দাওয়াত ইলাল্লাহ


২২ মে ২০২৫ ১৭:১৪

॥ প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী ॥
প্রথম মানুষকে আল্লাহপাক নবী হিসেবেই প্রেরণ করেছেন এবং দুনিয়ায় চলার জন্য পথনির্দেশনা (হিদায়াত) তিনিই দান করেছেন। বাবা আদম (আ.) ও মা (হাওয়া আ.)-এর আদিবাস জান্নাত। পৃথিবীতে আসার সময় আদম (আ.)-কে আল্লাহপাক বলে দিয়েছিলেন, যারা আমার প্রদত্ত হিদায়াত মেনে চলবে, তাদের কোনো ভয় নেই। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহপাক প্রদত্ত হিদায়াত মেনে চলবে না, তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি জাহান্নামের আজাব। মানুষের হিদায়াতের জন্য তিনি অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন এবং সর্বশেষ নবী ও রাসূল হলেন আমাদের প্রিয়তম নবী মুহাম্মদ (সা.)।
আল্লাহপাক জনে জনে হেদায়াত দান করেননি। হেদায়াতদানের জন্য মানুষের মাঝ থেকে কিছু মানুষকে তিনি রাসূল হিসেবে বাছাই করেছেন। সকল নবী-রাসূলের মৌলিক কাজ ছিল মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহপাক কর্তৃক হেদায়াত (আল কুরআন) প্রাপ্তির পরপরই তাঁকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, ওঠ এবং মানুষকে সতর্ক করো। (সূরা মুদ্দাস্সির)। প্রথমে তিনি তাঁর নিকটবর্তী লোকদের দাওয়াত দেন এবং পরবর্তীতে প্রকাশ্যে দাওয়াতদানের সাথে সাথে বিরোধিতা শুরু হয়ে যায়। একদিন এক পাহাড়ের পাদদেশে বিভিন্ন গোত্র প্রতিনিধিকে একত্রিত করে তিনি বলেন, আমি যদি বলি একদল শত্রু তোমাদের আক্রমণ করার লক্ষ্যে এ পাহাড়ের অপর পার্শ্বে অপেক্ষা করছে, তা কি তোমরা বিশ্বাস করবে? সমস্বরে সবাই বলে ওঠে- কেন নয়, তুমি তো আল-আমিন, আস-সাদিক। তখন তিনি বলেন, হে দুনিয়ার মানুষ! তোমরা বলো, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তাহলেই তোমরা সফলকাম হবে। সকল নবী-রাসূলের এই একই দাওয়াত ছিল এবং সমসাময়িক শাসকবর্গ ও তাদের উচ্ছিষ্টভোগী কেউই এ বাণী সহ্য করতে পারেনি। আসলে এটা এক বিপ্লবাত্মক ঘোষণা। সকল তাগুতকে অস্বীকার করার ঘোষণা রয়েছে এ ছোট্ট বাক্যটির মধ্যে।
সকল প্রতিকূলতা মাড়িয়ে মুহাম্মদ (সা.) বিভিন্নভাবে মানুষকে দাওয়াত দিয়েছেন, কখনো নিজ বাড়িতে ডেকে এনে খানা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন, হজ ও ওমরাহ উপলক্ষে আগত মানুষের কাছে দাওয়াত দিয়েছেন, হাটে-বাজারে দিয়েছেন, গোপনে দিয়েছেন, প্রকাশ্যে দিয়েছেন, একাকী দিয়েছেন, সাহাবীদের সাথে নিয়ে দাওয়াত দিয়েছেন, মক্কায় সুবিধা করতে না পেরে তায়েফে গিয়ে দাওয়াত দিয়েছেন। মূলত তাঁর মিশনই ছিল মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ডাকা। সাহাবীদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, আমার যা কাজ তোমাদেরও তাই। সূরা আসরে ধ্বংস ও বিপর্যয় থেকে বাঁচার উপায় বলতে গিয়ে আল্লাহপাক কসম খেয়ে বলেছেন, কেবল তারাই বাঁচবে যারা ঈমান আনবে ও নেক আমল করবে এবং পরস্পরে হকের দাওয়াত দিবে ও ধৈর্যধারণের উৎসাহ জোগাবে। শুধু ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ হলে হবে না, সেই সাথে তাকে দাঈ ইলাল্লাহ হতে হবে এবং এ কাজে বাধা-বিপত্তি খুবই স্বাভাবিক। এমতাবস্থায় ধৈর্যধারণের কোনো বিকল্প নেই। মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকার ক্ষেত্রে আমরা যাদের তৎপর দেখি, তারা হলেন দেশের আলেম সমাজ, জামায়াতে ইসলামী, তাবলিগ জামাত ও বিভিন্ন দীনি সংগঠন। ইসলাম আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত পূর্ণাঙ্গ দীন (জীবনব্যবস্থা) এবং ইসলামের প্রতি বিশ্বাস ও মেনে চলার নামই মুসলিম। এর বাইরে অন্য কিছু চাইলে সে আর মুসলিম থাকে না। ইসলামের বাইরে যা কিছু সবই বাতিল। আমাদের সমাজে এমন অনেক মুসল্লি আছে যারা নামাজ-রোজা, হজ-জাকাত আদায় করার পাশাপাশি সমাজ বা রাষ্ট্রে ইসলাম চায় না এমন দল বা সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে সেই দলের আদর্শ প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে দাবি করে যে সে একজন মুসলিম। রাসূলুল্লাহ (সা.) স্পষ্ট বলেছেন, যারা মানুষকে জাহেলিয়াতের দিকে ডাকে তারা হবে জাহান্নামের লাকড়ি। সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করলেন, লোকটি যদি নামাজ পড়ে ও রোজা রাখে? রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, সে যদি নামাজ পড়ে, রোজা রাখে এবং নিজেকে মুসলমান দাবি করে তারপরও সে জাহান্নামি।
যারা মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে তারা মহান আল্লাহপাকের বড়ো প্রিয়ভাজন। আল্লাহর বাণী, ‘তার চেয়ে ভালো কথা আর কার হতে পারে যে ব্যক্তি মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে ও নিজে নেক আমল করে এবং বলে যে, আমি একজন মুসলিম।’ (হা-মীম আস্-সাজদা : ৩৩)। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মক্কী জীবনের মাঝামাঝি সময়ে অবতীর্ণ এ সূরা। সময়টা ছিল ঈমানদারদের জন্য বড় দুঃসময়। মক্কায় টিকতে না পেরে সেসময়ে অধিকাংশ মুসলমান আবিসিনিয়ায় হিজরত করতে বাধ্য হয়েছিল। তখন নারী-পুরুষ মিলে ১০৩ জন হিজরত করেছিল এবং মক্কায় মাত্র ৪০ জন থেকে গিয়েছিলেন। মক্কায় মুসলিম পরিচয় দেয়াটা সহজ ছিল না, যেমন ছিল না ফ্যাসিবাদের সময় জামায়াত-শিবির পরিচয় দেয়া। হক ও বাতিলের এ দ্বন্দ্ব-সংগ্রাম চিরন্তন। অনেক ত্যাগ ও কুরবানির বিনিময়ে মহান আল্লাহপাক দয়া করে বাংলার এ জমিনকে ঈমানদারদের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটি মূলত আল্লাহপাকের সুন্নত, কোনো জনপদে জালেমের জুলুম সীমা অতিক্রম করলে আল্লাহপাকের দায়িত্ব হয়ে পড়ে মজলুমকে সহযোগিতা করা। পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক এমনটিই বলেছেন, ‘আমি সংকল্প করেছিলাম, পৃথিবীতে যাদের দুর্বল করে রাখা হয়েছিল, তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবো, তাদের নেতৃত্ব দান করবো, তাদের উত্তরাধিকার করবো এবং পৃথিবীতে তাদের কর্তৃত্ব দান করবো।’ (সূরা কাসাস : ৫-৬)। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিজয় মজলুমের প্রতি আল্লাহপাকের প্রতিশ্রুতি পূরণ ও তাঁর পক্ষ থেকে এক নিদর্শন।
৫ আগস্ট বিপ্লবের পর মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে এবং একটি ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের আকাক্সক্ষা প্রবল হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট দাবি করে, ইসলাম প্রতিষ্ঠায় দেশের আলেম সমাজ ও ইসলামপন্থী জনগোষ্ঠীর সুদৃঢ় ঐক্য। মানুষ পরিবর্তন চায় এবং সেই পরিবর্তনটা কাদের পক্ষে হবে, তা নির্ভর করে মাঠে-ময়দানে তৎপরতার ওপর। হুদাইবিয়ার সন্ধির পর একটি অনুকূল পরিবেশ পেয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) ব্যাপক দাওয়াতদানের সুযোগ পান এবং সেটিকে কাজে লাগিয়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল জনগোষ্ঠীকে ইসলামের পক্ষে আনতে সক্ষম হন। ফলে আর সময়ক্ষেপণ না করে অষ্টম হিজরিতে যুদ্ধ ছাড়াই তিনি মক্কা বিজয় করেন। ১৮ কোটি জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে ইসলাম তখনই বিজয়ী হবে যদি এ জনপদের মানুষ মনেপ্রাণে রাষ্ট্রীয় দীন হিসেবে ইসলামকে সমর্থন করে। ইসলামী শাসন একটি জনগোষ্ঠীর জন্য আল্লাহপাকের এক নেয়ামত। জনগণের সমর্থন ছাড়া আল্লাহপাক এতবড় নেয়ামতদান করেন না। শুধু ইসলাম নয়, যে কোনো আদর্শের বিজয় নির্ভর করে সেই আদর্শের অনুসারী একদল যোগ্য নেতৃত্ব এবং যে জনপদে প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের সক্রিয় সমর্থন। এটি স্বাভাবিক নিয়ম। রাসূলুল্লাহ (সা.) দীর্ঘ তেরো বছর মক্কার জমিনে দাওয়াতের মাধ্যমে একদল যোগ্য নেতৃত্ব গঠনে সক্ষম হলেও ব্যাপক জনগোষ্ঠীর সমর্থন লাভে সক্ষম না হওয়ায় মক্কায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি।
বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার শুধু জামায়াত-শিবিরকে শত্রু বিবেচনা করেনি, বরং সকল ইসলামপন্থী দল ও জনগোষ্ঠী তাদের হাতে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছে। ৫ মে শাপলা চত্বরের হত্যকাণ্ড সমগ্র জাতিকে নাড়া দিয়েছিল। এছাড়া দলমত-নির্বিশেষে বিরোধীদলের সবাই নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে। রাজনীতি বড়ো কুটিল ও জটিল। আমাদের দেশে রাজনীতির নিয়ন্ত্রক শক্তি শুধু দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দেশ ও বিদেশে নানা ফ্যাক্টর কাজ করে। দেশের অভ্যন্তরে সুদৃঢ় ঐক্য থাকলে অনেক কিছু মোকাবিলা করা সম্ভব। ইসলাম ফিতরাতের ধর্ম, মানুষের স্বভাব-প্রকৃতির সাথে সামঞ্জ্যশীল এ দীনকে মানুষের সম্মুখে সহজভাবে উপস্থাপন করতে হবে। সাধারণত দীন (কর্তৃত্ব) যার শরিয়ত তার (বিধান)। এই সহজ বিষয়টি দাঈ ইলাল্লাহ সকলকে বুঝতে হবে। আল্লাহপাক সকল নবী-রাসূলকে দীন কায়েমের দায়িত্ব দিয়েই প্রেরণ করেছেন এবং শেষনবী মুহাম্মদ (সা.)-কেও একই দায়িত্ব দিয়েছেন। আল্লাহর ভাষায়, ‘তিনি তোমাদের জন্য দীনের সেসব নিয়মকানুন নির্ধারিত করেছেন, যার নির্দেশ তিনি নূহকে দিয়েছিলেন এবং (হে মুহাম্মদ) যা এখন আমি তোমার কাছে ওহির মাধ্যমে পাঠিয়েছি। আর যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহিম, মূসা ও ঈসাকে। তার সাথে তাগিদ করেছিলাম এই বলে যে, দীন কায়েম করো এবং এ ব্যাপারে মতপার্থক্য সৃষ্টি করো না।’ (সূরা শূরা : ১৩)। দীন কায়েমের প্রশ্নে কোনো মতপার্থক্য আল্লাহপাক মেনে নেবেন না। হ্যাঁ, প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। আর সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মদ সা.-কেও একই দায়িত্ব অর্থাৎ দীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যেই পাঠানো হয়েছে এবং রাসূল সা.-এর সকল কর্ম-প্রচেষ্টা ছিল দীন কায়েমের লক্ষ্যে। আল্লাহপাক দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কুরআন মজিদে তিন জায়গায় সূরা তাওবা (৩৩নং), সূরা ফাতাহ্ (২৮নং) ও সূরা সফে (৯ নং) উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর বাণী, ‘তিনি আপন রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য-সঠিক জীবনব্যবস্থা (দীনে হক) দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে অন্যসব জীবনব্যবস্থার ওপর একে বিজয়ী করে দিতে পারেন, মুশরিকদের কাছে তা যতই অসহনীয় হোক।’ সূরা সফ : ৯।
দীন কায়েমের উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে তাগুতের গোলামি থেকে মুক্ত করে এক আল্লাহর গোলামিতে নিয়োজিত করার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ সাধন। শেষ নবী (সা.)-এর অনুসারীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা শ্রেষ্ঠতম জাতি, তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানবজাতির কল্যাণের জন্য, তোমরা মানুষকে সৎকাজের আদেশ দেবে ও অসৎকাজ থেকে বিরত রাখবে’। (সূরা আলে ইমরান : ১১০)। মানবজাতির কল্যাণ রয়েছে আল্লাহর দেয়া বিধানের মধ্যে। ভালো কাজের আদেশ দান ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখার ক্ষমতা মূলত রাষ্ট্রসরকারের। ক্ষমতার বাইরে আলেম সমাজ বড়জোর নসিহত করতে পারেন, তারা মানুষকে আদেশ দিতে পারেন না। দীন কায়েমের প্রশ্নে মতপার্থক্য আল্লাহর পছন্দ নয়। অতীতের উদাহরণ টেনে আল্লাহপাক বর্তমান মুসলমানদের ভীষণভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘তোমরা যেন তাদের মতো হয়ে যেয়ো না, যারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে এবং সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য হিদায়াত পাওয়ার পরও মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছিল। যারা এ নীতি অবলম্বন করেছে, তারা সেদিন কঠিন শাস্তি পাবে। যেদিন কিছু লোকের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং কিছু লোকের মুখ কালো হয়ে যাবে। তাদেরকে বলা হবে, ঈমানের নেয়ামত লাভ করার পরও তোমরা কুফরি নীতি অবলম্বন করলে? ঠিক আছে, তাহলে এখন এ নেয়ামত অস্বীকৃতির বিনিময়ে আজাবের স্বাদ গ্রহণ করো। আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে, তারা আল্লাহর রহমতের আশ্রয় লাভ করবে এবং চিরকাল তারা এ অবস্থায় থাকবে।’ (আলে ইমরান : ১০৫-১০৭)।
দীন কায়েমের মাধ্যমে কে মুমিন আর কে কাফের তা স্পষ্ট হয়। আল্লাহপাকের বাণী, ‘যারা ঈমানের পথ অবলম্বন করেছে তারা লড়াই করে আল্লাহর পথে। আর যারা কুফরির পথ অবলম্বন করেছে তারা লড়াই করে তাগুতের পথে। কাজেই শয়তানের সঙ্গী-সাথিদের সাথে লড়াই করো আর বিশ্বাস রেখো, শয়তানের ষড়যন্ত্র আসলেই দুর্বল’। (সূরা নিসা : ৭৬)। এখানে দুটি পক্ষ স্পষ্ট : এক ঈমানদার ও দুই কাফের ঈমানদার মাত্রই আল্লাহর পক্ষে এক লড়াকু সৈনিক, বিপরীতপক্ষে কাফের হলো সেই, যে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী আল্লাহ ও মুমিনের শত্রু। আল্লাহর পথে জিহাদের প্রথম স্তর হলো মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা। এখন সময় এসেছে সকল ইসলামপন্থী দল ও জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকার। অধিকাংশ মানুষ ইসলাম বলতে বুঝে নামাজ-রোজা পালনের মতো কিছু আচার-অনুষ্ঠান পালন করা। এটা তাদের অজ্ঞতা। এ অজ্ঞতা দূর করার দায়িত্ব দেশের আলেম সমাজ এবং ইসলামী দল ও তাদের কর্মী বাহিনীর। ইসলামের দাওয়াত পাওয়ার অধিকার প্রতিটি মানুষের এবং দাওয়াতদানের দায়িত্ব হলো তাদের যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। রাসূল (সা.) তাঁর দায়িত্ব পৌঁছে দিয়ে আমাদের সাক্ষী বানিয়েছেন এবং লোকদের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দিয়ে আমাদের জন্য তাদের সাক্ষী বানাতে হবে। (সূরা হজ : ৭৮)। মানুষের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর ক্ষেত্রে গাফিলতি আল্লাহ তায়ালা সহ্য করবেন না।
লেখক : উপাধ্যক্ষ (অব.), কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ।