ছড়া কবিতা
৪ জুন ২০২৫ ১২:৩৮
আসলো রে কুরবানি
ফরিদ সাইদ
ঈদের খুশি ঈদের খুশি
ফাহিম খানের মনে,
এই খুশিতে ভাসছে দেশ
ভাসছে সকল জনে।
দিন মাস সাপ্তা গেলো
দিন প্রতিদিন গুনি,
মুসলমানের পবিত্র ঈদ
আসলো রে কুরবানি।
কিনেছে এবার কালো গরু
গরুর অনেক তেজ,
গরুর পাশে দাঁড়ালে পরে
গরুতে নাড়ায় লেজ।
লেজের বাড়ি খেয়ে এবার
মনে যে পেলো ভয়,
ভাবছে তাই ঈদের দিন
কী জানি কী হয়?
আম
মুহাম্মদ ইব্রাহিম বাহারী
বাম্পার ফলনে নেই আর দাম
অনাদরে ছড়াছড়ি
কাদা মেখে গড়াগড়ি
কত বদনাম!
টক লাগে আঠা বেশি
ছুড়ে ফ্যালে প্রতিবেশী
দাড়ি বেশি ছাল পুরো
কী যে আজ হলো শুরু
অবান্তর তথ্য,
বানায় না তাই বুঝি
আজ আমসত্ত্ব।
ছোট বড় সব গাছে
কত শত আম আছে
তাই অপরাধ?
রাস্তায় আম ঢেলে
করবে ক্যান প্রতিবাদ?
হৃদ্যতা ভালোবাসা
আমপ্রীতি নেই,
আম ছুড়ে ফেলে দিলো
কুদ্দুসের বেয়াই।
আম নিয়ে বেয়াদবি
মুখ করো ভার?
আগামী বছর গাছে
ঝুলবো না আর।
শ্রমের দাম
কুলসুম বিবি
মাটির বুকে ফসল ফলাই
রোদে পুড়ে গায়ের চাম
নিত্য খাবার জোগাড় করি
পায়ে ফেলে মাথার ঘাম।
এই সমাজে বেঁচে আছি
মূল্যহীন এক পুরো ধাম
ভেঙে গড়ে সমাজ সাজাই
এটাই হলো আমার কাম।
কষ্টের মাঝে দিন যে কাটে
দেয় না কেহ শ্রমের দাম
দিবস এলে মুখে মুখে
শুনি শুধু শ্রমিক নাম।
মধু মাসের ফল
আনোয়ারুল ইসলাম
বোশেখ শেষে জ্যৈষ্ঠ এলো
এলো ফলের মাস
তপ্ত রোদে দেহ ঘেমে
অস্বস্তিতে বাস।
আম কাঁঠাল আর লিচুর যে দাম
চায় না খেতে মন
চড়া দামে না খেতে ফল
করি মনে পণ।
রৌদ্র তাপে ডাবের পানি
দেহ করে হিম
লেবুর রসে চিনি খেতে
মনে জাগে থিম।
কালো জামে রক্ত বাড়ে
বাড়ে দেহে বল
খেতে মজা ফলের রাজা
মধু মাসের ফল।
মধুর মাসে মধু ফল
আসাদ সরকার
মধুর মাসে গাছে পাকে
টসটসে লাল ফল,
পাকা ফলের মিষ্টি গন্ধে
জিভে আসে জল।
সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে
ঝুলছে ফজলি আম,
ভর দুপুরে গাছে পাকে
কালো কালো জাম।
ফলের ভারে ভাঙবে বুঝি
লিচু গাছের ডাল,
কাঠবিড়ালি লিচু খেয়ে
ফুলায় দুটি গাল।
মধুর মাসে আরো পাকে
জাতীয় ফল কাঁঠাল,
ভাদ্র মাসে তাল না খেলে
ঘরে আসবে আকাল।
ফেসবুক
মুন্সি আব্দুল কাদির
ফেসবুক ফেসবুক
কেটে যায় রাত্রি
কাজে কামে চোখে ঘুম
হয় ভুল ভ্রান্তি।
চেয়ে চেয়ে চোখ জ্বলে
ঘুমে কাটে ফজরে
ছেলে মেয়ে কোন পথে
থাকে কিরে নজরে?
পড়া নেই গড়া নেই
সরা জ্ঞান ধরাতে
ডাটা কেনে চুরি শেখে
বোধ জাগে মরাতে।
বাজেটের পাতা
আমিনুল ইসলম কাইয়ুম
বাবার বাজেট বাদ্য-বাদক নয়,
ওষুধপত্র খাদ্য খাবার॥
ফর্দ টুপি লুঙ্গি পায়জামা-পাঞ্জাবি,
আর কিছু নেই চাবার॥
মায়ের বাজেট একই রকম
এবার বউয়ের বাজেট বলি।
তেল লবণ মরিচ পেঁয়াজ
তরিতরকারি এর বাজারে চলি॥
শায়া ব্লাউজ কাপড় ও প্রসাধনী
আরো সাবান সোডা
বাবুর বাজেট বই-খাতা-কলম
ভাজা মুড়ি অওভা॥
টাকা বাহুতে বারোটি শত,
চড়তা দাম দেখে ভাবি
কোনটি রেখে? কোনটি কিনি?
বাজারে গিয়ে আমি কবি॥
বাবার থেকে বাবুর পর্যন্ত,
কিছু কিনেই পকেটে নাই
আমার বাজেটের পাতায় শুধু
শূন্য! এতেই সুখ-পাই॥
লিচির জুস
ইব্রাহীম মনির
হায়রে লিচির জুস
নাইরে কারো হুঁশ
নোংরা পানি
ড্রামে আনি
বানায় লিচির জুস॥
লিচির ফ্লেবার মিশিয়ে
সোডিয়াম ব্যানজয়েট দিয়ে
তৈরি লিচির জুস।
করে যে অমানুষ।
আমরা যাই যে এড়িয়ে॥
হায়রে লিচির জুস
নাইরে কারো হুঁশ
তবু কিনে দিই
আদর করেই
আমরা শিশুদের সবাই॥
বাংলার মধু মাস
মোস্তাহিদুর রহমান
বারো মাস মাঝে খোদার রাজ্যে
করি যে মোরা বাস
বৈশাখ শেষে আগমন করে
বাংলার মধু মাস।
এ ঋতু আসে আমাদের পাশে
রহমতের মহাক্ষণে
ফলে ফুলে ভরে তবুও ঝরে
গ্রামের মধু বনে।
মধু মাসে সেই তপ্ত বায়ুর
আম কাঁঠালের বাগে
গন্ধে ভরে এ দেহ মন
খেতে না পাওয়া আগে।
স্বজনে ভরে বাড়ি ও ঘরে
মধু মাসের স্বাদ পেতে
বালক-বালিকা ধরে বায়না
জাম জামরুল খেতে।
মধুবন তলে পিতাহারা ছেলে
কুড়াতে খেজুর লিচু
নয়ন বুলায় সেই তরু ছায়ায়
খুঁজে খাবে ফল কিছু।
কাহারো খাদ্য কম কর প্রভু
কাহারো দিয়েছো বেশি
আজ তবু মোরা জগতের সেরা
মিলে হই প্রতিবেশী।
ফরিয়াদ
মুহাম্মদ খোরশেদ আলী মণ্ডল
এই ফরিয়াদ কবুল করো
রাব্বুল আলামিন,
বাংলাদেশের সংবিধান হোক
কুরআনের আইন॥
তুমি চাইলে সবই পারো
মোদের সাধ্য নাই,
তাই তো আল্লাহ তোমার কাছে
ফরিয়াদ জানাই,
গরীয়ান মহীয়ান তুমি
আমরা হই দিনের অধীন॥
সব ক্ষমতার মালিক তুমি
সর্বশক্তিমান,
মজলুম আমরা বাংলাদেশে
যত মুসলমান।
ছোট বড় সকলেরই করে দাও
খাঁটি মুমিন॥
ইসলামের শান্তি চাই গো
বাংলার ঘরে ঘরে,
দীনের পাগল তোমার কাছে
এই ফরিয়াদ করে,
শেষ বিচারের কঠিন দিনে
রাসূল যেন হয় জামিন॥