ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য সময়ের দাবি
২৯ মে ২০২৫ ১১:২৫
॥ গাজী মুহাম্মদ শওকত আলী ॥
দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর যাবত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে হতে মানুষের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে গেছে, তখনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কাছে পরাজিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে সদলবলে ভারতে পালাতে বাধ্য হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ জাতি ২৪-এর গণবিপ্লবের মাধ্যমে ভারতের আধিপত্য ও ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়েছে। দেশের মানুষ আজ মুক্ত আকাশের নিচে বিচরণ করছে, মুক্ত বচন আর মুক্ত লিখনের কথা ভাবতে পারছে। ২৪-এর গণবিপ্লবের দাবি “জাতীয় ঐক্য, বিভেদ নয়।” “দেশের উন্নয়ন, লুটপাট নয়।” ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের মুক্ত বিচরণ, বচন ও লিখন রহিত করেছিল। আজ আমরা বিচরণ, বচন ও লিখনে সম্পূর্ণ মুক্ত। তাই বলে কি আমরা যাচ্ছেতাই বলতে, লিখতে আর করতে পারি? জবাব, না। আমাদের এমন সকল আচরণ, বিচরণ, বচন বা লিখন বর্জন করতে হবে- যাতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট না হয়।
রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভক্তির ছেদ : বিএনপি ও জামায়াত বড় দুটি বন্ধুপ্রতিম দল। সম্প্রতি বিএনপির কিছু নেতার বয়ান বিভক্তিমূলক। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ করেন বলেছেন, আমরা আর “মৌলবাদের উত্থান ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড” দেখতে চাই না। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, মৌলবাদী বলতে কাদের বোঝাতে চেয়েছেন? জবাবে মির্জা ফখরুল বলেছেন, মৌলবাদী বলতে জামায়াতকে বোঝানো হয়েছে।” মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন মজলুম সাংবাদিক, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেছেন, মৌলবাদ শব্দ, এটা একটা ন্যারেটিভ। মৌলবাদ এটা মুসলমানদের বিরুদ্ধে বুশের দেয়া ‘ওয়ার এ্যাগিনিস্ট টেরর’ নামের একটা ন্যারেটিভ আর ভারতের দেয়া ন্যারেটিভ হচ্ছে, মুসলমানদের মৌলবাদী বলা। মাহমুদুর রহমান আরো বলেন, এ মৌলবাদের বয়ান দিয়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। মৌলবাদের কার্ড ফেরি করে বাংলাদেশে গুম, খুন, আয়নাঘর হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হাজার হাজার হত্যাকাণ্ড হয়েছে। মাহমুদুর রহমান মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন রাখেন- এ মৌলবাদ ব্যবহার করে কি আপনি আবারো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আর ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদকে আমন্ত্রণ জানাতে চান? তিনি আরো বলেন, মৌলবাদ শব্দ উচ্চারণ করা যাবে না, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলুন, জাতি মেনে নেবে। মৌলবাদের বয়ান দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার অর্থ হচ্ছে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও পরাজিত শক্তি ফ্যাসিবাদকে আমন্ত্রণ জানানো।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র বন্ধু না শত্রু : বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশ গড়তে বাধা হচ্ছে তিনটি- (১) ভয়, (২) শঙ্কা আর (৩) ষড়যন্ত্র। আমরা ভারতকে ভয় পাচ্ছি প্রতিবেশী বড় রাষ্ট্র বলে। আমাদের শঙ্কা হচ্ছে ভারত পাছে কী করে! আর ষড়যন্ত্র হচ্ছে, ভারত কাকে সমর্থন করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়। পারস্পরিক অবিশ্বাস থেকে ভয়, শঙ্কা আর ষড়যন্ত্রের দানা বাঁধে। ভয় দেখিয়ে, শঙ্কা সৃষ্টি করে পারস্পরিক বিভেদের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশ ভারত আমাদের জাতীয় ঐক্যে ছেদ ধরিয়ে নিকটাতীতের মতো ফায়দা লুটে নিতে চাইছে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের চিরশত্রু- এ কথাটা যে প্রজন্ম বুঝতে পারবে, তারাই হবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, বর্তমান প্রজন্ম যাদের নেতৃত্বে ২৪-এর গণবিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, তারাই জাতির সেই সকল শ্রেষ্ঠ সন্তান। সাংবাদিক নুরুল কবির বলেছেন, ভারত আমাদের শত্রু- এটা বুঝতে পারাটাই আমাদের সাফল্য। মরহুম শেরেবাংলা একে ফজলুল হক বলেছিলেন, কলকাতার বাবুরা যখন আমার প্রশংসা করবে, তখন ধরে নিতে হবে আমি আমার দেশ ও জাতির ক্ষতি করছি।
ভারত সর্বাবস্থায় আওয়ামী লীগ তথা শেখ পরিবারের পক্ষে কাজ করছে। গণবিপ্লবে শেখ হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশ হাসিনাকে গ্রহণ করতে বা আশ্রয় দিতে রাজি না হলেও ভারত তাকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। অতএব সহজেই অনুমেয় যে, শেখ পরিবার তথা আওয়ামী লীগ দেশ ও জাতির জন্য কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে আর ভারত বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু না শত্রু।
ভারত ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ থেকে স্বাধীন হতে যাওয়া বাংলাদেশকে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, যা বাংলাদেশের মানচিত্রই সাক্ষী দিচ্ছে। ভারত তাদের রাষ্ট্রগুরু চাণক্যের নীতি অনুসরণ করেই চলছে। চাণক্যের নীতি হচ্ছে, প্রতিবেশীকে শত্রু ভাবতে হবে, সুযোগ পেলে গ্রাস করে নেবে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীন হওয়া অনেকগুলো রাষ্ট্রই ভারত গ্রাস করেছে। যেমন- মুসলিম অধ্যুষিত হায়দরাবাদ, জুনাগড়, জম্মু ও কাশ্মীর ইত্যাদি। হায়দরাবাদকে দখলের পর কয়েক ভাগে বিভক্ত করে অন্যান্য রাজ্যের সাথে জুড়ে দিয়েছেÑ যাতে মুসলমানরা সংগঠিত হয়ে কোনো আন্দোলন করতে না পারে। জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারত এখনো জোর করে দখলে রেখেছে। কাশ্মীরের ৯৩% জনগণ ভারতের সাথে থাকতে নারাজ।
প্রকৃত স্বাধীনতার জন্য ঐক্যের বিকল্প নেই : ২৪-এর গণবিপ্লব আমাদের প্রকৃত স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। ভারতের আধিপত্য, নজরদারি, তাঁবেদারি ও ফ্যাসিস্টমুক্ত নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এ স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচতে হলে বিতাড়িত ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাইলে, বিগত ১৫-১৬ বছরের নির্যাতন, নীপিড়ন, গুম-খুন, হামলা-মামলা, জেল-জুলুম আর আয়নাঘরের বিভীষিকার অবসান চাইলে ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে ইসলামপন্থি ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের বিকল্প নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে জাতি যেমন ঐক্য গড়ে ছল আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অনুরূপভাবে সুদৃঢ় ঐক্য বজায় রাখতে হবে। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ নির্দেশ করেছেন, “ওয়ালাতা ফাররাকু” আর তোমরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।
জাতীয় ঐক্যে ফাটলের ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে হবে : আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির ডাকা আন্দোলন সফল হয়েছে জামায়াত-শিবিরসহ ইসলামপন্থি দলগুলোর সক্রিয় সহযোগিতায়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়টি ভারত মানতে পারেনি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিরোধিতা করেছিলেন। নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারাই আওয়ামী লীগকে আশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কাছে প্রচুর অর্থ সম্পদ আছে। তাছাড়া ভারত তাদের স্বার্থে বিপ্লবীদের তথা জাতীয় ঐক্যকে বিভক্ত করতে চাইছে। অতএব দেশপ্রেমিক বিপ্লবীদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবেই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করতে হবে।
তৃণমূলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ভিত্তি তৈরিতে হিমশিম খাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর সাথে এনসিপির দূরত্ব বেড়েই চলছে। ৭১ নিয়ে ভারত প্রযোজিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী বয়ান এনসিপির মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। এতে করে জামায়াতের সাথে এনসিপির দূরত্বের ফাঁক আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। জামায়াতের বিরুদ্ধে ৭১-এর বয়ান “রাজাকার” বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাতি আর খায় না। ২৪-এর বিপ্লবীদের মনে রাখা উচিত বিপ্লবের স্লোগান ছিল, “তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার”। জাতীয় নাগরিক পার্টির উচিত ৭১ নিয়ে আওয়ামী বয়ান পরিহার করে দেশপ্রেমের নজির স্থাপন করা। ২৪-এর গণবিপ্লবের প্রত্যাশা পূরণে জাতীয় ঐক্য অটুট রেখে দেশপ্রেম ও দেশের কল্যাণে কাজ করা।
নাগরিক প্রতিক্রিয়া : গণঅধিকার পরিষদের নেতা মো. রাশেদ খান বলেছেন। ফ্যাসিস্ট তাড়ানোর কৃতিত্ব একক কারো নয়, ভুক্তভোগী সকলের। রাশেদ খান জোর দিয়ে বলেন, উপদেষ্টারা সকলেই কোনো না কোনো এনসিপির নেতাদের মনোনীত। রাশেদ আরো বলেন, এনসিপি সুবিধাবাদী দল। জামায়াতের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধী বানানোর অপচেষ্টা করছে। এটা ঠিক হচ্ছে না।
মুফতি মামুনুল হক বলেছেন, ইসলামী শক্তি ও জাতীয়তাবাদী শক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হলে দেশ বিপন্ন হবে। ফ্যাসিস্ট মাথাছাড়া দিয়ে উঠবে আর ভারত আবারও জাতির ঘাড়ে জেঁকে বসবে। বাংলাদেশবিরোধী ফ্যাসিবাদের আবারো উত্থান হবে। অতএব যেকোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্যকে সুদৃঢ় করে ভারতীয় আধিপত্য ও ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করতে হবে।
জামায়াত নেতা ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ঘৃণা বিভাজন সৃষ্টি করে আর ভালোবাসায় সমাজ গড়তে। জ্ঞানের সীমা যেখানে শেষ, ঘৃণার বিস্তার সেখানে শুরু। ঘৃণা বিভাজন সৃষ্টি করে ও বন্ধুত্বে ফাটল ধরায়। ভালোবাসা বন্ধু বানায় ও সুন্দর সমাজ গঠন করে। ভালোবাসা আর বন্ধুত্বই ঐক্য গড়ে তোলে। অতএব ব্যক্তি ও দলের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের নেতা ফারুক হাসান বলেছেন, মাহফুজ আলম ও আসিফ নজরুল উপদেষ্টা পরিষদে থাকতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হবে না। জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি বা ঘোষণা হবে না আর বিপ্লবের বারোটা বাজাবে। উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ৭১-এর বয়ান নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে ফারুক হাসান এসব কথা বলেন।
পিনাকী ভট্টাচার্জ বলেছেন, ভারত কারো বন্ধুত্ব চায় না, ভারত চায় দাসত্ব। ভারতের ফাঁদে যে পা দেবে সে অবশ্যই স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্ট হতে বাধ্য হবে। ভারতের রাষ্ট্রগুরু চাণক্য ও এমনই রাষ্ট্রনীতির কথা বলেছে।
শিবির সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হোন। ফ্যাসিবাদের শিকড় উপড়ে ফেলুন। ফ্যাসিস্টরা এখনো ওত পেতে বসে আছে। স্বয়ং শয়তান, ভারতে ‘জঅড’ আর ইসরাইলি “মোসাদ” তৎপর বাংলাদেশের মুসলমানদের বিভক্ত করতে। অতএব আমাদের সাবধান হতে হবে।
শায়েখ আবদুল্লাহ বিন আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, (৭১ এর) স্বাধীনতার চেতনা বিক্রি করে জাতিকে আর বিভক্ত করা যাবে না। ঈমানকে পরিপূর্ণ করতে হলে সেকুলারিজম, জাতীয়তাবাদ, আর যত সব তন্ত্র-মন্ত্র বাদ দিতে হবে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামকে ফিট করতে হবে।
শায়েখ মুফতি কাজী মো. ইবরাহীম বলেছেন, যারা ৫৪ বছর আগের ৭১ সালের ঘটনা নিয়ে ফেতনা সৃষ্টি করছে, তারা মূলত ভারতের বয়ান দিচ্ছে। যারা ২৪-এর গণবিপ্লবকে মুছে দিতে চায়, তারাই ৭১-এর বয়ান দেয়। ৭১-এর বয়ান দিয়ে জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে তাতে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশি মুসলিম জাতি হিসেবে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে, অন্যথায় দেশ ও জাতি হিসেবে আমাদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে।
উপদেষ্টাগণ সকলেই ২৪ গণবিপ্লবের ফসল। তারা শপথের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তারা কোনো অবস্থাতেই শপথ ভঙ্গ করতে ও ২৪-এর গণবিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেন না। ৭১-এ যা ঘটেছে, তাতে জাতি তুষ্ট থাকলে ২৪-এর জন্ম আর গণবিপ্লব হতো না। উপদেষ্টা মাহফুজ ৭১ প্রশ্নে শপথ ভঙ্গ করেছেন। নিরপেক্ষ সরকারে থেকে কোনো দলকে আক্রমণ করে কথা বলা, এটা সুস্পষ্ট শপথের লঙ্ঘন। অতএব মাহফুজ আলম শপথ ভঙ্গ করে উপদেষ্টা পদে থাকার, নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তিনি কোনো অবস্থাতেই উপদেষ্টা পদে থাকতে পারেন না। যদি থাকেন তাহলে ধরে নিতে হবে মাহফুজের কথাই সকল উপদেষ্টাদের কথা। অতএব সকল উপদেষ্টাগণই শপথ ভঙ্গকারী। যদি তা না হয়, তাহলে অতিদ্রুত মাহফুজ আলমকে উপদেষ্টা পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।
আসলে ঐক্যের মূল বা ভিত্তি হচ্ছে ঈমান। আমরা ৯০% মুসলমানের দেশে অনৈক্য মোটেও কাম্য হতে পারে না। নিজেদের মধ্যে বিভেদ করে ২৪-এর বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করা যাবে না। যেকোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে। তা না হলে প্রতিবেশী শত্রুর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ফ্যাসিস্ট আবার জেগে উঠতে পারে। আসুন, চেতনার বয়ান বাদ দিয়ে ঐক্যের বয়ানে স্বয়ং শয়তান, ভারতের ‘জঅড’ আর ইসরাইলি “মোসাদ” এর অপতৎপরতাসহ ফ্যাসিস্টদের রুখে দাঁড়াই। আর এজন্য প্রয়োজন ঈমান ও দেশপ্রেমে চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া।