সংক্ষিপ্ত বিশ্ব সংবাদ
৮ মে ২০২৫ ১৫:৫৭
ওয়াক্ফ পিটিশনের শুনানি স্থগিত করলো সুপ্রিম কোর্ট
ওয়াকফ আবেদনের শুনানি ১৫ মে পর্যন্ত স্থগিত করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই মামলা চলছিল। তবে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে সঞ্জীব খান্না আগামী সপ্তাহে অবসর নিতে চলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের কাছে এ মামলা পাঠানো হয়েছে। পরের সপ্তাহে অবসরের কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এ নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, আগামী ১৩ মে অবসর নেবেন বিচারপতি খান্না এবং ১৪ মে দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেবেন বিচারপতি গাভাই। এমন পরিস্থিতিতে শুনানি মুলতবি করে প্রধান বিচারপতি খান্না বলেন, এ মামলায় অন্তর্বর্তী আদেশ দেয়ার আগে দীর্ঘ শুনানি প্রয়োজন। এরপর প্রধান বিচারপতি জানান, আগামী সপ্তাহে অবসর নিচ্ছেন তিনি। তাই বিষয়টি এখন পরবর্তী প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতি খান্না জানিয়েছেন, আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা পিটিশনগুলোর বিষয়ে তিনি আদেশ সংরক্ষণ করতে চান না।
এর আগে গত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রীয় সরকার আশ্বাস দিয়েছিল, যে যে বিষয়ে বেঞ্চ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের সেই দুটি মূল বিধি স্থগিত রাখা হবে। গত ১৭ এপ্রিল কেন্দ্র শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছিল, ওয়াকফ সম্পত্তি ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’সহ অন্য কোনো ওয়াক্ফ সম্পত্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে না এবং সেন্ট্রাল ওয়াক্ফ কাউন্সিল ও বোর্ডে কোনো নিয়োগ করা হবে না। কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে না শুনে সংসদে পাস হওয়া আইনে স্থগিতাদেশ দেয়া উচিত নয়। শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালত বলেছে যে ওয়াক্ফ সম্পত্তি, যার মধ্যে ইতোমধ্যে নিবন্ধিত বা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলো পরবর্তী শুনানির তারিখ পর্যন্ত ডিনোটিফাই করা যাবে না। এরপরে বেঞ্চ আইনটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদনগুলোর প্রাথমিক জবাব দাখিল করার জন্য কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দেয়। পিটিশনের গ্রুপে এআইএমআইএম প্রধান এবং হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দায়ের করা একটি আবেদনও রয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস।
গাজা পুরোপুরি দখলের অনুমোদন ইসরাইলি মন্ত্রিসভার
ফিলিস্তিনের গাজা দখলে নেয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরাইলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা। এর মধ্যে হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা বৃদ্ধির বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইসরাইলি এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজার ২১ লাখ ফিলিস্তিনিকে উপত্যকাটির দক্ষিণে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনার বিষয়টিও অনুমোদন পেয়েছে। যাতে সেখানের মানবিক সংকট আরও প্রকট হবে। গাজা দখলের বিষয়টিকে ‘ভালো পরিকল্পনা’ বলে অভিহিত করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামাসকে নির্মূল করে জিম্মিদের দেশে ফেরাতে তাদের এ পরিকল্পনাই উত্তম। মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে মানবিক সহায়তা সরবরাহ ও বিতরণের একটি পরিকল্পনাও অনুমোদন করেছে। ইসরাইলের গত দুই মাসের অবরোধের ফলে গাজায় যে তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে তা কমিয়ে আনতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
তবে এসব পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে জাতিসংঘসহ অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা। তারা বলেছে, এসব প্রস্তাব মৌলিক মানবিক নীতির লঙ্ঘন হবে। ফলত ইসরাইলের এসব প্রস্তাবে তাদের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা করা হবে না। এদিকে ইসরাইলের প্রস্তাবকে ‘রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেইল’ বলে অভিহিত করেছে হামাস। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইল। গত ১৯ জানুয়ারি উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। ১৮ মার্চ ওই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। গত ৫ মে সোমবার গাজার উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, এদিন উত্তর গাজায় আকাশপথে ইসরাইলের হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৫২ হাজারে। বিবিসি।
ট্রাম্পের অত্যাচারে দেশ ছাড়ছেন আমেরিকানরা!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন, তখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসরত এক সমকামী দম্পতি ডরিস ডেভিস ও সুজি বার্টলেট একটি জীবন পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্ত নেন। যদি ট্রাম্প জয়ী হন, তবে তারা বিদেশে চলে যাবেন। এ দম্পতি জানান, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তারা তাকে একটি সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তারা আতঙ্কের সঙ্গে লক্ষ্য করেন, তিনি ফের ক্ষমতায় এসে বর্ণ বৈষম্য অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি বাতিল করেন। ৬৯ বছর বয়সী শিক্ষাবিষয়ক পরামর্শক ডেভিস বলেন, ‘আমরা এ দেশকে ভালোবাসি, কিন্তু এখনকার আমেরিকাকে আমরা ভালোবাসি না।’ ডেভিস আরও বলেন, ‘যখন আপনার পরিচয়কে আক্রমণ করা হয়, তখন তা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দেয়।’ বর্তমানে তারা ইউরোপে যাওয়ার বিকল্পগুলো যাচাই করতে একজন ইমিগ্রেশন আইনজীবীর সঙ্গে কাজ করছেন। তারা মূলত পর্তুগাল ও স্পেনে আগ্রহীÑদক্ষিণ ইউরোপীয় জীবনধারা তাদের আকৃষ্ট করছে এবং তারা ডিজিটাল নোম্যাড বা অবসরের ভিসা বিবেচনা করছেন। বার্টলেট, যিনি ৫২ বছর বয়সী, অবসরপ্রাপ্ত। স্থানীয় কমিউনিটিকে ছেড়ে যেতে দুঃখ হচ্ছে জানিয়ে ডেভিস বলেন, ‘আমার যেতে খারাপ লাগছে।’ এ শিক্ষাবিষয়ক পরামর্শক বলেন, ‘কিন্তু রাজনীতি ও সামাজিক পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা অগ্রহণযোগ্য।’
সরকারি ভিসা ও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য এবং রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা আটটি রিলোকেশন প্রতিষ্ঠানের মতে, ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের বহু নাগরিক ইউরোপে যাওয়ার বিষয়ে চিন্তা করছেনÑ যদিও ৩৪ কোটির দেশের তুলনায় সংখ্যা এখনো তুলনামূলকভাবে কম। আইরিশ পররাষ্ট্র দফতরের তথ্যানুযায়ী, এ বছরের প্রথম দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইরিশ পাসপোর্টের আবেদন ছিল এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে গড় মাসিক আবেদন প্রায় ৪৩০০, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। ফরাসি সরকারি তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের করা লং-স্টে ভিসা আবেদনের সংখ্যা ছিল ২৩৮৩, যেখানে গত বছর একই সময়ে তা ছিল ১৯৮০। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ফ্রান্স ২১৭৮টি লং-স্টে ভিসা অনুমোদন দিয়েছে, যা গত বছরের ১৭৮৭টির তুলনায় বেশি। আর যুক্তরাজ্যে ২০২৪ সালের শেষ তিন মাসে পাসপোর্ট আবেদন ছিল গত দুই দশকের যেকোনো ত্রৈমাসিকের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ, যা ১৭০৮টি।
রিলোকেশন কোম্পানি ও অভিবাসন সহায়তাদানকারী ওয়েবসাইটগুলো জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক আমেরিকান বিদেশে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে, যার পেছনে রাজনৈতিক বিভাজন ও বন্দুক সহিংসতার মতো কারণ রয়েছে। ইতালিয়ান ইমিগ্রেশন পরামর্শক ও ‘ইটালিয়ান সিটিজেনশিপ অ্যাসিস্ট্যান্স’ এর প্রতিষ্ঠাতা মার্কো পারমুনিয়ান জানান, ২০২০ সালে ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচিত হওয়ার পরও অনেকে অভিবাসনের আগ্রহ দেখিয়েছেন, তবে সে সময় মূলত রিপাবলিকান ভোটাররাই বেশি আগ্রহী ছিলেন। তবে রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা বেশিরভাগ রিলোকেশন সংস্থা বলেছে, ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর আগ্রহের পরিমাণ আরও বেশি বেড়েছে। অনেক গ্রাহকই নীতি ও সামাজিক বিষয়ে দিক পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। রয়টার্স।
‘পোপ সেজে’ ছবি পোস্ট করায় তোপের মুখে ট্রাম্প
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে পোপের সাজ নিয়ে নিজের ছবি পোস্ট করায় কিছু ক্যাথলিকদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের অফিসিয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিটি এমন একসময় প্রকাশ করা হয়েছে, যখন ক্যাথলিকরা পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোক পালন করছিল এবং ক্যাথলিকরা পরবর্তী পোপ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাথলিক কনফারেন্স ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে উপহাস করার অভিযোগ এনেছে। ‘আমি পোপ হতে চাই’ সাংবাদিকদের সাথে মজা করে এমন কথা বলার কয়েকদিন পরই এ পোস্ট দেয়া হয়েছে। ট্রাম্পই প্রথম প্রেসিডেন্ট নন, যার বিরুদ্ধে ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাস নিয়ে উপহাস করার অভিযোগ আনা হয়েছে। বছরখানেক আগে ফ্লোরিডার টাম্পায় গর্ভপাতের পক্ষে এক সমাবেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্রুশের চিহ্ন দেখিয়েছিলেন, যা ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল।
গত ৩ মে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে ট্রাম্পের পোস্ট নিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান ভ্যাটিকানের মুখপাত্র ম্যাটিও ব্রুনি। ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি নির্বাচনের জন্য বুধবার থেকে ভ্যাটিকান একটি সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত শুক্রবার (২ মে) রাতে ট্রাম্পের যে ছবি পোস্ট করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ঐতিহ্যগতভাবে একজন বিশপ গায়ে যে সাদা ক্যাসক এবং মাথায় সূঁচালো মাইটার পরিধান করেন, তিনিও সেটাই পরেছেন। ট্রাম্প গলায় একটি বড় ক্রুশ পরেছেন এবং আঙুল উপরের দিকে তুলে ধরে মুখে গম্ভীর অভিব্যক্তি ধরে রেখেছেন। নিউইয়র্কের বিশপদের প্রতিনিধিত্বকারী দ্যা নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাথলিক কনফারেন্স এক্সের কাছে এ ছবি নিয়ে সমালোচনা করেছে। ‘এই ছবিতে চালাকি বা মজার কিছুই নেই, মি. প্রেসিডেন্ট’ লিখেছে গ্রুপটি। ‘আমরা মাত্রই আমাদের প্রাণপ্রিয় পোপ ফ্রান্সিসকে সমাহিত করেছি এবং সেন্ট পিটারের নতুন উত্তরসূরি খুঁজতে কার্ডিনালরা একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন করতে যাচ্ছেন। আমাদের নিয়ে উপহাস করবেন না’ লিখেছে দ্যা নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাথলিক কনফারেন্স।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পোস্টের তীব্র সমালোচনা করেছেন বামপন্থী ইতালিয়ান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ম্যাত্তিও রেঞ্জি। রেঞ্জি ইতালিয়ান ভাষায় এক্সে লিখেছেন, ‘এটা এমন ছবি যা বিশ্বাসীদের ক্ষুব্ধ করে, প্রতিষ্ঠানকে অপমান করে এবং এটা দেখায় যে ডানপন্থী বিশ্বের নেতা ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করতে পছন্দ করেন।’ কিন্তু রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পোপতন্ত্রকে নিয়ে মজা করেছেন হোয়াইট হাউস এমন বিষয়গুলোকে নাকচ করে দিয়েছে। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিভিট বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং তার শেষকৃত্যে যোগ দেয়ার জন্য ইতালি গিয়েছিলেন। তিনি ক্যাথলিক এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার কট্টর সমর্থক।’ বিবিসি।
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে ইসলামবিরোধী বিদ্বেষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত টাস্কফোর্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থীই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেকে আছেন ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ভয়ে। টাস্কফোর্স তাদের প্রতিবেদনে আরো জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ইহুদিবিদ্বেষও বেড়েছে। ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে ইসলাম ও ইহুদিবিদ্বেষ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত দুটি টাস্কফোর্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন চিত্র। গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস যখন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে, তখনই ওই টাস্কফোর্স দুটি গঠন করা হয়। হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে ইসলাম ও ইহুদিবিদ্বেষের চিত্র তুলে ধরে গত ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার আলাদা দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উভয় সম্প্রদায়ের ছাত্র-শিক্ষকরা কী ধরনের বৈষম্য ও বৈরিতার মুখোমুখি হচ্ছেন, তা উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২ শতাংশ মুসলিম শিক্ষার্থীই আশঙ্কা করছেন, গাজা ইস্যুতে নিজেদের রাজনৈতিক মতপ্রকাশ করলে একাডেমিক এবং পেশার ক্ষেত্রে শাস্তি পেতে হতে পারে। এমনকি অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজেদের ওপর হামলার আশঙ্কাও করছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্য মুসলিম শিক্ষার্থীরাও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। হিজাব পরেন এমন শিক্ষার্থীদেরও মৌখিক হেনস্তার শিকার হতে হয়। অনেককে ডাকা হয় ‘সন্ত্রাসী’ বলে। প্রতিবেদনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ‘ডক্সিং’ বা ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার বিষয়টি। শুধু শারীরিক নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্যও এটিকে হুমকি হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইহুদি ও মুসলিম শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা বেশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এদিকে ইহুদিবিদ্বেষ ও ইসরাইলবিরোধী পক্ষপাত মোকাবিলায় গঠিত ওই টাস্কফোর্স তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সামগ্রিকভাবে ইহুদিবিদ্বেষ বেড়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস।
তুরস্কের বাধায় নেতানিয়াহুর আজারবাইজান সফর বাতিল
আজারবাইজান সফর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সফর বাতিলের কারণ আঞ্চলিক অবস্থা এবং ‘টাইট রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সময়সূচি’ বলে জানিয়েছে তার কার্যালয়। তবে তা সত্য নয়; বরং তুরস্ক উইং অব জায়োন স্টেট বিমানটিকে আঙ্কারার আকাশসীমা দিয়ে যেতে দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তার সফর বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ওয়ালা। প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গ্রিস এবং বুলগেরিয়া হয়ে বিকল্প বিমান রুটে বাকু ভ্রমণের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখেছে, কিন্তু এতে সময় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার কারণে সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের ক্রমবর্ধমান তিক্ত সম্পর্কের কারণে এটি প্রথমবার নয় যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা ব্যাহত হয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জোগ ‘নিরাপত্তার কারণে’ আজারবাইজানে জাতিসংঘের কপ-২৯ আবহাওয়া সম্মেলনে তার পরিকল্পিত সফর শেষ মুহূর্তে বাতিল করেন। তবে সেই সময়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাতিলের আসল কারণ ছিল তুরস্ক উইং অব জায়োনকে তার আকাশসীমা দিয়ে উড়তে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। ইসরাইল থেকে আজারবাইজানে সরাসরি বিমান চলাচল সীমিত। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তুরস্ক অথবা বিকল্পভাবে সিরিয়া, ইরাক এবং ইরানের ওপর দিয়ে উড়তে হয়। টাইমস অব ইসরাইল।
বিতর্কিত সাংবাদিক ময়ূখকে গ্রেফতারের দাবিতে উত্তাল কলকাতা!
ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ, নামে সাংবাদিক হলেও কর্মকাণ্ডে যেন পুরোদস্তুর একজন হকার। একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনে উপস্থাপনার সময় যেভাবে তিনি স্টেজেই কখনো লাফাচ্ছেন তো আবার কখনো এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটছেন তা কোন পর্যায়ের সাংবাদিকতা, তা ঐ ব্যক্তিই ভালো বলতে পারবেন। বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যায় জড়ানো প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বাংলাদেশিদের কাছে মলম বিক্রেতা উপাধি পাওয়া ময়ূখকে গ্রেফতারের দাবিতে কলকাতার রাস্তায় এবার বিক্ষোভ করেছে ভারতীয়রা। শুধু ময়ূখ নন, ময়ূখের কর্মস্থল রিপাবলিক বাংলা টেলিভিশনটি বন্ধের দাবিতেও বিক্ষোভ করেন তারা, তাও আবার টেলিভিশনটির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে। এসময় বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ তোলেন, চ্যানেলটির সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে সংবাদ উপস্থাপনার নামে সাম্প্রদায়িক উসকানি ও গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছেন। এ সময় তারা আরও অভিযোগ করেন, রিপাবলিক বাংলার প্রতিবেদনগুলোয় বার বার হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হয়েছে। চ্যানেলটির সংবাদ উপস্থাপনা কৌশলে ব্যক্তিগত মতামত ও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব প্রকাশ পায়, যা সাংবাদিকতার নীতিবিরুদ্ধ। তারা দাবি করেন, এ চ্যানেলের সাংবাদিকরা আসলে ভারতের কট্টরপন্থী রাজনৈতিক গোষ্ঠী বিজেপি ও আরএসএস-এর মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন।
বিক্ষোভকারীরা ময়ূখের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভিত্তিহীন খবর প্রচার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছেন। তার এসব সংবাদে বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। বিক্ষোভকারীরা এ সময় কঠোর হুঁশিয়ারি দেন ময়ূখকে গ্রেফতারের বিষয়ে। তাদের ভাষ্যমতে, যদি দ্রুত ময়ূখ রঞ্জন ঘোষকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা না হয় এবং রিপাবলিক বাংলা চ্যানেলটি বন্ধ করা না হয়, তবে আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করবে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন থানায় ময়ূখ রঞ্জন আর তার কর্মস্থল রিপাবলিক বাংলা টেলিভিশনের নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগে ১০০ এর বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানা গেছে। ময়ূখের মিথ্যা প্রোপাগান্ডায় এতদিন অতিষ্ঠ ছিলো বাংলাদেশের আমজনতা। আর এবার তার নিজ দেশের নাগরিকরাই ক্ষেপেছে হকার এ সাংবাদিকের কর্মকাণ্ডে। এসবের পরেও প্রোপাগান্ডা ছড়ানো এ সাংবাদিককে চুপ করানো যায় কি না, সেটিই দেখার বিষয়। সিয়াসত ডেইলি।
কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব রাশিয়ার
নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। গত ৪ মে রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে এক ফোনালাপে এ প্রস্তাব দেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মস্কো ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং দেশ দুটির মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে আগ্রহী। দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনায় মস্কো উদ্বিগ্ন এবং মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনে প্রস্তুত রয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনার জেরে দুই দেশই সীমান্তে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে এবং গত দশ দিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলির খবর পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে পরস্পরের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায়। এছাড়া ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং চেনাব নদীর পানিপ্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটিয়েছে। পেহেলগামের হামলাটিকে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পর ভারতে সবচেয়ে মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়া এর আগেও আন্তর্জাতিক সংঘাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার এ প্রস্তাব দেশটির ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির অংশ। পাকিস্তানের পাশাপাশি ইরানের সঙ্গেও মস্কোর সুসম্পর্ক রয়েছে। একইসঙ্গে কৌশলগত কারণে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় রাশিয়া। মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের প্রভাব কিছুটা কমে আসছে বুঝতে পেরে এবং সম্ভাব্য সংঘাতের ক্ষেত্রে মিত্রদের সরাসরি সামরিক সহায়তা দেয়ার সীমাবদ্ধতা উপলব্ধি করে রাশিয়া কূটনৈতিক মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতে চাইছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রয়টার্স।
আরব আমিরাতে কিন্ডারগার্টেন থেকেই এআই শিক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ
প্রযুক্তির অগ্রভাগে থাকার লক্ষ্যেই সব বয়সের শিক্ষার্থীদের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ক শিক্ষা চালুর ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দুবাই থেকে এএফপি জানায়, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশটির সরকারি বিদ্যালয়গুলোয়; এমনকি কিন্ডারগার্টেন স্তরেও এআইবিষয়ক পাঠ শুরু হবে বলে জানান দুবাইয়ের শাসক ও ইউএই প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতুম। গত ৪ মে রোববার এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় তিনি লেখেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো শিশুদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে শুধু প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং এর নৈতিক দিক সম্পর্কেও গভীরভাবে সচেতন করা।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব আমাদের সন্তানদের এমন একটি ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করা যা আমাদের সময়ের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন।’ বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল রফতানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও ইউএই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সামনে রেখে অর্থনীতি বৈচিত্র্যকরণের উদ্যোগ নিচ্ছে। ২০১৭ সালে দেশটি বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে এবং রাজধানী আবুধাবিতে এআইভিত্তিক একটি বিশ্ববিদ্যালয় চালু করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউএই ফ্রান্সে একটি বৃহৎ এআই তথ্যকেন্দ্র গঠনের জন্য ৩০ থেকে ৫০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেয়। এএফপি।
সীমান্ত উত্তেজনার মাঝেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা পাকিস্তানের
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক বর্তমানে এক চরম উত্তেজনাপূর্ণ সময় পার করছে। সম্প্রতি ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। এ প্রেক্ষাপটেই পাকিস্তান সামরিক শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে নতুন করে ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও কৌশলগত ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে। গত সোমবার (৫ মে) পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ‘ফাতাহ সিরিজ’-এর ১২০ কিলোমিটার পাল্লার ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়। এ উৎক্ষেপণ ‘এক্স ইন্ডাস’ নামের চলমান সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়। আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) জানিয়েছে, এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতির সক্ষমতা যাচাই এবং ক্ষেপণাস্ত্রের আধুনিক প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য বিশেষ করে উন্নত ন্যাভিগেশন সিস্টেম ও নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করার ক্ষমতা পরীক্ষা করা।
দ্য ডন পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কৌশলগত সংস্থার বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা। উৎক্ষেপণ শেষে সেনাবাহিনী প্রধান এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান অংশগ্রহণকারী সেনাসদস্য, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অভিনন্দন জানান এবং দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় তাদের প্রস্তুতির ওপর আস্থা প্রকাশ করেন। ফাতাহ সিরিজের এ ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানের কৌশলগত অস্ত্রভাণ্ডারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। উন্নত টার্মিনাল গাইডেন্স প্রযুক্তির মাধ্যমে এটি শত্রুর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। এর আগেও ২০২৫ সালের মে মাসে পাকিস্তান ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার ‘ফাতাহ-২’ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করেছিল, যেটি এখন সেনাবাহিনীর আর্টিলারি ইউনিটে যুক্ত হয়েছে। দ্য ডন।
দীর্ঘতম প্রেস কনফারেন্সের রেকর্ড মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু একটানা প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেছেন। এর মাধ্যমে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে সংবাদ সম্মেলনের রেকর্ড গড়েছেন তিনি, যা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। গত ৪ মে রোববার দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির সূত্রে বাসস জানায়, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলনটি শুরু করেন ৪৬ বছর বয়সী মুইজ্জু। নামাজের বিরতির সময় বাদ দিয়ে মোট ১৪ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট ধরে এ সংবাদ সম্মেলন চলে। বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এটির আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রায় দুই ডজন সাংবাদিক অংশ নেন।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়া সংবাদ সম্মেলনটি শেষ হতে মধ্যরাত পার হয়ে যায়। সেখানে একটানা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। এ সময় তিনি তথ্যনির্ভর, ভারসাম্যপূর্ণ ও পক্ষপাতহীন সাংবাদিকতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। দীর্ঘ এ সেশনে সাংবাদিকদের কাছে জনসাধারণের জমা দেয়া প্রশ্নেরও উত্তর দেন প্রেসিডেন্ট। তিনি জানান, আরএসএফ পরিচালিত ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে দুই ধাপ এগিয়ে ১০৪তম অবস্থানে উঠে এসেছে মালদ্বীপ। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে ইউক্রেনের ন্যাশনাল রেকর্ড অ্যাজেন্সি দাবি করে, দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ১৪ ঘণ্টার প্রেস কনফারেন্স করেছেন, যা বেলারুশের শাসক আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাত ঘণ্টার রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। এএফপি।
পাকিস্তানের সব বন্দরে ভারতীয় জাহাজ নিষিদ্ধ
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে ভারত ও পাকিস্তান। এরই ধারাবাহিকতায় নিজেদের সব বন্দরে ভারতের পতাকাবাহী জাহাজ নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তান। এর আগে ভারতের পক্ষ থেকেও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। ভারতের জাহাজ চলাচলবিষয়ক বিভাগের মহাপরিচালক এক বিবৃতিতে জানান, পাকিস্তানের পতাকাবাহী জাহাজকে ভারতের কোনো বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। সেইসঙ্গে ভারতের পতাকাবাহী জাহাজ পাকিস্তানের কোনো বন্দরে যাবে না। ভারতীয় জনগণ, সম্পদ ও ভারতের জাহাজ চলাচলের স্বার্থ ও নিরাপত্তা রক্ষায় এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতের এ আদেশের পর পাকিস্তানের সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বন্দর ও জাহাজ চলাচল বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সামুদ্রিক সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের পতাকাবাহী জাহাজকে পাকিস্তানের কোনো বন্দরে প্রবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসঙ্গে পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজ ভারতীয় কোনো বন্দরে যাবে না। এ বিষয়ে যেকোনো ব্যতিক্রম বা ছাড়ের ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ‘কেস-টু-কেস’ ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অংশ হিসেবে দেশটি থেকে সব ধরনের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ আমদানি নিষিদ্ধ করেছে নয়াদিল্লি। ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় গত ২ মে শুক্রবার বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে আসা সব ধরনের পণ্যের আমদানি ও পরিবহন এখন থেকে নিষিদ্ধ। এ নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে। পাকিস্তান থেকে আকাশ ও স্থলপথে সব ধরনের ডাক ও পার্সেলও নিষিদ্ধ করেছে ভারত। শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ডন।