কমতির দিকে অধিকাংশ নিত্যপণ্যমূল্য
২২ মে ২০২৫ ১৬:৫০
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের নিত্যপণ্যমূল্য এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। বিশেষ করে মাছের বাজার আগের অবস্থানেই রয়েছে। তবে সুখবর রয়েছে অতিনিত্যপণ্য হিসেবে বিবেচিত সবজির মূল্যে। বাজারে এখন প্রায় সব ধরনের সবজির মূল্যই কমতির দিকে। আরও ভালো খবর হচ্ছে, রাজধানীর বাজারে সব ধরনের মুরগির মূল্য কমেছে। এছাড়া বাঙালির অনিবার্য খাদ্য ‘চাল’র মূল্য কমতির ধারায় রয়েছে। এদিকে মুদিপণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে।
কমেছে সব ধরনের মুরগির দাম
রাজধানীর বাজারগুলোয় কমেছে সব ধরনের মুরগির দাম। কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। এছাড়া দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আর মাসখানেক আগে বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। তবে হঠাৎ করেই গত কিছুদিন যাবত অস্বাভাবিকভাবে সেই দাম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় নেমে এসেছে। অনেকটা যেন ‘পানির দামেই’ মুরগি বিক্রি হচ্ছে। তাই ক্রেতাদের ভিড়ও বেশি। অনেকেই বেশি পরিমাণে কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখছেন।
গরু ও খাসির গোশতের দাম চড়া, মাছের বাজার স্থিতিশীল
বাজারে মুরগির দাম কমলেও আগের মতোই চড়া রয়েছে গরু ও খাসির গোশতের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির গোশত ১ হাজার ২৫০ টাকা ও ছাগলের গোশত বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। এদিকে মাছের দামও অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের শিং ৪০০-৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পোয়া ৪০০ টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা ও দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম কমেছে
কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির দাম বাড়তি গেলেও সেই তুলনায় বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। ৭০ থেকে ৮০ টাকার ঘরে থাকা সবজির দাম কমে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় নেমেছে। অনেক সবজি ৫০ টাকার কমেও পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, শসা ৪০-৬০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, মুলা ৪০-৫০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৭০ টাকা, বেগুন (গোল) ৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি ধন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ টাকা, কলা প্রতি হালি ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কচুরলতি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা বলছেন, ৮০ টাকা ১০০ টাকার নিচে বলতে গেলে সবজিই ছিল না। সেই তুলনায় এখন বাজার কিছুটা কম। ৫০ থেকে ৬০ টাকার ঘরে বাজারের সবজিগুলো এখন পাওয়া যাচ্ছে।
চালের দাম কমেছে
রাজধানীর বাজারে অধিকাংশ মিনিকেট চাল এখন ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, যা দু-চার সপ্তাহ আগেও ছিল ৮৮ থেকে ৯০ টাকা। মাসখানেকের মধ্যে এ চালের দাম কেজিতে প্রায় ১৫ টাকা কমেছে। জানা গেছে, বর্তমানে খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর ও রসিদ প্রভৃতি ব্র্যান্ডের নতুন মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেটের মধ্যে মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের চালের দাম অবশ্য আরেকটু বেশি। প্রতি কেজি মোজাম্মেল চাল এখন ৮২-৮৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাসখানেক আগে এ চালের কেজি ১০০ টাকার আশপাশে ছিল। অন্যান্য চালের মধ্যে মানভেদে নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৫৮ টাকা ও স্বর্ণা ৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাসমতি চালের দামও আগের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা কমে ৯৫ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে
মুদিপণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকা, দেশি রসুন ১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজারে প্রতি ডজন ডিম ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।