ফ্যাসিবাদের দোসরদের হালচাল


৮ মে ২০২৫ ১৫:৫৮

সরদার আবদুর রহমান
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী শাসনের আপাত বিদায় ঘটেছে। অতঃপর একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া-পদ্ধতির পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য অপেক্ষা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এটি সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে সেই পলাতক স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের আর ফিরে না আসার পথ বন্ধ হবে বলেই জাতি আশা করে।
ফ্যাসিবাদের মূল শক্তি আওয়ামী লীগ ও তার চালক বিদায় নেয়ার পর তাদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জাতি অনেকটাই অবগত থাকলেও তাদের সহযাত্রী ও দোসরদের হালচাল সম্পর্কে অনেক কম জানা যায়। বিগত দেড় দশক জাতির ভাগ্যে ও অন্ধকারের অমানিশা আপতিত হয় তার জন্য এ দোসররা কম দায়ী নয়। তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা মূল ফ্যাসিবাদকে আরো উচ্চ চূড়ায় আরোহণে সহায়তা করে। ৫ আগস্টের সফল গণঅভ্যুত্থানে এ দোসররাও পরাজিত হয় এবং পরিণতির গর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়।
এ দোসরদের মধ্যে শীর্ষে ছিল এরশাদের সৃষ্ট জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরীকত ফেডারেশন, সাম্যবাদী দল প্রভৃতি। যদিও সার্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ দলগুলোর জনসমর্থন বলে তেমন কিছুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু হাসিনা ও তার দলের সহযাত্রী হয়ে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে গেছে। বিনিময়ে লুটের মালের ভাগ হাসিল করে গেছে। বিদায়ের আগে তাদের অপকর্মের চিহ্ন হিসেবে রেখে যায় গণতান্ত্রিক শক্তির অন্যতম সহযোগী জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ করার কাজে সমর্থন দিয়ে। আর সর্বশেষ ছিল সরকার-পতনের আন্দোলনকে একটি গণহত্যার মধ্য দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াস চালাতে। উপরিউক্ত দলগুলো পলাতক সরকারের সব ধরনের অপকর্মের সহযোগী ছিল।
জাতীয় পার্টি
ফ্যাসিবাদের শীর্ষ দোসর হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত স্বৈরশাসক এরশাদের রেখে যাওয়া জাতীয় পার্টি। এরশাদের ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বর্তমানে পার্টির চেয়ারম্যান। শেখ হাসিনার হাতের পুতুল হিসেবে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন এবং গৃহপালিত ‘বিরোধীদল’ হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হন।
আগস্ট পরিবর্তনের পর এ দলটি রাজনীতিতে অপাঙক্তেয় হয়ে গেছে। যদিও মাঝেমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে চাঙা থাকার অভিনয় করে যাচ্ছেন। যেমন সম্প্রতি জিএম কাদের মন্তব্য করেছেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেই।’ এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি আগাম ইঙ্গিত দিলেন যে, জাতীয় পার্টি সামনের নির্বাচনে ব্যাপকভাবে ‘ধরা খাবে’ এবং তখন তারা এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরে দোষ চাপাতে পারবে। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত লুটপাটে অংশ নিতে তারা যে পিছপা ছিল না, সেটিও প্রকাশ হতে চলেছে। ইতোমধ্যে জি এম কাদের এবং তার স্ত্রী শরিফা কাদেরের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। গত ২৩ মার্চ এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ নির্দেশ পাঠায়। এছাড়া জিএম কাদের, তার স্ত্রী, মেয়ে ইশরাত জাহান কাদের ও জামাতা মাহফুজ আহমেদের ব্যাংক হিসাব সম্পর্কিত সব তথ্য তলব করা হয়। এছাড়া চাঁদাবাজি, মনোনয়ন বাণিজ্য ও দলীয় ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি মনোনয়নে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এ অর্থ গ্রহণের মূল সুবিধাভোগী তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ না করায় এক নেতাকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন এবং তার স্থলে জিএম কাদেরের স্ত্রী শরিফা কাদের সংসদ সদস্য হন।
ওয়ার্কার্স পাটি
সন্ত্রাসী ধারার রাজনীতি করে আসা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ছিল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী রাজনীতির উপযুক্ত সহযোগী। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি। আওয়ামী লীগ আমলে রাশেদ খান মেনন প্রথমে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এবং পরে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তাই গত দেড় দশকের সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক অপকর্মের দায় এদের উপরেও বর্তায়। পটপরিবর্তনের পর এর শীর্ষ নেতা রাশেদ খান মেনন যথারীতি আটক হন এবং বর্তমানে কারাগার আর আদালতে চক্কর খাচ্ছেন। তাকে রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে সংঘর্ষে নিহত হওয়ার ঘটনায় কয়েকটি মামলায়ও তাকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ ৮ বছর। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিগত ১৬ বছরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের একান্ত দোসর ও সহযোগী হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাচালান, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, বিমান ক্রয়ে দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বরাদ্দ নিয়ে দেশে এবং বিদেশে ওই সম্পদ গড়েছেন। অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাশেদ খান মেননের নামে লন্ডনে ২৫টি বাড়ি, কানাডায় স্ত্রীর নামে ৫টি বাড়ি ও আমেরিকায় ২টি বাড়িসহ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার। অন্যদিকে ঢাকার গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট ও বনানীতে ২টি ফ্ল্যাটসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে হাজার বিঘা জমির মালিকানা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নিজ ও আত্মীয়-স্বজনের নামে দেড় হাজার কোটি টাকা ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছে বলে জানা গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অভিযোগের বেশকিছু দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। বামধারার রাজনৈতিক এ নেতা প্রতিবার নির্বাচনের আগে হলফনামায় গোপন করেছেন সম্পদের তথ্য। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামায় মাত্র ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭১ হাজার ২২৬ টাকার সম্পদ থাকার কথা জানিয়েছিলেন মেনন ও তার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা খান। অথচ তাদের রয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ। কেবল দেশেই নয়, বিদেশেও মেনন পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তে প্রমাণ মিললে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে মেনন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।
জাসদ (ইনু)
শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের অন্যতম সহযোগী ছিল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। তার সভাপতি হিসেবে আওয়ামী সরকারের প্রতিটি অপকর্মে ইন্ধন ও সমর্থন জোগাতেন হাসানুল হক ইনু। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত আগ্রাসী। আর আ’লীগের লোকদের সঙ্গে দুর্নীতির সহযোগীও ছিলেন তিনি।
ইতোমধ্যে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা হকের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। ইনু ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর চারটি ব্যাংক হিসাবে ১১ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ১৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। আরেক মামলায় হাসানুল হক ইনুর স্ত্রী আফরোজা হকের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪ টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। হাসানুল হক ইনুর উপার্জিত অর্থ দিয়ে তাঁর স্ত্রী সম্পদশালী হয়েছেন। গত বছরের ২৬ আগস্ট হাসানুল হক ইনুকে উত্তরা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইনু ও তাঁর স্ত্রী জাসদের সহ-সভাপতি আফরোজা হকের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। ইনুর স্ত্রী আফরোজা হক একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন।
তরীকত ফেডারেশন
১৪ দলীয় জোট বাম ও ধর্মনিরপেক্ষবাদী আদর্শের জোট হলেও এর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিল তথাকথিত ধর্মীয় দল তরীকত ফেডারেশন। জোট সরকার থেকে সুবিধা বাগিয়ে নিতে জামায়াতবিরোধী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে। এ কারণে আলোচিত ছিলেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। তিনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের টিকিটে তিনবার এবং বিএনপির মনোনয়নে একবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এ সংসদ সদস্য হওয়ার নেপথ্যে ইসলামী দলের সঙ্গে প্রতারণা করাই ছিল তার উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার। খোদ ফটিকছড়িতেই নিজের দল তরীকত ফেডারেশনের কোনো অবস্থান ছিল না। এ কারণে এক সময়ের জনৈক শীর্ষ সন্ত্রাসীর সঙ্গে সিন্ডিকেট করেছিলেন। তার লোকবলের ওপর ভর করে টানা ১০ বছর রাজত্ব করেছেন তিনি। ফটিকছড়ির রাজনীতিতে একচ্ছত্র প্রভাব রেখেছিলেন এই মাইজভাণ্ডারী। তবে সেই প্রতারণায় আওয়ামী লীগকে বেশিদিন আটকে রাখতে পারেননি নজিবুল। স্বার্থ হাসিল হওয়ার পর ভাণ্ডারীকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় আওয়ামী লীগ। তবে এরই মধ্যে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে গুছিয়ে নেন আখের। জামায়াতের বিরুদ্ধাচরণকে গ্রহণ করেন সুবিধা আদায়ের কৌশল হিসেবে। দুর্নীতি আর প্রতারণায় ‘পাকা’ খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন এলাকায়।
জানা গেছে, ২০১০ সালে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব রেজাউল হক চাঁদপুরী বাদী হয়ে জামায়াত-শিবিরের ৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর পরবর্তী সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। এ মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ে নিজামী ও মুজাহিদের ফাঁসি হয়। ২০১৫ সালে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন এমন অভিযোগ তুলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন নজিবুল। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের জন্যও নজিবুল বশরের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। আর সেই কাজটি হওয়ার পর পতিত আওয়ামী লীগ সরকার মাইজভাণ্ডারী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এরপর তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়। গত বছর নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর দুই ছেলে তরীকত ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও সৈয়দ আফতাবুল বশর মাইজভাণ্ডারীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় নজিবুল বশর নিজেও জড়িত ছিলেন। গত ১০ বছরে ফটিকছড়িতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্দের কয়েক কোটি টাকা লুটপাট করেছেন নজিবুল। অন্যদিকে তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব রেজাউল হক চাঁদপুরীর বিরুদ্ধে নানাপ্রকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। তবে সে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে বলে জানা গেছে।
এ চক্রের আরেক সহযোগী ছিলেন সাম্যবাদী দলের প্রধান দীলিপ বড়ুয়া। একদা গলাকাটা রাজনীতির এ শীর্ষ ব্যক্তি চীনপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হলেও কীভাবে আওয়ামী লীগের সহযোগী হয়ে উঠলেন, সেটি প্রশ্নবোধক হয়ে আছে। তবে দলের তেমন প্রভাব বলে কিছু না থাকায় সুবিধা করতে পারেননি। তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কেও কিছু জানা যাচ্ছে না।
সব মিলিয়ে ১৪ দলীয় জোট তথা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অস্তিত্ব এখন চরমভাবে বিপন্ন। দুর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যবহারের চরম নজির সৃষ্টির ফলে এমনিতেই তারা জাতির কাছে ঘৃণিত। অতঃপর ক্ষমতা থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে গণহত্যার যে ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছে, তার দায় থেকেও তারা মুক্তি পাচ্ছে না।