয়া ছাড়া রাজনীতির খেলা সম্ভবপর নয়।

সম্প্রচার নীতিমালা ভুল

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সম্প্রচার নীতিমালা ভুল। এই নীতিতে সমালোচনার বহু দিক রয়েছে। নীতিমালা যারা তৈরি করেছেন, তারা ব্যক্তি স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা বোঝেন না। জ্ঞান সম্পর্কে তাদের ধারণা কম।

গত শনিবার রাতে বাংলাভিশনে ‘নিউজ অ্যান্ড ভিউজ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার পরিষ্কার নীতিমালা। এই ধরনের নীতিমালা প্রণয়ন করার কোনো প্রয়োজন নেই। সংবিধান ব্যক্তি, বিবেক ও সম্প্রচারের নির্ভরতা দিচ্ছে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কোনো নির্বাচন বলা যাবে না। যারা নির্বাচন করেছেন তারাও বলেন। যেহেতু এটি নির্বাচন নয় সেহেতু এ সরকারকে নির্বাচিত সরকারও বলা যাবে না। দেশের মধ্যে যে অস্থিরতা রয়েছে তা জনগণ দেখছে। সংসদে কোনো বিরোধী দল নেই। বিরোধী দল মন্ত্রিসভায় রয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন প্রসঙ্গে মান্না বলেন, সুকান্তের জন্মদিন ১৫ আগস্ট। সুকান্তের জন্মদিন পালন করা যাবে তাহলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দিন মারাগেছে। আমি চাই না এ দিন কোনো উৎসব হোক। এই মাসেই শেখ কামাল ও শেখ ফজিলাতুল নেছার জন্মদিন। তাদের জন্মদিনে কেক কেটেছে কি-না তা বড় কথা নয়। কিন্তু বিবৃতি দেয়া হয়েছে।

প্রত্যেকটি খুনের জন্য সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থা দায়ী

মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সেবা পণ্য হয়েছে। সংবিধানে জনগণের জন্য ৫টি মৌলিক অধিকারের কথা উল্লেখ à¦°à§Ÿà§‡à¦›à§‡Ñ à¦…à¦¨à§à¦¨, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান। রাষ্ট্রে এসব যোগান দেয়ার জন্য প্রত্যেক সরকারই সংবিধান নিয়ে শপথ করে। এর পরেও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাইভেট হাসপাতালে ভিন্ন দামে চিকিৎসা সার্ভিস দিয়ে থাকেন। এটি সংবিধান বিরোধী ও রাজনৈতিক। এর প্রত্যেকটি খুনের জন্য সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থা দায়ী বলে জানিয়েছেন দৈনিক ইংরেজি পত্রিকা নিউ এজে’র সম্পাদক নূরুল কবীর।

গত ১৯ আগস্ট মঞ্জরুল আলম পান্না’র উপস্থাপনায় একুশে টেলিভিশনে ‘একুশের রাত’ টকশোতে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে চিকিৎসা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

নূরুল কবীর বলেন, সরকারগুলো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে চিকিৎসা নিয়ে ব্যবসা করে।

হাসপাতাল প্রসঙ্গে নূরুল কবীর বলেন, আমরা এমনটি একটি রাজনৈতিক-অর্থনীতির মধ্যে বসবাস করছি যেখানে সবকিছুই পণ্য। শিক্ষা, সাংবাদিকতা, স্বাস্থ্য সবই পণ্য। সরকার, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও অধ্যাপকের সজান্তে প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে ওঠেছে। এসব প্রাইভেট হাসপাতালগুলো স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা করবে।

তিনি আরো বলেন, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেন। তাদেরকে দিনে ২০-২৫ জন রোগী দেখতে হয়। এখন পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা হয়।

বিচারপতিদের অভিশংসনের প্রয়োজন আছে কি?

প্রতিটি জিনিসের পরিবর্তনের একটা উপযুক্ত সময় থাকে। যদি তা বর্তমান ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় তখনই তার পরিবর্তন করা উচিত। বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে সুপ্রিম জুডিশিয়ালের যে ব্যবস্থা রয়েছে এটা দুর্বল, কাজ করছে না কিংবা এর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের কোনো প্রমাণও নেই । যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তার সংস্কারের প্রয়োজন হয়, কিন্তু যার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই তার সংস্কারের প্রয়োজন কেন? কেনই বা তড়িঘড়ি করে সরকার এ ব্যাপারে এরকম পদক্ষেপ নিচ্ছে তা আমার বোধগোম্য নয়। ১৯৭৫ সালের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগ এবং বরখাস্তের একক ক্ষমতা ছিল রাষ্ট্রপতির হাতে। পরে রাষ্ট্রপতি একক ক্ষমতা থেকে বাংলাদেশে সুপ্রিম জুডিশিয়ালের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় এবং তার পর এভাবেই চলে আসছে। সব কিছু ঠিক থাকার পরও কেন বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের উপর দেয়া হচ্ছে তা এখনও পরিষ্কার নয়।

আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক গত ১৮ আগস্ট ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে খালেদ মুহিউদ্দীনের সঞ্চালনায় ‘আজকের বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে একথা বলেন।

আদর্শিক নয়, ঐতিহাসিক বিভেদ দুই দলে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল পরস্পরের প্রতি দোষারোপের রাজনীতি করে আসছে। এই ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনোরূপ মীমাংসার ভাবভঙ্গি লক্ষ করা যায় না। এরা একে অপরকে শুধু অভিযোগের চিন্তায় মগ্ন থাকে। এর পেছনে দুই দলের রাজনৈতিক দলীয় সংকীর্ণ লক্ষ আছে।

সিনিয়র সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান গত ১৭ আগস্ট বৈশাখি টেলিভিশনের ‘জিরো আওয়ার’ অনুষ্ঠানে একথা বলেন।

নাঈমুল ইসলাম খান বলে, বাংলাদেশে দুটি রাজনৈতিক দল একটি আওয়ামী লীগ এবং অন্যটি বিএনপি। দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক অনেক পুরোনো। এদের মধ্যেকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, আদর্শ এবং পরিচালনায় কোনো ফারাক নেই। কিন্তু বর্তমানে এই দুই প্রধান রাজনৈতিক দল ইতিহাসের আশ্রয় নিয়ে পার্থক্য রচনা করছে। যার দরুণ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে এরা পৃথকীকরণ করার চেষ্ঠা করে। যার একদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অন্যদিকে শহীদ জিয়াউর রহমান।

তিনি আরো বলেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরকে আক্রমণ নিয়েই ব্যস্ত। মানুষ সাধারণ আক্রমণ করে দুর্বল জায়গায় অর্থাৎ যেখানে আক্রমণ করলে বেশি আঘাত দেয়া যাবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে আক্রমণাত্মক ভাবভঙ্গি। আওয়ামী লীগ ১৫ আগস্ট পালন করছে জাতীয় শোকদিবস, অন্যদিকে বিএনপি পালন করছে জন্মদিন। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের এহেন আচরণে ইতিহাসের বিশেষ কোনো ক্ষতি না হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং সর্বোপরি জনগণের শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে।

রাজনীতিতে চাঁদাবাজি নতুন শব্দ নয়

রাজনীতিতে দল কেন্দ্রিক চাঁদাবাজি নতুন কোনো বিষয় নয়। বাংলাদেশের অতীতের ইতিহাসে এটা সচল ছিল, বর্তমানেও এর প্রকোপ কম নয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলে এর চাঁদাবাজির প্রবণতা স্পষ্ট ধরা পড়ছে, তাই বলে যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তবে চাঁদাবাজির চিত্র ভিন্ন কিছু হতো না।

বাংলাভিশনের বার্তা প্রধান মোস্তফা ফিরোজ গত ১৭ আগস্ট একাত্তর টেলিভিশনের ‘একাত্তর জার্নাল’ একথা বলেন।

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, চাঁদাবাজি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন শব্দ নয়। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৫ আগস্টের নামে নানাবিধ চাঁদাবাজিতে মরিয়া হয়ে উঠে। ঠিক একইভাবে যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে তারাও চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত থাকতো। দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে তাদের চাঁদাবাজির খবর অতিশীঘ্র শোনা যায়। অন্যদিকে বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে তাদেরও চাঁদাবাজির কেচ্ছা শোনা যেত।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হবে যারা দলের কাঁধে বন্দুক রেখে চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া। কারণ এতে দলের নাম ব্যবহার করে দলে ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে।

শেখ মুজিব ইয়াহিয়া খানের কাছে লিখেছেন : আমি তো স্বাধীনতা ঘোষণা করিনি

বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি বলেছেন, তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান ’৭১ সালে লায়নপুরে ইয়াহিয়া খানকে à¦²à¦¿à¦–à§‡à¦›à¦¿à¦²à§‡à¦¨Ñ à¦†à¦®à¦¿ তো স্বাধীনতা ঘোষণা করিনি। ভারতীয় সেনা বাহিনী পূর্ব-পাকিস্তান দখল করেছে।

গত ১৭ আগস্ট বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভি’র ‘আওয়ার ডেমোক্রেসি’ অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে আলোচনার বিষয় ছিল ‘বিএনপির আন্দোলন ও সরকারের ভূমিকা’। আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক অপু উকিল।

নিলোফার চৌধুরী মনি আরো বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান কোন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন? শাহ আজিজদের মতো লোকজনকে উপদেষ্টা বানিয়ে পাকিস্তানে কেন গিয়েছিলেন?

তিনি বলেন, জাতির জন্য ১৫ আগস্ট অবশ্যই শোক দিবস। এজন্য কী সবাই কাজকর্ম বন্ধ করে ঘরে বসে à¦¥à¦¾à¦•à¦¬à§‡Ñ à¦¤à¦¾ হয় না। এই দিন কি কারো বিয়ে হবে না? এই দিন কি কেউ জন্মদিন পালন করবে না? বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার জন্মদিনে কাউকে বলেন না Ñ à¦†à¦®à¦¾à¦° বাসায় আসুন কেক কাটব।

নিলোফার চৌধুরী মনি আরো বলেন, যারা আগস্ট মাসে কর্মসূচি করতে দেন না, তারাই ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

ঢাকার নয় আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত : ড্যান মজিনা

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা বলেন, বাংলাদেশে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত হিসেবে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখে যোগদান করি। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লর রহমানকে বলেছিলাম, ঢাকার নয় আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। তাই আমি বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা পরিদর্শন করতে চাই। তখন রাষ্ট্রপতি আমার এই ইচ্ছার প্রশংসা করেছিলেন।

গত ১৪ আগস্ট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তরের বিশেষ টকশো একাত্তর সংযোগে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সামিয়া জামান।

এদেশে আসার সময় এমন কোনো ইচ্ছা ছিল কি-না যা আপনি পূর্ণ করতে পেরেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে মজিনা বলেন, চারটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমি এ দেশে এসেছিলাম। সচিব পর্যায়ে আলোচনা। যা ২০১২ সালে করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মাঝে অংশিদারিত্বমূলক সম্পর্ককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং দুই দেশের নিরাপত্তা ও সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য আলোচনা করা।

আমেরিকা ও আমেরিকার দূতাবাস চরমপন্থী সংগঠন যেমন হেফাজত ও অন্যান্য ইসলামী চরমপন্থী সংগঠনের প্রতি নরম আচরণ করে থাকে, এ ব্যপারে আপনি কি বলবেন? এ প্রশ্নের উত্তরে মজিনা বলেন, এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক একমাত্র বাংলাদেশের সঙ্গে। গত জুন মাসে হেরিটেজ ফাউন্ডেশন (প্রধান থিঙ্কট্যাঙ্ক) এ বিষয়ে আমি বক্তব্য দিয়েছি। সেখানে আমি বলেছি, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সুদৃঢ়, গভীরতম এবং অন্তরঙ্গ।

৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে মজিনা বলেন, ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্টভাবে আগেই বলেছি এবং এর কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। এনিয়ে একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্র সরকার বক্তব্য দিয়েছে।

এ পাতার অন্যান্য খবর

অন্যান্য মিডিয়া bdnews24 RTNN Sheersha News barta24 Prothom Alo Daily Nayadiganta Jugantor Samakal Amardesh Kaler Kantho Daily Ittefaq Daily Inqilab Daily Sangram Daily Janakantha Amader Shomoy Bangladesh Pratidin Bhorerkagoj Daily Dinkal Manob Zamin Destiny Sangbad Deshbangla Daily Star New Age New Nation Bangladesh Today Financial Express Independent News Today Shaptahik 2000 Computer Jagat Computer Barta Budhbar Bangladesherkhela Holiday Bangladesh Monitor BBC Bangla Pars Today
homeabout usdeveloped by

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ মো. তাসনীম আলম।

এটিএম সিরাজুল হক কর্তৃক হক প্রিন্টার্স ১০/৮ আরামবাগ, ঢাকা-১০০০ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত। যোগাযোগের ঠিকানাঃ ৪২৩ এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা - ১২১৭।

ফোন: ৮৮ ০২ ৪৮৩১৯০৬৫, ই-মেইল: sonarbanglaweekly@gmail.com, weeklysonarbangla@yahoo.com, সার্কুলেশন: ০১৫৫২৩৯৮১৯০, বিজ্ঞাপন: ৪৮৩১৫৫৭১, ০১৯১৬৮৬৯১৬৮, ০১৭৩৪০৩৬৮৪৬।