জাতীয় ঐক্য ও সংহতির বড় দুশমন বামরা


৪ জুন ২০২৫ ১১:৪৬

॥ সরদার আবদুর রহমান ॥
বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী চক্র দৃশ্যত বিদায় নিয়েছে। তবে এ চক্রের শিকড় এখনো মজবুতভাবে ধরে রেখেছে তাদের বাম সহযোগীরা- এ কথা কমবেশি সকলের জানা। ফ্যাসিস্ট শক্তির পলায়নের পর একটা জাতীয় ঐক্য ও সংহতি গড়ে ওঠার যে সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল, তার ভেতরে ঘুণপোকার মতো কাজ করছে এ বামপন্থি শক্তিটি। ফলে এ কথা বলা যায় যে, জাতীয় ঐক্য ও সংহতির বড় শত্রু এ বামরা।
বামদের অবদান কী?
অনেককেই প্রশ্ন করতে শোনা যায়, দেশে এ বামপন্থিদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবদান কী? এর উত্তর যদি বামদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়, তাহলে তারা কিছু জটিল তত্ত্ব কপচাবে, কিছু অবাস্তব বিবরণ আওড়াবে, আর স্বপ্নচারী হওয়ার কথা বলবে। তারা বলবে, ‘আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত ও প্রগতিশীল সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছি।’ কিন্তু এ ব্যবস্থার কোনো নির্দিষ্ট ও সুনির্ধারিত মডেল তারা প্রদর্শন করতে পারেনি, পারবেও না। একই সঙ্গে কিছু নির্দিষ্ট শব্দমালা তারা পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে। এসব শব্দের মধ্যে একদিকে আছে মেহনতি, মজদুর, শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া, সর্বহারা ইত্যাদি। আর বিপরীতে আছে পুঁজিবাদী, শোষকশ্রেণি, মহাজন, লুটেরা, মুৎসুদ্দি প্রভৃতি। এদের একটি অংশ সোভিয়েত মার্কা আদর্শের অনুগত। এরা এদেশে সশস্ত্র বিপ্লবের ডাক দিয়ে মানুষ হত্যার লাইসেন্স হাতে তুলে নেয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে তাদের একটি আক্রমণেই চাকরিরত চারজন পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পঞ্চাশ দশকের সদ্য স্বাধীন একটি দেশে এ ঘটনাকে সহজভাবে গ্রহণ করা হয়নি। তার মূল্য তাদের দিতে হয়। যদিও সেই কলঙ্কিত অধ্যায়কে তারা গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকে।
তাই বাংলাদেশে পুলিশ হত্যাসহ এরকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রথম প্রবর্তনকারী হিসেবে কমিউনিস্ট পার্টির নাম ইতিহাসে লেখা হয়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীকালে কমিউনিস্ট পার্টি আরো কিছু সশস্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায়। তাদের পরিচালিত আন্দোলনসমূহ প্রধানত সশস্ত্র ধারায় পরিচালিত হয়। পরে তারা ‘সশস্ত্র’ অবস্থা ত্যাগ করে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করে। তারা প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাঁধে সওয়ার হয়ে নিজেদের লক্ষ্য হাসিলে সচেষ্ট হয়। বামদের অন্য একটি অংশ চীনা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে মূলত খুন-খারাবির পথ বেছে নেয়। ‘গলাকাটা রাজনীতি’ নামক এ প্রক্রিয়ায় বহু মানুষকে হত্যা করলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। বরং নিজেদের মধ্যে দল-উপদল সৃষ্টি করে হানাহানিতে লিপ্ত হয়। নিজেদের লোকদের ‘শ্রেণিশত্রু’ ও ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা দিয়ে হত্যা করতে থাকে। এসব দেখে সাধারণ জনগণ তাদের চিরতরে প্রত্যাখ্যান করে। সন্দেহ নেই যে, একদা বামপন্থা পৃথিবীজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল; কিন্তু তত্ত্বগতভাবে এবং কর্মপদ্ধতিতে তা ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষত এর প্রয়োগ-কৌশল জবরদস্তিমূলক হওয়ায় কোনো পর্যায়ের মানুষের কাছেই তা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। ‘শ্রেণিশত্রু খতম’ ও ‘গলাকাটা’ রাজনীতির লাইন মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত ও আতঙ্কিত করেছে। ফলে এ মতবাদের কাছে ভিড়তে জনগণ সাহসী হয়নি, উৎসাহও পায়নি। বরং তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
পরবর্তীকালে কিছু বাম বুদ্ধিজীবী ও লেখকের রচনায় সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার এবং নষ্ট রাজনীতি মেরামতের উপদেশ ও পরামর্শমূলক বাণী প্রচার করতে দেখা যায়। সশস্ত্রপন্থার সমর্থক বামপন্থিদের অনেকেই এ লাইনে ব্যর্থ হয়ে এর সমালোচনা শুরু করেন এবং এর সংশোধনের পক্ষে বক্তব্য দিতে থাকেন। দেখে মনে হয় যে, অন্য কোনো গ্রহ থেকে কেউ এসে এ সন্ত্রাসী ও নষ্ট কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছে। এসব যে মূলত বাম রাজনীতিরই ভয়ঙ্কর অবদান, সে কথা তারা ভুলিয়ে দিতে চান।
ফ্যাসিবাদের বি-টিম
কিন্তু প্রশ্ন হলো, তারা কি থেমে থেকেছে? বরং তারা কৌশল বদলে নানাপ্রকার সাংস্কৃতিক সংগঠন, বেসরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যমকে কব্জায় নিয়ে সংগঠিত থাকার এবং তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ করে চলেছে। চব্বিশের জুলাই-আগস্টের জনতরঙ্গে ফ্যাসিবাদের ভেসে যাওয়াকে কেন্দ্র করে একটি জাতীয় ঐক্য ও সংহতির জন্ম নিতে দেখা যায়। অতঃপর সেই ফ্যাসিবাদের বি-টিম হয়ে বামরা এখন জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বিনষ্ট করার মিশন হাতে নিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। তারা নিজেদের বামাদর্শ প্রতিষ্ঠা করার চেয়ে এখন বেশি আগ্রহী দেশপ্রেমিক শক্তিকে বিভাজিত করার দিকে। এ বিভাজনের মাধ্যমে তাদের নেপথ্যের শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নে সুবিধা করতে পারবে বলে তারা মনে করছে। এদের একটি অংশ একাত্তরের পর দেশে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাকশালের অংশীদার হয়। আর বিগত দেড় দশকের ফ্যাসিবাদের শাসন শক্ত অবস্থান জারি থাকার জন্য এ বামরা উল্লেখযোগ্যভাবে দায়ী। এদের একাংশ সরাসরি সহযোগী ছিল এবং অপর অংশকে সোচ্চার বিরোধিতা করতে দেখা যায়নি।
২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল দুঃশাসন, নির্বাচন তামাশায় পরিণত করে জবরদস্তি ক্ষমতা ধরে রাখা, ভয়াবহ দমন-পীড়ন, অভূতপূর্ব মাত্রায় দুর্নীতি, দখল-লুণ্ঠন এবং সম্পদ পাচার, সীমাহীন ঔদ্ধত্য এবং সব শেষে নির্বিচার নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও জুলুমের বিরুদ্ধে। এরকম শাসনব্যবস্থার অবসান এবং বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রত্যাশাও তৈরি হয়েছিল গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে। কিন্তু প্রত্যাশার বিপরীতে তারা একাত্তরের আওয়ামী বয়ানকে নতুন করে ঝালাই করতে চেষ্টা করছে। তাদের একটি শাখা সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন বুয়েটের শহীদ শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যা করা ‘সঠিক’ ছিল বলে মন্তব্য করেছে। তারা হেফাজতের ওপর ম্যাসাকারকে জায়েজ মনে করে। আইনের শাসনের বিপরীতে ‘শাহবাগী মব’ তৈরি করে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ‘রায়’ আদায় করার কৃতিত্ব তাদের। আর এখন যে ঐক্য ছিল ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে, বামপন্থিরা পানি ঘোলা করে সেই জাতীয় ঐক্য নষ্ট করতে চাচ্ছে।
মাটি ও মানুষের সঙ্গে সম্পর্কহীন
কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতিতে বামপন্থিরা একটা অবস্থান ধরে রাখলেও সেটি মোটেও জনপ্রিয় নয়। তারা তরুণদের বিপ্লবের নামে এক ধরনের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে। তারা তরুণদের আশ্বস্ত করে যে, বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে তারা এ বিপ্লবের কৌশল বা ফলাফল সম্পর্কে বাস্তবসম্মত কোনো দিকনির্দেশনা দিতে পারে না। বাম নেতারা নিজেদের শ্রমিক, কৃষক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করলেও বাস্তবে তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন জীবনযাপন করে। উচ্চপর্যায়ের বাম নেতাদের অনেকেই আর্থিকভাবে সচ্ছল, বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, গাড়ি ও ব্যবসার মালিক। অনেক বাম নেতা এনজিও, উন্নয়ন সংস্থা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চপদে অধিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করেন। বিশ্লেষকরা বলেন, এখনকার বামদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো, তারা জনগণের বিশ্বাস ও অনুভূতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি। বরং বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ধারণ করে, বামপন্থিরা তাকে বরাবরই অগ্রাহ্য করেছে, ফলে জনসাধারণের মুখোমুখি হওয়ার হিম্মত তাদের হয় না। আন্তর্জাতিক বামপন্থি মতাদর্শ অনুসরণ করতে গিয়ে তারা দেশের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বাস্তবতাও উপেক্ষা করেছে।
তারা নির্বাচনী মূলধারায় কখনোই টিকে থাকার সাহস রাখে না। বরং নির্বাচন ও সংসদকে বিভিন্ন সময়ে ‘দুই কুকুরের কামড়াকামড়ি’ বলে গালাগালি করেছে। সংসদকে ‘শুয়োরের খোঁয়াড়’ আখ্যায়িত করেছে। তথাকথিত সাম্প্রদায়িকতাকে প্রধান শত্রু হিসেবে দেখার নামে ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসনকে আড়াল করে রেখেছে। ফ্যাসিবাদকে ‘মন্দের ভালো’ বলে তাদের টিকে থাকার জন্য শক্তি জুগিয়েছে।
সন্ত্রাসের আমলনামা
আদর্শ বা মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যক্তি বা দলীয়ভাবে অস্ত্রের ব্যবহার ও প্রয়োগ কখনোই গ্রহণযোগ্য হয়নি। এদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী আন্দোলনের কৌশলের সূত্রপাত করে স্বদেশিরা এবং এ কৌশল হস্তগত করে ব্যবহার করে বামপন্থিরা। আর তারই প্রয়োগ ঘটে দুই বাংলায়। জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা প্রভৃতি অস্বাভাবিক পথ ও পন্থার প্রচলনকারী হলো বামপন্থি আন্দোলনের অগ্রসৈনিকরাই। এরাই এদেশে বোমা উৎপাদনের সূচনা করে, বিস্ফোরণ ঘটায়, আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির ওয়ার্কশপ পর্যন্ত স্থাপন করে। এটিকে তারা কুটির শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যায়। থানা ও ফাঁড়ি লুট করে অস্ত্র সংগ্রহ করার কৌশল তারাই চালু করে। পুলিশ হত্যা ও ঘায়েল করার পদ্ধতির প্রয়োগের সূচনা হয় এদের মাধ্যমে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়ে বিপ্লবের তহবিল সংগ্রহ করার নিয়মও তাদেরই চালু করা। তথাকথিত ‘গণ আদালত’ স্থাপন করে এবং গ্রামে-গঞ্জে বিচার-সভা বসিয়ে মৃত্যুদণ্ড প্রদান ও তা কার্যকর করে বিচারবহির্ভূত হত্যার পদ্ধতি চালু করে বামপন্থার অনুসারীরা। বেআইনি ও অবৈধ অস্ত্রের আমদানি, সংরক্ষণ ও অপব্যবহারের প্রচলন করে এরাই। বিদেশি রাষ্ট্রের দূতাবাসে হামলা ও কূটনীতিককে জিম্মি করে দাবি আদায়ের মতো ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ কর্মকাণ্ডও করে এ বামপন্থার অনুসারীরা। বামপন্থা প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবেই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মধ্যেও একাধিকবার হত্যাযজ্ঞ চালায় এরা। এ আন্দোলনের শুরুর দিকের অধিকাংশ নেতা ও নীতিনির্ধারকই সশস্ত্র, জঙ্গিবাদী ও চরমপন্থি পদ্ধতি ও কৌশলের মধ্য থেকে আগত। তাদের জঙ্গিবাদী কৌশল দ্বারা সমৃদ্ধ। এসব এখন ইতিহাসের অংশ। সমাজে কিছু জোতদার-মহাজন উৎপীড়ক-জুলুমবাজ চিরকাল ছিলই; আজো আছে। এদের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি হওয়া আপাতদৃষ্টিতে ন্যায়সংগত মনে হতে পারে। এ ঘৃণা উৎপাদনকে কর্মকৌশল হিসেবে ব্যবহারও ‘যুক্তিযুক্ত’ মনে হতে পারে। কিন্তু এ শোষণ-নির্যাতন বন্ধের জন্য খুনের চর্চা ও লুটপাটের সংস্কৃতি চালু করে সামাজিক পর্যায়ে অস্থিরতা তৈরি করে কোনো সমাধান দেয়ার বিষয়টি কোনো ক্ষেত্রেই সমর্থন পেতে পারে না।
দেড় দশকের ভূমিকা
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলাদেশের বাম রাজনীতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বিভিন্ন ইস্যুতে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করেছে কিংবা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বিএনপি কিংবা ইসলামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে কখনো দেখা যায়নি। তেমনি ভারতীয় স্বার্থকেই তারা প্রাধান্য দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে ভারতের বিরুদ্ধে তাদের কখনো কোনো জোরালো প্রতিবাদ ও অবস্থান দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়েছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কিংবা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তারা বড়জোর মৃদু ভাষায় কথা বলেছে। অনেক ক্ষেত্রে চুপ থেকে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রাখতে তারা সহায়তা করেছে। বেশিরভাগ বাম দল ভারতের লেজুড়বৃত্তি এবং আওয়ামী লীগের বি-টিম হয়ে কাজ করে এসেছে। বাম দলগুলো মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে আওয়ামী লীগের কিছু সমালোচনা করলেও প্রকৃতপক্ষে তারা একে অপরের পরিপূরক হিসেবেই কাজ করেছে।
ভাষ্যকারদের মতে, বামপন্থি রাজনীতি দেশের ক্যাম্পাসগুলোয় এক ধরনের বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যাম্পাসগুলোয় দেখা গেছে, তারা শত শত যুবক-যুবতীকে মাদক, ফ্রি মিক্সিং, সমকামিতার দিকে ধাবিত করে ধ্বংস করছে। এহেন জীবনাচরণ দেখে শিক্ষার্থীরা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ১০টা বাম সংগঠন কর্মসূচি ডাকলেও তাদের ব্যানার ধরার লোক থাকে না। নব্বইয়ের দশকে তারা ক্যাম্পাসে অস্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছিল। কিছুদিন আগেও তারা ‘লাল সন্ত্রাস’-এর ডাক দিয়েছিল।
আশু করণীয়
জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী এখনকার উল্লেখযোগ্য ইস্যুগুলোর মধ্যে রয়েছে- তথাকথিত সংখ্যালঘু পীড়নের নামে অপপ্রচার, জঙ্গিবাদের ধোঁয়া তুলে বিশৃঙ্খলা তৈরি, নারীর অধিকারের নামে অরাজকতা সৃষ্টি প্রভৃতি। এসব করে পানি ঘোলা করার মাধ্যমে তারা পলাতক রাজনৈতিক মহল ও তাদের অভিভাবক দেশটির পক্ষে সুযোগ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এর বিপরীতে এখন প্রয়োজন জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, দেশপ্রেমিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ড বন্ধ করা, সকলপ্রকার ফাঁদ ও ইন্ধনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করা এবং ঐক্য ও সংহতির দেয়ালকে আরো মজবুত করতে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুড়ি বন্ধ করার দিকে নজর দেয়া।